ভারতের শিক্ষিত-মহিলা |

দশনপাস্তে গবর্ণমেণ্ট উপাধি'পরীক্ষায় বিশেষ যোগ্যতার সহিত উত্তীর্ণ, বারাণ, "স্থ গবর্ণমেপ্ট কলেজের সংস্কৃত-বিভাগের “রাণী মবুমতী নার্শনিব বৃত্তি” “মহারাণী স্ব্ণময়ী দার্শনিক পারিতোষিক” প্রাপ্, এবং উক্ত কলেজের ইংরাজি-সংস্কত-বিভাগের ভূতপৃন্দ সিনিয়ার শ্রেণীস্ত ছাএ. কলিকাতাস্ত মহাকালী পাঠশাল!

. স্থাপন সর্বপ্রথম প্রবর্তক, সাহিত্যসভ! প্রভৃতির কাধানির্বাহক সমিতির সদশ্ত, যুক্তপ্রদেশস্থ ধাম- পুরের স্বাদীন অধিপতির় ভূতপূর্বর সংস্কৃতাধ্যাসক, ভারতের সর্ধপ্রধান স্বাধীন হিন্দুনরপতি বারাদাধিপতি কর্তৃক সংস্কৃত বক্ততার্থ বঝেদায় নিমন্ত্রিত কলিকাতাস্থ বশপ্ন- কলেজের সংস্কৃত-প্রোফেনার্‌,“সংস্কৃত- রঞ্জিক।.” “দি ষ্টডি অব্‌ দি গীতা” ; পভ়ৃতি প্রণেতা, প্রাঞ্জল বঙ্গ- ভাষায় সাংখ্য-পাতঞ্ল প্রভৃতি ষড় দর্শনের অন্ু- বাদক. ওকাশীর গণেশ মহল্লাস্থ স্ুপ্রসিদ্ধ “কোলালিয়ার ভট্টাচাধ্য”- বংশ-সম্ভৃত

শ্রীনুক্ত পণ্ডিত হরিদেব শাস্ত্রী হহার প্রণেতা নিজ ব্যয়ে প্রকাশক।

দ্বিতী সংস্করণ | ১:১১ বঙ্গাব। 4117 718%45 /2১6/2%4, মূল্য এক টাকা মাত্র।

১১৭1১ বহুবাজার ট্রাট, কলিকাতা কলেজ প্রেসে, এম, সি, চকবর্তী দ্বারা মুদ্রিত!

দ্বিতীয় সংস্করণের বিজ্ঞীপন |

সংবাদপত্রে, পুস্তকের দৌকানে, নিজ বাটার দ্বারো- পরি “দাইনরোর্ডে” বিজ্ঞাপন, এবং সহরের পথে পথে বড় বড় লাল নীল অক্ষরে “প্ল্যাকার্ড” প্রভৃতি উপায় অবলম্বন ব্যতিরেকেই প্রথম সংস্করণের সমস্ত পুস্তক নিঃশোষ্ত হওয়ায় দ্বিতীয় সংস্করণ বাহির হইল। দ্বিতীয় সংস্গরণে অনেক নূতন বিষয় সান্নবেশিত হইয়াছে। ইহা প্রায় দ্বিপ্তণ হইল | অথচ ইহার মুলা বদ্ধিত হইল না? দ্বিতায় সংস্করণর কাগজ, ছাপ বাধাই "এই সমস্তই পর্ববাপেক্ষা অনেক উত্তম হইয়াছে। স্বৃতরাং এই সকলের জন্য দ্বিগুণ অর্থও ব্যয়ত হইয়াছে। অথচ পুস্তকের মূলা সেই এক টাফাই রহিল। মুল্য বাড়িল ন]। কারণ, ঈদৃশ পুস্তকের বহুল প্রচারই উদ্দেশ্য পুস্তক বিক্রয় করিয়া বেশী লাভ করা উদ্দেশ্য নয়। মূল্য বাড়াইলে অনেকে সামর্থ/সন্ত্বেও পুস্তকৎক্রয়করেন না। এইজন্ই আমার বাঁকরণ-সাহি ঠা-দর্শন-তন্ত্রাদি নানাশান্ত্অধায়ী ছাত্র, কল্সিকাত! হাই কোর্টের স্ৃপ্রদিদ্ধ স্বিচারক, লক্ষমীও সরম্বতীর একাধান্, মাননীয় মিষ্টার্‌ জগ্ঠিশ জে, জি, ডোফ. এম্‌, এ, বি, সি, এল্‌, বার-য়্যাট-ল, সাহেব মহোদয় এই পুস্তকের প্রথম সংস্করণের বেলায় বলিয়াছিলেন যে,

পের্জিও

“পাণ্ডিত মহাশয়, বনু অর্থ ব্যয়ে বহু পরিশ্রমে সম্পাদিত কৌন একখানি প্রয়োজনীয় উত্তম পুস্তকের মুল্য অতিঅঙ্ এক টাক। মাত্র হইলেও অনেক ক্রয়সমর্থ ভারতীয় লোক উহা! বিনা ঘুলো গ্রহণকরিতে চেষ্টাকরে। *কিন্তু ইউরোপ আমেরিকার লোক এতই গুণগ্রানহ্থী যে, এরূপ একখানি পুস্তক বাহির হইবামাত্র যে কোন প্রকারে অন্ত? “৭ করিয়াও উহা ক্ররকরিয়া পাঠকরে। অতএব আপনি ঈংরাজাভাষায় ইহার শনুবুদ করুন। *আমিই উহার ুদরাক্কনবায়-ভার গ্রহণকরিব। ইউরোপের আমে, “রকাঁর ইংরাজিভ্ঞ বাক্তিগণ ভারতমহিলাগণের খভ্ভ্ঞাত- পূর্ব শিক্ষা প্রদ জীবনচরিত জানিবার জন্য উৎসুক হইয়া আপনার পুস্তক ক্রয় করিবে” উত্তরপাড়ার রাজা পিয়ারীমোহন মুখোপাধ্যায় এম, এ, বি, এল, সি, এস্‌, আই, বাহাদুর মহোদয় এই পুস্তকের প্রথম সংস্করণ দেখিয়া অত্যন্ত সন্তুষ্ট হইয়া বলিয়াছিলেন, “শাস্ত্রী মহাশয়, গুণগ্রাহীর দেশ বিলাত হইলে যেদিন ঈদৃশ উত্তম পুস্তক- খানি ৰাহির হইয়াছিল, সেই দিনই পুস্তকবিক্রেতৃগণ ছাপাখানায় আসিয়া গাড়ী বোঝাই করিয়৷ বিক্রয়ার্থ আপনার পুস্তক নিজ নিজ দোক'মে লইরা যাইত” মাননীয় মিষ্টার্‌ উদড্ভোফ. এবং রাফ! বাহাদুর যাহা বলিয়াছেন,'তাহ। বর্ণে বর্ণে সত্য। এদেশে গুগগ্রাহী উশুসাহদাতা লোক যে, একেবারে নাই, তাহা'নয়। তকে

&/০

খুবঅল্প! ফ্টার্‌ থিয়েটারের নাট্যাচাধ ্রীঘুক্ত বাবু মত লাল বস মহাশয় এই পুস্তক বাহির হইবার প্রায় দুই মাস পু দশ একখানি প্রয়োজনীয় পুস্তক বাহির হইবে, এই কাঁথা শুসিবামাত্র তৎক্ষণাৎ তাহার উৎকলদেশীয সদৃশ্য “থলি”টি বাহির করিয়া একটি টাকা আমার হস্তে দিয়া বলিয়াছিলেন, “যেদিন ঈদশ খুস্তকখানি বাহির হই, সেই দিনই পুস্তকখানি যেন পাই ।” পুস্তক বাহির হইবার *পুবেবই, মুল্যদান, প্রীবল পিপঠিঘা সাধুতাব পরিচয় নয় কি তিনি যেরূপ অধায়নশীল লোক তাহার বৃহৎ লীইত্রেরিতে যেরূপ পুস্তক-সংগ্রহ দেখিলাম, তাহাতে হাহার পক্ষে এইরূপ পুস্তকপাঠের আগ্রহ কর্তবাবৃদ্ধি 'বচিত্র নহে। কলিকাতা হাটখোলার বিখ্যাত উত্তমর্ণ ধনী বদ্ধান গুগ্রাহী মাননীয় রায় বাহাদুর শ্রীযুক্ত সীতানাথ রাধ এম, এ, বি, এল, মহাশয়, এই পুস্তক উপহ্বর পাইয়া পাঠ করিয়া এতই সন্তুষ্ট হইয়াছিলেন যে, তিনি ইহার এক টাকা খুলের পরিবর্তে পাঁচ টাকা প্রদান করিয়াছিলেন। শামি বলয়াছিলায়, যে পুস্তকখানি উপহার দেওয়া হয়, তাহার দুল লইতে নাই। আমি উপহার দিয়া ইহার মুল্য লইব বলিফ্কা শাও করি মাই” ইহাতে ভিনি বলিয়াছিলেন, “আপনার এই গুস্তকখানি অমূল্য হইয়াছে। স্ৃতরাং ইহার মূলা দেওয়া .হইতেছেনা, কিন্তু ইহার মুস্রাঙ্কন-ব্যয়ে সাহাধ্যার্থ আমি অতি সামান্য কিঞ্ দিতে, অতান্ত ইচ্ছুক

10

হইয়ীছি। ইহা! আপনাকে লইতেই হইবে” জোড়া- সাকৌর ঠাকুরবংশীয় শ্রীযুক্ত বাবু. খতেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় এই পুস্তক উপহার পাইয়া পাঠকরিয়!/ ঠিক পীরূপ কথা বলিয়াছিলেন, ইহার পাঁচ টাক গুল্য দিয়া স্বীয় গুণগ্রাহিতার পরিচয় “দিয়াছিলেন। আমি ইাহাদিগকে পুস্তক, উপহার দিয়া টাকা পাইবার আশাও করি নাই।' অস্মদ্দেশের বালিকাদিগকে সনাতন বৈদিক- ধন্ম মনুপ্রভৃতির স্মাতধম্ম-অনুখায়া আচারববাবহার রীতি-নীতি, পিতা-মাতা শশুর-শবঙ্ প্রভৃতি গুরুজনের প্রঠি ভক্তি, ব্রত, পুজা, বিদ্যা শিক্ষার্দিবার জন্য আমি কলিকাঠায় একটি হিন্দুবালিক।-বিদ্যালয়-স্থপনের প্রয়োজনীয় তা বৃদিন হইতেই উপলব্ধি করিয়। আিতে ছিলাম। কিন্তু ঈদৃশ বিদ্যালয়-স্থাপনে প্রভূত বায়ের প্রয়োজন বলিয়! কৃতকার্ধা হইতে পারি নাই অবশোসে সৌভাগ্যক্রমে ১৮৯২ খ্রীষ্টাব্দে স্বগীয়া বিছ্ধী আমতা মাতাজী মহারাণা মহোদয়া মুশিদাবাদ-রাসিম্বাজারের বিখ্া।ত দানশীল! মহারাণা স্বর্ণময়ী মহোদয়ার কলিকাতী- জোড়াসাকোর বাটাতে আসিয়া বাস করিতেছিলেন। আমিই তাহার নিকটে সর্বপ্রথম শুভক্ষণে এই বিষয় প্রস্তাবকরিলে তিনি বলিয়াছিলেন)”যছ বহু আচ্ছী' বা হায়। . মহারাণী স্বর্ণময়ীকো ইস্‌ বিষয় নিবেদন করনা চাহিয়ে”। তিনি মহারাণী স্বর্ণময়ী মহোদয়াকে

"4০

এই বিষয় নিবেদন করিলে মহারাণী স্বর্ণময়ী মহোদয় এই বিষয়ে পরামর্শ করিবার জন্য মাতাজী মহোদয়াকে স্বামীকে মুশিদাবাদে আসিবাঁর জন্য নিমন্ত্রণ করিয়া চিলেন্ঈ। মহারাণা ন্র্ণময়ী মহোদরার ভগিনীপুজ তকালীন শ্ুযোগ্য দিওয়ান কলাণ-ভ্বীজন বায় বাহাদুর শ্বীনাথ, পালি বি,

মহাশয়, যেরূপ মহাযত রাজ. (ভোগের সহিত আমাদিগকে মুর্শিদাবাদে জঙগে করিয়া লয়! গিয়াচিলেন, তাহার স্মৃতি কখনই বিলুপ্ত হইবে না

ম্ারাণা স্বরগয়ী মহোদয়! ঈদুশী পাঠশালাব বায়, নির্বনহের জন্য প্রতিশ্রাত হইলেন। মহারাজ শ্রীযুক্ত মণান্দ্রচন্দ্র নন্দী বাহাদুর অদ্দাপি মহাকালী পাঠশালাকে উক্ত সাহাযা দানকরির। আসিতেছেন।

মাতাজী মহারাণী মহোদয় ঈদৃশী পাঠশালার উপ- যোগী একথানি পুস্তক লিখিবার জন্য আমাকে মাদেশ করায় আমি ১৮৯২ খৃষ্টাব্দে আমাদের জন্য নির্দিষ্ট কাসিম- বাজার-রাজ-বাটার পার্বস্থ “গোলাবাড়ীর” বৈঠকখানায় বিয়া « সংস্কৃত-রর্ডিকা”-নান্দী একখানি পুস্তিকা রচনা করিয়াছিলেন! এবং মহাকালী পাঠশালাকে সেই পুস্তিকার স্বর প্রদান করিযাছিলাম। উহার কয়েকটি সংস্করণও বাহির হইয়াছিল। কিন্থু পাঠশালার অর্থাভাবে উহার আর নূতন নূতন সংস্করণ বাহির হয় নাই। মহাকালী পাঠশালারু উদ্দেশ্য টি যে, সাধিত হইয়াছে, ইহা স্বীকার

17৮৫

করিরতৈই হইবে। ইহার ' শাখা-প্রশাখা ভারতের প্রায় সব্বত্র বিস্তৃত হইয়! পড়িয়াছে এই কয়েক বৎসরের মধ্যে বু সহস্ত হিন্দু বালিকা এই সকল পাঠশালায় শিক্ষার ফল প্রাপ্ত হইয়া বহু সহঙ্র গৃহস্থাশ্রমেন অ্িষঠত্রী দেবতারূপে বিরাজিত হইতে পারিাছেন।, “মহাকালী পাঠশাল"” যুগান্তর উপস্থিত করিতে সমর্থ হইয়াছে দেশের প্রভৃত উপকার সাধিত হইয়াছে আমার এই “ভারতের শিক্ষিত-মহিলা”*নামক পুস্তক মানি লিখিতে অগেক পুস্তক পাঠকরিতে হইয়াছে। সেই জন্য আনেক সময় লাগিয়ান্ে। এই সংস্করণে রাণী দুর্গাবত

অহলা"বাউ ওগ্রাণী ভবানার জীবনচরিত জজ ভাবে সনিবেশিত হইয়াছে অনেক নৃতন কথা সন্নিবদ্ধ হইয়াছে; সেইজন্য গ্রন্থকলেবর পুর্ববাপেক্ষা প্রায় দ্বি্ুণ বদ্ধিত হইয়াছে রাণী ছুর্গাবতীর জীবন-চরিত সবিশ্ষে জানিবার জন্য রাণী ছুর্গাৰতীর ভূতপূর্বব রাজা জবধলপুর তন্নিকটবত্তী স্থানের কয়েক বাক্তির নিকটে অনেক অনুসন্ধান করিতে হইয়াছে, তজ্জন্যও অনেক সময় গিয়াছে। রাণী দুর্গাবন্তীর সন্থান্ধে যিনি যেবপ পুস্তক লিখিয়াছেন, এবং রাণী ভবানীর সম্থা্বী যে কয়েকখানি পুস্তক বাহির হইয়াছে, সেগুলি সাময়িক, চিত্রপট বা গল্প পুস্তক ব' উপন্যাস মাত্র ঈদৃশ পুস্তক তাদৃশ উপাদানে রচিত হয় নাই। স্থৃতরাং সেই সকল 'পুক্তরক হইতে,

$৩/৩

অণুমাত্র সাহাষ্য লাভকরিতে*পারি নাই। কিন্তু রাজ- সাহীর সর্ববপ্রধান উকিল সাহিত্যিক ইতিহাসশাস্্ররত্ব শ্রীযুক্ত বাবু অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় মহাশয়ের নিকট হইতে রাণী ভধানীর সম্বন্ধে অনেক ছূর্বিবজ্ঞেয় তত্ব অবগশ্ হইয়া তাহার নিকটে কৃতজ্ঞতাপাশে বদ্ধ রহিলাম তাহাকে আস্তরিক ধন্যবাদ প্রদানকরিলাম। রাণী ভবানীর এঁতিহাসিক তত্ব অনুসন্ধান বিষয়ে তাহার দীর্ঘকালব্যাপিনী আলোচনা বিশেষ পরিশ্রম অত্যন্ত প্রশংসনীয় রাণী অহল্যাবাইর জীবন-চরিত-লিখন সম্বন্ধে “মাইকেল মধুসুদল দত্তের জীবন-চরিত” প্রণেতা মিষ্টভাষী সদয় শ্রীযুক্ত বাবু যোগীন্দ্রনাথ বস্ত্র বি, এ, মহাশয়ের অনেক কখার সাহায্য লইয়াছি। অতএব তীহার নিকটেও কৃতজ্ঞ রহিলাম তাহাকেও আন্তরিক ধন্যবাদ প্রদানকরিলাম। অস্মতকুল- প্রতিপালক মহামান্য কাশীর স্বাধীন মহারাজা বাহাদুর তাহার ডাক্তার শ্রীযুক্ত বাবু মহেন্দ্রনাথ আচার্য মহাশয়ের নিকট হইতে আমার এই পুস্তকের প্রথম সংস্করণের কয়েক পত্রের হিন্রি অনুবাদ শ্রবণ করিয়া অত্যন্ত সন্তুষ্ট হইয়া বলিয়াছিলেন, “হিন্দি ভাষায় এই পুস্তকের অনুবাদ হওয়া উচিত”। প্রথম সংক্ষরণ অপেক্ষা দ্বিতীয় সংস্করণে অনেক নৃতন বিষয় সন্নিবেশিত করিয়া ইহার হিন্দি ইংরাজি অনুবাদ প্রকাশ করিব, এইরূপ ইচ্ছা করিয়া- ছিলাম। সেই জন্য, এবং আমি সাংখ্য পাতগ্রল বেদান্ত

[

হ্যায় বৈশেধিক মীমাংসা। এই ছয়টি দর্শনশান্ত্র প্রাঞ্জল বঙ্গভাষায় স্ৃবিস্তৃত ভাবে অনুবাদ করিবার জন্য সর্ববদ! লিখনে ব্যস্ত থাকায় অন্যান্য নানাবিধ পুস্তক পাঠে আসক্ত থাকায় এই পুস্তকের দ্বিতীয় সৃংস্করণ * প্রকাশ করিতে কিঞ্চি বিলম্ব ঘটিয়াছে।

শ্রীহরিদেব শর্মা ১২।৫ ডাক্তার লেন। তাল্তল।, কলিকাত|।

এই পুস্তকের প্রথম সংস্করণ সম্বন্ধে বিশিষ্ট ব্যক্তি সংবাদপত্রের মত $-

বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদের ভূতপূর্বব সভাপতি, কলিকাতা হাইকোটের ভূতপূর্বব বিচারপতি সত্যস্পউবাদী বিখ্যাত বিদ্বান শ্রীযুক্ত বাবু সারদা চরণ মিত্র মহাশয় ইহার প্রথম সংস্করণের বিজ্ঞাপনে লিখিয়াছিলেন*_

“প্রিয় স্থহৃত শ্রীযুক্ত পঞ্চিত 'হরিদেব শান্্রী মহাশয়-.....বিদুষী স্ত্রীলোকদিগের বৃত্তান্ত'-".*-স্বগ্র্থে নিবেশিত করিয়া: ভারত-ছুহিতৃ-শিক্ষার গ্রকৃত আদর্শ

/০

প্রদর্শন করিয়াছেন। ......কিন্ত শান্্রী মহাশয়ের 'এই পুস্তকখানি এরূপ পুস্তক হইতে অনেকাংশে উত্তম। কারণ ইহাতে আর্ধ্যনারীদিগের আচার-ব্যবহার রীতি-নীতি সম্বন্ধে 'অনেকম্প্রয়োজনীয় উত্তমোন্তম কথা আছে। শাস্ত্রী মহাশয়ের এই পুস্তকখানি সুন্দর স্ত্রীপাঠ্য হইয়াছে। আশা করি, প্রত্যেক হিন্দুর বাটীতে এই পুস্তকখানি কুল- মহিলাদিগের স্্রপাঠ্য হইবে এবং “মহাকালী পাঠশালা” ইহার শাখা বিদ্যালয়সমূহে ইহার কতক কতক অংশ নিন্মশ্রেণীতে কতক কতক অংশ উচ্চ /শ্রণীতে বালিকা- গণের "অবশ্য পাঠা হইবে। এই পুস্তকখানি যে, কেবল স্ত্রীলোকেরই পাঠ্য, তাহা নহে, যুবকগণ এই পুস্তক পাঠ করিলে স্ব স্ব গৃহের মহিলাদিগকে ধন্ম নীতি শিক্ষা দ্রিতে সমর্থ হইবেন। শাস্ত্রী মহাশয় এইরূপ উত্তম এক- খানি পুস্তক'লিখিয়৷ হিন্দুদমাজে একটি প্রধান অভাব দূর করিয়াছেন। শাস্ত্রা মহাশয়ের এই পুস্তকখানি বঙ্গসা হিত্য- উদ্যানের একটি নৃতন স্থুরতি পুষ্প। ইহার সৌরতে পাঠক-পাঠিকাগণ যথেষ্ট আমোদ্দিত উপকৃত হইবেন, "বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই” |

1৮5 ১৩১৭ সালের ২৫ংশ আষাঢ়, শনিবারের “বনুমতী”।

“ভারতের শিক্ষিত-মহিলা। শ্রীযুক্ত পণ্ডিত হরিদেব শাস্ত্রী প্রণীত। বীধাই মুদ্রাঙ্কন কাগজ উত্কৃষ্ট। সাড়ে তিন শত ৃষ্টায় . সম্পূর্ণ। মূলা এক টাকা।" সাহস করিয়া বলা যাইতে পারে যে, বঙ্গভাষায় এরূপ পুস্তক বিরল। ইহ! কেবলমাত্র কতিপয় আর্ধা-মহিলার 'জীবন- চন্নিতে পূর্ণ নয়। ইহা ব্যক্তি বিশেষের কল্পনার ছবি নয়।” “ভারতের শিক্ষিত-মহিলা” প্রাচীন মাধ্য সমাজের এতিহাদিক "চিত্রের সমগ্টি। বঙ্গীয় সাহিতা-পরিষদের সভাপতি হাইকোটের ভূতপুর্বৰ বিচারপতি শ্রীযুক্ত সারদা চরণ মিত্র মহাশয় এই পুস্তকের ভূমিকায় লিখিয়াছেন; “এই পুস্তকখারি বঙ্গ সাহিতা-উদ্যানের একটি নূতন স্থরভি পুষ্প। ইহার মৌরভে পাঠক-পাঠিকাগণ যথেষ্ট আমোদিত উপকৃত হইবেন। ইহা /কেবল ত্ত্রীপাঠা পুস্তক নয়, যুবকগণ এইরূপ পুস্তন পাঠ করিলে স্ব গুহের মহিলাদ্রিগকে স্থৃশিক্ষা দিতে সমর্থ হইবেন ।..... কিন্তু শান্ত্রী মহাশয়ের এই পুস্তকখানি এরূপ পুম্তক হইতে অনেকাংশে উত্তন। কারণ, ইহাতে আধ্য-নারী- দিগের আচার-ব্যবহার রীতি-নীতি সম্বন্ধে অনেক প্রয়োজনীয় উত্তমোত্তম কথা আছে।-*.."মাশা করি

|

প্রত্যেক হিন্দুর বাটাতে এই পুস্তকখানি কুলমহিলাদিগৈর স্থপাঠ্য- হইবে ।.........শোন্্রী মহাশয় এইরূপ এইক্নপ একখানি উত্তন পুস্তক লিখিয়া হিন্দুদমাজে একটি প্রধান অভাব দুর করিয়াছেন” ।-_সারদা বাবু যাহা লিখিয়াছেন, তাহা বর্ণে বর্ণে সত্য এই গ্রন্থের উপাদান-সংগ্রহের জন শান্জ্রী মহাশয়কে বহু গ্রন্থ পাঠকরিতে হইয়াছে। তিনি আধ্য নারীর আচার-ব্যবহার শিক্ষা-দীক্ষ নবস্ধে শান্্ে যাহা দ্নেখিয়াছেন, তাহাই বঙ্গভাষায় লিপিবদ্ধ করিয়াছেন। শীল্্ী মহাশয় প্রতিপন্ন করিয়াছেন,__হিদ্দু স্্রী ভোগ্যা বা পরিচারিকা নহেন; হিন্দু স্ত্রী সহধর্মিণী, র্্মপত্রী, গৃহদেবতা, আদ্যাশক্তির অংশভূতা যদি হিন্দু এই আদর্শের অনুপরণ করেন, তাহা হইলে হিন্দুর গৃহ ধর্মমন্দিরে পরিণত হইতে পাঁরে। যাহার! পুত্র কন্তা- দিগকে ধর্ঘটভাবে আর্ধাভাবে অনুপ্রাণিত করিতে চাহেন, তাহার! পুত্র কন্যাদিগকে এই পুস্তকখানি পাঠ করিতে দিন। , এই গ্রন্থে বর্ণিত নারীচরিত্র অধ্যয়ন করিলে হৃদয়ে বিস্ময় ভক্তির উদ্রেক হয়। ১২৫ ডাক্তার লেন, তালতলা, কলিকাতায় গ্রম্থকারের নিকটে ইস্থা প্রাপ্তব্য। এইরূপ গ্রন্থের বন্ুল প্রচার বাঞুনীয়”।

এক্ষণে বিলীয় সাহিত্যের সর্ববপ্রধান আচার্য্য “সাধারণী”র ভূতপূর্বব সম্পাদক, চট্টগ্রাম-সাহিত্যন্শ্মিলনের ভূতপূর্বব সভাপতি প্রযুক্ত বাবু অক্ষয় চন্্র সরকার

7৩

মহাশয় চট্টগ্রাম-দাহিত্য 'সম্মিলনে অভিভাষণের সময় শ্রীযুক্ত পণ্ডিত হরিদেব শান্ত্রী মহাশয়ের “ভারতের শিক্ষিত মহিলা”র এইরূপ প্রশংস! করিয়াছিলেন 8১১৮ “ইহাতে প্রাচীনকালের এবং এখনকার দিনের বিখ্যাত ভারত মহিলার চরিত্রের পরিচয় আছে।......বঙ্গমহিলার এখানি স্ুপাঠ্য পুস্তক, পড়িলে জ্ঞানের সঙ্গে আমোদ পাইবেন” | বঙ্গবাসী। ১৩১৯ সাল, ১৬ই চৈত্র, শনিবার

গল 3081) 05৮, [8 ব0৪% 6, 1911,

9৮0,

[১710011 [না 06৮ 917985171) 1015 ৮1611-1701 85 4 981751071 50170141010 38175101 51691:61 193 [00150] 0018. 0011-1116113615811 000৮ 0]7- 10160 “13176 91175118 8121112,1 0708 ৭9202 01থনা। 00110070805 00] 000806, 1176 7১০0 07181731165 01 170160. 1691060 11101] 70010000015 17016১ 01110017. 11 9150 10781631116 1091)0015) 00510105, 17069 ০1 000108110]) ৪110 1106 01 076 4৮090180169 01 [1018 ; 2100 2১ 9001) 090) 06 0561011য [1700 1) (116 1191705 01 01011150170 190165. 6 010061- 31700 (1700 01670709016 11. ]050106 1 ০0০001076 1145 [):011560 (9 [0001151 (90518010101. 0019 010 1:02]1911. 6 210 9150 (010 1181 (106 13677991 050%61)076101 001011560 10 1001017856 3$1] ০0165 01411015 10০01.

এন্যুর

1] 4৬1২] 158৯2 74118) ]ঢা,খ 5, 191০,

11095 10661) ৪. 00101001) 10191216 10. 107217% 00121161510 11001210 01061) 1193 10261717519581- ০0 ৪. 101010]) 10101011170 (09 01121 01 1101) 117 211 01801215 0601210105 009 60000211017) 101151005 8056758006৭ 2100 1116 1116. 10660 1176 1১01)10 61161 717)0175 17190 560610173 01116 00111701111 ২0101151181 ৬০1)01) 21০ [7৩০100০ [07] ড0- $101]011 203 810. 50900659565) 8515 1116 0856. $৮1 9100175, হা 0116 59176 00901762511) 13817102105 00. 1210010 17081 06৮ ১1195011095 00176 9. 97681 9017৮1061০0 [11170001917 200 (0 1116. 11000561776 01 1116 50205 01 1110010 ডা017761) 9 [01151106115 1031018667 91710917115 চ191719- 1371)0. উলাজণন 0110 50106008300 5 [06906 10 10, 800 076 ৮01]. 1] 11901 15 5 11010011061) 01 [09061011209] 5600) ৪170 76- 5৪৪1:01. 776 91897 195 গোছা 1115 77816118]5 0হ 21] 25981181015 50901065200 190 017061 16001510001 006 685 870 00700 5217917 0] 10 00৮০ 1015 00106001025. 176 1785 9150, 1৮617 010£1800171081] 51660116501 50106 6101116101 [1701910 00)01) 19 9100 100৭ 19: 81001000) 80 2100 1621017 120 9৮ 0106 01106. [9560816 (০ 006 19101101006 20501590150, & দ611-1010মাটে

0/০

১৪1791010 5010012) ৬1০১৩ £100 01 997510] ০1০- :0067)08 15 2111050 0110৩: 2100176 3675215, 18100101721) 06৮ 91795101125 1010560196৫ 17600080017) ৪100950 560010 (0 1)019) (01106 ৬৭৯ 11)1160 (09 0611561- 2:051010 019090:065 21 91101) 56815 01 39105107 16210010 25 95980174700 % 5001) 11105070005 1১07900৯ 2$ 0790260.921 01 381008.. 1715 0651) দো] ভা] 61১91156, 17800 00.) 10151720776 09 19931910 9100 61701 [3675] 10. 7681156 1,016 006. 01805 ০1 01707 1810] 06 59010152110. 11) 001:53106, (00195, [1১ 0০901 আ]]) ৩. 11016 770 8) 17090098160 70160 10 ৪৮1৬ 1361021]1 1100১6-101. [076 99০9115191৬ 10980 01 1659৯, ৪. 6. 840) 4০ 06০9. 9০011175601) 50661 800 01009 201110 212/5 1)০901017 19176) 121100119) ০8100005. 1115 ০]1-১০এ০এ ৪70 01061 ]১00160 10715 10100.

117] বাটা উংি08, ৯৬0২108৬, 1707732৮২17, 1910.

410311050 9109105 81971181 ০7 08০:9৫0০৪54 18165 01100191507 006 01৪. 0001) 6৮17010 & £000. 06981 91 09016106 16368101069) 41791 1899 ৪102159690% 001) 015 7961. 01 781001 [9 6৮

কী

14507), 076 ৮611-1070তা॥ ১2791016 50100121. [178 5160010 ৪080 ০1900 21691)60 £00) 210016100 2170. 01019521 15116200065) [010191895 & 50101101105 155111001)% 85 (0 1707 19.0195 9৮211- €0 (70677561505 01 1) 11017050 ০0008100 10 00১৩ 095, 210 [0:00 (11617561569 0176 0:06 1011077615০ 076] 10015102100. 10176 90107৩1 1125 12738060. 0০1]. 103 501000191 2170 0179 09061671079 0110018 19 06070791816 10163 0৮076 ৮৮০7" ৮6701216ণ 2180. ৩৮1) 0910 (170 11010356 11016 9170]. ০01 07911] 11) (1015 ০০00017) 2170 10৮ 0060 [01] 00107160 1106 2806১ 01172170200 9001) 0116161) 52170- 115 6৮০1) 10) 1101১ 08 25 019 19951 9190011007১ €)1 01071011000, 19,৮11 06811500 1176 11016১1 10215 01 90110010200 50171002101. 111)6 71069105 11001 01 300)6)10 1070তা 16056 200 (16 13671001 36011910701) 01076 11016116019] 200. 30917101] 1900110165 0০126210615 71260 10৮ 07618016১01 910167]1 10018 18 1011 201656৫ 19% £100100১ ০5207010501 40161) 814106)1, 151 2170 13041 01 961)673) 180163) ০010175 ৫0%] 9 19667 01195, 10 [009 ৪৮০7 1১6 £201:01760 016 20709 ০01 91 7617 56%..001)9 20007 1095 98981 910 100ম 16171516 60010801010 01৪. 17181 06৮০107১20 ০108180067 ৪5 0176 01 07০ 01810165810 ০01

*১/৩

006 11197011086 10061706501 17300017157 200 |।0৮ 130001765150165 110 18101, 19778170810 ১8100912101 200 06125 176901760 116 11101795£ 1161755 0160112)7067060 90৮87706770101) 27. 201)8, [06101 ৮10101) 51160 9. 10151061700170 (16171081765 ঢা] 00011961,16:80016, 016 1106 ১/:60765 0 ৫০1100100. 012 ] 106 ০] [১90181910 21012108269) 670105 অ10 07০5৪ 101 [২81765 1)022580৯ [39066 4১210 2 আাণ [২20৩6 [311952176৩, 001015]) 171665078 হণ 81300101156 77015. 10175 10100100107 10 0116 1099]. 15 10160 5 13800 98908 চোরা ভার 1 1015 05091 58065] টাঞাটাটতা,। জী আ1055) 81000600767 (01025) 091 80000101515 10018 10115101) 01511101001) ৮1117000197) ০0101791250 800 [1000 00105 9200 800 00100100165 [6179110) 61660. 17970 59) ম€ 10110 2000158. 79001 11271 08৮ ১19507. 195 0006 50০0৫ ১৮1০০ (0016 08036 01 1210919 €0009101 )% 1071081759৫ 2 4০০]. 50 93001691019 101 01১9 06৮6- 10101067701 116 017180061 01 00 £015) 2170 07 00086 000. স203618015 2150106005 0, (365 96015 1096 ০1 20010 870 1207 [0165 60 001%1706 0১5 6 01700517050 00. 085 50178170 1001১091106 01 6155800500৩ 00781 56 0 [1079৮ 6৫0০81100. 10 ৪৪601301176"

১%০

09015 08061011) 70010610106 00016100005 |. 00008150 01016 68100, 001010001101 ২1]0)16ণ, সীল * “খারারাম 00121018 সুর) 07 2001 তুহা। 1৮৮ থাঞগ্থা, 0100550 01 এথাঞনা, 09100 (0160৮. 070 006 10006. 10160800111

10111701712 ব10001016,171017, (71011.

স্রগীপত্র। বিষয়ঞ

নারীজাতি আদ্যাশক্তির* অংশ, নারীজাতি দেবতা বিশেষ, নারীজাতির পূজা সমাদর সম্মান। নারীজাতি স্ুপ্রসর থাকিলে কুনের মঙ্গল) স্লাজাতির গৃহাস্থালীশিক্ষ। অতীব প্রয়োজনীয়, ভারতমহিলা লক্জাশীলা সাবরণা ( “পর্দানসীন্‌” ) হইবে, স্ত্রী জাতির স্বাধীনতা নিষিদ্ধ। স্বামীর গৃহেই ভার্ধ্যার সদা অবস্থিতিই শাস্ত্ববিহিত। স্ীজাতির গৃহস্থিত বস্তগুলিকে সাজাইয়া গুছাইযা রাখার শিক্ষা, স্ত্রীজাতির বন্ধকা ধ্য-নিপুণতা। শ্বশুর-

শ্বর্শতক্তি, পতির হিতানু্ঠান করিলে স্বর্গে গমন, পত্বীই গৃহস্থাশ্রমের মূল দেবতা, স্ত্রী পতীর অনল বগ্যা হইবে।

দরিদ্র ও' রোগার্ত,গতির অবজ্ঞাকারিণী রং জন্মান্তরে

রগতি, পতিবাক্য-লঙ্ঘনন পতিকে উপেক্ষাকরা নিষিদ্ধ, পতিসেবা করিলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফললাঁভ, '

পতিসেবা! করিলে তীর গল্গাঙ্ানা্দির ফললাভ। পর্তির আজ্ঞা রিনা | ব্রত-উপবাঁসাদি- নিষেধ, গৃহে "বত তৈল তঙুরাদি ফুরাইয়া, যাইবার পূর্বেই পতিকে

অভাব 'জ্ঞাগন কর) গৃহে “এটা নাই, ওটা] নাই/*

এইরগ ক্রমাগত বলিয়া পতিকে উদ্বেজিত. রর

_ পত্্ান্থ।

৬.১২

১২-্প১ত

১৬১৭,

১৭১৯

১1৬

বিষয়। অনুচিত, পির চরণ পূজা করিয়। পতিকে অগ্রে ভোজন করাইয়৷ পশ্চাৎ স্ত্রীর ভোজন কর! উচিত, বঙ্ত্রালঙ্কারের জন্য সর্বদা গতিকে উদ্বেচিত কেরা নিষিদ্ধ, সাংসারিক ব্যয় নির্বাহার্থ পত্তিকে মহারেশ- কর কাধ্যে নিয়োজিত করা নিষিদ্ধ, গুরুজন নীচাসনে বসিশে স্ত্রীলোকের টচ্চাননে উপবেখন নিষিদ্ধ, নারীর বঙ্কালঙ্কারের পৌন্দধায-প্রদর্শনার্থ সদা পরগৃহে নিমন্ত্রণ রক্ষাকর| নিষিদ্ধ, নারীজাতির'অশ্লীলবাক্য উচ্চারণ করা নিষিদ্ধ, পতি পরিভ্যাগ করিয়া একাকিনী নির্জন প্রদেশে গোপনে বিচরণ করিলে জন্মান্তরে দুর্গতি, দোষবশত: পতিকর্তৃক ভত্ণসত হইয়া পতিকে ভত্্ন| বা তাড়না করিলে জন্মান্তরে ুর্গতি, গোপনে পরপুরুষের প্রতি কটাক্ষপাত করিলে জন্মাস্তরে হূ্গতি, পতিকে মিষ্টানলাদি উত্তম বস্তু না! দিয়া গোপনে ভক্ষণ করিলে জন্মাস্তরে দুর্গতি। পতিসেবার রীতি, পতিব্রতার লক্ষণ, প্রাতঃকাল হইতে গ্ৃহকর্মের নিয়ম |. *, নারীর উচ্চৈঃস্বরে কথা কহা, অধিক কথা রে বিবাদ করা, লোকসম্মুথে বিলাপ করা নিষিদ্ধ, গৃহিণীর অতি", ব্যয়শীলতা, কার্পণ্য, ধর্মকর্ম পতিকে বাধ। দেওয়া নিষিদ্ব, নারীর গ্রমাদ, উদ্মাদ, ক্রোধ, খলতা, হিংসা, পরচর্চা, উহঙ্কার,, ধূর্ততা, ব্যভিচার, প্রবচন নাস্তিক চৌর্ধন্তি নিষিদ্ধ, অন রাণীর মত থাকা

পত্রাঙ্ক

১৯

২১২৩,

১5

।বযয়। .. পত্রাঙ্ক। “অপেক্ষা পতিকুলে" দাশ্তাবৃত্তি করিয়াও থাকা ভাল, | উপযুক্ত পুত্রগণ বিদ্যমান থাকিতে পুনরায় দ্ারপরি- গ্রহ করানযিদ্ধ, নীধবা! কন্তাকে পতিগৃহে ন! পাঠাইয়া গৃহে পুষিয়া রাখা নিষিদ্ধ স্ত্রীলোক স্থুশিক্ষ। পাইলে ুষ্টাভিসদ্ধি, পিত্ঠার চক্রে পড়ে না। ২৪-_২৫ স্্রীশিক্ষ। বিষয়ে শান্প্রমাণ, স্্ীশিক্ষা বিষয়ে মূর্খের কুসংস্কার, সধবা! হইলেই শ্রীমতী হৃশীল' দেবী ও* বিধবা হইলেই '্িমত্যাঃ স্ুশীশা দেব্যাঃ এইরূপ স্বাক্ষর করা বিষয়ে ভ্রমনিরাস। রম ২৫_-২৮ যে ব্যক্তি স্্রীশিক্ষার বিরোধী, সে বেদবিরোধী,কালের কুটিলচক্রের ভ্রমণ বশতঃ উন্নতজ্গাতির অধোগতি নীচজাতির উন্নতি, স্ত্রীশিক্ষাবিষয়ে স্থৃতিশান্ত্ব হেমাদ্রি- গ্রন্থের প্রমাণ, সীত৷ সাবিত্রী প্রর্ভৃতির পতিভক্তি-

বিষয়ক গ্রন্থপা অতি প্রয়োজনীয় ১০১, ২৮_:৩৪ দ্বীশিক্ষাবিষয়ে বৈদিক নিদর্শন, বৈদিক মহিল! ত্রহ্গ- বাদিনী বিশ্ববারার সংকলিত বৈদিক মন্ত্রের অর্থ ৩৫-_-৩৬ রহ্ষবাদ্িনী বৈদ্িকমহিল! ঘোষার সংকলিত বৈদিক মন্ত্রের অর্থ।* *** * নি ৬৬৩---৪৩ ্রহ্মবাদ্িনী বৈদিক মহিলা হু্যার নি বৈদিক মন্ত্রেরঅর্থ। 0: ৪৩৫৩, ্রহ্মকাদিনী বৈদিক মহিলা জুহু ইনাম পি বৈদিক মন্ত্রের অর্থ। , হি রি »॥ ৫৩-:৫৪

্রঙ্গবাদিননী বৈদিক তি শচীর মংকলিত' বৈদিক

১1৮০

বিষয়। মন্ত্রের অর্থ। "৯, পু ্রহ্ষবাদিনী বৈদিক মহল! গোধার সংকলিত মঙ্তের অর্থ। রী ত্রন্ববাদিনী বৈদিক না ধীর ভি মন্ত্রে অর্থ। | বরঙ্গবার্দিনী 'বৈদিক মহিল! তি সং মন্ত্রের অর্থ।

বরহ্মবাদিনী বৈদিক মহিলা শ্রদ্ধার রি বৈদিক মন্ত্রের অর্থ।

র্গবাদিনী বৈদিক মহিলা লোপমুদ্রার মন্ত্রের অর্থ।

্রহ্মবাদিনী বৈদিক মহিলা তি সংকলিত বৈদিক মন্ত্রের অর্থ।

ত্রদ্ধবাদিনী বৈদিক মৃহিলা রোমশার কা

মন্ত্রের অর্থ। রী রি রি বরহ্মবাদিনী বৈদিক মৃহিল1 বপ্রিমতীর সংকলিত মন্ত্রের অর্থ। : বৈদিক যুগের রাজা পুরুকুৎ্সের রা মন্ত্র উচ্চারণ-

পূর্ববক হোম।

বৈদিকযুগের মহিলাগণের যুদ্ধে টানি রী |. স্ত্রীলোকের বৈর্দিকমন্ত্র উচ্চারণ, উচ্চারণপুর্ববক

হোম সামবেদ গানের. অধিকার বিষয়ে নাটায়ন- এশ্রীতস্থত্র গোভিল-গৃষ্ৃতুত্রের প্রমাণ

৫৫

৫৫৫৬

৫৬--৫৭ ৫৭ ৫৭-- ৫৮ ৫৮ ৫৯ ৫8৯ 8৮

৬১৬২

৬২৭১

১1৪/৩

বিষয় গৃহিণীই গৃহ গৃহের দেবতা | মৈত্রেয়ী। গাগা রি বৈদিকযুগের শিক্ষিতা মাভার কথা। পৌরাণিকু যুগের মদালসা। পৌরাণিক যুগের স্থলভ| | পৌরাণিক যুগের সিদ্ধা শবরী শ্রমণা। পৌরাণিক যুগের ্লাত্রেয়ী। বৌদ্ধযুগের কামন্দকী | বৌদ্ধযুগে নর-নারীর একত্র অধ্যয়ন। বৌদ্ধযুগের সৌদামিনী। **, বৌদ্ধযুগের শুরু বৌদ্ধযুগের সোমা বৌদ্ধুগের কুবলয়া। বৌদ্বযুগের'কাশী সুন্দরী বৌদ্ধযুগের ক্ষেমা।: বৌদ্ধযুগের প্রভবা। বৌদ্ধযুগের খুপ্রিয়া। বৌদ্ধযুগের কুক্সাবভী। **, বৌদ্ধযুগের রাজ্ননদিনী 'ালিনী। সঙ্কট অশে]কের কন্ত। সংঘমিদ্তা।

মহাত্মা শঞ্চরাচার্য্যের বিচারে ষধাস্থা! ভারতের ০০৪ ৰা ২১উ

ক. কী

অধিতী হাপিক্িডা যহিক। উর ভারী

পত্রাঙ্ক ।" ৭২-*৭৩' ৭৪---৯৩. ৯৪-১ ৩৮ ১০৮---১২০

১২০স৮১৩৮

১৪৩---১৪৭, ১৪৭-১৫২ ১৫২--+১৫৪. ১৫৪-_-১৫৬,

১৫৩ ১৫৭-_-১৫৮ ১৫৯--১৬২ ১৬২-_-১৬৬ ১৫৬১৭ ১৭৪.প১৭৩ ১৭৪-_১৭৫ ১৭৫---১৭৮ ১৮১৯২ ২৮২১৯৩

(২৯৬--২১৪

১12

বিষয়। | প্রাস্থ অস্থশান্্রে মহাশিক্ষিতা লীলাবতী। রা ২৬৭-২৮২ ম্হাশিক্ষিত বঙ্গ-মহিলা: বৈজয়ন্তী দেবী ... ২৮২--২৯৬

ম্হাশিক্ষিত! বঙ্গ-মহিল! প্রিয়ন্বদা দেবী। .*, ২৯৭-_:৩০৯, পূর্ববঙ্গের রাজা রাজবল্লভের ভ্রাতুশুত্রী মহা-

শিক্ষিতা শ্রীমতী আননমরী দেবী। . ,,.. . ৩১৯--৩১৪ রাজনীতিশান্তে মহাশিক্ষিত! রাণী ছুর্গীবতী। ৩১৪-_৩৪৮ রাজনীতিশান্ত্রে মহাশিক্ষিতা রাণী ভবানী। ৩৪৮--৪৪৪ রাজনীতিশাস্ত্রে মহাশিক্ষিত৷ রাণী অহল্যাবাই ৪98-_-৫২৫,

ভারতের শিক্ষিত-মহিলা'।

অতি প্রাচীনকালে , ভারতের আর্ধ্য'মহিলাগণের আচার-ব্যবহার, রীতি-নীতি শিক্ষা | চরম উৎকর্ষ লাভ করিয়াছিল। যে সকল গ্রন্থে আর্্য.মহিলাগণের আচার- ব্যবহারাদির কথা লিখিত আছে, মেই' সকল গ্রন্থের আলোচনা অস্মদ্দেশে প্রায়শঃ বিলুপ্ত হওয়াতেই অধুনা অনেকের হৃদয়ে নানাপ্রকার কুসংস্কার বন্ধমূল হইয়া গিয়াছে *যে সকল পুস্তকে ভারতীয় আরধ্য-মহিলাদিগের ইতিবৃত্ত দেখিতে পাওয়। যায়, সেই সকল পুস্তকের সমাক্‌ আলোচনা লুণ্ত হওয়াতেই মহিলাদিগের শিক্ষা বিষয়ে অনেকেরই অনেক প্রকার ভ্রান্ত ধারণা দেখিতে পাওয়া যায়। 'অতি গ্রাচীনকালের মহিলা- জাতির আচাঁর। বিনয়, বিদ্যা, প্রতিষী, ধর্মনিষঠা, তগস্থা, দুয়া, দান, পরাক্রম,

(২)

সাহস, সৌভাগ্য সমৃদ্ধি বহু প্রাচীন গ্রন্থে বর্ণিত আছে। মুসলমানদিগের ভারত আক্রমণকালেও ভারতীয় মহিলার অসাধারণ বীরত্ব সতীস্বের জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত সমগ্র জগৎকে বিস্ময়-সাগরে নিমগ্ন করিয়াছিল ভারত-্ললনার পবিত্র চরিত্র বর্ণনা করা মাদৃশ ক্ষুদ্র ব্যক্তির সামথ্যাতীত। অলৌকিক শক্তিসম্পন্ন মহধিগণ এবং ইন্দ্রাদি দেবতার! ভগবতী আদ্যাশক্তির সম্যক বর্ণনায় অক্ষম হইয়া এই- মাত্র বলিয়৷ স্তব করিয়াছিলেন যে, হে দেবি দুর্গে, হগতে যত প্রকার বিদ্যা আছে, যত প্রকার নারী আছে এবং যত প্রকার কলাবিদ্যায় স্শিক্ষিতা মহিলা আছে, সেই সকলই তোমার অংশ হে দেবি, তুমি স্ত্রীলোক, অতএব জগতের সমস্ত জ্্রীজাতিই তোমার ন্ায় পৃজ্যা মাননীয়া ।% যে দেশে মহাপ্রভাব মহধিগণ এবং ইন্ড্রাদি দেবতারা মহিলা-জাতিকে ঈদৃশ সম্মান দান করিয়া গিয়াছেন, সে দেশের স্ত্রীলোক পুরুষের নিকট যথাযোগা সম্মান উত্তম ব্যবহার প্রাপ্ত হয় না, কথা যাহারা বলে, তাহারা পক্ষপাতী এবং শাস্ত্রজ্তান-বিহীন ব্যক্তি

যে দেশে “এয়ে৷ সংক্রান্তি ব্রত,” কুমারী- পুজা, সধৰা- পুজা প্রভৃতি ধর্ম্নকৃত্য অনুষিত হুইরা থাকে, "যে দেশে কুমারা- পূজা সধবা-পূজার সময়ে কুমারীর সধবার

পাপা পাপিশিপিপিতত

বিদ্যা সমস্তাস্তব দেবি ভেদাঃ রিং সমস্তাঃ মকলা জগতসু 1-চত্তী |

(৬) সুচারু চর্রণ-যুগল অলক্তকে রঞ্জিত হইয়া থাকে এবং উহা গঙ্গাজলে বিধৌত হইয়! উত্তমোত্তম পুষ্প, চন্দন, মালা, বন্ধন নৈবেদ্য দ্বারা অঙ্িত হয়, যে দেশে কুমারী-পুজার নিমিত্ত মহধিগ্ণ সং 'স্কৃত মন্ত্র পধ্যস্ত রচনা করিয়৷ গিয়াছেন এবং দেই কুমারী-পুজা-সময়ে ধপ-ধুনা গুগলের স্মগন্ধি ধূমরাশিতে সমগ্র পল্লী স্থুবাসিত হয়, সেই দেশের-»সেই একমাত্র ভারতবর্ষের আধ্য-সন্তানগণই নারীর গম্মান-দানে একমাত্র'মভিজ্ নারীদিগকে কিরূপে সন্মান করিতে হয়, তাহা শিখাইবার জন্য মনু, যাজবন্কা, ব্যাস, দক্ষ, অঙগিরাহ, বশিষ্ট প্রস্ততি মহুধিগণ ভুরি ভূরি শ্লোক বুচনা করিয়। গিয়াছেন। মনু বলিয়াছেন £--%

পিতা, ভ্রাতা, পতি দেবর প্রভৃতি যদি গুহের কল্যাণ- কামনা করেন, তাহা হইলে তাহারা যেন তাহাদের গৃহের নারীদিগকে যথাযোগ্য সম্মান প্রদান করেন, পুজা করেন

পেশী তশ তপপপাশপপপাপপীলপাপাপািপীপাপিপিপপেপিপপ লগ শিশির শিশিপাতিপশাপািপীশিপশিশপিপিস

পিতৃভিন্রখতৃভিশ্চৈতাঃ পতিভিদেবরৈস্তথা পৃজ্যা ভূষয়িতব্যাশ্চ বহুকল্যাণমিঙ্ছভি; যত্র নার্যস্ত'পৃজ্যস্তে রমস্তে তত্র দেবতাঃ। খব্ৈতাস্ত, পৃজ্ঞান্তে সর্বাস্তত্রাফলা; ক্িয়াঃ শোচত্তি যাময়ো যত্র বিনশ্টত্যাণ্ড তৎকুলম্‌।

. ন'শোচস্তি তু যত্রৈতাঃ বর্ঘতে তদ্ধি সর্বদা তম্মানেতাঃ সদা পৃজ্যা ভূষণাচ্ছাদনাশনৈঃ | ভূতিকামৈর্নবৈমিত্যং সংকারেবৃত্সবেযু চ।-মন |

(৪ )

এবং বিবিধ বস্ত্র, অলঙ্কার খাদ্য-দানে সন্তুষ্ট রাখেন যে গৃহে নারীর উপযুক্ত সম্মান পুঞ্জা হয় এবং উত্তম খাদ্য-বস্ত্রঅলঙ্কারাদ্রি-দানে নারীকে সন্তুষ্ট রাখা হয়, সে গৃহে তেত্রিশ কোটি দেবতার আবির্ভাব * হয়, দেবতারা তথায় শদৃশ্যরূপে বিরাজ করেন। আর যে গৃহে নারীর পুজ! সম্যক্রূপে অনুষ্ঠিত হয না, সে গৃহের সমস্ত ক্রিয়া- কাণ্ড বিফল হইয়া যায়। যে গৃহে নারী উৎপীড়িত হইয়। ছুঃখ পায়, কষ্টে জীবনযাত্র! নির্ববাহ করে, এস গৃহের-_ে কংশের শীঘ্র ধ্বংস হয়। যে কুলে নারী মনের সুখে দিন- স্বাপন করে, সদা আপ্যায়িত থাকে, সেই কুল শীঘ্র সম্ৃদ্ধি- শালী হইয়া উঠে। অতএব ধাছারা কুলের মান-সম্ত্রম সমৃদ্ধি কামনা করেন, তাহারা উত্তম খাদ্য-বন্ত্র-অলম্কারাদি- দানে তাহাদের নারীদিগকে যেন সদা পুজ! করেন। কারণ, নারীই গৃহের দেবতা যেমন দেবতাকে পুষ্প, চন্দন, মাল্য, ধূপ, বস্ত্র, অলঙ্কার নৈবেদ্য দ্বারা পুজা করিতে হয়, তত্রপ উত্তম বস্ত্র, অলঙ্কার, খাদ্য ও.গম্ধ্রব্যাদি দ্বারা দেবতারূপিণী নারীকেও পুজা করিতে হয়। ইহা স্ত্ৈশ দিগের কথা নয়, ইহা চির-ব্রক্মচারী মহাধগণের কথা।

আত্মীয় স্ত্রীলোকদিগকে কিরূপে সম্মান করিতে হয়, তাহা শিখাইবার জন্য মনু বলিয়াছেন, % মাতৃ-ভগিনী,

সী ৮৮ লী গা পাপ

* মাতৃঘস! মংতুলানী শ্বজ্ীরথ পিতৃঘসা |. সম্পূজা গুরুপত্বীবং সমাস্তা! খুকভাধ্যয়া

(2৫...)

মাতুলানী, পিতৃ-ভগিনী এবং শ্বশ্রী-(শাশুড়ী) কে মাতা গুরুপত্রীর শ্যায় প্রণাম করিয়া! 'ঠাহাদের পদধূলি লইবে। প্রবাস হইতে প্রত্যাগত হইলে বয়োজ্যেষ্ঠ। জ্ঞাতিপত্বী, বৈবাহিক (ব্রেয়ান্‌) এবং পিতৃব্য-পত্ী ( খুড়ী জেঠাই ) প্রভৃতিকে প্রণাম করিয়া পদধূলি লইবে। কারণ, ইহার! মাতা গুরুপতীর ন্যায় মান্ত। বয়োজোষ্ঠা সবর্ণা ভ্রাত- পত্তীর লইয়া প্রণাম করা দেবরের দৈনিক কর্তব্য কম্্ম। * পিতৃভগিনী, মাতৃভগিনী জোষ্ট। ত্বগিনীর সহিত মাতৃবৎ রি করিবে। মাতা ইহাদের অপেক্ষা গুঁরু- তমা % পুজনীয় আত্মীয় স্ত্রীলোক বাতীত সাধারণতঃ সত্রীজাতিমাত্রের প্রতি সর্ব্বদা মানব অতি উত্তম ব্যবহার করিবে এবং সম্মন প্রদর্শন করিবে এই জন্য মনু বলিয়াছেন, ণ' চক্রযুক্ত যানে (গাড়ীতে) আর ব্যক্তি, বৃদ্ধ রোগী, ভারধাহক ( মুটে ), নারী (যে কৌন জাতীয়া এবং যে কোন ধর্ম্মিণী হউক না কেন), গুরুগৃহ হইতে বিদ্যা- শিক্ষা সমাণ্ড করিয়া প্রত্যাবৃত্ত বিদ্বান্‌ ব্রাহ্মণ, হস্তী,

পিক পালাপপিপাশীীপপীপ পাপা ীশীিীসসপীপ।

তুভাষ্লোপসাগ্রাহ্থা ভি |

রিপ্রোষ্য তুপমগ্রাহা 1 জ্ঞাতিসম্বন্িযোধিত; পিতুর্ভগিন্াং মাতুশ্চ জ্যায়স্যাঞচ শ্বসর্যপি।

মাতৃবৎ বৃত্তিমাতিষ্ঠেৎ মাতা তাভ্যো৷ গরীয়সী 1-_মন্থু॥ চক্রিণে দ্লমীস্স্য রোগিণে! ভারিণঃ স্্রিয়াঃ। * বাক্য বাজ্ঞশ্চ পম্থা দেয়ো বরস্ত চ1--মন্ু।

( )

ঘোটক, সৈন্য ভূৃত্যবর্গে পরিবেষ্টিত রাজা এবং বর, এই সকল লোককে অগ্রে যাইতে দিবার জন্য পথিক পথ ছাড়িয়া দিবে। স্ত্রীলোকের প্রতি সম্মান-প্রদর্শনার্থ শাস্ত্রে ভূরি ভূরি প্রমাণ আছে। মহধি যাজতবন্ বলিয়াছেন, * ভর্ত/ ভ্রাতা, পিতা, জ্ঞাতিবর্গ,শ্বশ্ন ৫শা শুড়ী), শ্বশুর, দেবর এবং অন্যান্য বন্ধুগণ, উত্তম খাদ্য, বন্্, অলঙ্কীর দ্বারা কুল- বধূকে দেবতার মত পুজা করিবে কুলমহিলা কারাগারের বন্দিনী নয়. কিংবা কুকুর-বিড়ালের ন্যায়, হেয় .পণ্ট নয় কিংবা দাস-দাসীদিগের ন্যায় কঠোর পরিশ্রমের জীবও নয়"; কিন্তু কুলমহিলা গৃহের বাস্তুদেবতাশ্বরূপ। মনু বলিয়াছেন,ণ* গৃহে স্ত্রী যদি সু প্রসন্না থাকেন, তাহা হইলে সমস্ত কুলই স্প্রসন্ন থাকে, আর স্ত্রী যদি অপ্রসন্না থাকেন, তাহা হইলে সমস্তই অপ্রসন্ন বলিয়া বোধ হয়। ধাহাদের উত্তম, খাদা, বস্ত্র, অলঙ্কার দ্বার সামর্থ্য নাই, তাহারা স্ব স্ব স্ত্রীর মনস্তুষ্টির জন্য যেন অসঙ্গত উপায়ে সকল বস্তু সংগ্রহ না করেন। পতির স্থুমধুর বাক্য, উত্তম ব্যবহার, সদা যত, সেহ-সমাদরই পীর উত্তম খাদ্য-বনত্র অলঙ্কারাদি বস্তুর স্থানাপন্ন হওয়াই উচিত। কুলমহিল!

শি ািশীাশপি পিপাশীশিি শশা ১০ ক্ষ

রতভরাতৃপিতৃজ্ঞাতিসবশ্গুরদেবৰৈ: |

বন্ধৃভিষ্চ স্তরিয়ঃ পূজ্য। ভূষণাচ্ছাদনাশনৈঃ ।--যাজ্জবন্ধ্য | 1 স্রিয়ান্ত রোচমানায়াং সর্ধং তদ্রোচতে কুলম্‌।

তন্তাং তূরোচমানায়াং সর্ধমেব রোচতে ।--মন্ু

নি

গৃহস্ফোচিত কার্যে শিক্ষিত! হইবে। গৃহকাধ্যে স্্রীরজাতি থশিক্ষিতা হইলে গৃহে কোন বিষয়ে বিশৃঙ্খলা ঘটে না। গুহে বহু দাস-দাসী থাকিলেও স্ত্রীলোক আলম্তে গুদাস্তে কালযাগন কর্ষরবে না; দাস-দাসীদ্রিগের কার্যাবলী নিরীক্ষণ করিবে; তাহাদিগকে উত্তমরূপে স্ব স্ব কার্যে নিয়োজিত করিয়া রাখিবে। স্ত্রীলোক সদা বিলাসে আসক্ত থাকিয়া নিজীব চিত্রপটের ন্যায় বিরাজ করিবে না। এইরূপ,ভাবে দা অবস্থান করিলে নারীর স্বাস্থ্যভঙ্ হয় এবং মেদ বদ্ধিত হওয়ায় তাঁদৃশী নারী অতি স্থুলাঙ্গী হইয়। পড়ে, ক্রমে বাতবাধি দ্বারা আক্রান্ত হইয়া কষ্ট "পায় এবং অবশেষে তাহার শরীর ছূর্ববহ হইয়া পড়ে। সেই জন্যই মনু বলিয়াছেন £_-% নারী গৃহকার্ষ্যে দক্ষ হইয়া গৃহের বস্তু সকল পরিস্কৃত, পরিচ্ছন্ন যথাস্থানে তৃসভ্জিত করিয়া রাখিবে; সংসারযাত্রা-নির্ববাহের্‌ জন্য অত্যধিক ব্যয় করিবে না। আয় অনুসারে ব্যয় করিবে। আয় ব্যয়ের একটা, “হিসাব-নিকাশ”: রাখিবে। না বুঝিয়া অতিব্যয় করা দারিজ্র্যের প্রথম সূচনা অদ্য বৃহৎ রৌহিত মত্স্্ের *পোলাউ” ভক্ষণ, আর কল্য খাদ্যাভাবে উপরাসে ' দিনযাপন শান্ত্রনিষিদ্ধ। গৃহের দাস-দাসী-

2 তে ০০ দা পাস

সা প্রহষটয়া ভাব্যং গৃহকাধ্যেযু দক্ষয়া। সুসংস্কৃতোপস্করয়া ব্যয়ে চামুক্তহস্তয়। |__মন্

(1৮)

দিগকে উত্তমরূপে ভোজন করাইবে। তাহাদের প্রতি গৃহকর্রী সরল উদার ভাব প্রদর্শন করিবে। তাহাদের সহিত পুক্র-কন্তার মত ব্যবহার করিবে

শকুন্তল! যখন শ্বশুরালয়ে গমন করিতেছিলেন, তখন তাহার প্রতিপালক পিতা মহফি কণু তাহাকে এইরূপ উপদেশ দিয়াছিলেন ৫-% শ্বশুর শঙ্খ (শ্বাশুড়ী) প্রভৃতি গুরুজনের সেবা করিও তোমার পতির যদি অন্য কোন পত্তী থাকেন, তাহা হইলে তাহার সহিত ধপ্রয়-সখীর ন্যায় মাচরণ করিও কদাপি উহার সহিত বিবাদ-বিসংবাদ “করিও না। যদ্রি কদাচিৎ কোন কারণ বশতঃ তোমার পতি তোমার প্রতি ক্রুদ্ধ হইয়া তোমাকে ভত্-সনা করেন, তাহা হইলে তীহার প্রতি রুট হইও না। তীহার প্রতিকূল আচরণ করিও মা। পরিজনের সহিত, দাস-দাসীদিগের সহিত সরল ও,উদার ব্যবহার করিও ৌভাগ্া-সমৃদ্ধি হইলে কদাচ গর্বিবিত হইও না। এইরূপ উপদেশমত কাধ্য করিলেই প্রশংসনীয় গৃহিণীর পদ প্রাপ্ত হইতে পারিবে যে নারী এইরূপ উপদেশের বিপরীত আচরণ করে, সে

শুশ্রন্ব গুরূন্‌ কুক প্রিয়সথীবৃ্তিং সপত্রীজনে ভর্ত,বিবপ্রকৃতাপি রোষণতয়া মাস্ম প্রতীপং গমঃ॥ ভূয়িসটং ভব দক্ষিণা পরিজনে ভাগোনুৎসেকিনী, যান্ত্যেবং গৃহিণীপদং যুবতয়ো বামাঃ কুলস্তাধয়ঃ | অভিজ্ঞানশধুস্তলম্‌

( )

গৃহের ব্যাধিস্বরূপ কণ্টকন্বরূপ হইয়া সদা পুতি প্রভৃতির 'মানসী ব্যথ! উৎপাদন করিয়া থাকে স্ত্রীলোকের স্বাধীনত| শান্ত্রনিষিদ্ধ ভারতীয় ব্যবহার-বিরুদ্ধ। শাস্্ বলেন ৪%

স্ত্রীজাতি শৈশবে পৈতার রক্ষণ।বেক্ষণের অধীন হইয়। থাকিবে, যৌবনে পতির রক্ষণাধান হইবে এবং বুদ্ধা- বস্থায় পুল্রের সেবাধীন হইবে। স্ত্রীলোক কোন কালেই স্বাধীনতা পাইতে পারে না।

মনু বলিয়াছেন, ণ* বালিকাই হুউক্‌, যুবতীই হউক্‌ ব্রা বৃদ্ধাই হউক্‌ না কেন, কুলমহিল কোন কালেই নিজ্‌ গুহেও স্বাধীনভাবে কোন কার্য করিতে* পারে না। নিজের গৃহমধ্যেই যখন স্বাধীনত। নিষিদ্ধ হইয়াছে, তখন বাহিরে স্বাধীনতা অত্যন্তই *নিষিদ্ধ। মহধি যাজ্ঞবন্ক/ বলিয়াছেন, *পঃ স্ত্রীলোক বাল্যকালে পিতার অধান হইবে, বিবাহের পর পতির অধীন হইবে এবং বৃদ্ধাবস্থায় পুজদিগের রক্ষণাবেক্ষণে থাকিবে.। যদি পিতা, পতি বা

পিতা রক্ষৃতি কৌমারে ভর্তা রক্ষতি যৌবনে

পুজো রক্ষতি বাদ্ধক্যে স্ত্রী স্বাতন্্যমর্তি |

বালয়া বা যুত্যা বা বৃদ্ধয়।৷ বাপি ফোষিতা। |

স্বাতস্তর্েণ কর্তব্যং কিঞ্চিৎ কণ্ম গৃহেষপি |

রক্ষেৎ কন্যাং পিতাবিন্নাং পতিঃ পুশ্রান্ত বার্ধীকে।

অভাবে জ্ঞাতয়স্তেযাং স্বাতন্্যং কচিৎ স্ত্রিয়াঃ ।-_যাজ্ঞবন্ধ্য

( ৯০ )

পুক্র না থাকে, তাহা হইলে ভ্ঞাতি বা অগ্য আত্মীয়গণের রক্ষণাধীন হইবে। স্ত্রীলোক কোন কালেই স্বাধীনতা পাইতে পারে না। শাস্ত্র পুনরায় বলিতেছেন £--%

পিতা, পতি পুন্রগণ হইতে পৃথক্‌ শুইয়া স্ত্রীলোক কদাপি কোন স্থানে বাদ করিবে না। ইহাদের নিকট হইতে পৃথক্‌ হইয়। বাস করিলে পিতৃকুল শ্বশঠরকুলের নিন্দা হয়। ভারতের কুলমহিলা লঙ্জাশীলা হইবে। ভারতের কুলমহিলার পক্ষে পরপুরুষের” মুখ-দর্শন কর! শান্স্নিষিদ্ধ। ভারত-ললনা পরপুরুষের দৃষ্টিগোচর হুইবৈ না। পরপুরুষের দৃষ্টি-ব্যাঘাতের জন্য মবগুটন- বতী হইবে পরপুরুষের মুখ দেখা দুরের কথা, শান্ত বলিতেছেন £--

কুলমহিল! চন্দ্র-সূরধ্য পর্য্যন্ত দর্শন করিবে না সেই জন্য শাস্ত্র কুলমহিলাকে “অসুষ্যম্পশ্য।” হইতে উপদেশ করিয়াছেন। এমন কি, পতির মুখ ছাড়। পুংলিজ-শব্দ- বাচ্য বৃক্ষাদি পদার্থকেও নিরীক্ষণ করিকে না। যেনারী এইরূপ শান্ত্রনীতি এবং প্রাচীন ভারতীয় পবিত্র হিন্দু সমাজ-নীতি অনুসারে পরিচালিত হয়, সেই নারীই ষথার্থ ধর্মমচারিণী। নতুবা কেবলমাত্র ' “মধুসংক্রান্তি ত্রভ”

* পিত্রা ভত্রণ সুতৈর্বাপি নেচ্ছেৎ বিরহমাত্মনঃ। এধাং হি বিরহেণ স্ত্রী গর্ঠ্ে কুষ্যাদুভে কুলে

( ১৯ )

করিলেই কিংবা নাসিকায় তিলক অঙ্কিত করিয়৷ জপমালা লইয়া! জপ করিলেই মাত্র নারী ধর্মাচারিণী হয় না। শান্ত বলিয়াছেন --গোপনে মদ্য-মাংস-সেবন, ছুষট-্ত্ী-পুরুষের সহিত সংসর্গ, গতির সহিত বিচ্ছেদ, স্বাধীনভাবে ইতস্ততঃ পর্যটন, পরগুহে শয়ন পরগুহে বাস এই ছয়টি নারীর পক্ষে অত্যন্ত দুষণীয়।

সত্রীজাতি রত্বত্বরূপ। হীরক-মুক্তা-মাণিক্যাদি রতু যেমন লোকে অতি মত্বে সাবধানে “মখ্মল্” প্রভৃতি অতি “কোমল বস্ত্-সমাচ্ছাদিত নূচারু কারুকার্যা সুশোভিত পেটিকার মধ্যে রক্ষা করে, কিন্তু ঘাটে মাঠে পথে জঙ্গলে অনাদূতভাবে ছড়াইয়া রাখে না, তদ্রুপ ঝুঁলমহিলাকে স্থসজ্জিত স্বাস্থ্যকর উত্তম মনোরম আবৃত গৃহে রাখিয়া প্রতিপালন করিবে; ঘাটে মাঁঠে হাটে পথে জঙ্গলে অবহেলা পূর্বকক অনাবৃতভাবে বিকী্ণ করিয়া রাখিবে না। রত্ব অবহেলার বন্ত্ব নয়। রত্বের প্রতি রত্বেচিত ব্যবহার করিবে। রত্বুকে অবহেলা করিলে দস্থ্য-তস্করাদির ভয় অবশ্যস্তাবী এবং ছল্সবেশী ভদ্রের ভয়ও অনিবার্ধ্য।

কুলমহিলা সর্বদা যেখানে বাস করেন, তাহার নাম অন্তধ্পুর ; ' তাহার ভ্বপর নাম শুদ্ধান্ত। সে স্থান সদাই শুদ্ধ এবং উহা "পরপুরুষের দৃষ্টির মন্তরালে অবস্থিত হওয়া উচিত কলিয়া উহা শুদ্ধান্ত নামে অভিহিত। উহা! জনতা- পুর্ণ হট্র "সাধারণ পথের ন্যায় অনাবৃত, অপবিত্র

( ১২)

সাধারণের গম্য স্থান নহে। উহা আবৃত পবিত্র স্বজনগণের অধুাষিত স্থান। কুলমহিলারূপ রত্বু তাদৃশ স্থানেই রক্ষণীয় বন্ত। যাহার যেমন আর্থিক অবস্থা, তিনি তদনুসারে বাসতবন নিজের আয়ত্ত করিয়া তার কুল- মহিলাদিগকে সাধারণের দৃষ্টিবহিষ্ভূতি করিয়া তথায় রক্ষা করিবেন, ইহাই শান্ত্রবাক্যের তাণুপত্্যার্থ। নিজের অবস্থানু- সারে স্থানকে যথাশক্তি পরিষ্কত, পবিত্র, মনোরম স্বাস্থাজনক করিয়া রাখিতে সদ চেষ্টা'করিবে। মনু বলিয়াছেন ঃ-ন্ত্রী, রত্ব, বিদ্যা, সতাধন্ম, পবিত্রতা, স্তমধূর উপদৈশবাক্য এবং নানাবিধ শিল্প সকলের নিকট হইতেই গ্রহণ করা' যাইতে পারে। সেই জন্য শান্তর আরও বলিতেছেন যে, “ল্ত্রীরত্বং দুক্ধুলাদপি” অর্থাৎ স্্ীজাতি রত্ববিশেষ বলিয়া অপেক্ষাকৃত নীচ কুল হইতেও উহা গ্রহণ করা যাইতে পারে। ভ্ত্রীজাতির উৎকৃষ্টতা” পবিত্রত প্রতিপাদন করিবার জন্যই শান্ত্র এরূপ কথা বলিয়াছেন এই জন্যই শ্ত্রীজাতি ঈশ্বরের উত্তম সৃষ্টি উত্তম অর্ধা বাঁলয়া বর্ণিত হইয়া থাকে মনু বলিয়াছেন £-_

যে কুলে ভর্তা ভার্যার প্রতি সদা সন্তুষ্ট থাকেন এবং ভার্ষ্যাও ভর্তার প্রতি পর্ববদা' সন্তুষ্ট থাকেন সে কুলের কল্যাণ অবশ্য্তাবী। সন্তোষই কল্যাণের একমাত্র মূল কারণ পতির ধনাভাব হেতু পতি যদি উচ্চ অট্টা লিকায় বাস করিতে না পারেন, তথাপি সাধবী পত্বী নির্ধন

1. 5:

পতির সহিত পর্ণকুটারে বাস করিয়াও এবং দিনা্তে শাকান্নমাত্র তক্ষণ করিয়াও, মহাসন্তেষ অনুভব করিবে কন্যার পিতা! স্বজাতীয় ৰা বিজাতীয় উপায়ে অর্থ উপার্জন করিয়া ধদি আপনাকে ধনী বলিয়া মনে করে, ধনমদে গর্বিত হয় এবং নিজের কন্যাকে দরিদ্র জামাতার পর্নকুটারে না পাঠাইয়! নিজ অট্রালিকায় খাবজ্জীবন আবদ্ধ করিয়া রাখে, তাহা হইলে অসাধু পিতা দত্তাপহারী হইয়া মর্রণান্তে * নরকে গমন করে। কন্ঠাকে জামাতার হস্তে সম্প্রদান করিলে কন্যাতে পিতার আর কোন স্বদ্ধ থাকে না; উহা জামাতার বস্তু হইয়া যায়। এই জন্য শাস্ত্র বলিয়াছেন :-_সম্প্রদানির পর কন্যা পরকীয় ধন হইয়া পড়ে। বিবাহের পর পতি পরিত্যাগ করিয়া পিত্রালয়ে যাবজ্জীবন বাস করা স্ত্রীর পক্ষে অত্যন্ত নিষিদ্ধ এই জন্য অভিজ্ঞ্ঞানশকুন্তলে লিখিত আছে,

“সধবা নারী সতীত্ব রক্ষা করিয়াও যদি যাবজ্ভীবন পিতৃগৃহে বাস করে, তথাপি জগতের ছিদ্রান্েষী নরনারীগণ তাহার চরিব্রে-বিষয়ে মানাপ্রকার সন্দেহ করিয়৷ থাকে; অতএব স্ত্রী পতির অপ্রিয়! হইলেও, পততি-গৃহে নানাবিধ কষ্ট* সত্বেও পতিঃসমীপেই সর্ববদ। বাম করিবে। *কারণ, আত্ীয়-মিত্র-বান্ধবগণ পতি-সমীপেই সধবা নারীর সদা অবশ্থিতি দেঞিতে এঁকান্তিক ইচ্ছা করেন,” স্বর্গ পর্ববতের ম্যায় অচল স্থির হইয়া পতি-গুহে যাবজ্জীবন

( ১৪ )

বাদ করিবার জন্য বেদ নববধূকে অমূল্য উপদেশ দিয়াছেন। “যেন যাবজ্জীবন পতি-গৃহেই বাস করিতে পারি, পতি-গৃহ পরিত্যাগ করিয়া যেন অন্যাত্র কুত্রাপি না যাই,” পরমেশ্বরের নিকটে এইরাপ প্রার্থনা করিবার জন্য বেদ স্ত্রীজাতিকে বিশেষভাবে উপদেশ করিয়াছেন।

স্ত্রী সদা প্রিয়া প্রিয়বাদিনী হইবে। কোন ভার্থার “মুখে মধু হৃদে বিষ” হেতু তিনি বাহিরে লোকাচার- রক্ষণার্থ প্রিয়বাদিনী বা মধুরভাষিণী “হইয়া, থাকেন। কোন ভার্ধ্যার অন্তরটি খুব পবিত্র হইলেও, দয়া, স্নেহ ,ও "প্রেমে তাহার হৃদয় পূর্ণ হইলেও তিনি মুখরা, অপ্রিয়- বাদিনী, (কাপনস্বভাবা, কটুভাষিণী কোলাহলরত হওয়ায় পতির প্রিয়া বা গ্রীতিপ্রদা হইতে পারেন না।

এই জন্য নীতিশান্ত্র বলেন যে, জগতে এই ছয়টি বড়ই স্থখকর। (১) সামান্য ব্যয়ের সহিত প্রচুর আয়, (২) সঙ্গা নীরোগ শরীর, (৩) প্রিয়া ভাষ্যা, (8) প্রিয়বাদিনী তাধ্যা, (৫) বশ্য পুল, (৬) অর্থকরী বিদ্যা। স্থলে ভাধ্্যার প্রিয়াত্ব এবং প্রিয়বাদিনীত্ব এই দ্রইটি গুণকে পৃথক্‌ পৃথক্রূপে গণনা করা হইয়াছে। শান্্ে ভাধ্যাকে পতির অর্দাঙ্গিনী কহে। ভার্্যাই উত্তম মগ্ধা্গ : অদ্ধা- ঙ্গিনী গৃহিনীর সহিত ধর্মকর্ম অনুষ্ঠান করাই পির উচিত কাধ্য অধর্ব-বেদ (১৪ কাণ্ু, অনু, ১৮ মন্ত্র) উপদেশ করিয়াছেন, “ছে নারি ! তুমি দেবর-ঘাতিনী

(১৫)

পতি-ঘাতিনী হইও না; পতি দেবরের মনে কদাপি পীড়া জন্মাইও না; চর তাহাদিগকে সম্ষট রাখিও এবং তাহাদিগের প্রতি হিতাচরণ করিও; গুহস্থাশ্রমের গে, মহিষ, ছাশ, ঘোটক প্রভৃতি প্রতিপালা পশু পক্ষিগণের কলাণসাধন করিও; তাহাদিগকে যত্তের সহিষ্ভ প্রাতপালন করিও; তাহা হইলেই তুমি ঈশ্বরের কৃপায় বীর-প্রপবিনী হইবে ; পুক্র-পৌন্রাদি-সম্পন্ন হইয়া ন্বখে দিনযাপন ,করিবে। তুমি পতি দেবরাদির মঙ্গলবিধায়িনী হইয়া গৃহস্থাশ্রমের অর্চনীয় হোমাগ্নিকে আরাধনা! করিও।» পুরাকালে পত্বী পতির সহিত বৈদিক"

পাঠ পূর্বক একত্র বসিয়! হোম করিতেন।

সত্রীলোকের পাতিত্রত্য-ধর্থ্ম |

স্্রীলোকের পত্িই একমাত্র গতি আরাধ্য দেবতা মনু বলিয়াছেন, “পতি কদাচার, কুম্বভাব, যথেচ্ছাচারী, বিদ্যাবুদ্ধি-বিহীন রঁপপুণ-বিহীন হইলেও সাধবী স্ত্রী পতিকে দেবতার যায় তক্তি করিবে। স্ত্রীলোকের পতি ভিন্ন যত নাই, পতি ছাড়া অন্য ব্রত নাই, পতির সেবা করিলেই সমস্ত ব্রতের ফল লব্ধ হয় ; পতির সেবা করিলেই উপবাসের ফল-লাভ-হয়; পতির সেবা করিলেই নারী স্বর্গেও পৃজনীয়া হয়েন।

( ১৩ )

_ পতিতা।গিনী পতি-বিদ্বেষিণী নারীর সহিত সতী সী বাক্যালাপ করিবে না মহষি যাজ্জবন্কা বলিয়াছেন, পতির আদেশপালন করাই পত্বীর একমাত্র পৰম ধণ্ম। যে গৃহে পতি পত্রী পরস্পর পরস্পরের প্রতি অনুকূল থাকেন, কেহ কাহার প্রতিকুলতা্র৭ করেন না, সে গুভে ধর্ম-মর্থকাম এই তিবর্গের বুদ্ধি হয়।”

মহষি যাজ্ভবন্থ্য বলিয়াছেন, “গৃহবধূ সর্ববদা গুহোপকরণ গ্যহশ্মিত বস্ত্ৃগুলিকে সুন্দরভাবে সাজা ইয়া-গুছাইয়৷ রাখিবে ; রন্ধনাদি কার্যে স্নিপুণ। হইবে; সর্বদা হৃফটচিন্তে হাস্তমুখে দিনঘাপন করিবে; প্রয়োজনাতিরিস্ত ব্যয় করিবে না; প্রতিদিন শ্বশ্ঠর শ্ব্শী ঠাকুরাণীর চরণে প্রণাম করিবে এবং পতির বশবত্তিনী হইয়া সকল কাধা করিবে মহুধি যাল্জবন্কা বলিয়াছেন, যে নারী পতির প্রিয় হিতকর কাধ্যে সদা বাপৃতা, সদাচার- সম্পন্ন। এবং জিতেন্দ্রিয়া, তিনি ইহকালে স্থুযশ পর- কালে অনুপম উত্তম গতি প্রাপ্ত হয়েন। মহধি দক্ষ বলিয়াছেন, পত্বীই গৃহস্থাশ্রমের মুল-দেবতা পত্বী যদি পতির বশবস্তিনী হয়েন, তাহ! হইলে গৃহস্থাশ্রমের তুল্য মহান্্খকর স্থান আর কুত্রাপি নাই। আশ্রমের 'ভুলনা 'নাই। পত্তী বশে থাকিলে আশ্রম স্বর্গ অপেক্ষাও স্থখকর স্থন হইয়! উঠে। স্ত্রী যদি মথেচ্ছাচারিণী হইয়া পড়ে এবং পতি যদ্দি অত্যন্ত স্ত্রিণতো অতি-গ্রীতি-

73

বশতঃ প্রথমকাল হইতে স্ত্রীকে নিবারণ না করে, তাহা হইলে এীন্ত্রী প্রথমে উপেক্ষিত রোগের ন্যায় বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় এবং পশ্ঢাঁ অবশ্য হইয়৷ মহা ক্রেশদায়িনী হয়

যোস্দ্রী সর্দ পতির অনুকূল আচরণ করেন, যিনি কর্কশভাষিণী না হইয়? সদ! মধুরভাধিণী হয়েন, ব্বধন্মন- রক্ষায় সদা ব্যাপূতা থাকেন এবং পতির প্রতি অকপট তক্তি প্রদর্শন করেন, তিনি নারী নহেন, তিনি দেবতা 1

এই মানুষই দেবত্ব-গুণসম্পন্ন হইলেই দেবতা বলিঘ! কথিত হয় এবং পশুত্ব-গুণসম্পন্ন হইলেই পণ্ু বলিফ! আখ্যাত হয়।

মহধি দক্ষ বলিয়াছেন, “যে পুরুষের পত্তী অনুকূলা বশ্যা, তাহার ইহলোকেই স্বর্গম্বখভোগ হয় এবং যাহার পত্তী প্রতিকূল অবশ্যা, তাহার ইহুলোকেই নরক- ভোগ হয়। স্খভোগের নিমিত্তই লোকে গুহস্থাশ্রমে বাস করে। পৃহস্থাশ্রমে পত্বীই স্থখের মূল-কারপ | যে পত্বী বিনীতা, স্বামীর চিত্তানুবন্তিনী, স্খশাস্তিদায়িনী এবং বশ্যা, তিনিই যথার্থ পত্বীপদবাচ্যা হয়েন।

*পতি দরিদ্র ও*রোগার্ত হইলে যে পত্ী তীহাকে ॥অবরজ্ঞ|। করে এবং তাহার সেব। করে না, সে পত্বী জম্ম- জন্মান্ত'রৈ গৃঁী, কুকুরী বা মকরী হইয়া অশ্ষে “কেশ ভোগ করে।”

(১৮)

'স্কন্নপুরাণে লিখিত মাছে, “পত্রী কদাপি পতিবাকা লঙ্ঘন করিবে না। পতিবাক্য-পালনই পত্বীর পরম ধর্ম্ন, একমাত্র ব্রত এবং একমাত্র দ্েবার্চনা। পত্বী সদা পতিবাক্য পালন করিবে। | |

পতি কাপুরুষই হউন্‌ আর দরিদ্রই হউন্, বৃদ্ধই হউন বা রোগগ্রন্ত হউন্‌, স্ুুসময়স্থ হউন্‌ বা ছুঃসময়স্থ' হউন্‌ "না, কেন, পত্বী পতিকে কদাপি উপেক্ষা করিবে না।

অকপট পবিত্রহদয় স্ত্রী, পতি হৃষ্উ হইলে হাটা হয়েন; পতি কোন কারণবশতঃ বিষঞ্ বদন হইলে নিজেও বিষপ্-বদনা হয়েন। সাধবী স্ত্রী পতির সম্পদেও অনুগতা৷ এবং বিপদেও অনুগতা হইয়া পতির সুখে স্বখিনী এবং দুঃখে হুঃখিনী হয়েন।

পতির সেবা করিলে অশ্বমেধ-যজ্জের ফল-লাভ হয়। পতির সেবা করিলে গঙ্গাস্ান, তীর্ঘদর্শন, দেবালয়ে গমন, পুরাণ-পাঠ-শ্রবণাদি পুণ্যকার্যের ফললাভ হয়। যদি কোন নারী গঙ্গান্নান করিতে বা কোন তীর্থ দর্শন করিতে ইচ্ছা করেন, তাহা হইলে তাহাকে, কষ্ট ভোগ করিয়া 'গঙ্গাতীরে কিংবা কোন তীর্ঘক্ষেত্রে বা কোন দেবালয়ে অথবা দেবী-মন্দিরে যাইতে হইবে না; যাইবার ক্লোন প্রয়োজনই নাই কারণ, গুঁহে পতির পাদোদক পান, করিলেই গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী, কাবেরী প্রসৃতি পুণ্যতোয়া নদীতে স্নানের ফললাত হয় এবং কাশী, প্রীক্ষেত্র, বৃন্দাবন,

(৯৯ )

মথুর! প্রভৃতি তীর্ঘ-দর্শনের ফললাভ হয়। কারণ, পতি শিব বিষুও হইতেও শ্রেষ্ঠ পতির পাদোদক পান করিলে শিব বিষু-দর্শনের ফললাভ হয়।

পতির আঙ্ঞ| বিনা যে নারী কোন ব্রত উপবাস করে, সে নারী পতির স্ায়ুক্ষয় করে এবং মরণান্তে নরকে গ্রমন করে। পতিব্রতা নারী গৃহে ঘৃত, লবণ, তৈল, ত্ৃগুল, ইন্ধন প্রভৃতি বস্ত্র ফুরাইয়! যাইবার পূর্বেবেই (সেই সেই বস্তুর অন্ভাব পতিকে জানাইবে। একেবারে ফুরাইয়া যাইবার পর মুভ্মুহঃ “এটা নাই, ওটা নাই” এইরূপ বলিয়া স্বমীকে উদ্বেজিত করিবে না। পত্তী নিজের" উত্তম বন্ত্রঅলঙ্কার পরিধানের বাসন! পরিতৃপ্ত করিবার জন্য পতিকে কোন ক্লেশকর কার্যে নিয়োজিত করিবে না ঘে নারী পতির আহবানে অকারণ ক্ুদ্ধ হইয়া কর্কশ-স্বরে উত্তর দান করে, সে পরজন্মে গ্রাম্য কুক্ুরী বা বন্য শৃগালী হয়।

পতির চরণ পূজা করিয়া, পতি-চরণে প্রণাম করিয়া সতী স্ত্রী পৃতিকে অদ্গ্রে ভোজন করাইবে। পতিকে মহাধত্রের সহিত ভোজন করাইয়া পম্চাৎ নিজে তোজন করিব্ধে। “পতির আহারান্তে ভোজন করাই সাধবী স্ত্রীর, অবশ] পালনীয় প্রাচীন সদাচার,” এইরূপ দৃঢ় বিশ্বাস নিশ্চয়ের সহিত সাধবী স্ত্রী, পতি-€সবায় রত থাকিবে।

25

কোন নারীর গুরুজন নীচাসনে বসিলে সেই নারী কখনও উচ্চাসনে বসিবে না কোন নারী নিজের উত্তম বন্্র অলঙ্কারের সৌন্দর্য দেখাইবার জন্য আমোদ- প্রমোদ উপলক্ষে সদা মিমনতরণরক্ষার্থ : পর-গুহে গমন করিবে না। ভদ্রবংশীয়া নারী লজ্জাজনক অশ্লীল বাকা উচ্চারণ করিবে না।”

প্রাচীন মহধিগণ মহিলাদিগকে লজ্জাশীলা হইবার জন্য এবং গৃহমধ্যে থাকিয়া গৃহকার্্যে ব্যাপৃতা হইবার জন্য তুরি ভুরি উপদেশ দিয়াছেন। ভদ্র-মহিলার পরগৃহে গমন শাস্ত্রনিষিদ্ধ। ভারতে আর্ধ্য-মহিলারা অতি প্রাচীন- কাল হইতেই লঙ্জামীলা সাবরণা ( “পর্দানসীন্” )। ইহাদের মধ্যে কেহ কেহ, এই জন্য শাস্ত্রে “অসূর্াম্পশ্যা” এই বিশেষণ পর্য্যন্ত লাভ করিয়াছেন

“যে ছুষ্টবুন্ধি নারী স্বামীকে পরিত্যাগ করিয়া স্বাধীন- ভাবে আত্মীয়গণের দৃষ্টির অন্তরালে নির্জন প্রদেশে গোপনে একাকিনী বিচরণ করে, সে" পরজম্মে উলুকী ( পেঁচা) হইয়! বৃক্ষকোটরে বাস করিবে

যেনারী নিজের দোষবশতঃ পতি কর্তৃক ভত“সিত বা তাড়িত হইয়া পতিকে ভঙ্পনা বা তাড়না করিতে ইচ্ছুক বা উদ্যত হয়, সে পরজন্মে ব্যাত্বী বা বিড়ালী হয় : যে নারী গোপনে পরপুরুষের প্রতি কটাক্ষপাত করে, সে পরজজন্মে কেকরাহ্ষী: (“টেরাচোখো” ) হয়। যে নারী

( ৪১ )

পতির দৃষ্টির অন্তরালে পরপুরুষের প্রতি কটাক্ষপাত করে, সে পরজন্মে কাণা, কুুদিতমুখী কুরূপা হয়।

যেনারী পতিকে মিষ্টান্নাদি উত্তম বস্ত্র প্রদান না করিয়া নিজেই? উহা! গোপনে ভক্ষণ করে, সে পরজনম্মে গ্রাম্য শুকরী হয় কিংঝ নিজ বিষ্ঠাভোজী বাছুড় হয়।

* যে নারা স্বামীকে বাহির হইতে গৃহে সমাগত দেখিবা- মাত্র শীঘ্র পাদপ্রক্ষালনের জল আনয়ন করে, তাহার পাদ-প্রক্ষালন & কিব্ি বিশ্রামের পর তাহাকে ভোজন করাইবার জন্য খাদ্য বস্তু নিয়া তাহার সম্মুখে রাখিয়া দেয়, তাহার ভোজনের পর তাহাকে তাম্বুল প্রীদাৰ করিয়া ব্জন পদসেব। করে এবং ক্লান্তিনাশক শান্তি দায়ক সুমধুর অম্বৃতময় বচনে তাহাকে সিদ্ধ, স্থশীতল প্রীত করে, লে নারী স্বর্গ, মত্ত্য পাতালকেও প্রীত করে। লোকে শাস্ত্রে ঈদৃশী নারীকেই পতিব্রতু সতী কহে।”

কেবলমাত্র চতুর্দশ বৎসর সাবিত্রী-ব্রত করিলেই সতী হয় না। “পিতা, মাতা, ভ্রাতা, দেবর, পুজ্র কন্যা প্রভৃতি সকূলে পরিমিত স্থদান করিয়া! থাকে মাত্র, কিন্তু পতি স্বর্গীয় স্থখসম অপূর্ব অনুপম পবিভত্রতম স্ুখদান করেন বলিয়া ভার্ধ্যা শপতিকে দেবতার গায় পূজা সম্মান (কর্রিবে। পতিই পত্ঠীর একমাত্র দেবতা পতিই পত্বীর একমাত্র গুরু পতি ছাড়! পত্বীর অন্ত কোন গুরুই নাই। সতী স্ত্রীর পতিই একমাত্র- ধর্ম, একমাত্র তীর্থ

(২২ )

একমাত্র ব্রত; স্ৃতরাং সাধবী স্ত্রীব স্বতন্ত্র ধর্ম্মামুষ্ঠান, ব্রত-পরিপালন এবং তীর্থ ঝ| দেবালয়-দর্শন নিশ্রুযোজন সতী স্ত্রী জগতে সমস্ত বস্তু পরিভাগ করিয়া একমাত্র পতিকেই পুজা করিবে।

পতি দরিদ্র হইলেও, রোগার্ত 'ইইলেও অথন! কারধা- বশতঃ, পথভ্রমণ রাত্রি-জাগরণাদি নিবন্ধন ছুর্বিল, ক্ষীণ কূশ হইয়া গেলেও যে নারী পতিকে পরজর ন্যা অতিশয় যত, স্নেহ সমাদর কবে, শান ভাহাক্কেই সতী পতিব্রতা কহে ।” ' ব্যাস-সংহিতায় লিখিত আছে £_+ন্্রীলোক প্রত্যুষে পতির উঠিবাঁর পুর্বে শধ্যাতাগ করিয়। শখ্যাদ্রব্য যথা- স্থানে তুলিয়া রাখিবে; পরে শৌচকৃত্য সমাপ্ত করিবে ; তৎপরে জল-মিশ্রিত গোময় দ্বার! গৃহে গোবর-ছড়া” দিবে; তৎপরে রন্ধনোপযোগী ধৌত পাত্র সকল পুনরায় ধৌত করিবে, পাকশলার সমস্ত পাত্র প্রতিদিন বাহিরে আনিয়া উত্তমরূপে মার্জজিত করিবে; পরে সৃত্তিকা গোময় দ্বারা চুল্লী সংস্ক্ঠ করিবে; ততপরে স্নান করিয়া শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করিবে; তৎুপরে পূর্বোক্ত ধৌত পাত্রগুলি জল তণুলাদি-পুর্ণ করিয়! যথাস্থানে স্থাপিত করিবে; তৎপরে চুল্লীমধ্যে অগ্নি প্রন্থালিত করিবে; শিল-লোড়া, হাড়ী-সর!, হামান্-দিস্তা, উদৃখল, মুদল প্রভৃতি যুগ্ন বন্তগুলিকে যথাযোগ্য স্থানে

২৩ )

সম্িবেশিত করিবে এইরূপে পূর্ববাহুকৃত্য সকল সমাধা করিয়া শ্বশ্রা, শশুর প্রভৃতি গুরুজনকে প্রণাম করিবে এবং ক্লায়মমোরাক্যে স্বীয় বিশুদ্ধ চরিত্র প্রদর্শন করিয়া সদা পতির আজ্ঞানুবন্তিনী হইবে। পরে অন্ন- ব্ঞ্জনাদি প্রস্তত করিয়া মধ্যান্কে অগ্রে শশ্, শ্বশুর পতিপুজ্র গ্রভৃতিকে উত্তমরূপে ভোজন করাইয় পশ্চাৎ নিজে ভোজন করিবে। এই প্রকারে যে নারী পতিকে* দেবতা ,জ্কান করিয়া ভক্তি-শ্রদ্ধার সহিত পতির সেবা করেন, সেই নারীই ইহলোকে পবিত্রকীত্তি কল্যাঃ- রাশি ভোগ করিয়া পরকালে পতির সহিত এক পুণ্যলোক প্রাপ্ত হইয়া থাকেন।

নারী উচ্চৈঃম্বরে কথা কহিবে না; কাহারও সহিত কঠোর এবং অধিক কথ! কহিবে না; স্বামীকে অপ্রিয় বাক্য বলিরবেনা; কাহারও সহিত বিঝাদ করিবে না; কাহারও সম্মুখে বিলাপ, শোক বা অনুতাপ করিবে না; বিলাপ বা শোক-অনুতাপাদ্দির কারণ উপস্থিত হইলে নিজের মন্, মনেই বিলাপাদি করিবে !

গৃহিণী অতি ব্যয়শীলা হইবে না, কৃপণাও হইকে না; ম্যাধ্য বায় করিবে স্বামী কোন একটি ধশ্রকর্ম্ের ানুষ্ধানে উদ্যত হইলে তাহাতে বাধা দিবে না]; প্রমাদ, উম্মাদ, ক্রোধ, খলতা, হিংসা, পরদোষচর্জগু, রিন্বেষ, অহঙ্কার, র্ততা, নাস্তিকা, অতি সাহম এবং চৌর্যবৃত্তি পরিত্যাগ

( ২৪ )

করিবে; কাহাকেও বঞ্চন। করিবে না; "আমার স্বামী, আমার পুক্র, আমার পিতা, আমার ভ্রাতা অতিশয় রূপবান, গুণবান্‌ ধনবান্ এইবুপ বলিয়া কাহারও নিকটে গর্ব প্রকাশ করিবে না ।%

অভিজ্ঞান-শকুন্তলে লিখিত আছে, “পতিকুলে পতির নিকটে দাস্যবৃত্তি করিয়া কষ্টে দিনফাপন করাও ভাল, কিন্তু পতি পরিত্যাগ করিয়া পিতৃকুলে, মাতুল-কুলে কিংবা অন্য আত্মীয়-কুলে সম্তাজ্জীস্বরূপা হইয়াও জীবনযাত্রা নির্বাহ করা পাপানুষ্ঠান বলিয়া গণ্য

যে পিঠা উপযুক্ত পুভ্র বিদ্যমান থাকিতেও বৃদ্ধা- বস্থায় পুনরায় দার-পরিগ্রহ করেন এবং নিজের কন্যার শ্বগুরালযুঘটিত সামান্য বিবাদ উপলক্ষ করিয়া কন্যাকে স্বগৃহে পুষিয়া রাখেন এবং বলেন যে, “আমার যদি একমুষ্টি অন্ন জোটে, তাহা হইলে আমার মেয়েও খাইতে পাইবে,” এই বলিয়া বৃদ্ধাবস্থায় যুবতী স্ত্রীর সহিত স্বয়ং মহানন্দে জীবনের অবশিষ্ট কতিপয় দিন যাপন করেন, কিন্তু কন্যার পতিবিরহজনিত কষ্টের প্রতি লক্ষ্য করেন না, তাদৃশ পিতা মহাপাপী। কারণ, কন্যাকে একমুষ্টি অন্ন কিঞ্চিত অলঙ্কার দান চন কন্যার পতি-বিরহ- জনিত নরক-মন্ত্রণার অবসান হয় না। শৃগাল, কুন্ধুর বিডালও 'একমুস্তি অন্ন পাইয়! থাকে যে পিতা অভি- মানের 'জেদের ডালি” মাথায় লইয়! কন্যার দর্ববনাশ-

(২৫ ) সংসাধন ,করিতে পারে, তাদৃশ, ব্যক্তির মুখদর্শন করাও পাপ। শত-সহত্র অন্নমুটি রাশীকৃত বন্ত্রালঙ্কার দান করিলেও কন্যার তাদৃশী যন্ত্রণার অবসান হইতে পারে না। ঈদৃশ পিতার সংসারে পড়িয়া এরূপ কন্যা যাবজ্জীবন কষ্ট পাইতে থাকে কিস্ত্রী যদি কন্যা কুমারী-অবস্থায় পণ্তিভক্তি সম্বন্ধে স্শিক্ষা লাভ করিবর সৌভাগ্য প্রাপ্ত হইত এবং তাদূক্‌ স্ুশিক্ষা-লাভ-জনিত সদৃগুণরাশিতে ভূষিত হইত, হা হইলে এরূপ দুষ্টাভিসন্ধি পিতা বা পিতৃব্যের কুচক্রে পড়িয়া সে কদাপি ঘুণ্যমান হইত না এবং তাদুশ কষ্ট পাইত না। পতিভক্তিবিষয়িণী সুশিক্ষা লাভ করিলে কন্যা শ্বশুরালয়ের যে কোন প্রকার কষ্ট ভোগ করিয়াও পর্তিকে সন্তুষ্ট রাখিয়৷ পরমানন্দে পতিকুলে দিনযাপন করিতে পারিত। স্থৃতরাং স্থশিক্ষাই সকল স্থবখের মুল। ন্তুশিক্ষাই সর্বপ্রকার যন্ত্রণার অবসানের একমাত্র উপায়। অতি প্রাচীনকালে এই পুণ্যভূমি ভারতবর্ষের আধ্য-মহিলাগণ [কিরূপ স্তুশিক্ষ। লাভ করিটেতন, তাহা জানিতে হইলে ইতিহাস, পুরাণ, সংহিতা কাব্যনাটকাদি শান্্র বিশেষ মনোযোগের সাহত পাঠ করা উচিত। যীহারা শাস্তচর্চাবিহীন ছুসস্থারাচ্ছন্ন, তাহারাই বলিয়া থাকেন যে, "ভ্্রীজাতি বিদ্যাভ্যাস করিলেই বিধবা হইয়া যায় আবার, এই বর্তমান যুগেও এমন অনেক মুর্তি বিদুমান সাছেন, ধাহার!

( ২৬ )

বলিয়া থাকেন, স্ত্রীলোকের সধবাবস্থায় নাম স্থাক্ষর করিবার সময় শ্রীমতী অমুকী দেবী বা দাসী” এইরূপ লিখিতে হয় এবং বিধবাবস্থায় “শ্রীমত্য। অমুকীদেব্যা বা দাস্যা” এইরূপ নাম স্বাক্ষর করিতে হয়। তীহাদের মতে শ্রীমতী দেবী বা দাসী এরপ' স্বাক্ষর সধবাবস্থা-সূচক এবং শ্রীমত্যা দেব্য! বা দাস্যা এইরূপ স্বাক্ষর স্ীলোকের বৈধব্যাবস্থাসূচক। এইরূপ অদ্ভুত শাস্ত্রের উপযুক্ত টাকাকার আবার এই কথা বলেন যে, 'পূর্বেবান্ত স্বাক্ষরবিধি উল্লঙ্ঘন করিলে সধবা বিধবা হইয়া যায় এবং বিধবাও সধবা হইয়া পড়ে !! যে দেশে এরূপ স্বাধীন শাস্ত্রের রচনা তাহার অদ্ভুত টাক! প্রবর্তিত হইয়াছে, সে দেশের স্ত্রীশিক্ষায় যে ঘোর বিপ্লীব উপস্থিত হইয়াছে, তাহা বলাই বান্ল্য মাত্র

পণ্ডিতগণ হয় তো প্রতিবাদচ্ছলে বলিবেন, কিরূপ অদ্ভুত বিধি? শ্রীমতী দেবী ইহার অর্থ শ্রীমতী দেবী স্বয়ং লিখিতেছেন বলিতেছেন ইত্যািবূপ ক্রিয়াপদ্দের কর্তুপদ। আর শ্রীমত্যা দেব্যাঃ, ইহার অর্থ শ্রীমতী দেবীর। ইহা সম্বন্ধবাচক পদ। ইহাতে সধব/-বিধবার কথ৷ আমিল কিরূপে ? এখানে সধবাবিধবার কথা “কোন প্রকারেই আদিতে পারে না। কারণ, কোন একটি স্ত্রীরলান্চ যদি একখানি পত্র লিখিয়া সর্ববশেষে শ্রীমতী স্ৃশীলা দেবী এইবপ নাম স্বাক্ষর করে, তাহা হইলে এই বুঝিতে হইকে

চি.

যে, ইহা কর্তুপদ | এই পত্রখানি লিখিতেছেন বা পুর্বব- লিখিত বিষয়গুলি নিবেদন করিতেছেন, এইরূপ ক্রিয়াপদ তথায় উহ্ভ। অর্থাৎ এইরূপ ক্রিয়াপদ তথায় বুঝিয়া লইতে হইবে কারণ, পত্রে লিখিত বিষয়গুলির সহিত নিম্নলিখিত শ্রীমতী স্শী্লা দেবী, এই নামের একটা কিছু অর্থসম্বদ্ধ থাকা আবশ্বক। পরস্পর অসংবদ্ধ , পদ- প্রয়োগ শিউসম্মত নহে। পক্ষান্তরে, যদি পত্রশেষে নিম্নে রূপ একটি নাম লিখিত না হয়, কিন্তু পত্র লিখিতব্য বিষয় লিখিবার পুর্বে “সবিনয়-নমন্কার-নিবেদন+ এইরূপ প্রাচীন লিখন-পদ্ধতি অবলম্িত হয়, তাহা হইলে সর্বশেষে নিন্ধে শ্রীমত্য। স্থশুলাদেব্যাঃ, এইরূপ'নাম স্বাক্ষর করিতে হয়। কারণ, পত্রের সর্ববপ্রথমে যে “সবিনয় নমস্কার-নিবেদন” এই কথাটি লিখিত হইয়াছে, এই সবিনয়- নমস্কার-নিবেদিনটি কাহার ? এই প্রশ্নের উত্তর দিবার জন্যই সর্বশেষে লিখিতে হয়-_“শ্রীমত্যা স্বশীলাদে ব্যাঃ”, অর্থাৎ এরূপ নিবেদনটি শ্রীমতী সুশীল! দেবীর স্তুশীলা একটি স্ত্রীলিঙগান্ত পদ? একটি স্ত্রীলোকের নাম। শ্রীমতী দেবী বা,দাসী এই ছুইটি পদ উহার বিশেষণ। আর ভ্রীমন্যাঃ দেব্যাঃ এই দুইটি সম্বন্ধবাচক ব্ঠ্যন্ত পদ। ইহার অর্থ শ্রীমতী সীল! দেবীর। একটির অর্থ স্তশীলা 'দেবী, অন্তটির অর্থ সথশীল! দেবীর ইহাতে সধবা-বিধবার কথা যে কোথা হইতে আসিল, তাহা সূর্বববিধ বাক্যের

(১৮)

মধিষ্টাত্রী ৬সরস্বতী দেবতার সমগ্র ভাগারে অন্বেষণ করিলেও জানা অসম্তভব। প্রাচীন স্ুসভা শিক্ষার মকর ভারতভূমির যে ঘোর দুর্দশা উপস্থিত হইয়াছে, ঈদৃশ স্বাধীন শাস্ত্রচনানৈপুণ্যই তাহার দেদীপামান প্রমাণ। '

যাহারা স্ত্রীশিক্ষার বিরোধী, তাহারা তাহাদের সনাতন বেদের বিরোধী তাহারা আর্া-সন্তান বলিয়া অভিমান করে, কিন্তু তাহার! জানে না যে, তাহাদের অমুল্যধন বেদের বছ্‌ মন্ত্র তাহাদের দেশের কতিপয় মহিলা কর্তৃক সংকলিত হইয়াছে সামান্য লৌকিক শাস্ত্বরচনার কথা ত* দুরের কথা, ভারতে মহিলাজাতি বেদের মন্ত্র পর্যান্ত সংকলন করিয়া গিয়াছেন। তাহাদের সংকলিত মন্ত্র পাঠ করিয়া, উচ্চেঃক্বরে গান করিয়া কত শত শত পুরুষ মহধি কৃত- কৃতা ধন্য হইয়া গিয়াছেন। যে দেশে বেদ-উপনিষদের পঠন-পাঠন-প্রথা বিলুপ্ত হইয়াছে, যে দেশে কেবল ব্যাকরণ, নব্যস্বৃতি নব্য ম্যায়চ্চায় বৈদিক ক্রিয়াকলাপ বেদের জ্ঞানকাণ্ড পণ্ড হইয়াছে এন্বং প্রাচীন, দর্শন-শাস্্র- পাঠ বিলুপ্ত হইয়াছে পরমেশ্বরের ভক্তি-জ্ঞান-মার্গ পরিত্যক্ত হইয়াছে, দে দেশের লোক যে কুসংস্কারাচ্ছন্ন হইয়া পড়িবে, তাহা বলাই বাহুলামাত্র। পরিবর্তনশীল: কালের কুটিল চক্রে পড়িয়া লোক যে কিরূপে ঘূর্ণি হয়, তাছা বুঝাইবার জন্য কবিকুল্চুড়ামণি কালিদাস স্বীয়

(৫৯ )

অভিজ্ঞ ন-শকুন্তল নামক নাটকে লিখিয়া গিয়াছেন যে, এই ভূমগুলে স্বদেশে কালপ্রভাবে অতি উন্নতির পথে সমারূট জাতিও অতল পাঁতালগর্ভে বিলীন হইয়া যায় এবং পক্ষান্তষ্র, অপকুমাংসভোজী, বন্ধলপরিধায়ী, ভীষণজন্ত্রপূর্ণ অরণ্য *ও গ্রিরিগহবরনিবাসী, প্রকৃতধর্্ম- জ্ভানবিহীন বর্বর, অসভ্য অনাধ্য জাতিও সমৃদ্ধির চরমনীমায় উপনীত হয় আপনাদিগকে আধ্য-জাতি- মধো পুরিগনিত করিয়া লয়। কালিদাস দেখাইয়াছেন যে, মানুষের কথা তো সামান্য কথ, সর্ব্বোপরিস্থিত চন্দ্র সূর্যাদেবতারও কালপ্রভাবে উত্থান-পতন : ঘটিয়া থাকে। যে চন্দ্রদেব শহ্যাদিপদার্থের রসসঞ্চার জীবন- রক্ষা পুষ্টিবদ্ধীন করেন এবং স্ুশীতল শুভ্রকিরণ দ্বারা জগতের অন্ধকাররাশি নাশ করিয়া জগতকে স্িগ্ধ, প্বীত আলোকিত ক্রেন, জগতের ঈদৃশ মহোপ্রকারী চন্দ্রদেবও রাত্রি শেষ হইলে অন্তমিত হইয়া যান। তিনি অস্তমিত হইলে পর সৃষ্যদ্দেব অত্যুচ্চ আকাশমার্গে উদিত হয়েন। হার প্রভাবে সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্রাদি জ্যোতির্লোক পরি- চালিত হয়, ধাহার প্রথর কিরণে অন্ধকাররাশি ছিন্ন- বিদ্চিন্ন হইয়া যায়, “জগতের নানা উপকার সাধিত হয় ।এবুং যিনি সমুদ্র, নদনদী পুষ্করিণীর জল আকর্ষণ করিয়া আকাশমার্গে লইয়া! গেলে ধাহার সাহায্যে মোঘের স্থষ্ি হয় সেই মেঘ হইতে পুধিবীতে জলবর্ষণ হুইলে নানাবিধ

শশ্য-কলমূলাদি উৎপন্ন হয় বলিয়া যিনি জগতের প্রাণি গণের প্রাণরক্ষা করিয়া মহোপকারসাধন করেন, ঈদৃশ মহাপ্রভাব মহোপকারী সূর্ধযদেবও সায়ংকাল উপস্থিত হইলে অস্তমিত হইয়া যান।

এই চন্দ্র সূর্য্য দেবতার কালপ্রভাবে উত্থান-পতন দেখাইয়া ঈশ্বর আমাদিগকে প্রতিদিনই এই শ্িক্ষ দিতেছেন যে, ঈদৃশ চন্দ্র সূর্য্ের ন্যায় মনুষ্যজাতিরও কালপ্রভাবে উত্থান পতন ঘটিয়া থাকে « যে.ভারতের মর্ধামহিলাগণ একদা বেদের মন্ত্রসংকলন পর্য্যন্ত মহা- ব্যাপার সংসাধন করিয়াছিলেন, অধুনা! সেই ভারতের আধ্যনারী ঘোর অধাম্মিক, অজ্ঞ কুসংস্কারাচ্ছন্ন হইয়া পড়িয়াছেন এবং সেই ভারতের অশিক্ষিত সেই বৈদিক নারীগণের আধুনিক সন্তানগণ নূতন শান্তর রচনা করিতে- ছেন আর বলিতেছেন যে, “স্ত্রীলোক লেখাপড়। শিখিলেই বিধবা হয় এবং বিধবা হইলেই 'শ্রীমত্যা স্ুশীলাদেব্যাত” এইরূপ স্বাক্ষর করিতে হয়” !! এইরূপ পরিবর্তন দেখিয়া বিজ্ঞ ব্যক্তির বিস্মিত হওয়া বৃথা। কারণ, যুগধন্ম- মাহাত্ম্যেই এইরূপ পরিবর্তন এই পৃথিবীভে বহুবার ঘটিয়াছে, ঘটিতেছে ঘটিবে। যে ভারতের ভ্ত্রীজাঁতি একদা বেদের মন্ত্র সংকলন করিয়াছিলেন, উপনিষদের গভীর, তাৎপর্য বুঝিয়া বিচারশক্তি দ্বারা মহধি যাল্ত্রবন্থ্যকেও স্তম্ভিত করিয়াছিলেন, জ্ঞানিকুল-শিরোমণি রাজফি

(৪১৯ ) দনককেও বিম্মিত করিয়াছিলেন, বিদ্যাপ্রভাবে রাম লক্মমণেরও একদা অন্বেষণীয়া ইইয়াছিলেন এবং মহষি পাণিনি ভাষ্যকার পাতগ্জলির নিকট হইতেও ব্যাকরণ- পাণ্ডিত্য-সৃচকঞনানাবিধ উপাধি বিশেষণ লাভ করিয়া- ছিলেন, অধুনা সেই ম্হলাজাতির শিক্ষার ঘোর দুর্দশ! উপ্নশ্থিত হইয়াছে এবং অনেক অজ্ঞ-ব্যক্তি বিধবা হইবার ভয় দেখাইয়া! অনেক মহিলাকে শিক্ষালীভে বঞ্চিত করিতেছে; তনধিকন্ত নূতন নূতন অদ্ভুত শান্জবাক্য রচনা করিয়া সমাজের অনিষ্টসাধন করিতেছে কিন্তু আর্ধ্যদিশ্ষের প্রাচীন ধর্ম্শান্ত্র হেমাস্রি গ্রন্থ % উচ্চৈঃম্বরে ঘোষণা কদ্দিয়ঃ ছেন যে, নারীজাতি সধবা বা বিধবা হইবার পূর্বেই কুমারী-অবস্থায় বিদ্যালাভ করিবে। তাহাদিগকে কিরূপ বিদ্যাশিক্ষা দেওয়া উচিত? এইরূপ প্রশ্নের উত্তর দ্রিবার জন্য শাস্ত্র বলিতেছেন, ধর্ম নীতি-বিদ্যা শিক্ষা দিবে। কুরুচিকর নাটক “নভেল” “টট্া” না শিখাইয়া অঙ্গার গল্প-পুস্তক ন৷ পড়াইয়৷ ভ্্রীধন্মাজীবন-সংগঠনের জন্য ধর্মশান্ত্র নীতিশ্ন্র শিক্ষা দিবে। সীতা, সাবিত্রী,

সস সস

কুমারীং শিক্ষয়েদ্বিদ্যাং ধশ্মনীতৌ নিবেশয়েৎ। দ্বয়ো: কল্যাণদা পোক্ত যা বিদ্যামধি গচ্ছতি ততে। বরায় বিছুষে দেয়া কন্যা মনীষিভিঃ | অজ্ঞাতপতিমর্্াদাং অজ্ঞাতপতিসেবনাম্‌।, নোদ্বাহয়েৎ পিতা কন্যামজ্ঞাতধশ্মসাধনম |

( ৭২)

দমযুন্তী, লোপামুদ্রা, দাক্ষায়ণী, অরুদ্ধতী, মদালসা প্রভৃতি পৰিব্র-চরিপ্রা মহিলাকু্ীললামভূতা দেবীদিগের কথা যে সকল গ্রন্থে বর্ণিত আছে, সেই সকল গ্রন্থ অধ্যয়ন করাইবে। সেই সকল পুস্তক পড়িলে পিত্বা, মাতা, শ্বশুর, শ্বশ্রী, পতি অন্যান্য গুরুজনের* প্রতি কিরূপ ব্যবহার করিতে হইবে, তাহা উত্তমরূপে শিক্ষা করিয়া মহিল!গণ পিতৃকুলের শ্শুরকুলের আনন্দবদ্ধন করিতে সম্্থ হইবে। যে কুমারী বিদ্যালাভ করে, সেই কুমারীই উভয় কুলের কল্যাণদায়িনী হইতে পারে। শুদ্ধ কেবলমাত্র এধোপার খাতা” বিবাহের পর বিদেশস্থিত পতির নিকটে প্রেমপত্র লিখিবার জন্য কুমারীগণকে শিক্ষা দিতে শান্দ কখনও অনুমোদন করেন না। যখন ধন্ম নীতি- শানে কুমারী সুশিক্ষিতা 'হুইবে, তখন এক বিছ্বান্‌ বরের করে তাহাকে ,সমর্পণ করিবে আচার, দর্বনয়, বিদ্যা, প্রতিষ্ঠা, তীর্থ-দর্শন, নিষ্ঠা, বৃত্তি, তপস্যা দান এই নববিধ কুল-লক্ষণবর্জিত অথচ কুলীন-পদবাচ্য বরকে পঞ্চ সহশ্র মুদ্রায় ক্রয় করিয়া তাহার হস্তে কন্যা সম্প্রদান করিয়া পিত। কন্যার পবিত্র জীবনের সর্ববর্নাশলংসাধন করিবে না, ইহাই হেমা গ্লোকগুলির ভাবার্থ। ইহা আধুনিক স্রীশিক্ষা-প্রবর্তক ““বক্তৃতাবাগীশ”দিগের কথা নুয়। হেমাদ্রি বলিতেছেন, ইহা অতি প্রাচীন, আর্ধ্য-মহধিদিগের প্রদর্শিত নিষ্ণ্ক প্রশস্ত পথ। এই পথের গৌরব

( ৩)

পুজ্যপাদ, প্রাচীন মহধিগণ কর্তৃক উচ্চরবে বিঘোষিত হইয়াছে। যে কুমারী পির প্রতি কিরূপ ব্যবহার করিতে হইবে, তাহ! জানে না, কিরূপে পতির মধ্যাদারক্ষা করিতে হয়, তাহা শিখে নাই, পতিকে কিরূপে সেবা করিতে হয়, তাহা পড়ে "মাই, ভাদৃশী কন্যাকে তাহার পিতা কখ্নই বিবাহ দিবে না, ইহাই হেমাব্রির উপদেশ।

সীতা যেরূপ রামের অনুবস্তিনী হইয়াছিলেন, তত্রপ পতির অনুবন্তিনী হইবে। সীতার শ্বশুর সূর্য্যবংশীয় সম্রাট দশরথ। তাহার পিতা মিথিলাধিপতি মহ্ারার্জ জনক। এই উত্তয় রাজকুলে নানাবিধ উত্তমোন্তম খাদ্য* বন্ধ, মহামুল্য অলঙ্কার, শত,শত দাসদাসী ছুগ্ধীফেননিভ শয্য-আাসনাদি মহাস্্থকর বস্তু সকল ত্যাগ করিয়া সীতা ভীষণ জন্তপূর্ণ, কণ্টকাকীণ, খাদাপেয়াদিবর্জিত, নিবিড় অরণ্যমধ্যে চতুর্দশ বদর যাবৎ পতির সুখে সৃখিনী, পতির দুঃখে দুঃখিনী হইবার জন্য পতির অনুমরণ করিয়াছিলেন। রাম যখন গভীর অরণ্যানীমধ্যে চলিতে চলিতে ক্রান্ত হইয়৷ পড়িতেন এবং ফ্ষোন বৃক্ষতলে আশ্রয় লইয়। যখন শান্তিস্থখ অনুভব করিতেন, তখন সাধবী সীতাদেবীও পতির সহিত অনুপম খীন্তি-সাগরে নিমগ্ন হইয়া পড়িতেন। ৰ্বামের বনগমনসময়ে তিনি রামের সহিত না গিয়া যদি তাহার পিতা মহার)জ জনকের আলয়ে, গমন করিতেন, তাহা হইলে তাহার কোন ক্লেশই হৃইত না মহারাজ

( ৩৪.)

জনক অতি যর সমাদরের সহিত নিজ কন্যাকে অবশ্য প্রতিপালন করিতেন। কিন্ত তিনি তথায় ন! গিয়া স্বামীর সহিত চতুর্দশ বশুসর পর্যান্ত বনবাসের জঙ্য স্বামীর অনুবপ্তিনী হইয়াছিলেন। এইরূপ প্রগাট পতিতক্তির কথা যে সকল পবিত্র গ্রন্থে বর্ণিত শাছে, সেই সকল গ্রন্থ না পড়াইয়া কোন পিতা নিজ কন্ঠার বিবাহ যেন না দেন, ইহাই হেমাদ্রি গ্রন্থের পরম হিতোপদেশ। আবার মহানির্ববাণ-তন্ত্রও বলিয়াছেন, কন্যার লালন-পালন করা ধেমন পিতার অবশ্য কর্তব্য কর্ম, তদ্রুপ অতিশয় যত্ব- গুর্বক কন্যাকে শিক্ষা দেওয়াও পিতার অতান্ত উচিত কার্ধ্য। কণ্যাকে ধন্ম নীতি-শান্ত্রে স্রশিক্ষিত করিয়া একটি বিদ্বান পাত্রের হস্তে তাহাকে সমর্গণ করিবে পাত্রী যদি বিদুষী হয় আর পাত্রটি যদি বিদ্বান ন1 হয়, তাহা হইলে উভয়ের, পরম্পর মনের মিলন হয়'না, সংসারে শান্তিরসের অনুভব হয় না। সেই জন্য বিদষী পাত্রীকে বিদ্বান্‌ পাত্রের হস্তে সমর্পণ করিবার বিধি শাস্ত্রে উল্লিখিত হইয়াছে

(৩৫) ্রহ্মবাদিনী বিশ্ববার!।

পূর্ববকালে ভারতের আধ্য-মহিলাগণ বেদের মন্ত্র পধ্যন্ত সংকলন করিবার অধিকার লাভ করিয়াছিলেন। তীস্থারা ষে যে মন্ত্গুলিঞ্গংকলন করিয়াছিলেন, সেই সেই মন্ত্র “তাহাদের মন্ত্র” এই বলিয়। খ্যাত হইয়াছে

খগৃবেদের পঞ্চম মণ্ডলের ২৮ সুক্তটি মুত্রিগোত্রজ' বিশ্ববারান্নাম্ী "ব্রহ্মবাদিনী আর্ধ্য-মহিলাকর্তৃক সংকলিত হইয়াছে এই সুক্তে ছয়টি মন্ত্র আছে। তাহার প্রথম মন্ত্রের অর্থ এই যে, অগ্নি উত্তমরূপে প্রজ্ুলিত হইয়া প্রদীপ্ত শিখা-বিস্তার পূর্ববকপ্রখরভাব ধারণ 'করিয়াছে। উষাকালে প্রশস্ত শিখা-বিস্তার করিয়৷ অগ্নি সাত্তিশয় শোভাম্বিত হইয়াছে। এই সময়ে ব্রহ্মবাদিনী বিশ্ববারা হোম করিবার জন্য ঘৃতাধার পাত্র হস্তে লইয়া বৈদিক মন্ত্র গানে ইন্দ্রাদি দেবগণকে স্তব করিতে করিতে পূর্ববাভি মুখে ঈদৃশ প্রস্বলিত শোতমান অগ্নির নিকটে গমন করিতেছেন,

দ্বিতীয় ,মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অগ্নে, উত্তমরূপে প্রজ্বলিত হইয়া অমৃতৈর উপরে আধিপত্য বিস্তার কর। ভূমি হোতার মঙ্গলের জন্য তাহার সমীপে বিদ্যমান থাক। তুমি যে'ঘজমানের 'নিকট উপস্থিত হও, মে ষঞ্জমান সমগ্র ধনলাতে সমর্থ হয়েন,. তোমার মত, প্রধান অতিথির প্রাপ্য

( ৬৬ )

দৃতাদি উত্তম দ্রব্য প্রদান করেন। তোমার ন্তায় উপকারা অতিথিকে দ্ৃতান্ুতি প্রদান করিয়া সন্তুষ্ট করেন।

তৃহীয় মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অগ্নে, আমাদের , মৌভাগাসংবদ্ধনের জন্য আমাদের প্রতি প্রসন্ন হও, তোমার কৃপায় আমরা যেন ধনবান্‌ হই। তুমি আমাদের শক্রগণকে বিনাশ কর। তোমার তেজঃসম্পন্তি আ'রও উৎকৃষ্ট হউকৃ। তুমি জগতে পতি পত্বীর পৰিত্র দাম্পতা-প্রেমকে অতি প্রগাঢট করিয়া দাও তোমার আশীর্ববাদে দাম্পত্য প্রেম বৃদ্ধির চরম সীমা লাভ করুক পতি পত্ীর কদাপি যেন পরস্পর বিচ্ছেদ না হয়।

ষষ্ঠ মন্ত্রে বিশ্ববারা সকলকে এই বলিয়া উপদেশ দিতেছেন যে, যজ্ঞে ঘৃতবাহক অগ্নিতে হোম কর। অগ্নির সেবায় রত থাক। দেবগণের নিকটে ঘ্ৃত বহন করিয়' লইয়া যাইবার জন্য অগ্নিকে বরণ কর।

ত্রহ্মবাদিনী ঘোষা |

খগ্বেদের দশম মণ্ডলের ৩৯ এবং ৪০ মুক্ত কাক্ষী- বানের কন্য! ঘোষানান্ধী ব্রহ্মবাদিনী আর্ধ্য-মহিলা৷ কর্তৃব সংকলিত হইয়াছে ৪* সুক্তের নবম মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে স্বর্গের বৈদ্য অশ্রিনীকুমারন্বয়, আপনাদের অনুগ্রহে

)

.আশীর্ব্বাদে ঘোষা স্ত্রীজনোচিত গুণলমূহে ভূষিত হইয়াছে সৌভাগ্যবতী হইয়াছে ঘোষাকে বিবাহ করিবার জন্য পাত্রীকামী বর ইহার নিকটে আগমন করুক, ইহাকে বিবাহ করিৰার জন্তু ইহাকে দেখিতে আস্বক। আপনারা ইহার ভাবী পতির হিতার্থে আকাশ হইত প্রচুর বারি বর্ষণ করিবেন। ইহার ভাবী পৃতির হিতার্থে প্রভূত পরিমাণে শম্য-সমুহ যেন উৎপন্ন হয়। ইহার ভারী পতির মঙ্গলের জন্য ভবতপ্রেরিত বারিধারা যেরূপ প্রচুর পরিমাণে আকাশ হইতে ক্ষেত্রে পতিত হইবে, তব্রপ ততপরিমাণে রাশি রাশি শম্যও যেন উত্গন্ন' হয়। কোন শক্র ইহার ভাবী পতির অনিষ্*করিতে হিংসা করিতে যেন কদাপি সমর্থ না হয়। যুব পতিকে লাভ করিয়া ঘোষার যৌবন যেন চিরকাল অঙ্ষুন থাকে আপনাদের আশীর্ববাদে ঘোষা যেন চিরুযৌবনা থাকে। দশম মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অশ্বিনীকুমারদ্বয়, যে ব্যক্তি আপনার স্ত্রীর প্রাণরপ্ষার জন্য ব্যাকুল হইয়া পড়ে, এমন কি, রোদন পূর্যযন্ত করে, এবং তাহাকে যজ্ঞকার্ষ্যে নিযুক্ত করে পুত্রসন্তান উৎপাদন পূর্ব্বক পিতৃলোকের তৃপ্তির জনয স্াহাকে হজ্ঞানুষ্ঠানে নিযুক্ত করে, তাদৃশী স্ত্রী পতির আলিঙ্গনে সৌভীগ্যবতী সমৃদ্ধিশালিনী হইতে পারে। ত্রয়োদশ মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অশ্বিনীকরমারছয়, আমি আপনাদিগকে সদা স্তব করিয়। থাকি। অতএব

73

আপনারা আমার প্রতি সন্তষ্ট হইয়। আমার পতিতভবনে ধনবল লোকবল বদ্ধিত করিয়া দিবেন আমি ষে ঘাটের জল পান করি, ঘাটের জল স্থুনির্মল করিয়া দিবেন। আমার পতিগৃহে যাইবার পথে যদি কোন দৃষ্টাশয় ব্যক্তি বিদ্ধ উপস্থিত করে, তাহা হইলে তাহাকে বিনাশ করিবেন ৩৯ সৃক্তে চতুর্দশটি মন্ত্র আছে -

প্রথম মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অশ্বিনীকুমারদ্য়, আপনাদ্রিগের যে বিশ্বসঞ্চারী রথ আছে, "উত্তমরূপে সম্বোধন পুর্ন্নক যে রথকে আহ্বান করা যাচ্ছ্িক বাক্তির ' দৈনিক কর্তব্য কর্ম, আমরা সর্বদা সেই রথের নাম সঃকীর্তন করিয়া থাকি ।. মানব পিত-নামোচ্চারণে বাদূক আনন্দ লাভ করে, তদ্রুপ আপনাদের রথের নামে আমরা অত্যন্ত আনন্দ অনুভব করি।

দ্বিতীয় মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অশ্রিনীকুমারদবয়, আমাদিগকে ম্বমধুর বাকা উচ্চারণ করিবার প্রবৃত্তি প্রদান করুন। আপনাদের অনুগ্রহে আমাদের সমস্ত শুভক্রিয়। নির্বিবিদ্বে সম্পাদিত হউক্‌। আমাদের হৃদয়ে নানাপ্রকার বুদ্ধি উদ্দিত হউক্‌, ইহাই আমাদের একান্তিক বাসনা গামাদিগকে প্রশংসনীয় ধনভাগ প্রদীন করুন « যজ্ঞ সোমরস যেরূপ আনন্দ-বদ্ধন করিয়া থাকে, তদ্রপ আপনকের কৃপায় আমর! যেন লোকের আনন্দ-বদ্ধক প্রীতিভাজন হইতে পারি তৃতীয় মন্ত্ার্থ এই যে, একটি

( ৩৯ )

কন্ঠ। পিত্রালয়ে অবিবাহিতাবস্থায় থাকিয়৷ প্রায় বাক্যে উপনীত হইতেছিল। আপনারাই তাহার জন্য একটি, সৌভাগাকর বর মানিয়৷ দিয়াছিলেন। আপনার! অন্ধ, খঞ্ত, নিরাশ্রয়, ঞ্লগ্ন দরিদ্র ব্যক্তিদিগের আশ্রয়স্বরূপ | রোরুদ্যমান অন্ধ, খর্জ, রুশ ব্যক্তিগণের ম্থুনিপুণ চিকিৎসক বলিষা আপনাদিগকে সকলেই প্রশংসা! করিয়া থাকে |,

চতুর্থ মন্ত্রের অর্থ এই যে, কোন একখানি,রথ যখন পুরাতন ও*জীর্ণ হইয়া পড়ে, তখন উহাকে পুনরায় উত্তম- রূপে নিম্্াণ করিলে উহা যেমন নুতনব প্রতীয়মান হয়, তদ্রপ আপনারাই জরাজীর্ণ চ্যবন খষিকে পুনরায় নব্য- যুব! পুরুষের ন্যায় স্থুন্দর স্থুগঠিত করিয়া দিয়াছিলেন।, তুগ্রের তনয়কে নির্বিবত্বে জলোপরি বহন করিয়া তীরদেশে পার করিয়া দিয়াছিলেন। ভবত-সম্পাদদিত এই সকল উত্তম কার্ধ্য যঙ্ঞানুষ্ঠানসময়ে বিশেষভাবে উল্ল্লখ-যোগ্য |

পঞ্চম মন্ত্রের অর্থ এই যে, আপনাদের বীরত্বসুচক পুর্বেবাক্ত কাধ্য সকল আমি লোক-সমাজে বর্ণনা করিয়। থাকি। এত্ন্ধ্যতীত আপনাদের আর একটি প্রশংসার কথা এই যে,আপনাঁরা স্থৃনিপুণ চিকিৎসক, স্বর্গের বৈদ্য আপনাদের আশ্রয়-লাভীর্থ আমি আপনাদিগকে আস্তরিক ভক্তির সহিত স্তবকরিতেছি। হে স্বর্গীয় বৈদ্য অশ্বিনী- কুমারছয় আমি আশা করি; আমার এই স্তকে যাজ্জিক বাক্তি অবশ্য আন্তরিক বিশ্বাসস্থাপন করিবে

887.) ষ্ঠ মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অশ্থিনীকুমারদ্ধয়, আপনা- দিগকে আমি আহ্বান করিতেছি আপনারা কৃপাপূর্ববক আমার আহ্বান কর্ণগোচর করুন। পিতা পুক্রকে যেরূপ শিক্ষাপ্রদ্ান করে, তদ্রপ আপনারা আমাকে স্ুশিক্ষা প্রদান করুন। আমার জ্ঞতি কিন্বা কুটুন্ব কেহই নাই। আত্ীয়-মিত্র-বান্ধবাদি কেহ নাই। আমি জ্ঞানবুদ্ধি- বিহীন .অতএব আমার এই প্রার্থনা যে, আমার যেন কদাপি কোন ছুর্গতি না ঘটে। ছুর্গতি ঘটিবার পুবেন দুর্গতির কারণগুলি যেন সমূলে উত্পাটিত হয়। সপ্তম মন্ত্রের অর্থ এই যে, আপনারাই শুন্ধাব-নান্ী পুরুমিত্র-রাজার কন্যাকে রাখাপরি অরোহণ করাইয়া- ছিলেন এবং বিমদের সহিত তাহার বিবাহ দিয়া- ছিলেন। বধ্রিমতী প্রসব-বেদনায় কাতর হইয়! যখন আপনাদের সাহাধ্য-প্রার্থিনী হইয়াছিল এবং আপনা- দিগকে আহ্বান করিয়ছিল, তখন আপনারাই উহাকে সুখে প্রসব করাইয়াছিলেন। আপনারা স্থনিপুণ ন্ব্গীয় চিকিৎসক অষ্টম মন্ত্রের অর্থ এই যে, কলি জরাজীর্ণ হইয়৷ যখন আপনাদিগকে স্তব করিয়াছিল, তখন আপনারাই উহাকে নবীন যুবাপুরুষ করিয়া দিয়াছিলেন। আপনারা বন্ধল- নামক ব্যক্তিকে কূপের ভিতর হইতে উদ্ধার করিয়া- ছিলেন। বিপ্ললা-নান্মী মহিলার চরণ ছিন্ন হইয়া! গেলে

(১) আপনারাই লৌহময় কৃত্রিম চরণ সংযোজিত কারয়৷ তাহাকে চলন-শক্তিশালিনী করিয়া দিয়াছিলেন। নবম মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অভীফটপ্রদদ অশ্বিনী- কুমারদ্বয়, যখব শক্রগণ রেভকে মৃতপ্রায় করিয়া গুহামধ্যে নিক্ষেপ করিয়াছিল, তখন আপনারাই উহাকে এই বিপত্তি হইতে উদ্ধার করিয়াছিলেন। আপনারাই তখন উহাকে রক্ষা করিয়াছিলেন। সপ্তবন্ধনে বন্ধ অত্রিমুনি ঘখন জবলদগ্রিকুণ্ডের“মুধ্যে নিক্ষিপ্ত হইয়াছিলেন, তখন আপনারাই সেই যক্্কুণ্ডের অগ্নিকে নির্ববাপিত করিয়াছিলেন আপনাদেরই অসীম প্রভাবে এঁ অগ্নিকুণ্ড ঝটিতি স্থর্গীতল পাত্রে পরিণত হইয়াছিল। দশম মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অশ্বিনীকুমারদ্ধয়, আপনাদের নিকট হইতেই পেছু-নামক রাজা নবনবতি ঘোটকের সহিত একটি উত্তম স্থদৃশ্য *শুভ্রবর্ণ ঘোটক লাভ করিয়াছিলেন। ঘোটকটিকে দেখিবামাপ্রই শক্রগণ পলায়ন করে। ঘোটকটি মানবের অমূল্য রত্ব- স্বরূপ। উহার নাম* করিলেই হৃদয়ে অপূর্বব আনন্দের সঞ্চার হয়। একাদশ মন্ত্রের অর্থ এই যে) আপনাদের নামোচ্চারণ- মাত্রেই অতিশয় আনন্দ হয়। আপনারা যখন যে পথে গমন করেন, তখন চতুন্দিক হইতেই সকলে আপনাদিগকে বন্দনা করে। যদি সন্ত্রীক কোন, ব্যক্তিকে আপনারা

(৪২

নিঙ্ত রথোপরি উপবেশন করাইয়া আশ্রয়দানে স্থখী করেন, তাহা হইলে সন্ত্রীক ব্যক্তির কোন বিপত্তি বা দুর্গতি ঘটে না।

দ্বাদশ মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অশ্বরিনীকুমারদ্বয়, ঝভু-নামক দেবগণ দ্বারা আপনাদের যে রথ নির্মিত হইয়াছিল, যে রথ আকাশমার্গে উত্থিত হইলে আকাশ- কন্যা উষাদেবীর আবির্ভাব হয় এবং সূর্ধ্যদের হইতে দ্রিন রজনী উৎপন্ন হয়, মন্‌ "হইতেও অতি বেগশালী সেই রথে আরোহণ করিয়া আপনারা আগমন 'করুন।

ত্রয়োদশ মন্ত্রার্থ এই যে, হে অশ্বিনীকুমারদ্বয়, আপনারা উল্ত রথোপরি আরোহণ করিয়া পর্ববতাতিমুখে গমন করুন। শযু-নামক ব্যক্তির বৃদ্ধ! ধেনুকে পুনরায় ছুপ্ধবতী করিয়া দ্রিন। রুকের করাল বদনের মধ্যে ধর্তিকা পতিত হইয়াছিল, আপনারাই উহার মুখের ভিতর হইতে ব্তিকা উদ্ধত করিয়াছিলেন

চতুর্দশ মন্ত্রের অর্থ এই যে, ভ্ৃগুসন্তানগণ যজ্জপ রথ নিশ্মাণ করে, তজ্রপ আমিও আপনাদের জন্য এই স্তুতি মন্ত্রগুলি রচনা করিলাম কন্যা-সম্প্রদান-কালে পিতা যেমন কন্যাকে উত্তম বসনভূষণে সমলঙ্কৃত করে, তব্রপ আমিও আপনাদের এই স্ততি-মন্ত্রগুলিকে আপনাদিগের প্রশংসা দ্বারা অলঙ্কৃত করিলাম আপনাদের আশীর্ববাদে

( ৪৩ )

আমার পুক্রপৌত্র প্রপৌত্রাদি যেন স্থপ্রতিষ্টিত হইয়া! দিন- যাপন করে।

৪৭ সুক্তের অফটম মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অশ্বিনী- কুমারদ্বয়, কৃশ* শৈষুব-নামক দুইটি লোককে এবং একটি অসহায়া বিধবা গ্লারীকে আপনারাই রক্ষা করিয়া- ছিঙিলন। যজমানদিগের আনন্দ-বদ্ধনার্থ আপনারাই মেঘ- পটল বিদীর্ণ করেন এবং সেই বিদীর্ণ জলদুরাশি শব্দ করিতে করিতেযেন সপ্তমুখ ব্যাদান করিয়া জলধারা বর্ষণ করে।

৪০ সুক্তের দ্বাদশ মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে অন্নধন* শালিন্‌ অশ্বিনীকুমারদ্বয়। আপনারা আমার প্রপ্তি কৃপাবিন্দু বর্ণ করুন। আমার মনের অভিলাষ পুর্ণ করুন। আমার মঙ্গল করুন। আমার রক্ষক হউন। আমি যেন পতিগুহে গমন করিয়া পির প্রিয়পাত্রী হই, ইহাই আমার একান্তিক প্রার্থনা

ব্রহ্মবাদিনী তৃর্য্যা। ধরগ্বেদের দশর্ম মণ্ডলের ৮৫ সুক্তটি সূষধ্যানান্দী 'রঙ্ষবার্দিনী আর্ধ্য-মহিল। কর্তৃক সংকলিত হইয়াছে ৮৫ সুক্তের ষ্ঠ মন্ত্রের অর্থ এই ধে, সূরধ্যার বিবাহ-দময়ে রৈভী- না্দী ধক্-( মন্ত্র) গুলি সূর্ধ্যার সহচরী হইয়াছিল।

( 8৪ )

নরাশংসী-নান্না খক্-(মন্ত্রগুলি তাহার দাসী হৃইয়াছিল। তীহার মনোহর বসনখানি যেন সামবেদের গান দ্বারা পবিত্রীকৃত হইয়াছিল এই মন্ত্রের তাঁৎপর্য্যার্থ এই যে, বিবাহ-সময়ে পাত্রীর সমবয়স্কা কয়েকটি সঙ্গিনী পাত্রীর চিত্ত-বিনোদনার্থ পাত্রীর সহচরী ছইয়া থাকে। পতিগৃহে যাইবার সময় পাত্রীর সঙ্গে একটি দাসী যায়। বিৰাহ- সময়ে পাত্রী পবিত্র উজ্জ্বল পট্টবন্ত্র পরিধান করে। সূর্য্যার বিবাহ-সময়ে এই সকলের তত প্রয়োজন হয় নাই। কারণ, তিনি রৈভী খক্-মেন্ত্) গুলিকে সম্পূর্ণরূপে আয়ন্ত “করিয়াছিলেন তিনি উত্তমরূপে স্থমধুর উচ্ৈঃম্বরে রৈতী- নামক মন্ত্রগুলি গান করিতে পারিতেন, উহাতে তিনি অসাধারণ পাপ্ডিত্য লাভ করিয়াছিলেন। মন্ত্রগুলিই তাহার চিত্ত-বিনোদনের জন্য সহচরী বা সঙ্গিনীর কার্য্য করিত বলিয়া অন্য মানবী সহচরীর প্রয়োজন হয় নাই। নবোট! বালিকা যখন পতিগৃহে যায়, তখন তথায় পতি ছাড়। সকলেই তাহার অপরিচিত। পতির সহিত পরিচয়ও সবেমাত্র একদিন পূর্বেই হইয়াছে! অতএব অপরিচিত গুহে তাহাকে উৎসাহিত মামোদিত করিবার জন্য তাহার পিত্রালয়ের একটি যত্ব-স্সেহকারিণী দাসী তাহার জুহিত তাহার পতিগৃছে গমন করে। সূর্য্যার সহিত ঈদৃশী দাসী প্রেরণ করিবার কোন প্রয়োজনই হয় নাই।' কারণ, সূর্য্য নরাশংসী-নাম্ী খক্-(মন্ত্র) গুলিকে সম্পূর্ণরূপে

(৪৫ )

আয়ত্ত করিয়াছিলেন | তাহারাই তাহার অপরিচিত স্থানে ত্রাহাকে উতুসাহিন্, আমোদিত শনশ্চিন্ত করিয়া রাখিতে সমর্থ ছিল। তিনি আধুনিক সাধারণ নবোঢ়। বালিকার স্যায় অশিক্ষিতা* ছিলেন না, সুতরাং পতিগুহে পিতামাতা, ভ্রাতা ভগিনী প্রন্ভৃতির বিরহজনিত দুঃখ তাহার হৃদয়কে স্পর্শ করিতে পারে নাই। তাহার স্থশিক্ষাগুণে পতিগৃহস্থ সমস্ত অপরিচিত লোক পূরবব-পরিচিতের ন্যায় প্রতীয়মান হইয়াছিল। বিবাহকালে পাত্রী উত্তম উজ্জ্বল পবিত্র পট্রবস্্ পরিধান করিয়া থাকে। সূর্য্যার পবিভ্র বন্ত্রখানি সূ্যার পবিত্র স্তবমধুর সাম-গানে যেন পবিক্রতর হইয়াছিল। তিনি সামবেদে অসাধারণ পািত্য লাভ করিয়াছিলেন দেই পবিভ্রতম মনোরঞীন সাম-গানে তাহার পবিত্র বস্ত্রথানি যেন রঞ্রিত হইয়া উজ্জ্বলভাৰ ধারণ করিয়াছিল।' তিনি সামান্য একখানি বস্ত্র পরিধান করিলেও মনোরঞ্জন পবিভ্রতম সামবেদে তাহার অগাধ উজ্জ্বল জ্ঞান, তাঁহার বর্ণরঞ্জিত উজ্জ্বল পবিত্র পট্টবস্ত্রের অভাব পুর্ণ করিয়াছিল

সপ্তম মন্ত্রের" অর্থ এই যে, পতিগুহে আগমন-সময়ে সূরধম্নর গঠিত ধন্জীবনই বিবাহের পর জামাতৃগৃহে প্রেরণীয় দ্রব্য-সন্তারম্বরূপ হইয়! তাহার সহিত চলিল। তাহার প্রশস্ত আকর্ণ-িস্তৃত নয়নযুগুলই তৈল- হরিদ্রাদি অভ্যঞ্জন সেহ-দ্রব্ন্বরূপ হইয়া যেন তাহার

(৪৬ )

সহিত চলিল। স্বর্গ পৃথিবী তীহার কোষ-পেটিকা- ( ক্যাশ্বাক্স ) স্বরূপ হইয়া যেন তাহার সহিত চলিল। এই মন্ত্রের ভাবার্থ এই যে, বিবাহের পর নবোঢ। বালিকা যখন শ্বশুরালয়ে গমন করে, তখন তাহাকে বসন ক্রীড়া- দব্যাদি-পূর্ণ একটি পেটিকা (প্যারা বা তোরঙ্গ) এবং ধন অলঙ্কারাদি-পুর্ণ একটি কোষ-পেটিক! (ক্যাশ্বাঝস,) প্রদান করিতে হয়। বহু সহস্র বর্ধ পুর্বে ভারতবর্ষে বৈদিকযুগে হিন্দুসমাজে এইরূপ রীতি প্রচলিত ডিল এবং অদ্যাপিও প্রচলিত আছে। কেহ বা একটি পেটিকাতেই সমস্ত প্রদেয় দ্রব্য দিয়া থাকে, কেহ বা পুবেবাক্তরূপ* ছুইটি পেটিকা ( বস্থাদি দ্রব্যের পেটিকা কোষ-পেটিকা বা “ক্যাশ্বাঝস” ) প্রদান করে। কিন্তু সুধ্যার বিবাহের পর পতিগুঁহে যাইবার সময় তাহার সহিত এইরূপ ধন-পেটিক! প্রেরণের তাদৃক প্রয়োজন হয় নাই। কারণ, তিনি ঈদৃশী সুচরিত্রা, স্থৃশিক্ষিতা গুণবতী ছিলেন যে, তাহার চরিত্র শিক্ষা সদগুণরাশির স্ুনির্্ীল যশোরূপ ধন, স্বর্গে মর্তে সর্বত্রই পরিব্যাপ্ত হইয়া পড়িয়াছিল। স্ৃতরাং স্বর্গ মত্ত্যলোক; তাহার কোষা- গারস্বরূপ হইয়াছিল। বিবাহের সময়*পাত্রের গৃহে ত্ৈল- হরিদ্রাদি অভ্যঞ্রন-দ্রব্য £প্ররণ করিতে হয়। কিন্তু সুধ্যার বিবাহের সময় এরূপ বস্ত্র সকল প্রেরণ করিবার তাদৃশ প্রয়োজন হয় নাই। কারণ, তীহার সনি,

(৪৭ )

মনোরমণস্থদীর্ঘ, স্থ প্রশস্ত নয়নযুগল হইতে যেন স্বাভাবিক সেহধার! নিঃস্তন্দিত হইতেছিল।

তাহার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সকল স্বাভাবিক স্স্সিগ্ধ, সুন্দর সমুজ্ত্বল ছিল ।* স্থৃতয়াং তৈলাদি স্নেহ-পদার্থে হরিদ্রাদি অভ্যপ্রন-দ্রব্যে তাহার অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কৃত্রিম সিগ্ধতা বর্ণর উজ্জ্বলতা সংবদ্ধন করিবার জন্য এই সকল,দ্রব্য প্রেরণ করিবার তাদূক্‌ প্রয়োজন হয় নাই। দশম মন্ত্রে অর্থ এই* যে, ধিবাহের পর পতিগৃহে গমনকালে তাহার ্তপ্রশস্ত, সরল, উদার, নিষ্পাপ মনই তাহার যানম্বরূপ ( গাড়ী, পাক্ধী, ডুলি বা চতুর্দোলা 1) হইয়াছিল। উপরিসথ আকাশই এই যানের উদ্ধাচ্ছাদন-স্বরূপ হইয়াছিল এইরূপে তিনি বিবাহের পর, পতিগুহে গমন করিয়া- ছিলেন। ত্রয়োবিংশতি মন্ত্রের অর্থ এই যে, আমাদের বন্ধুগণ বিবাহার্থ পাত্র। অন্বেষণ করিবার জন্য যে সকল পথে গমন করে, সেই সকল পথ যেন নিষ্ষণ্টক নিরুপদ্রব হয়। হে ইন্দ্রাদি দেবতাগণ, পতি পত্বী যেন দৃঢ়রূপে একটি প্রেমসত্রে গ্রথিত হয়।

পঞ্চবিঃশতি মন্ত্রের অর্থ এই যে, এই কন্যারূপ পবিত্র পু্পটিকে পিতৃকুলরীপ বক্ষ হইতে উত্তোলিত করিয়া পির হস্তে গ্রথিত' করিয়। দিলাম। হে ইন্দ্রদেব, এই কন্যাটি'যেন পতিগৃহে গিয়া সৌভাগাবত্টু সমুদ্ধিশালিনী হয়, ইহাই আন্তরিক প্রার্থনা বড় ধিংশ.মন্ত্রের অর্থ এই

(৪৮ )

যে, পুষ! (দেবত1) তোমার হস্ত ধারণ করিয়া পিতৃগৃহ হইতে পতিগৃহে নির্বিন্ষে লইয়া যাউন। স্বর্গবৈদ্য অশ্বিনীকুমারছয় তোমাকে রথে আরোহণ করাইয়া পিতৃ- গুহ হইতে পতিগুহে লইয়া যাউন। তুধি পতিগৃহে গমন করিয়া প্রশংসনীয় গৃহকত্রী হও ।ৎতুমি পতিগুহে সকলের প্রভু হইয়া শান্তম্বভাব, ধৈর্য বুদ্ধিমত্তার সহিত সকলের উপরে প্রতৃত্ব করিও উনত্রিংশ মন্ত্রের অর্থ এই বে, হে সৌভাগ্যবতি নারি, তুমি মলিন বন্্র পরিত্যাগ করিও! কদাপি মলিন বস্ত্র পরিধান করিও না। মলিন বস্ত্র পরিধান কর! দারিপ্র্যের লক্ষণ। পরমেশ্বরকে যাহার' স্নবদ| উপাসন। করে, পুজ। করে, স্ব করে, তাহাদিগকে যথাসাধ্য ধন দান করিও। হে হিতৈধিগণ, তোমর; সকলে দেখ, পত্ী পতির সহিত অভিন্নরূপা হইয়! কেমন শ্বশুরালয়ে যাইতেছে। দ্বাত্রিংশৎ মন্ত্রের অর্থ এইযে, যাহার! অনিষ্টাচরণের জগ্ট এই দম্পতীর নিকটে আসিবে, তাহারা বিনষ্ট হউকৃ। এই দম্পতী যেন সদুপায় দ্বারা বিপত্তি'জালকে ছিন্ন-ভিন্ন করিতে পারে। এই দম্পতীকে দেখিবামাত্র শক্রগণ যেন দূরে পলায়ন করে। ্রয়ন্ত্রিশৎ মন্ত্রের অর্থ এই খে এই নবপরিণীত। বধূ অতি স্লক্ষণ-সম্পন্না। তোমরা সকলে মিলিয়া আইস। এই বধূকে দেখ। এই বধূ সৌ্তীগ্যবতী হউন্‌। সমুদ্ধিশালিনী হউন্। পতির প্রিয়পাত্রী

(৪৯)

হউন্‌। "এইরূপ আশীর্বাদ করিয়া তোমরা স্ব স্ব গুহে গমন কর। 4

যট্ত্রিংশৎ মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে বধু; তুমি সৌভাগ্য- বতী হইবে বলিয়া আমি তোমার হস্ত ধারণ করিয়াছি। আমাকে পতিরূপে গ্রহণ করিয়া তুমি বৃদ্ধাবস্থায় উপনীত হও। আমার সহিত গৃহস্থা শ্রমের ধর্ম আঁচরণ করিবার জন্য দেবতারা তোমাকে আমার হস্তে সমর্পণ করিয়াছেন।

দ্বিচত্বারিংশ মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে দম্পতি, তোসর] দুই জন সদা একস্থানেই বাস করিও, কদাগি পরস্পর পৃথকৃভাবে বাস করিও না।" ছুই জনে মিলিয়া নানাবিধ সুখাদা বস্তু ভোজন করিও নিজগৃহে বাস [স করিয়া পুক্র- পৌত্রাদির সহিত আমোদ-আহলাদে ক্রীড়া ক্রয় দিন বাপন করিও

ত্রিচত্বারিংশৎ মন্ত্রের অর্থ এই যে, প্রজাপতির অনুগ্রহে আশীর্ববাদে আমাদের উত্তম পুরপৌত্রাদি উৎপন্ন হুউক্‌। অর্ধ ( দেবতা ) আমাদিগকে ্ধাবস্থা পর্যন্ত একত্র সম্মিলিত করিয়া রাখুন হে বধু, তুমি কল্যাণভাগিনী হইয়া! পতিগৃহে চিরকাল অবস্থিতি করিও এক মুহূর্তের জন্য পতিগৃহ পরিত্যাগ কিয় স্থানাস্তরে যাইও না থাকিও না। দাসদাসী গে! [ঘোটকাদি গৃহপাল্য পশুদিগের প্রতি সদয় ব্যবহার কারও “তাহা,

(৫০ )

দিগকে পুক্রনিরিবশেষে যত করিও, প্রতিপালন করিও এবং তাহাদিগের কল্যাণসাধন করিও

চতুশ্চত্বারিংশৎ মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে বধু, তোমার নেত্রদ্ধয় ষেন নির্দোষ হয়। ভূমি পতির কল্যাণকারিণী হই৪। বিশ্বাসপাত্রী হইও। তোমার মন যেন সদা প্রফুল্ল থাকে! তোমার শরীর যেন লাবণ্যপুণণ হয় উজ্জ্বল বর্ণ ধারণ করে। তুমি বীরপ্রসবিনী হইও। পরমেশ্বরে তোমার যেন অচল! ভক্তি বিশ্বাস থাকে। গৃহের দাসদাসী পশুদিগের প্রতি সদা সদয় ব্যবহার করিও এব" তাহাদের কল্যাণ কামনা! করিও

পঞ্চচত্বারিংশত মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে জলবধিন্‌ ইন্্রদেব, আপনর কৃপায় আশীর্ববাদে এই বধূর যেন উৎকৃষ্ট পুক্র জন্মে এবং সৌভাগ্য-সম্দ্ধি বন্ধিত হয়। ইহার গর্ভে যেন দশটি পুক্র জন্মে এবং ইহার পতিকে লইয়া এই বধ “ঘন একাদশব্যক্তিমতী হয়।

ষট্চস্বারিংশগ মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে বধু, তুমি তোমার শ্বশুরালয়ের সম্রাজ্ঞী ইইও। তুমি তোমার শ্বশুর মহাশয়ের প্রতি, শব্ধ ঠাকুরানীর প্রতি, ননদদিগের প্রতি এবং দেবরদিগের প্রতি লমরাজন্বরূপা হইও। অর্থাৎ কোন একটি সম্রা্জী যেমন কোটি কোটি প্রজার কল্যাণ করেন, মাতার ন্যায় তাহাদিগকে প্রতিপালন করেন, সুবিচার, স্থুবীতি, স্থব্যবস্থা হৃশামনগুণে প্রঙ্জা-

(৫১ )

গণকে মন্ত্রমুগ্ধবৎ স্ববশে রাখিয়া থাকেন, নানা বিপদ্‌ হইতে ক্ষা করেন এবং তাহার রাজ্যমধ্যে সদ সর্ববত্র শ্ুখশাস্তি বদ্ধন করেন, তদ্রুপ তুমিও পতিকুলে গৃহকত্রী হইয়া সকল বিষয়ে ব্যবস্থা করিও | সকলের প্রতি স্ববিচার করিও সকলের রক্ষণাবেক্ষণে মনোযোগিনী হইও। সকলের প্রতি সদয় উত্তম ব্যবহার করিও। সকলকে আধি-ব্যাধি প্রভৃতি বিপদ হইতে উদ্ধার করিও। নিজগ্জণে সকলকে বশীভূত করিয়া বাখিও এবং গৃহরূপ তোমার একটি ক্ষুদ্র রাজ্যে যাহাতে সর্বদা সুখ শান্তি বিরাজ করিতে পারে, তদ্বিষয়ে সর্বদা নত্নবতী হইও, অবহেলা করিও না “তুমি শ্বশ্বর শাশুড়ী প্রভৃতির উপর সম্রান্তীস্বরূপ। হইও)” খগৃবেদের এই কথার এইরূপ অর্থ যেন কেহ না বুঝেন যে, স্আাজন্তী যেমন সিংহাসনে বসিয়া থাকেন রাজোর প্রধান প্রধান মাননীয় প্রজারা যেমন তীহার সম্মুখে আসিয়া মস্তক অবনত করিয়া তিনবার প্রণাম করেন এবং তিনিও যেমন আদেশবাণী প্রচার করেন তাহার৷ যেমন উহ] শিরোধার্য্য করেন, তজ্ধপ বধু সর্ববদ] “ইিজি চেয়ারে” বলিয়া থাকিবেন এবং তীহার শ্বশুর শাশুড়ী প্রভৃতি তাহার সম্মুখে দাড়াইয়া অবনত-মস্তকে তাহাকে তিনবার প্রণাম করিবে তাহার আদেশ শিরোধার্ধা করিবে, এইরূপ অর্থ কেহ যেন না বুঝেন। সপ্তচত্বারিংশৎ মন্ত্রের অর্থ এই"ঘে, ইন্দ্রাদিদেবগণ,

(৫১ )

আমাদের (পতি পত্বীর ) হৃদয় মনকে এক করিয়া দিন।. বায়ু, ধাতা বাগ্দেবী আমাদিগকে উত্তমরূপে একত্র সম্মিলিত করিয়া রাখুন, ইহাই আমাদিগের আন্তরিক প্রার্থনা খগ্েদের দশম মগুলের ৯৫ সুক্তটি পুরূরবা-নামক পতি উর্ববশী-নান্নী পত্ী কর্তক ংকলিত। এই সৃক্তে ১৮টি মন্ত্র মাছে মন্তরগুলি স্বামী স্ত্রীর পরস্পর উক্তি-প্রত্যুক্তিতে পরিপূর্ণ গ্রন্থের কলেবর বিস্তৃত হইয়। পড়ে বলিয়৷ এগুলির অর্থ লিখিত হইল না। খগেেদের দশম মণ্ডলের ১০২ সুক্তের দ্বিতীয় মন্ত্রে দেখিতে পাওয়া বায় যে, মুদগল খধির পত্তী ইন্দ্রসেনা রথে মারোহণ করিয়া যুদ্ধ করিয়াছিলেন, সহজ শক্র- জয়িনী হইয়াছিলেন এবং বিপক্ষীয় সৈন্যদিগের হস্ত হইতে ধেন্ু মকলকে উদ্ধার করিয়াছিলেন তাহার দোদদ ু- প্রতাপে অসাধারণ বীরত্বের প্রভাবে তৎকালে বৈদিক যুগে ভারতের গোধন শক্র-হস্তগত হইতে পারে নাই গোধন যে কি অমূল্য বস্ত, তাহ! বৈদিক যুগের আধ্য- মহিলারাই বিশেষরূপে জানিতেনণ তাহার! স্ত্রীলোক হইয়াও ভারতের গোধন-রক্ষার জন্য রথে চড়িয়া যুদ্ধ পধ্যন্ত মহাকাণ্ড করিতে পারিতেন। তীহারা উত্তমোন্তম দুগ্ধ, ক্ষীর, নবনীত দ্বতের অভাব কখনই অনুভব করিতেন ন!। এই সকল উতকৃষ্টতম বস্তু ভক্ষণ করিয়া তাহারা উত্তম স্বাস্থ ভোগ করিত্ঞ্টে এবং উত্তমরূপে

( ৫৩)

সান্তিকী বুদ্ধিবৃত্তি পরিচালনা করিতে পারিতেন। অধুনা এঁ সকল বস্তুর নিকৃষ্টতা, অভাব মহার্ঘ্য বশতঃ নরনারী- গণ উত্তম স্বাস্থ্য লাভ করিতে পারেন না এবং তাহাদের মধ্যে অনেকের বুদ্ধিবৃত্তিও সান্ডিক পথে পরিচালিত হয় না।

|

/ত

ভু

ঝগ্থেদের দশম মগুলের ১০৯ সূক্তটি বৃহস্পতির ভার্ষা জু কর্তৃক সংকলিত হইয়াছে এই সুক্তে ৭টি গন্ধ আছে।

শশা শীল

ইন্দ্রাণী

খণ্েদের দশম মগুলের ১৪৫ সুক্তটি ইন্দ্রাণী-নান্দী আর্ধা-মহিলা কর্তৃক সংকলিত। এই সুক্তে ৬টি মনত আছে। জগতে সপতুম পীড়াদায়িকা হইয়া থাকে বলিয়া কাহারও যেন ঝঁদাপি সপত্ী না হয়, এইরূপ জদিচছা- প্রপ্টেদিত হইয়া তিনি এই মন্ত্রগুলি সংকলন করিয়া- ছিলেন। অতি প্রাচীন স্থুসভ্যতার আকর ভারতভূমিতে শান্তিপূর্ণ গৃহস্থাশ্রমে সপতীর আবির্ভাব বৈদিিযুগে মহা অমঙ্গলজনক বলিয়া বিবেচিত হইত,। এক স্ত্রী জীবিত

(৫৪)

থাকিতে দারান্তর পরিগ্রহ করা ততকালে স্ত্যসমাজের রঁতিবিকুদ্ধ কাধ্য বলিয়া গণ্য হইত এবং ভতি দ্বৃণিত কারা বলিয়া বিবেচিত হইত এই জন্য বৈদিক মন্ত্রে সপত্ীর উচ্ছেদকামনা দৃষ্ট হইয়া থাকে'। অন্যাপি অন্য সমাক্ত অপেক্ষা বঙ্গের বৈদিক সমাজে এই বছু-বিবাহরূপ কুরীতি প্রচলিত নাই। অন্যাপি বৈদিক-শ্রেণীস্থ ঢোক সকল বনু সহজ বধ পূর্বের তাহাদের বৈদিকধুগ-প্রচলিত সদাচার রক্ষা করিতেছেন। কলির .প্রভাববৃদ্ধি ধর্ম “হানির সন্ষে সঙ্গে ভারতে কোন কোন সমাজে এই কুপ্রথা প্রচলিত হইয়াছে এমন কি, এক রাটীয় কুলীন ব্রা্গণের * ১০৮টি পর্য্যন্ত বিবাহ শ্রুতিগোচর হইয়াছে ইহা মনে করিলেও গাত্র শিহরিয়া উঠে !! ঘ্বণার উদ্রেক হয়। কৌলীন্য শব্দের অর্থ দুর্ব্বোধ্য হইয়া উঠে

সপ পশপিপিপিশি

শচী।

ধথেদের দশম মণ্ডলের ১৫৯ সূক্তটি শচী-নান্মী ব্রহ্ম .বাদিনী আধ্য-মহিলা কর্তৃক সংকলিত হইয়াছে এই সুক্তে ৬টি মন্ত্র আছে। কাহারও যেন সপতী না হয়, ইহাই বুঝাইবার জন্য মন্ত্রগুলি সংকলিত হইয়াছে

(৫৫ ) গোৌধা। খথেদের দশম মগ্ডলের ১৩৪ সুক্তের সপ্তম মন্ত্রটি

গোধা-নান্ী আর্ধ্য-মহিলা কর্তৃক সংকলিত অপ্তম মন্ত্রটির অর্থ এই ষে, 'হে দ্েবগ্রণ, আমি আপনাদিগের জপ, হোম স্ৃতিপাঠাদি বিষয়ে কখনই কোনরূপ ত্রুটি করি নাই। আঁমি আপনাদিগের পুঙা-আরাধনাদি বিষয়ে কখনই গুঁদাস্য বা আলম্তভাব প্রদর্শন করি নাই। বৈদিক বিধি অনুলারে আমি প্রায় সর্নবদাই যক্ঞ্ত অনুষ্ঠান করিয়া থাকি। বেদোক্ত আচার-বাবহারে সদাই রত থাকি। ছুই হস্তে যজ্ভীয় দ্রব্যসম্তার লইয়া যচ্দ্ধ সম্পাদন করি |

যী"

ঝণ্েদের দশম মণ্ডলের ১৫৪ সুক্টি। ব্রহ্মবাদিনী যমী- নান্দী আর্ধ্-মহিলা কর্তৃক সংকলিত। এই সুক্তে পাঁচটি মন্ত্র আছে। দ্বিতীয় মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে প্রেতাত্মন্‌, যে সকল মহাত্র্$ তপস্যাপ্রভাবে শক্র কর্তৃক অনাক্রমণীয় হইয়াছেন, ধাহারা তপঃপ্রভাবে স্বর্গগামী হইয়াছেন, ধাহার! অত্যন্ত কঠোর তপস্যা করিয়াছেন, হে প্রেতাত্বুন, আপনি তীহাদিগের নিকটেই গমন করুন। তৃতীয় 'মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে প্রেতাত্বান, যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ- নীতি অনুসারে যাহারা রীতিমত যুদ্ধু করিয়াছেন, ধাঁহারা

( ৫৬ )

যুদ্ধক্ষেত্রে শরীরের মায়া ত্যাগ করিতে পশ্চাঙ্ুপদ হয়েন নাই, ধাহার! যজ্ঞে সহ সহস্র মুদ্রা দক্ষিণা দিয়াছেন, হে প্রেতাত্মন্, আপনি তাহাদের নিকটেই গমন করুন

চতুর্থ মন্ত্রের অর্থ এই যে, যে সকল গ্রাচীন পুণ্যকম্মমা লোক পুণ্যকর্দ অনুষ্ঠান করিয়া' পুণ্যকীন্তি হইয়াছেন, পুণৃধারা প্রবাহিত করিয়াছেন এবং কঠোর তপস্যার প্রভাবে যে পুণ্যধামে গিয়াছেন, হে প্রেতাত্মন্, আপনি তাহাদের সেই পুণ্যধামেই গমন করুনু। পঞ্চম মন্ত্রের অর্থ এই যে, যে সকল বুদ্ধিমান ব্যক্তি সহজ প্রকার 'গকর্থ্ের দৃষ্টান্ত দেখাইয়া গিয়াছেন, বাহাদের পুণ্য- প্রভাবে সুধ্যদেব রক্ষিত হইতেছেন, ফাহারা তপস্যা হইতে উৎপন্ন হইয়া! কেবল তপস্তাই করিয়াছেন, হে কৃতান্ত, এই প্রেতাস্থা। যেন তীহাদের নিকটেই গমন করেন, ইহাই আমার এঁকান্তির প্রার্থনা পূর্বে এই মন্ত্রগ্ুলি শ্শানে শবকে চিতায় আরোহণ করাইবার সময় প্রেতাত্মার স্বর্গ- বাসকামনায় পঠিত হইত অধুনা অন্যান্য মন্ত্র পঠিত হয়।

পিপলস

সার্পরাজ্ঞী।

খগ্থেদের দশম মণ্ডলের ১৮৯ সুক্তুটি সার্পরাজ্ঞী কর্তৃক সংকলিত এই সৃক্তে ৩টি মন্ত্র মাছে। দ্বিতীয় মন্ত্রের

(৫৭ )

অর্থ 'এই ধরে, সূর্যযদেবের অভ্যান্তরভাগে অত্যুজ্ছল প্রতা যেন বিচরণ করিতেছে |

এই প্রভা যেন তীহার প্রাণের মধ্য হইতে নির্গত হইয়া আসিতেছে'। এই সূর্য্যদেব দেখিতে ক্ষুদ্র হইলেও বৃহত্তম হইয়৷ আকাশমগুটুল পরিব্যাপ্ত হইয়! রহিয়াছেন।

'তৃতীয় মন্ত্রের অথ এই ঘে, এই সুধ্যদ্দেব কেমন উজ্জ্বল- রূপে শোভমান হইয়াছেন। এই সুর্যযদেবের উদ্দেশে এই স্তব হইতেছে আহা ! সুধ্যদেব কেমন স্বীয় কিরণমালায় বিভূষিত হুইয়া আছেন

পাপা পাস্ীিসিপিপিীপিলকজ

অদ্কা।

শ্রদ্ধা-নান্সী ব্রঙ্গবাদিনী আর্য্যমহিলা খণেদের পাঁচটি মন্ত্র সংকলন করিয়াছেন যজ্ঞ দান প্রভৃতি সশুকার্যের মহিম! উহাতে উল্লিখিত আছে |

লোপামুদ্রা। ধগ্েদের, প্রথম মগুলের ১৭৯ সৃক্ত লোপামুদ্রা-নাম্মী আর্ধ্য-্হিলা কর্তৃক সংকলিত প্রথম মান্ত্রের অর্থ £__ লোপামুদ্রা 'পতিকে বলিতেছেন, হে স্বামিন, আমি বনুবতুসর' অবধি রাত্রিদিন ক্রমাগত আপন্তার সেখা করিয়া ক্রাস্ত, শ্রান্ত জরাজীর্ণ হইয়া পড়িয়াছে। , দেহের অঙ্গ-

৫৮ )

প্রত্যঙ্গ সকল বাদ্ধক্য নিবন্ধন শিথিল শ্বীর্ণ হইয়া 'পড়িয়াছে। তথাপি আপনার সেবায় অদ্যাপি রত আছি। কখনও আলস্য প্রকাশ করি নাই। আপনার সেবাকেই পরম ধর্মী পরম তপস্য। বলিয়া জঞ্ঞান' করি। কারণ, স্্রক্জাতির পতিই একমাত্র গতি। পতিসেবাই তাহার একমাত্র ধর্ম। আমার প্রতি আপনার যেন যথেন্ট অনুগ্রহ থাকে, ইহাই আমার এঁকান্তিক প্রার্থনা

শশ্বতী।

আসঙ্গ-নামক রাজার মহিষীর নাম শশ্বতী। তীহার পিতার নাম মহধি অঙ্গিরাঃ। শশতী বেদাদি শান্ে অসাধারণ পণ্ডিতা ছিলেন। খগ্বেদের অষ্টম মণ্ডলের প্রথম সুক্তের' ৩৪ মন্দ্রটি শশ্বহী কর্তৃক সংকলিত। মহারাজ আসঙ্গ একদা দেবশ[পে নপুংসকত্ব প্রাপ্ত হইয়!- ছিলেন। তাহার সাধ্বী পতিব্রতা পতী শশ্বতী স্বামীর ঈদৃশী ছুর্দশা দেখিয়া অতিশয় ছুঃখিত হইয়া স্বামীর ছুর্দশা- মোচনার্৫ঘ উগ্রতপস্তা করিয়াছিলেন তাহার এই উগ্র- তপঃপ্রভাবে মহারাজ আসঙ্গ এই দুর্দশা হইতে নিষ্কৃতি লাভ করিয়াছিলেন। অনন্তর শশ্বতী গ্রীত হইয়া স্বামীকে স্তব করিবার জন্য মন্ত্র রচনা করিয়াছিলেন

(৬

(৫৯ ) রোমশী

খর্েদের প্রথম মণ্ডলের ১২৬ সৃক্তের সপ্তম মন্ত্রটি রোমশ।-নানী শিক্ষিতা আর্ধ্য-মহিল! কর্তৃক সংকলিত। রোমশার গাত্র রোমাবলী-সমাচ্ছন্ন ছিল বলিয়! তীহার' পনি তাহাকে উপহান করিতেন স্বণা করিতেন রোমশা তজ্জন্য দুঃখিতা লজ্জিতা হইয়! স্বামীকে বলিয়া- ছিলেন যে, হে স্বামিন্‌, আমার গাত্রে বেশী লোম থাকিলেও, আমার স্ত্রীজনোচিত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কোন অংশে হানি ঘটে নাই। আমি পুর্ণাবয়ব|! আমি বিকলাঙ্গী নহি।'

বধ্িমতী।

খগেদের ১১৬ সৃক্তের ত্রয়োদশ মন্ত্রে দেখিতে পাওয়। যায় যে, বধ্রিমতী-নান্দী শিক্ষিতা আর্ধ/-মহিলা অস্বিনী- কুমারদ্বয়কে স্তব করিয়াছিলেন শিষ্য যেমন গুরুর কথা শ্রবণ “করে, অস্বিনীকুমারদ্বয়ও তব্রূপ বঞরিমতীর আহ্বান শ্রবগ্ করিয়াছিলেন | ধাথেদের প্রথম মণ্ডলের ১৩১ সৃক্তে দেখিতে পাওয়া যায় যে, পাপদেষী, যাজ্ঞিক তাহার পত্বী একত্র সম্মিলিত হইয়৷ বহু গোধনপ্রাপ্তিকামনায় ইন্দ্রের উদ্দেশে অগ্নিতে আহতি প্রদান করিতেছেন। খগেদের চতুর্থ মগুলের ২৪

( ৬০ ) সুক্তের অষ্টম মন্ত্রে দেখিতে পাওয়া যায় যে, ভারতের গাধ্যগণ খন অনার্ধ্যজাতির সহিত তুমুল সংগ্রামে ব্যাপৃত থাকিতেন, তখন তাহাদের ধন্মপত্বীগণ যজ্ঞশালায় বসিয়! নিজেরাই হোম করিতেন কালের বিচিত্র পরিবর্তন বশতঃ যখন পতি পত্তী উভয়েই সংস্কত-জ্ঞান-বিহীন, মুর্খ, কুসংস্কারাচ্ছন্ন বিষয়াঁসক্ত হইয়া পড়িল, তখন পুরোহিত দ্বারা ধন্-কম্মানুষ্ঠানের সূচনা আরব্ধ হইতে লাগিল। তাঁর পর যখন পরিবর্তনশীল কালের ছুজ্জে় প্রভাবে ধন্মের বিদ্যাশিক্ষার অবনতি হইতে লাগিল, তখন পুরোহিতগণও মুর্খ বিষয়ভোগাসক্ত হইয়া পড়িল। তখন যজ্ঞ্াদি ক্রিয়াকলাপ ক্রমে ক্রমে দেশ হইতে সমূলে উন্মলিত হইতে লাগিল খখেদের চতুর্থ মণ্ডলের ৪২ সুক্কে দেখিতে পাওয়া যায় যে. পুরুকুৎসের পত্রী অগ্নিতে ত্বৃতান্থতি প্রদান করিয়৷ স্থললিত স্তবে ইন বরুণকে প্রীত করিয়াছিলেন তিনি ইন্দ্র বরুণের কুপায় অর্ধদেব ত্রসদস্থ্ুকে প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। রাজা দুর্গহের পুত্র পুরুকু্ুস শত্রু কর্তৃক কারাবরুদ্ধ হইলে পর, রাজার অভাবে রাজ্য অরাজক বিদ্্রোহপুর্ণ হইয়া উদ্ভিবে, এই ভাবিয়া রাজমহিষী স্বয়ং বেদমন্ত্র উচ্চারণ ুরববক সপ্তুষিগণের পুজা করিয়াছিলেন সপ্তধিগণ প্রীত হইয়া এঁ রাজার প্রাসাদে উপস্থিত হইয়াছিলেন। তীহারা রাজমহিষীর পৃজায় অতিশয় গ্রীত হইয়! ত্রাহাকে বলিয়া-

( ৬১)

ছিলেন, হে রাজমহিষি, আপনি ইন্দ্র বরুণের প্রীতির জন্য যন্ত্ত করুন। অনন্তর রাজমহিষী যজ্ঞ করিয়া অর্ধ- দেব ত্রসদস্থ্যকে প্রাপ্ত হইস্ছিলেন। রাজার অভাবে রাজ্য অরাজক এবং বিদ্রোহ অশান্তিপুর্ণ হইবে, এই ভাবিয়৷ তৎকালের রাজমহি বীরা ধর্ম-কন্ম্মানুষ্ঠানে ব্যাপৃতা থার্কিতেন। ধর্ত্ানুষ্ঠানপ্রভাবে রাজো শান্তি সংস্থাপিত হইত। তাহারা এইরূপ দুঃসময়ে শোকে, তাপে ভয়ে বিহবল! হইয়৷ রাত্রিদিন রোদন করিতেন না এবং প্রজা- বর্গের হিতচিন্তায় বিরত হইয়া রাজ্য রসাতলে দিতেন না তাহারা এই বুঝিতেন যে, রাজ্যের মঙ্গল শান্তি রাজা ' রা'ছন্তীর ধর্ম্াবুদ্ধির উপরে নির্ভর করে এবং তাহাদেরই ধন্মানুষ্ঠানে শৈথিলা বশতঃ রাজ্যের অশান্তি অমঙ্গল ঘটিয়া থাকে |

ভারতের আধ্য-মহিলাদিগের ধর্ম্মানুষ্টান-কথা খণ্েদেও স্থান পাইয়াছিল। ইহা একবার ভাবিলেও ভারতের মৃতপ্রায় ধন্মভাব পুনরুজ্জীবিত হইয়া উঠে। খথেদের পঞ্চম মণ্ডলের ৩* সৃক্কের নবম মন্ত্রে দৃষ্ট হয় যে, পূর্বব- কালে মহিলাগণ যুদ্ধে সৈনিক-কার্ধ্যও করিতেন। নমুচির সহিত*্ইন্ড্রের যখন যুদ্ধ হইয়াছিল, তখন ইন্দ্র বলিয়া- ছিলেন, নমুচির স্ত্রীসেনা আমার কি করিবে? কিছুই করিতে পারিবে না! নমুচি স্বীয় স্ত্রীসনাকে " অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত করিয়া যুদ্ধ করাইত। ইন্দ্র তাহার ছুইটি স্ত্রী

৯১

( ৬২)

সৈশ্যাধ্যক্ষকে কারাঁবরুদ্ধ করিয়া তাহার সহিত যুদ্ধ করিয়াছিলেন খথেদের ৪৩ সুক্তে দেখিতে পাঁওয়৷ যায় যে, ধার্দিক দম্পতী সদা ধর্ম্কর্ষ্মের অনুষ্ঠান বশতঃ র্রান্ত হইয়া পড়িয়াছেন, কিন্তু তথাপি উভয়ে মিলিয়া প্রচুর ঘ্ৃত দ্বারা হোম করিতেছেন এবং দেবগণের নিকটে প্রার্থনা করিতেছেন, হে দেবগণ, আপনাদিগকে আহ্বান করিয়া আমরা কৃতার্থ হই আপনারা আমাদের উপর কদাপি কুপিত হইবেন না। আমাদের অপরাধ ক্ষমা করিবেন। বগ্বেদের পঞ্চম মণ্ডলের ৬১ সূক্তে দেখিতে পাওয়া যায় যে, রাক্ত ভরতের মহিষী রাজী শশীয়সী দেবতাদিগের আরাধনা, জপ, হোম, পুজা এবং দরানাদি সশুকার্ষ্যে সদা রত থাকিতেন। তিনি পুণ্যকার্য্যের বলে চিরযৌবনা হইয়া- ছিলেন। ট্রাহার অসাধারণ দয়া-দাক্ষিণা ছিল। তিনি রোগার্ত, ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত দীনহীন জনগণের প্রতি সদাই কৃপাবর্ষণ করিতেন। খেদের ষষ্ট মণ্ডলের ৬৮ সৃক্তের চতুর্থ মন্ত্র অর্থ এই যে, হে ইন্দ্র বরুণ, মর্ভলোকে নরনারীগণ তোমাদ্দিগকে সদা পুজ|! করেশ। তোমরাও তাহাদিগকে সদা রক্ষা করিও তোমরা মহান্। এই মন্ত্রপাঠে ইহাই অবগত হওয়া যায় যে, পুরুষের ম্যায় স্্রীলোকেরও বৈদ্দিক মন্ত্র উচ্টারণ পূর্বক ইন্দ্র বরুণের পৃজা-হোমাদি -করিবার অধিকার আছে। লাট্যায়ন শতসুত্র-নামক গ্রন্থের প্রধম প্রপাঠকের ষষ্ঠ কণ্িকায়

( ৬৩ )

“পত্রী চ” এই সূত্রে ইহাই অবগত হওয়! যায় যে, পতির স্যায় পত়ীও সামগান করিবে যাহারা বলেন, স্্ীলোকের বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণে অধিকার নাই, তাহারা যদি গোভিল- গৃহথসূত্রনামক গ্রন্থের দ্বিতীয় প্রপাঠকের দ্বিতীয় খণ্ডের হইতে ১০ সুত্র পর্যন্ত *দেখেন, তাহা হইলেই তাহারা বুঝি€ত পারিবেন যে, বিবাহের কুশপ্ডিকার সময়ে নব- বধূকে কয়েকটি বৈদিক মন্ত্র পাঠ করিতে হয়।

যে পাত্রের সৃহিত বিবাহ হইতেছে, তাহার সহিত ভবিষ্যতে কিরূপ ব্যবহার করিতে হইবে, তাহার প্রতি কি" কি কর্তব্য হইবে, তাহার গৃহে কিরূপ আচারে চিরজীবম থাকিতে হইবে, তাহার আত্মীয়বর্গের সহিত কিরূপ ব্যবহার করিতে হইবে ইত্যাদি কথা প্রতিজ্ঞ! সকল মন্ত্রে উল্লিখিত আছে। অধুনা সে সকল মন্ত্র পুরোহিত মহাশয়ই উচ্চারণ করিয়া থাকেন। নরুবধূ উচ্চারণ করে না। নব-বধূর নিজের কর্তব্য নিজে করে না, বুঝে না, স্থৃতরাং ভবিস্ততে উহ! পালন করিবে কিরূপে ? নব- বধুর ভ্রাতাকে নব-বধুরু হস্তে এক অর্তীলি লাঙ্গ ( খৈ) প্রদান করিতে হয়, অঞ্জীলির ভেদ না হয়, এইরূপ সাবধানে নব-বধূকে একটি মন্ত্র পাঠ করিয়া এক অঞ্জলি লাজ (খৈ) অগ্নিতে আন্ুতি দিতে হয়। মন্ত্রের অর্থ এই যে, 'এই নারী এক অগ্রলি লাজ (খৈ) দ্লুইয়া এই মন্ত্র গাঠ পূর্ববক অগ্সিতে আছুতি প্রদ্থান করিতেছে এনং

( ৬৪ )

এই প্রার্থনা করিতেছে, আমার পতি দীর্ঘায়ুঃ হউ্ন্। শত- বর্ষ পরমায়ুঃ লাভ করুন। আমার দেবর, ভান্ত্বুর এবং তাহাদের পিতৃব্য প্রভৃতি জ্ঞাতিদিগের শ্রীবৃদ্ধি হউক, তাহাদের সকল বিষয়ে উন্নতি হউক্‌।

নব-বধূ এক্ষণে স্বামীর সগোত্রা হইয়াছেন বলিয়া স্বামীর আত্মীয়-জ্ঞাতিগণ তীহারই আত্মীয়-জ্ঞতিগণ হইয়া দাড়াইয়াছে, এই শিক্ষা বৈদিকযুগে কুশপ্ডিকার সময়ে বধর হৃদয়ে নিহিত হইত। বধৃও পত্গুছে গিয়া পতির জ্ঞাতিবর্গের উন্নতি কামন। করিত, পতির ভ্রাতাও 'পিতৃব্যাদি স্বজনের মধ্যে বিবাদ ঘটাইবার মূল-কারণ হইত না। তাহার দোষে “ভাই ভাই ঠাই ঠাই” হইত না “জ্ঞাতি-বিবাদ” বলিয়া একটা পদার্থ বৈদিকযুগে অনুভূত হইত না। স্ৃতরাং গুহে সদা শান্তি বিরাজ করিত। তখন “স্মার্ত”যুগ বা “সংহিতা”যুগগ আরন্ধ হয় নাই। স্থৃতরাং জ্ঞাতি-বিবাদ-ভপ্তনের নিমিত্ত বা জ্াতিদিগের স্বন্ত নির্ধারণের জন্য দায়ভাগ প্রভৃতি স্মৃতিশান্ত্র নির্মিত হয় নাই। কালের “কুটিল গতি” অনুসারে যখন ধর্মমভাব ক্রমে শিথিল হইতে লাগিল, বৈদিক যুগের অবসান হইতে লাগিল, তখন সেই যুগের অনুরূপ কর্তৃব্যপালনার্থ, খষি- গণ স্মৃতিশান্ত্র রচনা করিয়! বৈদিকধর্্মহীন জনগণের অশেষ উপকারে প্রবৃত্ত হইলেন। গোভিল খর যে সময়ে “গৃহাসূত্র”নায়ক গ্রন্থ রচনা করিয়/ছিলেন, দে সময়ে

( ৬৫ )

স্্ীশিক্ষার কিঞ্িত হ্রাসাবস্থা ঘটিয়াছিল। কারণ, বিবাহ- সময়ে নব-বধূকে বৈদিক মন্ত্রের অর্থ বুঝাইবার জন্য মন্ত্রে অর্থজ্ একটি বৈদিক ব্রাহ্মণের উল্লেখ পগৃহাসুত্রে” দেখিতে পাওয়া যায়। পুরোহিত মহাশয় স্বয়ং একটি মন্ত্র পাঠ করিয়া নব-বধূকে উহ্নাঁর অর্থ বুঝাইয়া দিতেন। এই মন্ত্রের অর্থ এই যে, এই কন্যা পিতা, মাতা, ভ্রাতা প্রসৃতিকে ত্যাগ করিয়া পতিগৃহে আগমন করিতেছে এবং পতি- বিষয়ক উপদেশ, গ্রহণ করিতেছে হে কন্যে, আমর! তোমার সহিত একত্র হইয়া জলধারার ম্যায় বলবান, বেগবান্‌ পরস্পর অভিন্নভাবে স্থিত হইয়া তোমার শত্রু বর্গকে উত্পীড়িত করিব। ,

গোভিল খধির “গৃহাসুত্র”-রচনার সময়ে মন্ত্রের অর্থভ্ একজন ব্রাহ্মণ নব-বধূকে মনতার্থ বুঝাইয়া দিতেন। এক্ষণে পুরোহিত যখন নিজেই বৈদিক মন্ত্রের অর্থ বুঝেন না, তখন অপরকে বুঝাইবেন কিরূপে ? ইংরাজ, জন্্মন্‌, ফ্ঞ্চ প্রভৃতি পাশ্চাতা জাতির বিবাহ-সময়ে তীহাদের নিজ নিজ ভাষায় অনুদ্দিত' বাইবেল'নামক ধর্্ম-পুস্তকের যে সকল বিবাহ-মন্ত্র পঠিত হয়, তাহা বর বধু বুঝিতে পাকে। পুরোহিত ঈহাশয় কি বলিতেছেন এবং তাহার! ছুই জন ( বর বধু) কীদৃশ ধর্থা-কর্ম্ের অনুষ্ঠানের জন্য ব্রতী হইয়াছে, তাহা তাহার! বুঝিতে ,পারেএ সুতরাং তাহারা ছুই জন বিবাহকালে মনোযোগ, ভক্তি, প্রেম

( ৬৬ )

আইলাদের সহিত সকল দাম্পতা-বন্ধন-মন্ত্র পাঠ করিয়া থাকে কিন্তু প্রাচীনতম সুসভ্যভূমি তারতবর্ষের হিন্দু- জাতির বিবাহ-সময়ে যে সকল বৈদিক মন্ত্র পঠিত হয়, তাহার অর্থ নাজানেন পুরোহিত, না "জানেন বর, না জানেন বধূ এবং না জানেন কগ্যা-সম্প্রদাতা পিতা !!! “কি যে সাপের মন্ত্র পড়া হয়” আর কিবা যে তাহার অর্থ, কেই বা তাহার “খোজ-খবর” রাখে ? ইদানীং এই অধপতিত হতভাগ্য ভারতবর্ষে হিন্দুধন্মের বিঞ্লাৰ- সময়ে বিবাহ এবং ব্রত-পুজাদি পবিত্র ধন্-কম্ যে কিরূপ পণ্ড হইতেছে, তাহ! ভাবিলে বিস্মিত হইতে হয়। সমস্তই ধেন একটা “ভূতের বাপের শ্রাদ্ধ” হইয়া ঈাড়াইয়াছে 1! যে কার্য করা হইল, তাহার “মাথামুণ্ড" কিছুই বুঝা হইল না। অথচ, তিল, তুলসী, তার, গঙ্গাজল স্পর্শ করিয়া অগ্নি ৬শালগ্রামশিলার সম্মুখে প্রতিজ্ঞ- বাক্য উচ্চারিত হইল, কিন্তু তাহার অর্থ-বোধ হইল না। স্মতরাং ভবিষ্যুকালে মন্ত্রের উপদেশ অনুসারে কোন কার্ধা করাও হয়না এবং উচ্চারিত প্রতিজ্ঞাও রক্ষা কর! হয় না।

এঁবূপে উচ্চারিত প্রতিজ্ঞা রক্ষা করিতে না পারিলে যে কিরূপ ভয়ঙ্কর মহাপাপপঙ্কে নিমগ্ন হইতে হয়, তাহা একবার ত্বাবিলেও স্তন্তিত হইতে হয়। সনাতন হিন্দু- ধর্মের মূলভিততি অত্যন্ত সূ, সেই জন্য ইহা বু শতাব্দী

( ৬৭ )

হইতে নানাবিধ অত্যাচারগ্রস্ত হইয়াও এখনও সমূলে' উন্মুলিত হয় নাই এবং কোন কালে যে ইহা সমূলে উন্ম,লিত হইয়া যাইবে, তাহা বোধ হয় না। কারণ, ইহার নাম “সনাতন তীর দৃঢ়তম বিশ্বাস, জান ভক্তি- রূপ উপাদানে ইহার ঘুঁলভিত্তি গঠিত হইয়াছে যাব, লোকের স্থৃদৃঢ় তক্তি-বিশ্বাস থাকিবে, তাব€ ইহার সমূলে উন্মমলন হইবে না। তবে জ্ঞানাতাবে ইহার যে ঘোর, অবনতি ঘটিয়াছে পরেও ঘটিবে, তাহা অবশ্য স্বীকার্য্য। পুরোহিত মূর্খ হওয়াতেই ভারতে ধন্মের ঘোর বিগ্লুব ঘটিয়াছে। তিনি নিজেই বৈদিক মন্ত্রের অর্থ বুঝ! তো দুরের কথা, বৈদিক মন্ত্র সম্যক্রূপে উচ্চারণ করিতেও জানেন না পারেন না। স্থৃত্রাং পরকে আর কিরূপে উচ্চারণ করাইবেন ? এক্ষণে যে কোন প্রকারে পঙ্গীকে “রাধাকৃষ্$” নাম উচ্চারণ করাইতে পারিলেই সমস্ত গোল, মিটিয়া যায়। “গোলে. হরিবোল, দিয়ে” কোন প্রকারে দায় হইতে নিষ্কৃতি পাইলেই এবং দক্ষিণাটি আদায় করিতে পাঁরিলেই পুরোহিত মহাশয় নিশ্চিন্ত হয়েন। বিবাহকালে, “সপ্তপদীগমন”-সময়ে বরকে একটি মন্ত্র পাঠ “করিতে হয়। তাহার অর্থ এই যে, হে বধু, তুমি চিরকালের জন্য আমার সহচারিণী হও, আমি যেন চির- কাল তোমার সৌহার্দ্য ভোগ করি। * তোমার সহিত, সুদুঢ়্ূপে সংস্থাপিত এই সৌছার্দা যেন বিচ্ছেদকারিণী

(৬৮ )

নারীরা ( “ঘর-ভাঙানীরা” ) বিচ্ছিন্ন করিতে নু! পারে। আমাদের হিতৈষিণী ভদ্রমহিলারা সহুপদেশ-প্রদানাদি- দ্বারা আমাদের এই নৃতন লৌহৃদ্য ক্রমে বদ্ধিত করিতে থাকুন। এই মন্ত্র দ্বার ইহা! বুঝা যাইতেছে যে, কোন গৃহ-বিচ্ছেদকারিণী নারীর কুটবুদ্ধির দোষে পরে গৃছে অশান্তিঅনল যেন প্রন্বলিত না হয় এবং তদ্বিষয়ে*বধূ যেন এখন হইতেই সতর্ক থাকেন, ইহা ইঙ্গিত করিয়া বধূকে বুঝাইবার জন্য পুরাকালে বর, এই মন্ত্রটি পাঠ করিয়া দেবতার নিকটে প্রার্থনা করিতেন

“গোভিল-গৃহসুত্রে”র দ্বিতীয় প্রপাঠকের প্রথম খণ্ডের পঞ্চদশ সূত্রে লিখিত্ব আছে যে, বর বধ এক- সঙ্গে একটি মন্ত্র পাঠ ,করিবে। তাহার শেষ ভাগের অর্থ এই যে, সছুপদেশদায়িনী ভদ্র-মহিলারা আমাদের উভয়ের ছুইটি হৃদয়কে একটি হৃদয় করিয়। দিন। উক্ত গ্রন্থে লিখিত আছে যে, নব-ৰধূ একটি মন্ত্র পাঠ করিবে তাহার অর্থ এই যে, হে প্রুবতারা, তুমি স্থিরপ্রকৃতি- সম্পন্না। সেই জন্য তুমি প্রুব নীমে বিখ্যাতা। আমি যেন পতিকুলে তোমার ন্যায় স্থিরপ্রকৃতি .হইয়া৷ বাস করি। অর্থাৎ পতিকুল পরিত্যার্গ করিয়া যেন আমাকে জীবনে অন্যত্র কুত্রাপি বাস করিতে না হয়। যদি কদাচিত পতির মহিত বিবাদ করিয়া কোন নারী পতিগৃহ ত্যাগ করে 'এবং* অস্থাত্র বাস করে, তাহা হইলে সে

(৬৯) পাতকিনী হইবে। কারণ, বিবাহকালে সে এই মন্ত্র উচ্চারণ করিয়৷ যে প্রতিজ্ঞা করিয়াছে, পরে সে প্রতিজ্ঞ! লঙ্ঘন করিয়া থাকে উক্ত গ্রন্থে লিখিত আছে যে, অনন্তর পতি বধূকে “ফ্রবাদেটাঃ” ইত্যাদি মন্ত্র পাঠ করাইবে। ইহার অর্থ এই যে, হে ঈশ্বর, স্বর্গলোক যেমন স্থির চিরস্থায়ী, পৃথিবী যেমন স্থির অচলা, পর্ববত সকল যেমন স্থির অচল, আমিও তন্রপ পতিকুলে যেন স্থিরা অচলা হইয়া আজীবন বাস করিতে পারি। এই মন্ত্র পাঠ করিয়া বধূ, “আমার এই গোত্র এই নাম, আমি তোমাকে অভিবাদন করিতেছি” এই বলিয়া পত্তির পাদগ্রহণ করিবে এই মন্ত্র দ্বারা এই বুঝিতে হইবে যে, বধূ যেন পতিগৃহ ত্যাগ করিয়া পিত্রালয়ে, মাতুলালয়ে কিম্বা অন্য কোন আত্মীয় বা মিত্রের গৃহে সর্বদা উত্সব, আমোদ-প্রমোদ উপলক্ষে যাইবার জন্য মঞ্চলা না হয়েন। সর্ববদ! গৃহে থাকিয়া, গৃহকর্ম্নে লিপ্ত হইয়া শ্বশুর, শব, পতিপুক্রাদির প্রতি কর্তব্যপালনে নিযুক্ত থাকাই বধুর একমাত্র মুখ্যু কার্য 'এতদ্যতীত অন্য সকল গৌণ কার্য্য। কারণ, বিবাহকালে পাত্রীকে আর একটি মন্ত্র পাঠ করিতে হয়।* তাহার অর্থ এই যে, আমাদের রক্ষাকর্তা পরমেশ্বর আমাদের জন্য তাদৃশ উত্তম পথ নির্দিষ করিয়া দিন, যে কল্যাণকর বিল্লুশৃন্য পথ অবলম্বন করিলে আমি, পতিকুলে কর্তব্য কার্ধ্য সকল অনায়াসে নির্ববুহ করিতে পারি।

88]

এই মন্ত্র দ্বারা ইহাই বুঝাইতেছে যে, পতিকুলে সর্বদা কর্তব্য কর্মে লিপ্ত থাকাই পত্বীর একমাত্র মুখ্য কার্ধ্য। কুটুম্বমিত্রাদির গৃহে নিমন্ত্ররক্ষা প্রভৃতি কার্ধ্য গৌণ কার্ধ্য। নিমন্ত্রণরক্ষা করায় দোষ দেওয়া হইতেছে-না। নিমন্ত্রণ রক্ষার ব্যপদেশে তথায় দীর্ঘ সমর অতিবাহিত করিয়া গুহকৃতো অবহেলা করাই শাস্ত্রনিষিদ্ধ। গৃহকৃত্যে অবহেলা করিয়া পরগৃহে উৎসব-আমোদে মত্ত হইতে নিষেধ করাই শাস্ত্রের তাশপর্ধযার্থ।

_ পুর্বকালে বর বধূই যে কেবল বিবাহকালে বৈদিক মন্ত্র পাঠ করিত, তাহা নহে, কিন্তু বর বিবাহান্তে যখন কর্ণীরখ-নামক রথে বধুকে আরোহণ করাইয়া নিজ গুহে আনয়ন করিত, তখন কুলশীলদম্পন্ন। পতিপুক্রবতী মহিলারা “ইহ গাবঃ” ইত্যাদি মন্ত্র পাঠ করিতে করিতে বধুকে রথ হইাতে নামাইতেন। এই মন্ত্রটির অর্থ এই যে, এই বধূ বরের গৃহে ধেমু ঘোটকের সংখ্যা বন্ধিত হউক। রাশি রাশি ছুদ্ধ ঘৃত-নবনীতাদ্ি প্রদানের জন্য বহুসংখ্যক ধেনু রক্ষিত হউক এবং গাড়ী টানিবার জন্য পৃষ্ঠে মানুষ বহিবার জন্য বুসংখ্যক ঘোটক রক্ষিত হউক। এই গৃহে উত্তম পু্র-পৌত্রাদি জন্মগ্রহণ করুক। যে দেবতার অনুগ্রহে সহত্র মুদ্রা দক্ষিণাদানের উপযুক্ত যন্ত্র সকল সম্পাদিত হুইতে পারে, সেই সূর্যয- 'দেবতা এই গুহে সর্বদা অনুগ্রহ বর্ণ করুন। পতি

( 5১ )

নিজ গৃহে আসিয়! হোম করিবার সময় “ইহ ধৃতি” ইত্যাদি মন্ত্র পাঠ করিবে। এই মন্ত্রের অর্থ এই যে, হে বধু, এই গুহে তুমি স্থিরমতি হইয়া আনন্দের সহিত কালযাপন করিও। আমীতে তোমার অচলা মতি হউক। আমার আত্মীয়গণের সহিত তোমার মনের মিলন হউক আমার প্রতি তোমার আসক্তি হউক। আমার সহিত *তুমি আনন্দের সহিত কালযাপন কর।

বর্তমান সময়ের নব-বধূ এইরূপ মন্ত্রের অর্থ বুঝিতে পারে না বলিয়া ভবিষ্যতে তাহার সহিত তাহার পতির পতির জ্ঞাতিদিগের মনের প্রায় মিলন হয় না। স্বতরাং তাহার পতির চরণে তাহার * অচলা ভক্তি হইবে কিরূপ ? সেপতির সহিত পতিকুলে আনন্দে কালযাপন করিবে কিরূপে? সে যদি বুঝিত যে, সে বিবাহুকালে পবিত্র হোমাগ্রি ৬শালগ্রামশিলার সম্মুখে ভবিষ্যতে পতির চরণে আচল মতি রাখিবার জঙ্য বেদমন্ত্র কর্তৃক আদিষ্ট হইয়াছে, তাহা হইলে সে ভবিষ্যতে বৈদিক শাসনবাক্য চিরজীবন আনিয়া চলিত। যদি গে বৈদিক মন্ত্রের অর্থ বুঝিতে পারত, তাহা হইলে ভবিস্তৃতে পতিচরণে তাহার, ূঢরন্তি অচল! মতি থাকিত। কারণ, নারীজাতি সাধারণতঃই ধর্মভীরু নারীজাতি যদি বুঝিতে পারে যে, তাহার প্রতি যে উপদেশ আদেশ, হইয়াছে, তাহ) র্-সম্গক্ত, উহা ধর্-কর্থের অনুষ্ঠানের, সহিত সম্বন্ধ,

( ৭২ )

এইরূপ বুঝিতে পারিলে ধর্মভীরু নারীজাতি এরূপ আদেশ উপদেশ কখনই উল্লঙ্বন করিবে না। কারণ, সাধারণতঃ নারীজাতির এই ধারণা যে, ধর্ম্ম-সম্পৃক্ত কোন বিষয় উল্লগ্ঘন করিলে মহাপাপ হয়। পূর্ব্বকালে বিবাহের পর বর, বধূকে লইয়া স্বগৃহে আগমন করিলে কুলশীলসম্পন্ন পতিপু্রুবতী পুরস্ত্ীরা সুমধুর উচ্ৈঃ্বীরে বেদমন্ত্র পাঠ করিয়া তাহাদের কল্যাণ-কামনা করিতেন। পুরস্ত্রীগণ সুমধুর উচ্গৈঃম্বরে বেদমন্ত্র পাঠ করিতেন, কথা শুনিয়া এক্ষণে অনেকে বিশ্মিত হইবেন। এক্ষণে মধুর উচ্চৈত্বেরে শুভ বৈদিক-ন্ত্র পাঠের পরিবর্তে “হুলুহুল” ধবনিমাতর পর্য্যবসিত হইয়া রহিয়াছে। কালে তাহা বিলুপ্ত হইয়া গেলে প্রাচীন রীতির এইরূপ আর কোন চিহৃই থাকিবে না।

বিবাহের পর পতিগৃহে আসিয়৷ নারী গৃহিণীপদবাচ্য হয়েন। শাস্ত্রে লিখিত আছে যে, ইফ্টকা, চূর্ণ, প্রস্তর, রা লৌহাদি উপাদানে নির্মিত গৃহ গৃহই নহে,

হা গৃহ শব্দের গৌণ অর্থ। * গৃহিণীই 'গৃহ শবের মুখা অর্থ, গৃহিণীই গৃহের দেবতা। গৃহিণীই গৃহকর্ট্ের প্রধান উপযোগিনী। পত়ীর জগ্যই গৃহের প্রয়োজন। শান্তর বলিতেছেন, গৃহের মুলদেবতারূপিণী সেই পত্রী যদি পতিয় পদাক্ক অনু্রণ করেন এবং পতির বশবর্ডিনী হয়েন, তাহা, হইলে গৃহস্থাশ্রম তুল্য মহাম্থখকর স্থান

( 5৩ )

ত্রিভুবনে আর কুত্রাপি নাই। এই জন্য অন্যান্য আশ্রম হইতে গৃহস্থাশুমের শ্রেষ্ঠতা শাস্ত্রে কীর্ঠিত হইয়াছে। অন্যান্য আশ্রম গৃহস্থাশ্রমের সাহায্য প্রার্থনা করে বলিয়৷ ইহা অন্যান্য আশ্রমের আতশ্রয়স্বরূপ। যিনি গৃহ শব্দের মুখ্য অর্থ, সেই গৃহিনী *্ঘদি- গৃহের ধর্ম্মকর্্ণা অনুষ্ঠানে অধিকারিণী না হয়েন, তাহা হইলে “সন্জ্রীক হইয়া ধর্ম আচরণ করিবে” এই শান্ত্রবাক্য ব্যর্থ হইয়া পড়িবে কালের অবোধ্য প্রভাবে সনাতন আর্্য-ধর্মের অনুষ্ঠানাদি পরিবর্তিত হইয়া গিয়াছে। নতুবা এক্ষণে পুরুষগণ যে" সকল শ্রাদ্ধহোম-পুজাদি ধণ্মানুষ্ঠান করিয়া থাকেন, পুর্বকালে নারীগণও তত্রপ, অনুষ্ঠান করিতেন কাল- প্রভাবে সমস্তুই পরিবর্তিত হইয়াছে। জগতের সৃষ্টি- স্থিতি-সংহারকারী ব্রহ্মা বিষু মহেশ্বরও কালে লয় প্রাপ্ত হয়েন। ন্বর্গের অমরাবতী হইতেও ভশ্রষ্ঠা যছুপতি শ্রীকৃষ্ণের মথুরাপুরী শ্রীরামচন্দ্রের অযোধ্যানগরীই যখন কালপ্রভাবে শ্রীভ্রফী. হইয়া গিয়াছে, তখন স্ত্রীলোকের বেদপাঠ, হোমু, শ্রাদ্ধ, তর্পণ, দেব-দেবীগণের পূজ। প্রভৃতি গৃহস্থ-ধর্দমের অনুষ্ঠান যে কালপ্রতাবে বিলুপ্ত হইয়া যাইবে+ইহা, আর আশ্চর্যের বিষয় কি?

রি

(৭৪ )

মৈত্রেরী। |

বৃহদারণ্যক উপনিষদের দ্বিতীয় অধ্যায়ের চতুর্থ ব্রাঙ্মণের প্রথম মন্ত্রে দেখিতে পাওয়া যায় যে, একদা মহবি যাজ্বন্থ্য বৈরাগ্যবশতঃ গৃহশ্বীশ্রম পরিত্যাগ পূর্ববক সন্ন্যাসাশ্রমগ্রহণে ইচ্ছুক হইয়! স্বীয় প্রিয়তম! ভাঁয়্যা মৈত্রেয়ীকে বলিয়াছিলেন, মৈত্রেয়ি, আমি সম্যাস- আশ্রম গ্রহণ করিতে ইচ্ছুক হইয়াছি। অতএব তোমার অনুমতি প্রার্থনা করিতেছি পত্রী বিদ্যমান থাকিতে পতির সন্্যাস-আশ্রম-গ্রহণে ইচ্ছা হইলে পতিকে পত়ীর অনুমতি লইতে হয়। পতুী বিদ্যমান থাকিতে তীহার অনুমতি না লইয়া গৃহত্যাগ পুর্ববক পতির সন্স্যাসগ্রহণ শান্তর যুক্তিসঙ্গত. নহে। আমি সন্যাসধন্ম গ্রহণ করিলে পাছে তোমার তোমার সপতী কাত্যায়নীর সাংসারিক কোন কষ্ট উপস্থিত হয়, সেই জন্য অগ্রে তোঁমাদিগকে সমভাবে আমার সম্পত্তি ভাগ করিয়া দিয়া পরে সঙ্স্যাসী হইব। আমি তোমাদিগকে ষে সম্পত্তি দিয়! যাই তাহাতে তোমাদের জল্-বন্ত্ের বন্য কোন কট হইবে না। মহুধি বাজজবন্্য একজম ব্রাঙ্গাণ-পপ্ডিত হইলেও তীহার সম্পত্তি বড় কম ছিল না। তিনি, বিপুল সম্পত্তির অধিকারী ছিলেন। মিথিলাধিপতি মহারাজ জনকের-কঠিন,কঠিন শাস্্ীয় প্রশ্নের সহুত্তর-্দানের জন্য মহধি যাজ্ঞবন্ক্য মহারাজের নিকট হইতে অনেকবার সহস্র

(৭৫ )

ধেনু এবং বহু সহত্র “ভরি” স্থবর্ণ লাভ ফরিয়াছিতলিন। এই সহত্র ধেনুর ছুই দুইটি শৃঙ্গ' দশ “তরি” পরিমিত স্ববর্ণে ভূষিত করিয়া মহারাজ মহধিকে কছবার দান করিয়াছিলেন। *এক সহস্র ধেনুর প্রত্যেক শুজে দশ ভরি পরিমিত স্বর্ণ থাকিঠে ছুই সহত্ত্র শৃঙ্গে ঘিংশতি সহত্র ভরি*স্থবর্ণছিল। এইরূপ বিংশতি সহ ভরি স্ৃবুর্ণ ভূষিত-শৃগযুক্ত ধেনু তিনি অনেকবার পাইয়াছিলেন। সুতরাং ব্রাক্মণ-পগ্ডিত বলিলে সাধারণতঃ অনেক লোক যেমন দরিদ্র বলিয়া বুঝে, তিনি সেইক্প দরিদ্র ছিলেন না। তিনি অনেক আধুনিক খগগ্রস্ত উপাধিলোলুপ ভারতীয় রাজা মহারাজ অপেক্ষা! অর্থবুান, সুখী, নিশ্চিন্ত" সন্ধায়ী ছিলেন

মহষি যাজ্জবন্্য সৎকার্য্যে যেন্ধপ ব্যয় করিতেন, তাহ! শ্রবণ করিলে অনেক আধুনিক আত্মাভিমানী উচ্চ-উপাধি- ধারী ভূম্বামী ধনী বিস্মিত হইবেন। মহধ্ধির আশ্রমে বনু সহজ শিষ্য অন্নবন্ত্র পাইয়া নানাশান্্র অধ্যয়ন করিত ধাহার গৃহে নিত্যনৈমিত্তিক যজ্ঞানুষ্ঠানে কছ সহজ অণ পরিমিত ঘ্বৃতু অগ্নিসা হইত, ধাহার আশ্রমে অসংখ্য অতিথি পর্য্যাপ্ত পরিমাণে ঘৃত, দধি, দুগ্ধ, ক্ষীর প্রাপ্ত হইত, তিনি দরিদ্র ব্রাক্মণ-পঞ্চিত হইতে পারেন না। যে খষি, মাত্র দশ 'হত্র ছাত্রকে জমমন্ত্র দিয়! গৃহে রাখিয়া! আঅধাদ্মম করাইভেন, তিনি “কুলপতি” আখ্যা, প্রাপ্ত হইতেম।

( +৬ ) যালজ্জবন্থ্য প্রভৃতি মহধিগণ কুলপতি মহধিগণ অপেক্ষাও বড় ছিলেন। মহামুনি বাসের যষ্টিসহত্র ছাত্র ছিল। তিনি তাহাদিগকে দুই বেল! অন্নব্যঞ্জন, ঘুত, দধি, ভুগ্ধ, ক্টীর ভোজন করাইয়া স্বগুহে রাখিয়া অধ্যয়ন করাইতেন। প্রতিদিন যষ্টিসহশ্র ছাত্রকে দুই বেলা এরূপে ভোজন করান যে কিরূপ মহাব্যাপার, তাহা একবার "মনে করিলে কেন! বিস্মিত হয় ? পূর্ববকালের রাজধি জনকাদির হ্যায় মহাদ্দাতা প্রকৃত রাজা মহারাজ তাহাদিগকে প্রভূত ধন দান করিয়া সাহাষ্য করিতেন। তাই মহধিগণ এত অধিক ব্যয় করিতে পারিতেন। তাহারা ক্রিয়াবান ছিলেন * সতক্রিয়ানুষ্ঠানের জন্য তাহাদের ধনাভাব হইত না। তাহারা কাহারও নিকটে যাক্ক্। করিতেন না। তাহার! শ্রাদ্ধ করিবার সময় যে একটি মন্ত্র পাঠ করিতেন, সেই মন্ত্রের অনুয।য়ী কাধ্যও করিতেন সেই মন্ত্রের অর্থ এই যে, আমাদের গুঁহে প্রভৃত অন্ন হউক্‌। আমরা যেন বন্ধ অতিথিকে লাভ করিয়া ভোজন করাইতে পারি। আমাদের নিকটে লোক সকল আসিয়া যাচ্জ্া করুক। আমর! যেন ঈশ্বরের কৃপায় কাহারও নিকটে গিয়া কোন বিষয় কদাঁপি যাচ্। নাকরি। যে" মহধিগণ এই 'সকল শান্দ্রবাক্য প্রচার করিয়াছেন, তাহারা কি সর্ববদ! যাচ্ছ।- কারী দরিদ্র ভিক্ষুক ব্রাহ্মণ হইতে পারেন ? কখনই না। তাহারা মৃহান্‌,ও (তেজন্বী ছিলেন। তাহাদের সন্তান

6 7)

শিষ্যুবর্গ আচার, বিনয়, বিদ্যা প্রতিষ্ঠবিহীন হওয়াতেই তেজোবিহীন দরিদ্র হইয়া পড়িয়াছে। সেই জন্যই আধুনিক “বড়লোক”দিগের নিকটে ভিক্ষুক বলিয়া গণ্য হইতেছে। যাহীরা পূর্বে ভৃত্য ছিল, কালপ্রভাবে তাহারা প্রভূ হইয়া ফীঁড়াইয়াছে। আর খফাঁহারা প্রভু ছিলেন, তাহাদের সন্তানগণ আজ তাহাদের ভৃত্য হইয়৷ পড়িয়া- ছেন। ইহা কালের কুটিল! বিচিত্রা গতি !! মহঙ্ি বাজ্ঞবন্ধ্য নানাশ্বান্ত্রে মহাপপ্ডিত ছিলেন। তিনি তাহার প্রিয়তমা পতী মৈত্রেয়ীকে অত্যন্ত ভালবামিতের্ন। মৈত্রেম়ীকে বিবাহ করিবার পর হইতেই তিনি তীহাঁকে বহু আধ্যাত্মিক তত্বশান্ত্র শিক্ষা দিতে আরস্ত করেন। পূর্বকালে পতি বিবাহের পর পত্ীকে গৃহে আনয়ন করিয়াই শান্ত্রশিক্ষা দিতে আরস্ত করিতেন।

পত্তির নিকটে পত্তীর অধ্যয়নের ষবেরূপ সুবিধা ঘটে, এরপ স্ত্ুবিধা আর কাহারও নিকটে ঘটে না। মৈত্রেী মুক্তিতত্ব-শান্ত্রে অসাধারণ বিদুষী ছিলেন। তীহার শান্তর বুঝিবার বিচার করিবার প্রণালী অতি উত্তম ছিল। তিনি কোন বিষয় যতক্ষণ উত্তমরূপে না বুঝিতেন, ততক্ষণ কিছুতেই বিরত হইতেন না, কিন্বা “হ'” দিয়া “সায়” দিতেন না। শীন্দরচর্চা় পতি পতী সাই রত থাকিতেন। গৃহকর্, নিতে. জন্য, আমে লোকের অভাব ছিল না। অধ্যয়ন

(৭৮ )

অধ্যাপনে তাহাদের কোনরূপ বিদ্ধ উপস্থিত হইত না। একদিন মহধি যাজ্জবন্থ্যের হঠাৎ সংসারে বৈরাগ্য উপস্থিত হওয়ায় তিনি গৃহত্যাগ করিয়া সন্ন্যাসী হইতে ইচ্ছুক হইয়া- ছিলেন। বেদও বলিয়া থাকেন যে, “যে দিনে যে মুহূর্তে সংসারে সহসা বৈরাগ্য উপস্থিত হইবে, সেই মুহুর্তেই সন্ন্যাস গ্রহণ করিবে |” তাই সে দিন মহষি বাজ্ঞবন্কোর পুর্ণ বৈরাগ্য উদ্দিত হইয়াছিল বলিয়া সেই দিনই তিনি মৈত্রেয়ীর নিকটে তাহার সন্ন্যাস-গ্রহণের ্রস্তার উথথাপিত করিয়াছিলেন এবং প্রস্তাবানুযায়ী কার্ধ্য করিতে সচে্উ হইয়াছিলেন। তিনি তাহার সম্পত্তি ভাগ করিয়া মৈত্রেয়ী কাত্যায়নীকে সমভাবে প্রদান করিবেন এবং পরে গৃহত্যাগ করিয়া সন্ন্যাসী হইবেন, এই কথা শুনিয়া মহাপপ্ডিতা মৈত্রেয়ী তাহাকে বলিলেন ৪-- “হে প্রিয়তম স্বামিন্, বিবিধ ধনরত্বাদি-পুর্ণ সসাগরা সমগ্র পৃথিবীকে লাভ করিলেও আমার অভীষ্টসিদ্ধি হইবে না। আমি যদি সমগ্র পৃথিবীরও অধীশ্বরী হইতাম, তথাপিও আমার মহাভিলাষ পূর্ণ হইত না। আমি আগনার গো- থবর্ণ-গৃহ-ক্ষেত্রা্দি ধন লইয়া কি করিব? লক্ষ'লঙ্ষ মুদ্রা ব্যয়ে অশ্বমেধাদদি যজ্ঞ করিয়! তজ্জনিত পুণ্যবলে স্বর্গে গমন করিলেও আমার অভীষ্ট সিদ্ধ হইবে না। কারণ, সেই পুণ্যের ক্ষয় হইলেই পুনরায় মর্তলোকে পতন হইয়! থাকে সুতরাং আমার অভীষ্ট সিদ্ধ হইবে কিরূপে ?

(৭৯ )

আমি অমর হইতে চাই। আমি অম্ৃতত্বপ্রার্থিনী নারী। আমি নির্ববাণমুক্তির অভিলাধিণী। পৃথিবীলোক, অন্তরীক্ষ- লোক বা জ্যোতির্লোক এবং স্বর্গলোকেও আমার অভিলাষ পূর্ণ হইবে না। আমি সত্যলোক, জ্ঞান- লোক, আনন্দলোক বা অমৃতলোকে যাইতে ইচ্ছুক। সকল লোকের উপরে এই লোক। এই মহালোককে আশ্রয় করিয়াই অন্যান লোক থাকে লক্ষ লক্ষ মুদ্রা- বায়ে ইহা লব্ধ হয়*না। এই লোক প্রাপ্ত হইলে মানুষ, আর এই মর্ভলোকে ফিরিয়া আইসে না। নশ্বর রত, সুবর্ণ, গো, গৃহ, শস্য, ক্ষেত্র যানবাহনাদি বস্তু উপভোগ করিবার জন্য পুনরায় লালয়িত হয় না। নুতরাং হে ভগবন্‌ স্বামিন, আমি আপনার নশ্বর স্থৃবর্ণ, রত, ক্ষৌমবন্র, গো, গৃহ শম্যক্ষেত্রাদি বস্তু লইয়া কি করিব? এই সমস্ত বস্তব আমাকে অস্বতলোকে লইয়া যাইতে পারিবে না। এই সমস্ত বস্তুর উপভোগে আসক্ত থাকিলে অমর হইতে পারিব না। অপার অম্বৃত-সাগরে বিলীন হইতে পারি না। *আপনার এই সমস্ত ধন লাভ করিয়া কিন্বা ধনব্যয়সাধ্য "অশ্বমেধযজ্্ত করিয়া অস্ৃতত্ব লাভ করিতে পারিব'কি ?” যাজ্জবন্ক্য বলিলেন, “না, এই বিশাল পৃথিবী- সাম্রাজ্য লাভ করিলেও মুক্তি লাভ করিয়া অমর হইতে পারিবে না। এমন কি, অশ্বমেধযজ্ঞ করিয়া স্বর্গে গমন করিলেও, মুক্তি লাভ করিতে পারিধে না'। তবে এই

$১:8৪৮..1

সকল নশ্বর ধন লাভ করিয়া এইমাত্র ফল হুইকে যে, পু, কলব্র, ভূত্য, অট্রালিকা, স্বর্ণ, রৌপ্য, রত্ব, শস্যাক্ষেত্র, নানাবিধ যান, হস্তিঘোটকাদি বাহন সমুহ, উত্তমোত্তম ঘত- হুগ্ধ-্ীরাদি-বস্ত-প্রদায়িনী বু ধেনু এবং অন্যান্য বহুবিধ স্থখোপকরণ পদার্থ সকল উপভোগ করিয়া ষেমন ধনবান্‌ ব্যক্তির জীবনযাত্রা সুখে স্বচ্ছন্দ নির্ববাহিত হয়, তদ্রপ তোমারও জীবনযাত্রা সুখে স্বচ্ছন্ৰে নির্ববাহিত হইবে, এই- মাত্র সামান্য লাভ। নতুবা বিশেষ একট! কিছু নৃতন অপুর্ব ফললাভ হইবে না। দরিদ্র কিম্বা মধ্যমবিস্ত ব্যক্তির জীবনযাত্রা অপেক্ষা তোমার জীবনযাত্রা অধিকতর সখস্থচ্ছন্দভাবে নির্ববাহিত হইবে। এইমাত্র বিশেষ এইমাত্র লাভ। নতুবা মরণান্তে দরিদ্র মধ্যমবিভ্ত ব্যক্তির যে দশা হইবে, তোমারও সেই দশা! হইবে তাহা- দিগকেও পুনরায় জন্মিতে হইবে এৰং পুনরায় মরিতে হইবে, তোমাকেও পুনরায় জন্মিতে হইবে এবং পুনরায় মরিতে হইবে এই জঙ্ম-মরণ-প্রবন্ধ একেবারে ঘুচিবে না। দরিদ্র মধ্যমবিত্ত ব্যক্তির সুখস্থচ্ছন্দতায় যেরূপ দুঃখ-সম্পর্ক আছে, তজপ ধনবান্‌ ব্যক্তির সুখন্বচ্ছন্দতাও হুঃখসম্পূক্ত | তবে যাহার! দারিজ্রয-ছুঃখ-সস্ভারে প্রগীড়িত, তাহাদের জীবনযাত্র! অপেক্ষা তোমার জীবনযাত্রা উৎকৃষ্টরূপে নির্ববাহিত হইবে। এইমাত্র তোমার লাভ হইবে। নতুঝ! তাহাতে মুক্তিপ্রাপ্তির কিছুমাত্র আশ! নাই।”

(৮১)

সাধ বিদুধী মৈত্রেয়ী পতি মহধি যাজ্জবন্ধ্যের এই প্রকার বাক্য সকল শ্রবণ করিয়৷ বলিলেন, “হে প্রিয়তম স্বামিন্, যে সকল বস্তু দ্বারা আমার মোক্ষলাভ হইবে না, আমি অমর হইতে পারিব না, ক্রমাগত জন্ম-মরণ-চক্রে সন্বদ্ধ হইয়। ঘূর্ণিত হইতি থাকিব, কোন কালেই এই চক্রের নিকট হইতে অব্যাহতি লাভ করিতে পারিবু না, তাঁদুশ বিষয় সকল লইয়া আমি কি করিব? আমার অভীষ্ট তাহাতে সিদ্ধ হইবে না। অতএব প্রিয়তম, আপনি যাহা ভাল বলিয়া বুঝেন, তাহাই আমাকে উপদেশ করুন। যে উপায় অবলম্বন করিলে, যে বস্তু পাই'লে মুক্তিলাভ করিতে পারি, পরমাত্মা পরমেশ্ীরে বিলীন হইতে পারি, জন্ম-মরণ-চক্র ছিন্ন-ভিন্ন করিতে পারি, সেই উপায় আমাকে বলিয়া দিন।” বিদ্ুষী প্রিয়তমা পততী মৈত্রেয়ীর ঈদৃশ মহাসন্তোষজনক বাক্য শ্রবণ করিয়া মহধি যাজভ্বন্ষ্য মহাগ্রীত হইলেন এবং প্রিয়বা্দিনী প্রিয়াকে বলিলেন, “হে মৈত্রেয়ি, তুমি ইতঃপুর্বব হইতেই যেমন আম্মুর প্রিয়কারিণী প্রিয়বাদিনী হইয়। প্রিয়া নামের সার্থকতা! সম্পাদন করিয়াছ, তন্রপ এক্ষণেও আমর চিত্তবৃত্তির অনুকূলা হইয়। স্থমধুর বচনবিষ্যাসে আমার অমীম আনন্দবদ্ধন করিয়াছ। আমি তোমার মনের অভিপ্রায় শুনিয়৷ অতিশয় আনন্দিত হইলাম অতএব নিকটে এস, বস, আমি তোম়ার অভীষ্ট পুষ্ট

(৮২ ) বিষয় স্থুস্পষ্ট ব্যাখ্যা করিয়! তোমাকে বুঝাইয়া দিতেছি আমি যাহা বলিতেছি, তাহা একাগ্রচিত্তে শ্রবণ কর। এই নশ্বর জগতে পত্রী পতির অভিলাষসিদ্ধির জন্য পতিকে ভালবাসে না, কিন্তু নিজের অভিলাষ ' পুর্ণ করিবার জন্যই পতিকে ভালবাসিয়া থাকে যে পতি, যে পত্ীর সকল কামনা পুর্ণ করিতে পারে না, সে পত্ী সে পির উপরে তত সন্তুষ্ট থাকে না এবং সেই জন্যই সংসারে দাম্পত্য-কলহ উৎপন্ন হয়। পতি পত়্ীর কামনা সকল পুর্ণ করিবার জন্যই সংসারে পত্তীকে ভালবাসে না, কিন্তু নিজ আত্মার বাসনা পরিতৃপ্ত করিবার জন্যই পত়্ীকে ভালবাসিয়া থাকে। অর্থাৎ.পত্ভী রত্বালঙ্কারে ভূষিত হইয়া যে আনন্দ অনুভব করেন, নিঃস্বার্থভাবে সেই আনন্দ উত্পাদন করিবার জন্যই যে, পতি পত্তীকে ভাল- বালেন, তাহা নহে, কিন্তু প্রকার অলঙ্কার পাইয়া আনন্দিত হইলেই পত্রী পতিকে অপেক্ষাকৃত বেশী ভাল- বাঁসবেন, এই আশায় নিজের এই উদ্দেশ সিদ্ধ করিবার জন্যই, আত্মার এইরূপ তৃপ্তিসাধনের জন্যই পৃতি পত্বীকে সংসারে ভালবাসিয়া থাকে পুজ্রের অভিলাষ পূর্ণ করিবার জন্যই কেবল পিতা পুক্রকে ভালবাসেন না, কেন্তু জীবিত অবস্থায় পুজ্ের সেবা পুজ্রের বশঃ-শ্রবণ-কামনায় এবং মরণের পর বংশরক্ষা জলপিগাদি কামনায় পিতা পুজ্রকে ভালবাসেন, সযত্বে প্রতিপালন করেন,

( ৮৩ )

সৎশিক্ষ! দেন এবং সতপথে পরিচালিত করেন। ভৃত্য অর্থসঞ্চয়, পুর্ববক স্বদেশে গিয়া: শস্যলাতার্থে ভূমিখণ্ড ক্রয় করুক, স্ত্ীপুজািপালনে সমর্থ হউক, উত্তম অবস্থা- পন্ন হউক, এইরূপ ইচ্ছা করিয়া নিঃম্বার্থভাবে জগতে কোন প্রভু কোন ভূঁত্কে ভালবাসে না, অন্ন-বন্ত্র কেতন দিয়া রাখে না, কিন্তু নিজের গৃহকর্ম্ম-সম্পাদননের নিমিত্ত এবং নিজের পরিবারবর্গের স্থুখশান্তির নিমিত্তই ভৃত্যকে ভ।লবামিয়! থাকে কার্য্যসমর্থ ঘোটক ঘাসাদি বস্তু তক্ষণ করিয়া নিজের অভিলাষ পূর্ণ করুক, এইরপ নিস্বার্থভাবে কেহ কোন কার্ধযসমর্থ ঘোটককে কোন কাধ্য না করাইয়া ভালবাসিয়৷ স্বগৃহে প্রতিপালন করে না কিম্বা ঘোটকসেবায় নিযুক্ত ভূত্যন্বারা সাধারণের দুর্লভ অঙ্গমর্দনাদি সেবা করায় না, কোন প্রভু তজ্জন্য ব্যয়ভার বহন করে না, কিন্তু ঘোটক: প্রস্ভুকে বহন করিয়া কিছ্থা প্রভুর গাড়ী টানিয়া প্রভুর আত্মার তৃষ্তিসাধন করিবে ৰলিয়াই প্রভু ঘোটককে ভালবাসিয়া থাকে

জগতে লোক বাহ! যাহা ভালবাসে, নিঃম্থার্ঘভাবে তাহাদের কামনা! পুর্ণ করিবার জস্যই তাহাদিগকে ভাল” বাষে না, কিন্া নিজের আত্মার অভিলাষ, পূর্ণ করিধার জন্তই: তাহাদিগকে ভালকাসিয়া থাকে এন ছি, যে বরন সাধু মহাকা- সদা রা গরোপকারে

(৮৪) পরিতৃপ্তি হয় বলিয়া কর্তব্য অনুষ্ঠিত হইলে তাহাদের সান্তোয় উৎপন্ন হইবে বলিয়া তাহারা পরোপকারত্রতে দীক্ষিত হইয়া থাকেন। যে দিকেই যাও না কেন, দেখিতে পাইবে যে, আত্মার তৃপ্তিই গ্াকমাত্র চরম তৃপ্তি। জগতে কেহ আত্মাকে অতৃপ্ত রাখিতে ইচ্ছ। করে না। আত্মাকে পরিতৃপ্ত করিবার সামথ্য না থাকিলেও আত্মা অতৃপ্ত থাকুক, এই প্রকার কামনা কাহারও হয় না। অতএব আত্মাই সর্বাপেক্ষা প্রিয়তম পদার্থ। এই আত্মাই অতি প্রিয় বস্তু বলিয়া অন্যান্য পদার্থ প্রিয় বলিয়া বোধ হয়। অতএব হে প্রিয়তমে 'ৈত্রেয়ি, এই প্রিয়তম আত্াকে দর্শন করা, গুরু বেদান্ত হইতে আত্মতত্ববিষয়ক মহোপদেশবাকা শ্রবণ করা এবং শ্রবণান্তর ইহার বিরুদ্ধ কুতর্কজাল ছিন্ন- তির করিয়৷ সৎ অনুকূল তর্কদবারা স্থিরসিদ্ধান্ত করা উচিত। গুরূপদিষ্ট বেদবান্ত-উপনিষড কর্তৃক প্রদর্শিত এই আত্মতত্ব দৃঢ়রূপে স্থিরীকৃত সিদ্ধান্তিত হইলে পর একাগ্রচিন্তে নিষ্কামভাবে ইহার ধ্যান করিতে হয়। আত্ম- বিষয়ক দর্শন, শ্রাবণ, মনন ধ্যান স্ুসম্পাদিত হইলে পর' সাধকের ভেদদৃষ্টি বিলুপ্ত হইয়া যাঁয়। সকলের প্রতি সমদৃষ্টি আসিয়া উপস্থিত হয়। লোকের আত্মজ্ঞান যতক্ষণ স্থুসিদ্ধ, না হয়, ততক্ষণ ভেদদৃষ্টি বা দৈতভাক. থাকে। হে প্রিয়তমে, সমদৃষ্টি জন্মিলে ইনি ব্রাক্ষণ, ইনি

(৮৫)

ক্ষত্রিয় ইনি বৈশ্ব, ইনি শুত্র এইকূপ জাতিভেদজ্ঞান থাকে না। তখন ইহা পৃথিবীলোক, ইহা জ্যোতির্লোক, তাহার উপরে স্বর্গলোক এইরূপ লোকতেদজ্ঞান থাকে না। তখন সেই স্বর্গলোকে উর্বশী, মেনকা প্রভৃতি অনিববচনীয়া সুন্দরী বর্গনারী, অমৃতের হুদ, নন্দনকানন ফল্পবৃক্ষ প্রভৃতি পদার্থে ভেদদৃষ্টি থাকে না। তখন মনুষ্য, যক্ষ, গন্ধর্বব, কিন্নর প্রভৃতি লোকে পার্থক্যজ্ঞান বিলুপ্ত হইয়া যায়, তখন সমস্তই আত্মময় হইয়া যায়। আত্বময় বলিয়া বোধ হয়। তখন একমাত্র জ্ঞানময়' আনন্দময় নিত্য আত্মার অস্তিত্ব ব্যতিরেকে অন্য বন্তুর স্বতন্ত্র অস্তিত্ব অনুভূত হয় না। তখন সর্ববব্যাগী, সর্ববজ, সর্শক্তিসম্পন্ন, পরমাত্মা পরমেশ্বর হইতে ভিন্ন কোন জাগতিক নশ্বর বস্তই বস্তৃত্বর্ূপে লক্ষিত হয় না। তখন এই নশ্বর মায়ীময় কল্লিত মিথ্যাভৃত ভূমগুলের স্বত্ অস্তিত্ব অনুভূত হয় না। পরমাত্মার অস্তিত্বেই ইহার অস্তিত্বের অবভাদ হয় মাত্র। নতুবা বাস্তবিক ইহার কোন স্বতন্ত্র অস্তিত্বই নাই। যেমন আর্দ্র কাষ্ঠের অগ্নি প্রজুলিত হইলে তাহা হইতে ধুম স্ফ,লিক্স-পদার্ঘ পৃথক্‌ পৃথকৃরূপে বিনির্গত হয়” তত্্রপ, অয়ি প্রিয়তমে মত্রেয়ি, মহামহিম নিত্যপুদ্ধ' নিত্যজানময় নিত্যমুক্ত এক অদ্বিতীয় পরমাত্মা পরমেশ্বর হইতে অযন্রদাধ্য নিংশ্বাস- প্রশ্বাসক্ররিয়ার গ্যায় খাথেন, যজ্ুরবেবদ, সামাবেদ, অথর্ববেদ,

৮৬)

ইতিহাস, পুরাণ, শ্লোক, সূত্র, ব্যাখ্যা এবং ত্বনুব্যাখ্যা প্রভৃতি বিনির্গত: হইয়াছে নিঃশ্বাসপ্রশ্বীসক্রিয়া যেমন অনায়াসে সম্পন্ন হয়, তন্িমিত্ত প্রাণিগণকে যেমন স্বতন্ত্র চেষ্টা করিতে হয় না, তদ্রপ খখেদাদি 'শান্্রসমূহ এবং আকাশ, বাঁয়ু, অগ্নি, জল, পৃথিবী, 'মনুষ্য, পণ্ড, পক্ষী, কীট, পতঙ্গ প্রভৃতি উৎপন্ন হইয়াছে ইহা তীহার অযত্ন প্রসূত কাধ্য এতন্নিমিত্ত তাহাকে কোনরূপ ক্লেশ বা আয়াস বা যত্ব করিতে হয় নাই। তিনি বিজ্ঞানঘন, তাহার বস্তৃতঃ ভিতর-বাহির না! থাকিলেও লৌকিক বোধার্থ বলিতে হইবে যে, তাহার ভিতরেও বিজ্ঞান, বাহিরেও বিজ্ঞান। মিশ্রিখণ্ড বা লবণশিলা যেমন ভিতরে বাহিরে সকল অংশেই মিষ্ট বা লবণময়, তক্রপ আত্মাও বিজ্ঞান- ঘন অর্থাৎ বিজ্ঞানেরই একটি সর্ববব্যাপী জমাট পদার্থ বিজ্ঞনময় নাঁমরূপবর্জিত। জাগতিক বস্তুর ন্যায় তিনি নামরূপযুক্ত নহেন। যেমন সৈম্ধাব-শিলাখণ্ডের অগ্র-পশ্চৎ তিতর-বাহির সকল ভাগই লবণ-রসময়, যেমন তষার- খণ্ডের সকল ভাগই শীতল, তত্রপ আত্মাও বিজ্ঞানময় বা বিজ্ঞানঘন পদার্থ। মৈত্রেয়ী যাজ্ঞবহ্থ্যের এই সকল সারগর্ভ অুতময় উপদেশবাক্য শ্রবণে প্রবোধ শ্প্রাপ্ত হইয়া পুনর্ববার জিজ্ঞাসা করিলেন, “ছে প্রিয়তম প্রভো আপনার উপদ্বেশের এই অংশটুকুই আমি ' বুঝিতে পারিলাম'ন! |. এরু পরমাত্া,পরমেশ্বর বা ব্রন্দে স্তগত্ব,

( ৮৭ )

নিগুণত্ব, স্থষ্টিকর্তৃত্ব উদ্াসীনত্ব, সক্রিয়ত্ব নিক্ছিয়ত প্রভৃতি বিরুদ্ধধন্দ সকল এক পদার্থে কি প্রকারে সমাবেশিত হইতে পারে? আপনি পরমেশ্বরকে নিত্যমুক্ত পুরুষ বলিয়াছেন, কিন্তু যিনি মুক্তপুরুষ, তাহাতে ইচ্ছাদি কোন গুণই তো থাকিঠত পারে না যাহার ইচ্ছা, চেষ্টা, বসব, ক্রিয়। প্রভৃতি সমস্ত পদার্থ লুপ্ত হইয়াছে, তিনিই মুক্তপুরুষ। পরমেশ্বর যখন বিশ্বপদার্থ স্ষ্টি করিয়াছেন, তখন নিশ্চয়ই "তাহার ইচ্ছা আছে, চেষ্টা আছে, ক্রিয়া আছে। ইচ্ছা, চেষ্টা এবং ক্রিয়া বিনা কখনই কুত্রাি কেহ কোন বস্তু নিন্মাণ করিতে পারে না। যিনি জগৎ- ষ্টা, তিনি উদ্দাসীনই বা কিরূপে হইতে পাঁরেন ? যিনি সগ্ুণ, তিনি নিগুণই বা কিরূপে হইতে পারেন ? কারণ, ইহারা পরস্পর বিরুদ্ধধন্্। আলোক অন্ধকারের ন্যায় অত্যন্ত বিরুদ্ধন্বভাবাপন্ন। উষ্ণত্ব শীতলত্বরূপ বিরুদ্ধধন্ম যেমন অগ্রিতে থাকিতে পারে না, তত্রপ

নিগুণত্ব সগ্ুণত্বও একপদার্থে থাকিতে পারে না। আপনি একবার খত্মাকে বিজ্ঞানময় নামে অভিহিত করিয়াছেন। পুনশ্চ তাহাকেই আবার নামরূপরহিত বলিগ্মা বিশেধিত করিতেছেন। যিনি নামরহিত, তিনি ফোন নাম দ্বারা কোন প্রকারেই'বিশেষিত হইতে পারেন না। 'অগ্রি যেমন উ্ত্ব শীততবরূপ বিরুদ্ধ ধর্মের আত্রয় হইতে পারে না; তজপ এক আত্মাও, বিরুদ্ধ

(৮৮ ) ধর্মবিশিষ্ট হইতে পারেন না এই এক অদ্বিতীয় পরমাত্বা কি প্রকারে পরস্পর বিরুদ্ধ ধন্মের আশ্রয় হইতে পারেন? হে প্রিয়তম স্বামিন্, আপনি অনুগ্রহ পূর্বক আমার এই সন্দেহ ভ্রান্তি দূর করিয়া দিন।” * মহধি যাজ্জবন্ধয মৈত্রেয়ীর এই কথা শুনিয়া বল্লিলেন, “অয়ি প্রিয়তমে, আমি সন্দেহভ্রান্তিজনক কোন কথাই বলি নাই, আমি সকল কথাই সত্য বলিয়াছি। নামরূপবর্ভিত পরমা ত্ব(কে বিজ্ঞানময় বা বিজ্ঞানঘন পদে অভিহিত করাতে তুমি যে বিরুদ্ধ ধন্মের আবেশ হইতেছে বলিয়া আশঙ্কা করিতেছ, তাহা বুথ! আশঙ্ক।। কারণ, আমি এক পদার্থের উপরে কখনও বিরুদ্ধ ধন্ম্ের সমাবেশ করি নাই। তুমি নিজেই এক পদার্থে বিরুদ্ধ ধন্মের সমাবেশ বুঝিয়া স্বয়ং ভ্রান্তি- জালে পতিত হইয়াছ। তোমাকে এইবার উত্তমরূপে বুঝাইয়া দিতেছি। মনোযোগ দিয়া শুন। অভ্ভ্ঞান বা অবিদ্যা বা মায়া ঝ৷ ভ্রান্তি নিবন্ধন যখন আত্মা দেহ ইন্দ্রিয়াদির সহিত সম্বদ্ধ হইয়া নিজের সতস্বরূপতা, জ্ঞান- স্বরূপতা আনন্দস্বরূপতা ভুলিয়া গিয়] শরীর ইন্ড্িয়াদির সহিত একীভাবাপন্ন হইয়া যান এবং শরীরের ইন্দরিয়া্দির ধর্দরকে নিজের ধন্দ বলিয়া মনে ক্রেন, তখন তিনি জীবাত্মা বলিয়া অভিহিত হয়েন। তখন তিনি নিজেকে শ্রীরম্বরূপ ইন্দ্রিয়াদিন্বরূপ বলিয়া বোধ করেন। প্রবল মুঁয়া বা অবিদ্যা বা অজ্ঞান বা ভ্রান্তি-

(৮৯ )

পদাষই এটুরূপ বোধের মূল কারণ এবং সেই জম্যাই এই আত্মা তখন নিজেকে আমি স্থূল, আমি কৃশ, আমি গৌর, আমি কৃষ্ণ) আমি অন্ধ, আমি বধির, আমি মুক, আমি পঙ্গু এইরূপ মনে করে। স্থুলত্ব, কৃশত্ব, কৃষ্ণত্ব গৌরত্বাদি পদার্থ শরীরের ধশ্ম এবং অন্ধত্ব, বধিরত্ব, মুকত্ব পঙ্গৃত্বাদি ইন্দিয়গণের ধন্ন। আত্মা, প্রবল অজ্ঞানবশতঃ শরীর ইন্জ্রিয়াদির সহিত এক হইয়া যায় বলিয়া তখন শরীরের ধর্ম ইন্দ্িয়ের ধর্মকে নিজেতে বৃথা আরোপিত করিয়া লয়। বস্তুতঃ আত্মা শরীর বা ইন্ড্রিয়স্বরূপ নয়। আত্মা সংস্বরূপ, জ্ঞান-স্বরূপ, আনন্দস্বরূপ। স্থুলত্াদি শরারধম্ম এবং অন্ধত্াদি ইন্দ্রিয়ধন্ম, বাস্তবিক পক্ষে তাহাতে থাকে না। যে যাহার ধর্ম, সে তাহাতেই থাকে জড়ের ধন জড়েতে থাকে এবং শরীরের ধর্ম শরীরে থাকে জম্মজন্মার্ডিজিত অভ্ঞানবশতঃ চেতন, নিজেকে জড় বলিয়া মনে করে এবং জড়ের ধর্মকে নিজের ধন্ম বলিয়া মনে করে। যেমন চক্ষু রোগবশতঃ গীত হইয়া ঠেলে মানুষ, শুভ্রবর্ণ শঙ্খকেও পীতরূপ দেখে, যেমন সে দূরত্বাদি হেতু বা নেত্রের কোন দোষ হেতু “ঝিনুক্'কে রৌপ্যখণ্ড বলিয়া মনে করে, যেমন অন্ধকার অসাবধানতাবশতঃ মানুষ, পথে পতিত রজ্জবকে সর্প মনে করিয়! ভ্রান্ত হয়, তত্রপ মনুষ্য, জন্মঙ্ন্সার্জিত প্রবল অজ্জানের প্রভাবে বখন বিমোহিত হয়, তখন তাহার

( ৯৪ ) আত্মা, জীবাতা। বলিয়া অভিহিত হয়। তগ্নন সেষঈ জীবাতবা জড়ের অধীন হইয়! গিয়া! নিজের প্রকৃতম্বরূপ ভুলিয়া যায় এবং জড়ের ধর্মমগুলি নিজেতে আরোপিত করিয়া লয় মাত্র। জড়ের ধন্ম তাহাতে বস্তুতঃ সংলগ্ন হইয়া যায় না। যাবংকাল পর্য্যন্ত আত্মার প্রকৃত স্বরূপের বোধ হয় না, যতক্ষণ বিজ্ঞান বা ব্রঙ্গবিদ্যার উদ্দ্রল আলোক উদিত না হয়, তাবশকাঁল পর্যন্ত 'এই অজ্ঞানরূপ অন্ধকার হৃদয়গহবর হইতে বিদুরিত হয় না। তাবগকাল পর্যান্ত ভ্রান্তি-সাগর-স্বরূপ এই সংসারে মানুষকে জন্মিতে হইবে মরিতে হইবে ব্রহ্মবিজ্ঞানের পূর্ণ উজ্জ্বল আলোক উদ্দিত হইলেই মানুষের হৃদয়-গ্রন্থির ভেদ সকল সন্দেহের ছেদ হইয়া যায় এবং সকল কর্মের ক্ষয় হইয়া যায়। তখন মানুষের ছুঃখময় জীবাত্মা, বিজ্ঞান আনন্দের অপার মহাসমুদ্রন্বরূপ, নিত্যগুদ্ধ, এক, অদ্ধিতীয়, চৈতন্যময়, সর্বব্যাপী, সর্ববশক্তি, পরমাতু। পরব্রহ্ম পরমেশ্বরে বিলীন হইয়া যাইবে। তখন ক্ষুদ্র পুষ্করিণীর জল বা নদীর জল সাগর্জলে মিশিয়। যাইবে | এই জীবাত্মার সহিত পরমাত্মার একীভাব হওয়া বা জীবাতা! পরমাতন(তে বিলীন হইয়া এক হওয়াই মোক্ষ বা কৈবল্য। আত্মা! একই পদার্থ। জাবাত! বলিয়৷ স্বতন্ত্র একট! পদার্থ নাই। এই আত্মাই মায়ার সহিত সন্বদ্ধ. হইলেই সগুণ হইয়া জগত স্থ্টি করেন!

( ৯১ )

কাড়ে সহিত সম্বদ্ধ হুইয়! নিজের প্রকৃত নিগুণ বা তুরীফ রূপতা ভুলিয়া গিয়া মায়া-সম্বদ্ধ হইয়া সৃষ্টিকার্ষ্যে রত হইয়া পড়েন। যখন স্ৃষ্টিকার্য্ে বিরত হয়েন, তখন স্বন্বরূপে অবাস্থত হয়েন। নিজের প্রকৃতস্বরূপে অবস্থিত হইলেই পুর্ণ ৰা তুরীয় বলিয়া কথিত হয়েন, ইহাই আধার নিগুণাবস্থা। এই পরমাত্মা এক অদ্ধিতীয় পদার্থ অজ্ভ্বানবশতঃ মানুষ দুই বলিয়া মনে করে তীহার অস্তিত্বই বাস্তব জড়ের অস্তিত্ব ব্যবহারিক কল্লনা- মাত্র। মানুষ মুক্ত হইলেই সেই তুরীয় পদার্থে লীন হইয়া যায়। উহাতে বিলীন হইলে মানুষ আর জন্মে*না মরে না। নশ্বর কল্পনাময় ,ভূমগ্ডল তখন আত্মময় বলিয়া বোধ হয়। তখন অন্য জড় বস্তুর বস্তৃত্বই অনুভূত হয় না।

ধনরতুগৃহাদি জড়পদার্থের সত্তা ব্যবহারিক সত্বামাত্র। ইহাদের পারমার্থিক সত্তা নাই। এক অদ্বিতীয় পরমাতা পরমেশ্বরই পরম সৎপদার্থ। ব্রহ্মাবিদ্যার উজ্দ্বল আলোক উদ্দিত হইলে ভেদবুদ্ধি বিনষ্ট হইয়া যায়। তখন আত্মা নিজের প্রকুতম্বরূপে অবস্থিত হয়েন। যতকাল মানব- হৃদয় অজ্ঞ্ানু-মন্ধকারে আচ্ছন্ন থাকে, ততকাল ভিন্ন ভিন্ন নাম ভিন্ন ভিন্ন আফতির স্বতন্ত্র স্বতন্্ অস্তিত্ব অগ্ুভৃত হয়। যেমন জলাধার বিনষ্ট হইলে ন্্রসূর্যযাদির প্রতিবিষ্বমাত্র বিনষ্ট হয়, কিন্ত চন্দ্সূরযযাদির বিনাশ হয় না, তক্রুপ শরীর ইন্দ্রিয়প জ্সাবরণ বা "উপাধি,

( ৯২ )

বিনষ্ট হইলে বিজ্ঞানস্বপ আনন্দম্বরপ নিতাম্বকপ আত্মার বিনাশ হয় না। নশ্বর ভৌতিক আবরণ বিনষ্ট হইলে পরমাত্মা হইতে অভিন্ন জীবাত্মাও বিনষ্ট হয় না, কেবলমাত্র তাহার জৈবভাবটি অপস্থত হইয়া ষায়। পরমাত্ববিজ্ঞানই সর্বব-শ্রেয়ন্কর।' এই পরমাতু-বিজ্ঞান ব্যতিরেকে অজ্ঞান, কুসংস্কার, ভ্রম সন্দেহ এবং নানাবিধ অকথ্য ছুঃখস্বরূপ নক্রকুস্তীরগনে পরিব্যাপ্ত, ছুস্তর সংসারসাগর উত্তীর্ণ হইবার অন্য কোন্ন উপায়ই নাই। পরমাত-বিজ্ঞানের উজ্জ্বল আলোক উদ্দিত হইলে ইনি ভ্রাতা, এটি জ্বেয় এবং ইহ! জ্ঞান, এই রূপ ত্রিত্বভাব থাকে ন। তখন এই ত্রিত্বভাব , একমাত্র নিত্যজ্ঞানস্বরূপে পর্যাবসিত হইয়া যায়। তখন ইনি নমস্ত, আমি নমস্কার- কর্ত! এবং ইহা নমস্কার, এইরূপ ত্রিত্ভাব থাকে না। তখন আমি ভ্রষ্টা, ইনি দৃশ্ট এবং ইহা দর্শনপদার্থ, এইবপ ত্রিত্বভাৰ থাকিবে না। তখন সমস্তই এক বলিয়া বোধ হইবে যেমন অগ্নি দ্বারা অগ্নি দগ্ধ হয় না, যেমন প্রদীপ দ্বারা প্রদীপ প্রকাশিত হয় না, তজ্রপ জ্ঞানস্বরূপ প্রকাশন্বরূপ আত্মা, অন্য জ্ঞন দ্বারা প্রকাশিত হয়েন না। যে পদার্থ স্বপ্রকাশ বা স্বয়ং প্রকাশস্বরূপ, ন্তাহা' অন্ত প্রকাশের সাহাধ্যে প্রকাশিত হয় না। সূর্যকে প্রকাশিত করিবার জন্য অন্য সূর্ধ্যের প্রয়োজনই হয় না। অফ়্ি প্রিয়তমে, মৈত্রেয়ি, যিনি নিখিল ব্রহ্মাণ্ডের বিজ্ঞাতী)

(৯৩ )

বা প্রকাশয়িতা, যিনি মানুষের বাক্য মনের অতীত, যখন মানুষ তৎস্বরূপ হইয়া যাইবে, যখন মানুষ মুক্ত হইয়া যাইবে, তখন তাহাকে কি উপায়ে জানিৰে ? তখন তাহার জ্ঞাতা অস্ত আর কেহ থাকে না। তখন একমাত্র নিত্য সর্ববব্যাপী সর্বশক্তি জ্ঞানময় মুক্ত পরমাত্মা বিদ্যমান থাকেন মানুষ, জ্ঞান-বৈরাগা প্রভাবে মুক্ত হইয়। গেলে_- পরমেশ্বরে লীন হইয়া গেলে আর সে ভীষণছুঃখপ্রদ জন্মমরণচক্রে পুনুরায় ঘূর্ণিত হয় না। তখন তাহার এই চক্রঘূর্ণনদুঃখের আত্যন্তিক অবসান হয়।” মহষি যাজ্ভবন্ধ্যের এইরূপ অমূল্য উপদেশ প্রাপ্ত হইয়া সাধ্ধী মৈত্রেয়ী অত্যন্ত গ্রীতা হইলেন। পত্তির উপর্দেশ প্রভাবে পতীর জ্ঞান বৈরাগ্য উদিত হইল এবং সংসারে আসক্তি লুপ্ত হইয়া গেল। এইরূপে তিনি স্বামীর সহিত মুক্তির পথ অবলম্বন” করিয়াছিলেন আমাদের যে ভারতে যে সময়ে স্বামী স্ত্রীকে ঈদৃক্রূপে সক্ষম পরমাততত্ব সহজভাবে উপদেশ করিতেন, আমাদের সে ভারতের সে দ্দিন চলিয়। গিয়াছে পুনরায় যেন সেইন্প দিন আমরা দেখিতে পাই, ইহাই জ্ঞানময় পরমেশ্বরসমীপে আমাদের আস্তরিক প্রার্থ্। এক্ষণে ভারতে অনেকেই বুঝিতে পারিয়াছেন যে, স্ত্রীলোক লেখাপড়া শিখিলেই বিধবা হয় না, কিন্তু মৈত্রেয়ীর ন্যায় চিরজীবন সধবা থাকিয়া, স্বামীর সহিত মুক্তিপথাৰলম্দিনী হইতে পারে

( ৯৪ ) গাগী।

ূর্ববকালে এই পুণ্যভূমি ভারতবর্ষে এক মহাপণ্ডিত আধ্ধ্য-মহিলা জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। তাহার নাম গার্ী। ভাহার পিতার নাম মহধি বর, | সেই জন্য গার্গীর অপর নাম বাচরুবী। গার্গী বেদবেদান্ত ডগ্লীনিষদাদি শাস্ত্রে অসাধারণ বিদ্ধী ছিলেন বলিয়া তৎ- কালের মহধিগণ তীহাকে ব্রহ্গবাদিনী এই উপাধি দিয়াছিলেন। তিনি মহুধি যাঁজ্ভবন্থেরের ন্যায় মহাজ্ঞানী ব্যক্তির সহিত তর্কবিতর্ক করিতেও ভয় পাইতেন না। একদা মহষি যান্ড্ববৃন্ধ্যের সহিত তর্ক করিবার সময় গাগী বেরূপ অকুতোভয়তা, অসীম সাহস প্রতিভার পরিচয় দিয়াছিলেন, তাহা শুনিলে বিস্মিত হইতে হয়। শুনিতে পাওয়া যায়, মহধি যালজ্ভ্বন্থ্যের সহিত যখন তীহা'র শান্্র- বিচার হইয়াছিল, তখন তিনি যুবতী ছিলেন মাত্র তখন তাঁহার বেশি বয়ঃক্রম হয় নাই। অল্প বয়সেই তিনি বেদান্ত, উপনিধৎ প্রভৃতি শান্ত্রপাঠ শেষ করিয়াছিলেন। তিনি যখন যে বিষয় লইয়া তর্কে প্রবৃত্ত ভইতেন, তখন সে বিষয়ে যতক্ষণ স্তুমীমাংসা স্থপিদ্ধান্ত না হইত, ততক্ষণ তিনি কোন ক্রমেই তাহ! ন| বুঝিয়া ছাড়িয়া দিতেন না। তীহার শান্জ্রীয় বিচরপ্রণালী অবলোকন করিয়া বড় বড়, খষিরাও স্তম্ভিত হইয়া যাইতেন। তিনি মহধিগণের সহিত, ঘোর তর্ক করিতেন বটে, কিন্তু কোন

(৯৫ )

মহধির মর্যাদার হানি করিতেন না। তীহাদিগকে যথাবিধি প্রণাম করিতেন। বাহার যেরূপ প্রাপ্য সম্মান, তাহাকে সে সম্মান দিতে তিনি কখনই ত্রুটি করিতেন না রৃহদারণ্যক উপনিষদের তৃতীয় অধ্যায়ের ষ্টব্রাহ্মণনামক অধ্যায়ে দেখিতে পাওয়! যায় যে, একদা ব্রচ্মবাদিনী গার্গী, মহর্ষি যাভ্ভ্বন্ধ্যকে জিজ্ঞাস! করিয়াছিলেন, “হে মহর্ষে, উপনিষ বলেন, সমস্ত পৃথিবী জলের উপরে প্রতিষিত। কারণ, পৃথিবী খনন; করিলেই যখন জল দেখিতে পাওয়া যায়, তখন স্ৃতরাং পৃথিবী জলের উপরেই নিঃসন্দেহে প্রতিঠিত। জল হইতেই পৃথিবী উৎপন্ন হইয়াছে! অতএব জলই পৃথিবীর উপাদ্োন-কারণ। কিন্ত্বী মহষে, এই জল কাহার উপরে ওতপ্রোতভাবে অবস্থিত ? অনুগ্রহ করিয়। বলিবেন কি ?? মহধি বলিলেন, '“জল, বায়ুর উপরে ওতপ্রোতিভাবে অবস্থিত। কারণ, বায়ুই জলের উপাদান-কারণ।” গার্গী পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, বায়ু কাহার উপরে ওতপ্রোতভাবে অবস্থিত ? মহষি বলিলেন, “্রাযুঞ্জস্তীক্ষে (আকাশে ) ওতপ্রোতভাকে অবস্থিত 1৮ , ৪, গার্গী।* অন্তরীক্ষ কাহার উপরে অবস্থিত ? মহষি। অন্তযীক্ষলোক গন্ধরর্বলোকে অবস্থিত। গার্গী। ইন্ধরর্বলোক কোথায় অবস্থিত ? ,

মহবি-। . গন্করর্বলোক জাদিত্যলোকে অস্ত |.

( ৯৬ )

গাগী। আদিত্যলোক কাহার উপরে ওতপ্রোতভাবে অবস্থিত ?

মহষি। আদিত্যলোক চন্দ্রলোকের উপরে অবস্থিত গার্গী। চন্দ্রলোক কাহার উপরে অবস্থিত ? মহপ্ি। চন্দ্রলোক নক্ষত্রলোকের উপরে অবস্থিত। গা্গী। নক্ষত্রলোক কাহার উপরে অবস্থিত ? মহধি। নক্ষত্রলোক ইন্দ্রলোকের উপরে অবস্থিত গার্গী। ইন্দ্রলোক কোথায় অবস্থিত ? মহধি। ইন্দ্রলোক প্রজাপতিলোকের উপরে প্রতিষ্ঠিত গার্গী। প্রজাপতি লোক কাহার উপরে প্রতিষ্ঠিত? মহষি। প্রজাপতিলোক ব্রক্মণলাকের উপরে প্রতিষ্ঠিত গার্গী। ব্রহ্মলোক কাহার উপরে প্রতিষ্ঠিত?

মহধি বলিলেন, “গার্গি! আর জিজ্ঞাস! করিও না। তুমি তোমার প্রশ্নের সীমা অতিক্রম করিয়া যাইতেছ। প্রশ্নের রীতি" অতিক্রম করিও না। শি ব্যক্তিদিগের সদাচারপরম্পরাক্রমে প্রশ্ন করিবার যে একটি নীতি নিরূপিত আছে, তদনুসারে প্রশ্ন কর। তুমি যে লোকের কথা জিত্ঞাস| করিতেছ, সেই ব্রক্মলোক-_-সেই সত্যলোক কাহারও উপরে প্রতিষ্ঠিত নহে। নিখিল ব্রহ্মাগুই তাহার উপরে প্রতিষ্ঠিত আশ্রিত। সেই ব্রঙ্গই সকল লোকের আশ্রয়দাতা। সেই ব্রহ্মলোককে ' আশ্রয় রুরিয়াই সকল লোক অবস্থিতি করে। আত্মজ্ঞানগম্য

(৯৭ ) এবং উপনিষত্প্রমাণবোধ্য পদার্থকে কেবলমাত্র অমুমান- প্রমাণ দ্বারা বুঝা যায় না। অনুমান সেখানে পৌছিতেই পারে না এই জন্য গীতায় ইহাকে “প্রত্যক্ষাবগ্ম” বলিয়া বর্ণনা করা হইয়াছে। ইহা অনুমানগম্য পদার্থ নয়। সেই ব্রহ্মলোক আনুমানিক প্রশ্মোত্তরের বিষয় নহে। অধ্যয়ন-অধ্যাপনাদি মহাতপশ্যাবলে মানুষ যদি নিজে তত্বজ্ঞানলাভ করিতে পারে, তাহা হইলে. সেই ব্যক্তিরই সূন্মমতম দুর্বেবাধয ব্রহ্মতত্বের প্রত্যক্ষ জ্ঞান হইতে পারে। কেবলমাত্র বাক্য দ্বারা তাহাকে বুঝান যায় না। তিনি সাধারণ বাক্য মনের অতীত মহধির এইরূপ কথা শুনিয়া গার্গী সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসায় বিরত হইলেন এবং মহধিকে প্রণাম করিয়া স্বস্থানে প্রস্থান করিলেন। বৃহদারণ্যক উপনিষদের তৃতীয় অধ্যায়ের অষ্টম ব্রাঙ্মণে দেখিতে পাওয়া যায় যে, একদা ব্রক্মবাদিনী গার্গী মহবি যাভ্ভ্ধবন্ধ্যের নিকটে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, বেদান্ত, উপনিষৎ প্রভৃতি শাস্ত্রে মহাপগ্ডিত মহধিগণে পরিবেষ্টিত হইয়। মহত্ব যাজ্ৰবন্থ্য উপবিষ্ট আছেন। গার্গা তথায় উপস্থিত হইয়াই যথাবিধি সম্মান প্রদর্শনপূর্ববক মহধিগগণকে নিবেদন করিলেন, শহে পৃজ্যবিভ্ঞ মহধিগণ, আপনারা অনুগ্রহ পূর্ববক আমার সবিনয় নিবেদন শ্রবণ করুন। আপনার যদি কৃপাপূর্ববক আমাকে অনুমূতি করেন, তাহা হইলে আমি মহর্ষি বাজ্ঞবন্থ্যকে ছুইটি, প্রশ্ন করি। মহত্রি

(৯৮ )

যাজ্জবন্থ্য যদি প্রশ্ন ছুইটির সছুত্তর প্রদান করিতে পারেন, তাহা হইলে' আপনারা নিশ্চয়ই জানিবেন যে, আপনাদিগের মধ্যে এমন কেহই নাই, যিনি মহধি যাজ্- বন্ধ্যকে শাস্্রবিচারে পরাজিত করিতে পারেন।” গাগীর এই কথা শুনিয়া মহধি যাজবন্ধ্য এবং অন্যান্য মহধিগণ গাগীকে “ন্বচ্ছন্দে জিজ্ঞাস! কর” এই অনুমতি প্রদান করিলেন। গার্গী বলিলেন, “হে মহধে, আমি আপনাকে দুইটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতেছি ।” নিজের প্রশ্ন ছুইটি বে বড়ই কঠিন, তাহা জানাইবার জন্য গার্গা দুইটি দৃষ্টান্ত দ্বার প্রশ্ন দুইটির কঠিনতা প্রথমতঃ বর্ণনা করিতে লাগিলেন তিনি বলিঢলন, “হে মহর্ষে, এই ভূমগ্ডুলে অসীমশশরষ্যবীরধ্য সম্পন্ন ভীমপরাক্রম বারাণসীর মহারাজ এবং দৌর্দগু- প্রতাপশালী বীরশিরোমণি বিদেহদেশাধিপতি মহারাজ জনক, উভয়ে শীঘ্রসংহারক তীক্ষুবাণ লইয়া যেমন রণ- ক্ষেত্রে উপস্থিত হইয়াছিলেন, তদ্রপ আমিও তাদৃশ তীক্ষবাণম্বরূপ ছুইটি প্রম্ন লইয়া আপনার নিকটে উপস্থিত হইয়াছি।” মহধি যাঁজ্বন্ধ্য বলিলেন, “তোমার যাহা ইচ্ছা হয়, তাহা জিজ্ঞাসা করিতে পার” অনন্তর গার্গী জিজ্ঞাস! করিলেন, “হে মহর্ষে; এই ব্রঙ্গাণ্ডের উদ্ধ- দেশস্থিত ম্বর্গলোক, অধোদেশস্থিত মর্ত্যলোক এবং স্বর্গ মর্ত্যের মধ্যস্থিত অন্তরীক্ষলোকের মধ্যে যে দকল নশ্বর পদার্থ, অতীত বর্তমান তবিষ্যৎ কালের সহিত

( ৯৯ )

সম্বদ্ধ হইয়) যে সূত্রেতে একীন্তাবে অবস্থিত, সেই সু্রটি ওতপ্রোতভাবে কোথায় অবস্থিত ?;

মহধি বলিলেন, “গার্গি, তুমি যাহা জিজ্ঞ।সা করিতেছ, তাহার উত্তর দিতেছি মনোষোগ দিয়া শ্রবণ কর। এই ব্রহ্মাণ্ডের উদ্ধলোক স্বর্গে, মধ্যলোক অন্তরীক্ষে এবং অধোঁবন্তী মর্তলোকে যে সকল নশ্বর পদার্থ, ভূত-ভবিষ্যুৎ বর্তমান কালের সহিত সম্বদ্ধ হইয়া অবস্থিত আছে, উহাদের সমগ্রির নাম সুত্র। পৃথিবী যেমন জলের উপরে ওতপ্রোতভাবে অবস্থিত, তদ্রপ সেই অভিব্যক্তসুত্র পদার্থ ত্রিকালেই অনভিব্যক্ত আকাশে ওতপ্রোতভাবে অবস্থিত।” গার্গী এই উত্তর শ্রবণ করিয়া! বলিলেন যে, “হে মহর্ষে, যেহেতু, আপনি আমার কঠিন দুর্বিবজ্ঞেয় প্রশ্নের ছুর্বিবজ্ছেয় উত্তর দিতে পারিয়াছেন, সেই হেতু আমি আপনাকে প্রধীম করিলাম। অন্যান্য ব্রাহ্ষণ-পগ্ডিতগণ, মদুক্ত সূত্র-পদার্থটি কি? তাহাই সম্যক্বূপে বুঝিতে পারেন না, আর আগ্রনি প্রশ্ন শুনিবামাত্র ততক্ষণা এই সূত্রের আশ্রম্বুটিকে পর্যন্ত অবগত হইয়া যখন প্রশ্নের প্রকৃত উত্তর প্রদান করিলেন, তখন আমি আপনাকে প্রণাম না! করিয়া থাকিতে পারিলাম না। প্রথম প্রশ্নের সছুত্তর পাইয়া আমি আপনাকে প্রণাম করিলাম এক্ষণে দ্বিতীয় প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করিতেছি। মনোযোগ দিয়া শ্রবণ করুম”

(১৯৯)

মহধি বলিলেন, “তুমি স্বচ্ছন্দে জিজ্ঞাসা কুর।”

গার্গী জিজ্ঞাসা 'ফরিলেন, “হে মহর্ষে, স্বর্গলোক, অন্তরীক্ষলোক মর্ত্যলোকে যে যে নশ্বর পদার্থ অতীত, বর্তমান ভবিষ্যৎকালের সহিত সম্বদ্ধ হইয়! আছে, সেই পদার্থের সমষ্রিকে শাস্ত্রে সূত্র কহে। আপনি বলিয়াছেন, বস্তুসমস্টিস্বরূপ সেই সুত্র, অব্যাকৃত অনভিব্যক্ত আকাশে ওতপ্রোতভাবে অবস্থিত। এক্ষণে জিজ্ঞাস্য এই যে, সেই অনভিব্যস্ত আকাশের আশ্রয়টি কে? সেই আকাশ 'কাহার উপরে প্রতিষ্ঠিত? মহধি এই কঠিন প্রশ্নের উদ্ভম উত্তর দিতে পারিবেন না, এইরূপ মনে করিয়া গার্গী পুনরায় এই প্রশ্নটি আবৃত্তি করিলেন। মহষি আগ্রে প্রশ্নটিই উত্তমরূপে বুঝিয়া লউন, ভার পর উত্তর দিতে যেন চেষ্ট। করেন, এই অভিপ্রায়ে গার্গী প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করিয়াছিলেন

মহধি গা্গীর এই অভিপ্রায় বুঝিতে কারা কিন্তু তখন তদ্বিষয়ে কোন কথা ন! কহিয়া মহধি তৎক্ষণাৎ প্রশ্নের উত্তর দিতে আরন্ত করিলেন। তিনি বলিলেন, “হে গার্গি! প্রাচীন ব্রাহ্মণগণ বলেন, তিনিই এই অনভি- ব্যক্ত আকাশের আশ্রয়__্বাহার 'কোনকালেই ক্ষরণ বা ক্ষয় নাই বলিয়া যিনি অক্ষর বা অবিনাশী পরমেশ্বর, ধাহাকে প্রাচীন ্রা্মণগণ পরমাত্মা৷ পরমেশ্বর প্রস্তুতি নামে অভিহিত করেন।, ইহা প্রাচীন ব্রহ্মজ্ঞ ব্রাহ্মণদিগের

( ১৯১ )

কথা। শ্ত্রহা আমার মনঃকল্লিত কথা নয়। আমি কখনই কল্পিত বা অসত্য কথা বলি না। তুমি যে প্রশ্নটি দুইবার আবৃত্তি করিয়াছ, ইহাতে এই মনে হয় যে, আমি যেন ্রশ্নটিই আদৌ* উত্তমরূপে বুঝিতে পারি নাই। আমি তোমার প্রশ্ন উত্তমরূপে বুঝিতে পারিয়াছিলাম। প্রশ্নটি একবার আবৃত্তি করিলেই যথেষ্ট হইত দুইবার আব্রত্তি করিবার কোন প্রয়োজনই ছিল না ।%

গার্গী বলিলেন্ব, “আচ্ছা বেশ, বুঝিলাম যে, পরমাত্া পরমেশ্বরই সেই অনভিব্যস্ত আকাশের আশ্রয়। কিন্তু সেই পরমাত্মা! বা পরমেশ্বর কি প্রকার পদার্থ ? বিষদভাবে তাহার কিঞ্চিত স্বরূপ বর্ণন! রুরিয়া বুঝাইয়! দিন 1”

মহধি বলিলেন, “সেই পরাতপর পরমপুরুষ পরমেশ্বর পর্রন্ম স্থলও নহেন: সুন্সনও নহেন, হুম্বও নহেন, দীর্ঘও নহেন, লোহিতও নহেন, পীতও নহেন, শুভ্রও নহেন, কৃষ্ণও নহেন, তৈল-দ্বৃতাদির হ্যায় স্লেহ-পদার্থও নহেন। তিনি ছয়াও নহেন, অন্ধকারও নহেন, বায়ুও নহেন, আকাশও নহেন, তিনিৎকোন বিষয়ে আসক্ত নহেন, তিনি রস নহেন, গন্ধ নহেন, , রূপ নহেন, শব্দ নহেন স্পর্শও নহেন। তিনি* নেত্ররহিত, কর্ণ রহিত, বাগিন্দ্রিয-রহিত, তেজো- রহিত, প্রাণ-রহিত, মুখ-রহিত, হস্ত-রহিত, পদ-রহিত, রূপ-রহিত, রস-রহিত, গন্ধ-রহিত, স্পর্শ-রহছিত। তিনি ছিদ্র-রহিত, ব্যবধান-রহিত, অস্তর-রৃহিত, বাহ্া-রহিত,

( ১০২)

আদি-রহিত এবং অন্ত-রহিত। তিনি কিছুই ভুগ্ষণ করেন না বা বিনাশ করেন না এবং তীহাকেও কেহ ভক্ষণ করিতে পারে না বাবিনাশ করিতে পারে না। তিনি এক অর্থা স্বসজাতীয় দ্বিতীয়-রহিতগ যেমন মনুষ্য জাতির মধ্যে যাদব ছাড়! অন্য একটি মনুষ্য মাধব আছে, তদ্রুপ ব্রদ্মের সজাতি অন্য একটি ব্রহ্ম নাই। তিনি অদ্বিতীয় অর্থাৎ স্ববিজাতীয় অপর-রহিত। যেমন মনুষ্য- জাতি হইতে ভিন্নজাতীয় কুকুরাদি জৃন্তু আছে, তদ্রুপ ' বর্গ হইতে ভিন্ন বিজাতীয় স্বতন্ত্র কোন বস্তুই নাই। সমস্ত বস্তই তাহার অংশ। তাহা হইতে উৎপন্ন। তিনিই সমস্ত বস্তর উপাদান নিমিত্তকারণ। তাহার অস্তিত্ব ছাড়া স্বতন্ত্র কোন বস্তুর অস্তিত্ব নাই। অন্য বস্ত্র অস্তিত্ব মায়াময় কল্পিতমাত্র। উহা বাস্তব নহে। তিনি সত্যন্বরূপ, বিজ্ঞানস্বরূপ, আনন্দস্বরূপ। হে গার্গি! পরম-পুরুষ সর্ববশক্তিশালী পরমেশ্বর প্রাণীদিগের . মহোপকা রার্থ সূর্য চন্দ্রকে সৃষ্টি করিয়াছেন তীহার কঠোর শাসনে পরিচালিত সূর্ধ্য চন্দ্র তাহার কঠোর শাসনভয়ে যেন কম্পান্বিত-কলেবর হইয়া আলোক- প্রদানাদি স্বস্ব নিরূপিত কার্য * করিতেছে। তাহারা নিয়মিত দেশে নিয়মিত কালে উদয়-অস্ত-বৃদ্ধিলয়াদি কার্ধ্যে নিয়মিতন্লূপে ব্যাপৃত রহিয়াছে হেগার্গি! সেই অবিনাশী পরমেশ্বর স্তৃশীদনের বশবর্তী হইয়া স্বর্গলোক,

( ১০৩ )

জ্যোতির্লোক এই পৃথিবী স্থুনিয়মে রক্ষিত হইতেছে। তিনি যদি এই তিন লোককে ধরিয়া না রাখিতেন, তাহা হইলে অতি গুরু-ভারাক্রান্ত এই তিন লোক রসাতলে বিলীন হইয়া ধাইত এবং হঠাৎ জ্যোতির্লোক এই মর্ত- লোকে পতিত হইত : হে গার্গি! তাহারই প্রকৃষ্ট শাঁসন- গুণে ভূত, ভবিষ্ুৎ বর্তনান বস্তু সমূহের বয়ঃক্রমনিন্নপক মাস, বগসর, দিবা, রাত্রি মুহূর্ত প্রভৃতি মহাকালের অংশগুলি যথানিয়মে গাতায়াত করিতেছে যেমন কোন প্রভুর আজ্ঞাপালক ভূত্যবর্গ সাবধানে প্রভুর আয়-ব্যয়ের সংখ্যা গণনা করে, তন্রপ মহাকালের অংশভূত এই বগুসর, মাস, খত, দিবারাত্রি, দণ্ড, পিল মুহূর্ত প্রভৃতি খণ্ডকাল সকল, বিশ্বপ্রভূ পরমেশ্বরের বিশ্বের সৃষ্টি স্থিতি গ্রলয়ের সংখ্যা গণন! করিয়া থাকে হে গার্গি, সেই অবিনাশী পরমেশ্বরের ' উৎকৃষ্ট শাসনগুণে হিমালয়াদি পর্ববত হইতে উৎপন্ন! পুর্ববদিক্গামিনী গঙ্গা প্রসৃতি নদী এবং পশ্চিমদিক্গামী দিন্ধু প্রভৃতি নদ যথানিয়মে প্রবাহিত হইতেছে ।* হে গার্গি! বহুরেেশে অর্থোপার্জন করিয়া পুণ্যবান্‌ জ্ঞানী দাতারা যে গোস্বর্ণ-রত্বাদি ধনদান করেন এবঙ সাধুগণ যে এ*দকল দাতাদিগের প্রশংসা করিয়! থাকেন, তাহা সেই অবিনাশী পরমেশ্বরেরই শাপনমহিম!। সাধুজন: প্রশংসিত দানাদি সৎকার্য্যের ফুল পরলোকে লব্ধ হইয়া! থাকে পরমেশ্বর জর্ববপ্রাণীরৎ সর্বপ্রকার কর্ণ্মের

( ১০৪.)

স্ববিচার করিয়া, যাহার যেমন কর্ম, তাহাকে ঠিকতদমুরূপ ফল প্রদান করেন। পরমেশ্বরই দাতার দানজনিত ফলের ংযোজয়িতা। পরমেশ্বরই সেই দাতাকে তাহার দান- জনিত ফলভোগ করাইয়৷ থাকেন। হৈ গার্গি সেই পরমেশ্বরেরই উৎকৃষ্ট শাসনগুণে দেবতাগণ, স্ব স্ব তৃপ্ডির জন্য, অন্যান্য বন্ধু উত্তমোত্তম বস্তু সংগ্রহের সামর্থ্য সত্তেও, যজ্ঞকর্তার প্রদত্ত ঘ্বত, ফল, চরু, পিষ্টক প্রভৃতি বস্তু ভক্ষণের জন্যই আশান্বিত হইয়া থাকেন। সেই পরমে- শ্বরেরই শাসনবলে মহানুতব পিতলোক পুনভ্র-পৌত্রাদির প্রদেয় শ্রাদ্ধান্ন মাত্র ভোজনের নিমিত্ত পুক্র-পৌত্রাদির মুখাপেক্ষ। ' করিয়া থাকেন।, হে গার্গি! সেই সর্বব- কম্মফলদাতা! স্ববিচারক সর্বশক্তি সর্বব্যাপী সর্বজ্ঞ পরমেশ্বরের মহিমা না বুঝিয়া, না শুনিয়া, যাহা কিছু জপ-হোম-পাঠাদি পুণ্যক্্ম অনুষ্ঠিত হয়, তাহার ফল বিনশ্বর।

উক্তৃবিধ কর্ম্দ-অনুষ্ঠায়ী লোক সকল স্ব স্ব কর্্মফল- তোগের পর ভীষণ নক্র-কুম্তীরাদি তুল্য ছুংখ-শোক-পুর্ণ এই সংসার-দাগরে পুনরায় পতিত হয়েন। কিন্তু উপনিষত্-বেদান্ত-বেদা, মঙ্গলময়, আনন্দময়, বিভ্ঞানময়, পরমাত্মা পরমেশ্বরের মহিমা! জানিয়৷ শুনিয়া ধ্যান করিয়া সেই জ্ঞান্ত, ধ্যান সমাধির বলে তাহাতে একবার আত্যন্তিকরূপে লীন্ন হইতে পারিলে আর ভীষণ জন্ম-মরণ-

(১০৫)

চক্রে ঘূর্ণিত হইতে হয় না। যাহার জীবাত্মার সহিত পরমাত্মার একাজ্ঞান সংসাধিত হয়, সে ব্যক্তি আর এই নশ্বর লোকে ফিরিয়া আইসে না। সেব্যক্তি অপার অমৃত আনন্দ-সা্ারে নিমগ্ন হইয়া অমৃত আনন্দের সহিত মিলিয়! যায়। সেব্যক্তি তখন ব্রহ্ধলোক প্রাপ্ত হয়। সে'আর জগতে ফিরিয়া আইসে না। এই জীবের সহিত পরমাত্বা পরমেশ্বরের এক্জ্ঞানই সমস্ত উপনিষত- বেদান্ত শাস্ত্রের প্রধান লক্ষা, প্রধান প্রতিপাদ্য সার বস্তু পরমেশ্বরের তত্বশ্রবণ, পরমেশ্বরের তত্বমনন, পরমেশ্বরত ত্র জন, পরমেশ্বরতত্বধ্যান, পরমেশ্বরতত্ত্ে মমাধি ব্যতিরেকে মুক্ত হইবার অন্য কোন উপায়ই নাই। তীস্বাকে জান! ব্যতীত, তাহার আশ্রয় গ্রহণ ব্যতীত, তাহাতে বিলীন হওয়া ব্যতীত মুক্ত হইবার আর অন্য কোন উপায়ই নাই। হে গর্গি! সেই অবিনাশী পরমেশ্বরকে না জানিয়! যে ব্যক্তি এই মর্ত্যলোক হইতে চলিয়া যায়, সে ব্যক্তি বড়ই দীন, হীন, ক্ষুত্র ছুর্ভাগ্যগ্রস্ত। আর যে ব্যক্তি তাহার মহিম! জানিয়া এই মর্ত্যলোক হইতে চলিয়া যায়, সেই ব্যক্তিই ব্রাহ্মণ, অর্থাঙ ব্রহ্মপরায়ণ। হে গার্গি! সেই অবিনাশী পরমেশ্বর সকল বস্তু দেখিতে পাইতেছেন, কিন্তু তাঁহাকে কেহ দেখিতে পায় না। তিনি সকল বিষয় জানিতে পারেন, কিন্তু ভীহাকে সকলে জানিতে পারে না। স্তিনি সকল পদার্থের ভ্রষটা, মন্তা, শ্রোতা বিজ্ঞাতা। সেই

( ১০৬)

এক অদ্বিতীয় পরমেশ্বরে আকাশাদি নিখিল্ব্রন্ষাণ্ডই অবস্থিত 1৮ ৃ্‌

গার্সী মহধি যাঁজ্ভবন্ক্যের এই প্রকার মহাসন্তোষজনক উত্তর শ্রবণ করিয়া মহধি যা্বন্ক্ের নিকটে উপবিষ্ট অন্যান্য মহধিদিগকে বলিলেন, “হে পুজনীয় ব্রাহ্মণগণ, আপনারা পরমতন্তরভভ মহষি যাঁজ্ভবক্ধ্যের নিকটে অদ্য এই অমুল্য উপদেশ গ্রহণ করিয়া তাহার নিকটে খণী হইয়া- ছেন। এই খণ-পরিশোধের জন্য আপনার! যদি এক্ষণে তাহার শ্রীচরণকমলে স্ব স্ব মস্তক অর্পণ করেন, তাহা হইলেই সেই মহাঁখণের কিঞ্চিন্মাত্র খণ পরিশোধ করা হইল, ইহাই বুঝিয়া আশ্বস্ত হইতে পারিবেন নতুবা আশ্বাসপ্রাপ্তির অন্য কোন উপায় নাই। এই মহাখণ হইতে মুক্ত হইবার অন্য কোন উপায় নাই। আর ইহাকে শান্্রবিচারে জয় করা তো বনু দুরের কথা। ইহাকে শাক্সুবিচারে জয় করিব, এইরূপ কথাও আপনারা মনে ভাবিবেন না। কারণ, আপনাদের মধ্যে ঈদৃশ জ্ঞানী কেহই নাই, যিনি মহষি যাজ্ভবন্ধ্যকে জয় করিতে সাহসী হইতে পারেন। কারণ, আমি পুর্বের্বই বলিয়াছি যে, যদি মহধি যাল্ভবন্ক্য আমার এই কঠিন" প্রশ্নের প্রকৃত উত্তর দিতে পারেন, তাহা হইলে আপনার! কেহই ইহাকে পরাস্ত করিতে পারিবেন না” এই কথা বলিয়৷ ব্রদ্মবাদিনী তেজস্থিনী গার্গী নির্ত্ত হইলেন।

( ১০৭ )

যে দ্রেশে ভ্ঞানিগণ-চুড়ামণি মৃহষি যাজ্ভবন্থ্যের নিকট কোন একটি মহিল! দার্শনিক প্রশ্ন করিবার সময় শাস্ত্র- জানের উপর নির্ভর করিয়া অকুতোভয়ে মহাসাহসের সহিত বলিতে পাঁরিতেন যে, প্রবল-প্রতাপান্বিত বারাণসী- রাজ বিদেহরাজ জনকের স্থৃতীক্ষ বাণের ন্যায় দুইটি কঠিন প্রশ্ন লইয়া আপনার নিকটে উপস্থিত হইয়াছি, "যে দেশের একটি মহিলার কঠিন দার্শনিক প্রশ্ন শ্রবণ করিয়! মহাপ্রভাব মহধিগঞ্ণও বিস্মিত হইয়াছিলেন, সেই দেশের, স্্রশিক্ষা যেরূপ চরম সীমায় উপনীত হইয়াছিল, পৃথিবীর কোন খণ্ডেও সেরূপ হয় নাই। কারণ, বিদ্যাশিক্ষার মধ্যে অধ্যাত্ব-বিদ্যাশিক্ষাই উচ্চশিক্ষা ভগবান্‌ শ্রীকৃষ্ণও গীতায় বলিয়াছেন যে, আমি পর্বববিদ্যার মধ্যে শ্রেষ্ঠতম উচ্চতম অধ্যাত্মবিদ্যাম্বরূপ। ভারতের মহিলাই পৃথিবীর মধ্যে সকল জাতি অপেক্ষা এই বিদ্যায় উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। অতি প্রাচীনকালে বৈদিক যুগেও কাশীধামের উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। কাশীর স্থায় পুরাতন মহানগরী পৃথেবীমধ্যে কুত্রাপিও ছিল না। বৌদ্ধদিগের গ্রন্থেও ইহা ,দৃ্ট হয় যে, কাশী নগরীতে ঈদৃশ ধনী বণিকের বাস ছিল যে, ষীহার বাঁটাতে ৫০০ শত পরি- চারিকা তাহাদের পতিরাও এক সঙ্গে কার্ধ্য করিত। কাশীতে পূর্বে যেরূপ বলবান্‌ লোক দ্বেখিতে পাওয়৷ যাইত, অধুনা সেরূপ বলবান্‌ সাহসী লোক দৃষ্ট হয় না।

( ১০৮ ) ভঙ্ষ্যপেয় দ্রব্যের দিন, দিন মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙঙ্গ বলী সাহসীর সংখ্যাও দিন দিন কমিয়া যাইতেছে “কাশীধাম- সম্ভৃত বীরপ্রবরের তীক্ষ বাণের ম্যায় আমার এই প্রশ্ন” গার্গীর এইরূপ কথাতেই বুঝা যাইতেছে যে, পূর্বে কাশী বীরবত্তায় গৌরবিণী ছিল।

বৈদিক যুগের শিক্ষিতা.মাতা |

বৈদিক যুগে পুক্রকন্যাদিগের ধর্ম্জীবন সংগঠনার্থ মাতাকে স্ুুশিক্ষা লাভ করিতে হইত। পুক্র-কন্যাদিগের হৃদয়-ক্ষেত্রে ধর্শিক্ষার বীজ বপন করিবার জন্যই মাতার শিক্ষার প্রয়োজন হইত। তখনকার লোকের এই সংস্কার ছিল যে, মাত! স্তরশিক্ষিতা না হইলে পুক্রকন্যাদিগের শিক্ষা সম্পন্ন হইতে পারে না। পুভ্রকন্যাগণ মাতার নিকটে শিক্ষালাভ করিবার যেরূপ স্থুযোগ পায়, অপরের নিকটে তাদৃশ সুযোগ পাইতে পারে না। বাল্যকালে ধন্মজীবন যেরূপ স্থন্দররূপে, সহজভাবে এবং দৃঢ়রূপে গঠিত হইতে পারে, যৌবনে কিন্বা বার্ঘক্যে তঙ্প গঠিত হইতে পারে না। বংশদগুকে অপক্ক অবস্থায় যেরূপ নমনশীল করা যাইতে পারে, পন্ধ অবস্থায় তত্রপ করিতে পারা যায় না। বাল্যকালে সরল, বিশাল, পবিত্র- স্বভাবরূপ উত্তম" ভিত্তি যেমন স্থদৃঢ়রূপে গঠিত হইতে

( ৯০৯ )

পারে, ফৌবনে কিন্থা বার্ধক্যে তু্রূপ গঠিত হইতে পারে না। বাল্যাবস্থায় এরূপ ভিত্তির উপরে স্থাপিত ধন্মভাব স্থায়ী হইতে পারে শান বলেন, প্ধর্মই একমাত্র চির- স্থায়ী পদার্থ ্্ ছাড়! সমস্তুই অসার বিনশ্বর বস্ত্ব। ধ্মাই মানুষের একমাত্র বন্ধু মানুষ মরিয়া গেলে সকল বস্তু পড়িয়া থাকে কিছুই তাহার সঙ্গে ঘায় না। শরীর পুড়িয়া ভন্মে পরিণত হয়। একমাত্র ধর্মই তাহার সঙ্গে যায়।” বাল্যকাল সুশিক্ষিতা মাতার নিকটে শিক্ষালাভ, করিলেই ঈদৃশ অবিনশ্শর পরমবন্ধুস্বরূপ ধর্মকে লভ করিতে পারা যায়। , বৈদিকযুগে ধশ্মশিক্ষাদশন-বিষয়ে মাতারই প্রাধান্য লক্ষিত হয়। ইহা আধুনিক স্ত্রীশিক্ষা-গ্রবর্তিক আড়ম্বর- পটু নব্য বক্তাদিগের কথা নয়, ইহা প্রাচীনতম সভ্যদেশ ভারতবর্ষের প্রাচীনতম জ্ঞান-শান্ত্ু উপনিষদের কথা বৃহদারণ্যকউপনিষদের” চতুর্থ অধ্যায়ের প্রথম ব্রা্মণে দেখিতে পাওয়া যায় যে, একদা মহধি যাজ্বন্ধ্য মহারাজ জনককে যে সকল উপদেশ দিয়াছিলেন, তন্মধ্যে শিক্ষিতা জননীর প্রাধান্য বিঘোষিত হইয়াছে। একদা মহারাজ, জনক 'পগ্ডিতমগ্ডলী-স্ুশোভিত রাজসভায় উপবিষ্ট ছিলেন। এঘতু সময়ে মহধি যাজ্ঞবন্ধ্য তথায় সহসা উপস্থিত ৯৯ উর মহারাজ মহবিকে সমাগত দেখিয়া যথাবিধি সম্মান-প্রদানের পর জিজ্ঞাস করিলেন, -“মছর্ষে,

( ১১০ )

আপনি কি পুনরায় ন্বর্ণমণ্ডিত-শুঙ্গযুক্ত গোঁধন লাভ করিবার জন্য এখানে আসিয়াছেন ? কিন্বা আমার সুক্ষ দুর্বেবাধ্য দুরুত্তর প্রশ্ন সকল শুনিবার জন্য এখানে আসিয়াছেন ?* মহধি বলিলেন, “মহারাজ, আমি উভয়ের জন্যই আসিয়াছি। স্বর্ণমণ্ডিতশু্গযুক্ত সহস্র ধেনু গ্রহণ এবং মহারাজার কঠিন প্রশ্নশ্রবণ করিবার জন্য এখানে আসিয়াছি।”

ইতঃপুর্বেৰ অনেকবার মহারাজ জনকের কন্ঠিন প্রশ্নের সুত্তর-দানের জন্য, মহধি যাজ্ভবন্ধ্য মহারাজের নিকট হইতে বিংশতি ভরি-পরিমিত স্বর্ণে মণ্ডিত শৃজদ্বয়যুক্ত সহজ ধেনু লাভ করিয়াছিলৈন। প্রত্যেক বারে মহবি বিংশতি সহত্র ভরি উত্তম স্বর্ণ এবং সহত্র হৃষ্টপুষ্ট হস্তি- তুল্য বৃহৎ ধেনু পারিতোষিকম্বরূপ প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। তাই মহারাজ জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, হে মহর্ষে, আবার সেইরূপ স্বর্ণ ধেনু লাভ করিতে আসিয়াছেন কি? জনকের রাজসভায় যাল্জ্রবন্ক্ের আগমনটি তে। বড় সহজ আগমন নয়। তিনি রাজসভায় আসিলেই মহারাজের প্রশ্ন- জিন্ভাসা, আর তাহার উত্তর দিতে পারিলেই সঙ্গে সঙ্গে তাহার অদ্ভুত পারিতোধিকলাভ ! অনেকের এই ভ্রান্ত সংস্কার আছে যে, প্রাচীনকালে স্বর্ণের অধিক মূল্য থাকিলেও, ধেনুর মুল্য কম ছিল। কেহ কেহ বলেন, ধেনুর মুল্যই ছিল না। ধেনু অনেক জম্মিত এবং

০4

গোবধ ছিল না বলিয়। বিনাদুল্যেই ধনু পাওয়া যাইত। বিনামূল্যে তগকালে ধেনু পাওয়৷ গেলে শাস্ত্রে শ্রাদ্ধের সময় “চন্দন-ধেনু” “ধেনু-মুল্যের” জন্য স্বর্ণরজতাদির ব্যবস্থা লিপিবদ্ধ হইত, না। অধুনা ধশ্মবিপ্লব-যুগে ধেনু-দানরূপ পুণ্যকন্মে ধেমু-মূলযের পরিমাণ দেখিয়া প্রাচীনকালের ধেনু-মূল্য নিদ্ধীরণ করা ঠিক নধ়। কারণ, প্রয়াগে একবার কুন্ত-মেলার সময় বেশীঘাটে সান করিতে শিয়া দেখা গেল, ঘাটের পাগ্ারা, একটিমাত্র পয়সা লইয়া মুর্খ যাত্রীদিগকে বনু সহতবার একটিমাত্র ধেনুর পুচ্ছ ধরাইয়া, গোদান করাইতেছে। চন্দ্র-সুধ্য-গ্রহণ কিম্বা কোন শুভযোগ উপস্থিত হইলে পুণ্য-নদীতীরে পাণগারা এইরূপে অজ্ঞ লোকদিগকে এক পয়সা লইয়া গোদান করাইয়৷ থাকে। যে কালে এক পয়সায় একটি বৃহতী ধেনু পাওয়৷ যায় এবং বু সহত্বার তাহার উৎসর্গ সম্পন্ন হইতে পারে, সেই কাল বে, ধর্ম্মাবিগ্নুবের যুগ, তাহা বলাই বান্ল্য। মহ যাজজবন্ধ্যকে ধদি প্রত্যেক প্রশ্নের জন্য সহ হস্তিতুল্য বুহত ধেন্ু এবং বিংশতি সহস্র ভরি উত্তম স্বর্ণ দিতে হয়, তাহা হইলে রাজ-কোষাগার শুন্য হইয়া পড়িবে, এইরূপ মুনে করিয়া মহারাজ জনক কৌতুকচ্ছলে মহধিকে ভ্টাহার পুনরাগমনের কারণ জিজ্ঞাস! করেন নাই। মহধির পুনরাগমনে মহারাজ কিঞ্চিম্মাত্রও অসন্তষ্ট হয়েন নাই।

68১7

যদি মহারাজ অসন্ুষ্টই হইতেন, তাহা হইলে মহষির আগমনের অভিপ্রায় জ্ঞাত হইয়া তাহাকে পুনরায় প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতে উদ্যত হইতেন না তকালের রাজারা দান করিয়া সর্বস্বান্ত হওয়াও গৌরবের বিষয় বলিয়! মনে করিতেন। তাহারা উপযুক্ত পাত্রকে পুরস্কার দানে সম্মানিত করিতে কিম্বা তাহার অভিলাষ পুরণ করিতে কখনও ত্রুটি করিতেন না। একদা মহারাজ রঘু বিশ্বজিত নামক যজ্ঞ করিয়া সর্বস্বান্ত হইয়াছিলেন এবং মৃৎপাত্রে ভোজন করিতেছিলেন। তাহার খন ঈদৃশী ঘোর দুর্দশা ঘটিয়াছিল, তখন বরতন্ত মুনির ছাত্র কৌতস গুরুদক্ষিণা- প্রার্থী হইয়৷ মহারাজের সমীপে উপাস্থত হইয়াছিলেন। কৌতস, মহারাজ রঘুর দুর্দশা অবলোকন করিয়া বলিলেন, “মহারাজ, আমি আপনাকে কষ্ট দিতে চাহি ন|। কারণ, চাতকপক্ষীও শরকালের জলশূন্য মেঘকে জল দাও+ বলিয়। উত্পীড়িত করে না। আমি মানুষ হইয়া আপনাকে অবস্থায় কিরূপে কষ্ট দিব? আমি স্থানান্তর হইতে গুরু-দক্ষিণ! সংগ্রহ করিতে চলিলাম ।”' এই বলিয়া কৌত্স গমনোম্মুখ হইলে মহারাজ রঘু তীহাকে বলিলেন, “আপনি স্থানান্তরে যাইবেন না। আমার নিকটে বিফল- মনোরথ হইয়া স্থানান্তরে গেলে জগতে আমার, একটি কলঙ্ক থাকিয়া যাইবে আপনি বিদ্বান ব্রাঙ্ষণ। সুতরাং আমার পবিত্র যঙ্ঞশালাই আপনার থাকিবার উপযুক্ত

(585)

স্থান। তথায় দুই দিন মাত্র বাস, করুন। এই সময়ের মধ্যেই আমি আপনার প্রার্থিত চতুর্দশ কোটি স্ুবর্ণ-ুদ্রা রূপ গুরুদক্ষিণ। যে কোন স্থান হইতে সংগ্রহ করিয়া আপনাকে দিব ।” এট বলিয়া মহারাজ রঘু, কুৰেরের অলকাপুরী অভিমুখে যুদ্ধযাত্রার আয়োজন করিতে লাগিলেন অস্ত্রশন্ত্রাদি দ্বারা রথ সজ্জিত করা হইল। ুদ্ধযাত্রার পূর্ববরাত্রে শান্ত্রনিয়মানুসারে মহারাজ সেই রথে শয়ন করিয়া রহিলেন। কিন্তু পরদিন প্রতাষে, কোষাগারের অধ্যক্ষ মহারাজ-সমীপে উপস্থিত হইয়! নিবেদুন করিল, “মহারাজ, অদ্য প্রাতঃকালে কোষাগারের দ্বার উদ্ঘাটন করিয়া দেখিলাম, *কোষাগার স্তববর্ণ-সম্ভারে পুর্ণ হইয়া রহিয়াছে ।” মহারাজ রঘু, এই সম্বাদ শ্রবণ করিয়া কৌতুসকে বলিলেন, “হে বিদ্বন্‌ ব্রাহ্মণ, আপনাকে এই কোষাগারস্থিত সমস্ত ম্ববর্ণই গ্রহণ করিতে হইবে ।» কৌত্স বলিলেন, “মহারাজ, আমি চতুর্দশ কোটির অধিক এক কপর্দীকও গ্রহণ করিব না।” মহারাজ বলিলেন, প্যখন আপনার জন্যই এই স্থুবর্ণরাশি কুবের কর্তৃক গোপনে প্রেরিত হইয়াছে, তখনু আমি চতুর্দশ কোটি বাদে অবশিষ্ট সর্ণমুদ্রাগুলি কেন লইব? আপনাকে সমস্তই গ্রহণ

করিতে হইবে দাতা, কোষাগারের সমন্ত সুবর্ণ দান করিতে উদ্যত এবং গ্রহীত! ব্রাহ্মণ, শ্রয়োজনাতিরিত স্বর্ণ গ্রহণ করিতে কোন প্রকারেই স্বীকার করিতেছেন

( ১১৪ )

না। এইবূপ বিচিত্র ব্যাপার অবলোকন করিয়া অযোধ্যা নগরীর অধিবাসিগণ বিস্মিত হইয়াছিল এবং দাতা গ্রহীতার অত্যন্ত প্রশংসা করিয়াছিল। মহারাজ রথঘু, কৌতসের প্রার্থিত চতুর্দশ কোটি স্বর্ণমুদ্রা, উঠ ঘোটকীর পৃষ্ঠে স্থাপিত করাইয়া বরতন্তর মুনির আশ্রমে প্রেরণ করিয়াছিলেন। তৎকালে খষিদিগের আশ্রমে এরূপ পর্ববতসম স্বর্ণরাশি পড়িয়া থাকিত। অন্য কেহ উহ: স্পর্শ করিত না। এই জন্য এরূপ পবিত্র যুগের বহু সহজ বনু পরে গ্রীক এতিহাসিক পগ্ডিত ম্যাগাস্থিনিস্‌ ভারতীয় লোকের নিস্পৃহতা, পবিত্রতা, সত্যবাদিতা চৌর্যাদি দৌষ- বিভীনতা অবলোকন করিয়া এই বর্ণনা করিয়াছেন যে, ভারতের পথে জঙ্গলে বত্র তত্র স্ুবর্ণরাশি পড়িয়া থাকিলেও কেহ স্পর্শ করিত না। চোর ব৷ অসতী কাহাকে বলে, দেশের লোক তাহা জানিত না গ্রীকদিগের দেশে আসিবার বহু সহত্্ বর্ষ পূর্বেব দেশের সামাজিক অবস্থা দেশীয় লৌকের মন যে কতদূর উন্নত, উত্তম পবিত্র ছিল এবং দেশের লোক যে কতদূর স্ুদভা 'ছিল, তাহ! কালিদাসের রঘুবংশাদি কাব্যে নাটকে সর্ববদাই দৃষ্ট হয়। | কালিদাস রঘুবংশে লিখিয়াছেন, রঘুর পিতার রাজতর- সময়ে চৌর্য্য কথাটি শাস্ত্রে ( অভিধানে )ই নিবদ্ধ ছিল, ইহা কার্যযতঃ দৃষ্ট হইত না। কেহ কেহ পূর্ব্বোক্ত

( ১১৫)

কৌতসের' উপাখ্যানটিকে কবির ,কল্লিত অসত্য বলিয়া যদ্দি মনে করেন, তাহা হইলে স্থলে স্পষ্টরূপে নির্ভয়ে ইহা বলা যাইতে পারে যে. তিনি সংস্কৃত, বঙ্গ ইংরাজি প্রভৃতি গ্রন্থ-প্রণেতা ক্রেন কবির কোন কাবোর প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝিতেই পারেন না। কারণ, সকল কৰিগণ, যখন কোন এক ব্যক্তির বিষয় অবলম্বন করিয়৷ গ্রন্থ রটনা করিয়াছেন, তখন সেই বাক্তি, যে সময়ে যে দেশে উদ্দিত হইয়াছিলেন; সেই সময়ের সেই দেশের লোক-, চিত্র সমাজচিত্র নিপুণহার সহিত অঙ্গিত করিতে চেষ্টা করিয়াছেন স্মতরাং সেই ব্যক্তির নাম হলধরূবা জলধর ছিল কি না? তীহার কন্যার নাম দ্রবময়ী বা জগদশ্থা ছিল কিনা? সেই দেশের সেই সময়ের অমুকনাম্নী কোন নারী সামবেদের অমুক অধ্যায় পর্য্যন্ত পাঠ করিয়াছিলেন কিনা?

রাজা হলধর সত্য সতাই চতুর্দশ কোটি স্থুবর্ণ মুদ্রা কড়ায় গণ্ডায় হিসাব করিয়া নিধিরাম-নামক ছাত্রকে দিয়াছিলেন কি না, ইত্যাদি কথার সত্যতা-নির্ঘারণের জন্য ধাহারা আহার-নিদ্রা ,বাদ দিয়া তর্ক করিতে বসেন, তাহাদের পক্ষে কাব্য-নাটকাদি গ্রস্থপাঠ বিড়ম্বনা মাত্র কোন মহাকবির গ্রন্থপাঠ করিয়া কিম্বা বৃহদারণ্যক উপনিষদের যাজ্জবন্ধ্য-জনকের কথা পাঠ করিয়া এই- টুকুই দেখিতে হইবে যে, তশুকালে' সেই স্থানে মনেই

( ১১৬৩ )

রাজার রাজত্বসময়ে কোন ব্রাহ্মণ-পঞ্ডিত সুন্গম দর্শন- শান্প্রের উত্তম উত্তর দিতে পারিলেই তিনি সেই দেশের রাজা এবং অন্যান্য ভূম্বামিগণের নিকট হইতে আশা- তিরিক্ত পারিতোধষিক এবং অত্যধিক ভক্তি, শ্রদ্ধা সম্মান প্রাপ্ত হইতেন।

"তা, জনকই দ্রিউন, আর যাক্ছবন্ধ্াই লউন, কিনব! হলধরই দিউন্‌, বা জলধরই লউন, ইহাতে শান্ত্র-প্রামাণ্যের অণুমাত্র ক্ষতি-বৃদ্ধি হয় না। লৌকিক ইতিহাস-রচনায় নাম ধাম প্রভৃতির নির্দেশের অণুমাত্র পার্থকা হইলে অবশ্য অনেক ক্ষতি হয় বটে। কিন্তু ইতিহাস ছাড় অন্য গ্রন্থ সম্বন্ধে স্বতন্ত্র কর্থা। মহারাজ জনক, মহষি যাজ্জবঙ্ষকে অনেকবার বন্তুধন দান করিয়াছিলেন ততকালের খধিগণ এই প্রকার বস্তু ধন লাভ করিতেন বলিয়াই ষষ্টি সহক্র ছাত্রকে ছুইবেলা অন্ন দিয়া নানাশান্্র পড়াইতে পারিতেন এবং মহাব্যয়সাধা বড় বড় যজ্ঞ সম্পাদন করিতে পারিতেন, এইরূপ কথা জনসাধারণকে বুঝাইবার জন্যই বৃহদারণাক উপনিষদে যাজ্বক্ক্যের এই অদ্ভুত পারিতোধিকপ্রাপ্তির কথা স্থান * পাইয়াছে। মহ কেবল মাত্র পারিতোধিক-লাভের জগ্যাই জনকের রাজসভায় সর্বদা উপস্থিত হইতেন না। কারণ, তাহার নিজের আশ্রমে" ছাত্র-অধ্যাপন তপোনুষ্ঠানাদি কার্যে তাহাকে সর্ববদা ব্যাপৃত থাকিতে হইত। সেই জন্য বখন

( ১১৭ )

তিনি কিঞি অনকাশ পাইতেন,,সেই সময়ে জনকের রাজমভায় উপস্থিত হইতেন। তিনি মহারাজ জনকের কোন উপকার ন| করিয়া তাহার নিকট হইতে এক কপর্দকও গ্রহণ করিতেন না। কারণ, বৃহদারণ্যক উপনিষদের চতুর্থ অধ্যায়ের প্রথম ব্রালগণের দ্বিতীয় মন্দ দেখিতে পাওয়া যায় যে, একদা জনক জিত্বা-নামক কোন একটি আচার্যের নিকটে শ্রুত উপদেশগুলি মহষি যাজ্জবন্ধ্যকে শুনাইতেছিলেন। শুনাইতে শুনাইতে প্রসঙ্গ-, ক্রমে প্রজ্ঞতা-নামক পদার্থের কথা উঠিল। প্রজ্ঞা পদার্থটি উত্তমরূপে বুঝাইয়া দিবার জন্য জন্ক, মহষি যাজ্ভবন্থ্যের নিকটে প্রার্থনা! করিলেন। মহষি উত্তমরূপে উহা জনককে বুঝাইয়া দিলে জনক অতিশয় উপকৃত হইয়। মহষিকে, হস্তিতুল্য সহ বৃহৎ বৃষ দক্ষিণ! দিতে ইচ্ছুক হইয়াছিলেন। কিন্তু যাজ্্বঙ্ক্য বলিলেন, না, আমি উহা গ্রহণ করিতে পারি না। কারণ, আমার পিতা আমাকে এই উপদেশ করিয়াছেন যে, শিষ্যুকে সম্পূর্ণরূপে 'জ্ঞান-দানে ক্কৃতার্থ না করিয়া শিল্তের নিকট হইতে কিঞ্চিন্মাত্র গ্রহণ করিও না। পিতার কথা আমি সম্পূর্ণ রূপে অনুমোদন করি পালন করি মহুধি প্রসঙ্গক্রমে মাত্র একটি বিষয় জনককে বুঝাইয় দিয়াছিলেন বলিয়া হস্তিতুল্য সহজ বৃষদক্ষিণ! প্রত্যাখ্যান করিয়াছিলেন জনক, অন্যান্য গুরুর নিকটে কিকি উপদেশ প্রাপ্ত

(১১৮)

হইয়াছিলেন, তাহাই ক্ষেত্রে তিনি যাজভ্বন্ধ্যকে শুনাইতে- ছিলেন এবং প্রসঙ্গক্রমে মকল উপদেশের মধ্যে যাহা ্তনি উত্তমরূপে বুঝিতে পারেন নাই, তাহাই মহধিকে জিজ্ঞাসা করিাতেছিলেন। শ্ুৃতুরাং প্রসঙ্গাগত অপর আচাধ্যের কথা বুঝাইয়া দিতেছিলেন এবং স্বয়ং প্রধানতঃ কোন তন্ত্র উপদেশ করিতেছিলেন না বলিয়া মহষি, জনকের এই পারিতোধিক গ্রহণ করেন নাই। জনক _আচাধা জিত্বার নিকটে যে উপদেশটি শ্রাবণ করিয়াছিলেন, তাহা মহষি যাডবস্কে এইবূপে শুনাইতেছিলেন “শিলিনের পুভ্র জিত্বা-নামক আচাধ্য আমাকে এই উপদেশ দিয়াছিলেন যে, ঝ্রগ্দেবতাই ব্রহ্ম। তাহার কথ মিথা। হইতে পারে না। কারণ, কোন মাতৃমান্‌ পিতৃমান আচাধ্যবান্‌ ব্যক্তি, যেমন সত্য,কথা কহিয়া থাকেন, আচাধ্য জিত্বাও আমাকে তজ্রপ সত্াকথাই বলিয়াছেন। আচাধ্য জিত্বা, মাতৃমান্‌ পিতৃমান্‌ আচাধ্য- বান্‌ মহাপুরুষ সুতরাং ঈদুশ মহাত্মা কখনই .মিথা কথ! কহিতে পারেন না। শৈশবে স্বয়ং মাত ধাহার সৃশিক্ষাদাত্রী ছিলেন, তদনন্তুর যাহার কর্তব্য-পরায়ণ পিতা, ধাহাকে শিক্ষা দিয়াছিলেন, তৎপরে উপ্পনয়ন- ংস্কার হইতে আর্ত করিয়া সমাবর্তুনকাল পধ্যন্ত যাহার সদাচার-সম্পন্ন আচার্য গুরু, ধাহাকে চারিবেদ, বেদাল, দর্শনাদি নানাশাস্জর অধ্যয়ন করাইয়াছিলেন, ঈদৃক্‌ ত্রিবিধ-

প্রণ্য-সম্পন্ন মহামুভষ মহাতার! যাহ! যাহ! বলেন, তাহা অতি সত্য। তাহা কখনই মিথ্যা হইতে পারে না। ধর্মারতা প্রশংসনীয়া স্থশিক্ষিতা মাতা শৈশবে যাহার ধন্ম- জীবন সংগঠনে অতিশয় যত্রুব্তী ছিলেন, বাহার স্থৃশিক্ষিত ধান্মিক পিতা মীহার চরিত্রনিম্নানে এবং লৌকিক- নাতিশিক্ষাদানে স্থনিপুণ ছিলেন, এবং ধীহার ব্রহ্মতর্বোপ- দেষ্টা আচার্য্য গুরু ব্রহ্মতন্ত সম্বন্ধে ধাহাকে দ্বাদশ বর্মকাল বহু সহুপদেশ প্রদান করিয়াছিলেন, তিনি নিশ্চয়ই অতি, প্রশংসনীয় মহাত্মা। ঈদৃশ মহাত্বার কথ! কখনই মিথ্যা হইতে পারে না। বৃহদারণাক উপনিষদের চতুর্ধু অধ্যায়ের প্রথম ব্রাহ্মণের কতিপয় মন্ত্রে পুক্রকন্যাকে শৈশবে শিক্ষা প্রদান করা বিষয়ে মাতারই সর্বনপ্রাধান্য দৃষ্ট হয়। সর্বব- প্রথমে মাতার কথা, তার পর ক্রমে পিতা আচার্ষ্যের কথা উল্লিখিত হইয়াছে এই অধ্যায়ের এই ব্রাহ্মণে এই দেখিতে পাওয়া যায় যে, যে কয়েকজন আচার্য মহাত্মা মহারাজ জনককে ব্রহ্গতত্ব সম্বন্ধে উপদেশ দিয়া- ছিলেন, তাহাদের প্রত্যেকেই মাতৃমান্‌ পিতৃমান্‌ আচাধ্যবান্‌ এই তিনটি বিশেষণে বিশেষিত হইয়াছেন স্মতরাঁং ব্রহ্মতত্ব-বিদ্যার্থাকে শৈশবে যে, মাতৃমান্‌ হইতে হয়, ইহ] স্প্$ই বুঝা যাইতেছে “ধর্ম নীতিশান্ত্রে সুশিক্ষিতা প্রশংসনীয়! মাতা ষাহার আছে,» এইরূপ 'প্রশস্ত অর্থে মাতৃশব্দের উত্তর “মতুপ্‌” প্রত্যয়যোগে

(১২ )

মাতৃমান্‌ এই পদ সিদ্ধ হইয়াছে প্রশস্তা অর্থাৎ শিক্ষা- দানে সমর্থা, ধর্দম নীতিশাস্ত্রে স্বশিক্ষিতা, ধর্ম্মনীতি- পরায়ণা মাতার নিকটে শৈশবে শিক্ষা না করিলে শিক্ষার নুলভিত্তি সুগঠিত হয় না। শৈশবে মাতার নিকটে নির্ভয়ে স্বচ্ছন্দ শিক্ষালাভ করিবার যেমন স্বিধা হয়, তন্রপ পিতা বা গুরু মহাশয়ের নিকটে শিক্ষালাভের সুবিধা হয়, না। কিন্তু সেই মাতা যদি স্বয়ং স্ৃশিক্ষিতা না হয়েন, তাহা হইলে তিনি পুক্রকন্তাদিগকে আর কি স্ৃশিক্ষা দিবেন? বৈদিকযুগে পুক্রকন্যাদ্দিগকে স্ুুশিক্ষা দিবার, জন্যই মাতা স্শিক্ষিতা হইতেন। ধর্্ানুষ্ঠান আত্মতত- চর্চার অবনতির সঙ্গে সঙ্গে এই প্রাচীন স্বরীতি বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে। বৈদিকযুগের পর, পৌরাণিক যুগেও পুজকন্যার্দিগকে শিক্ষা দিবার জন্যা মাতাকে উত্তমরূপে শিক্ষালাত করিতে হইত। তাহার দৃষ্টান্ত মদালসা।

মদালসা।

গন্ধর্বরাজবংশে মদালসা-নান্ী এক রাজকন্যা জন্ম গ্রহণ করিয়াছিলেন। তিনি অতিশয় রূপবতী, গুণবত্তী ভ্বানবতী ছিলেন। তাহার পিতার নাম বিশ্বাবন্থু খতধ্বজ-নামক এক মহাবল-প্রতাপশালী রাজার সহিত

( ১২১ )

মদালদার বিবাহ হইয়াছিল। রাজা খতধবজ এই রূপবতী, গুণবতী সুশিক্ষিত রমণীকে লাভ করিয়া আপনাকে মহাসৌভাগ্যবান্‌ বলিয়া মনে করিতেন। কালক্রমে মদালসার গর্ভে বিক্রান্ত, স্থবাহু, শক্রমর্দন অলর্ক নামে চারিটি পুক্র-সন্তান জন্মগ্রহণ করিয়াছিল। প্রথম, দ্বিতীয় তৃতীয় পুক্র শৈশবে মাতার নিকটে বিদ্যাশিক্ষ। রুরিয়া- ছিল। মাতা অতি বত্রের সহিত তাহাদিগকে প্রথমপান্য কতিপয় পুস্তক অধ্যয়ন করাইয়া পরে ব্যাকরণ সাহিতা অধায়ন করাইয়াছিলেন। ব্যাকরণ সাহিত্য পাঠ সমাপ্ত হইলে তিনি তাহাদিগকে মাত্বতত্ব-শান্ত্র শিখাইতে আরম্ত করিয়াছিলেন। একদা তীঙ্তার জোষ্ঠ পুজ্র বিক্রাস্ত, রোদন করিতে করিতে তীহার নিকটে আসিয়া বলিল, “মাতঃ কয়েকটি বালক আমার সহিত খেলিতে খেলিতে আমাকে প্রহার করিয়াছে এবং কটুবাক্য বলিয়াছে। অতএব আপনি বাৰাকে বলিয়া শীত্ব ইহার প্রতিকার করুন। আমি রাজপুত্র অতএব সামাগ্ত বালকদিগের এইরূপ দুর্ব্যবহার আমার পক্ষে অসহা।” মদ্দালসা জোষ্ঠ পুজের ঈদৃশ অভিযোগ শ্রবণ করিয়া তাহাকে এই বলিয়া. সান্তবনা'দিতে আরম্ত করিলেন ৫-- “হে বহস, তুমি বৃথা ক্রোধ ছুঃখ প্রকাশ করিও না। কারণ, তোমার আত্মা সদা শুদ্ধ, সদা আনন্দ জ্ঞান- স্বরূপ।. যিনি সদা 'সসন্দ ভ্ঞানন্বরূপ, তাহার

৯১

( ১২২ )

নিরানন্দ হওয়: উচিত নয় এবং অভ্ঞ্ানাচ্ছন্ন হওয়াও উচিত নয়। আনন্দই তোমার আত্মার স্বভাব। স্বভাবকে পরিত্যাগ করিয়া কোন বস্তুই পৃথকৃভাবে থাকে না! অগ্নির স্বভাব উঞ্ণতা। উষ্ণতাকে পরিত্যাগ করিয়া অগ্নি কৃত্রাপি স্বতন্ূভাবে থাকিতে পারে না। আনন্দন্বরূপ আত্মার নিরাননদ হওয়া উচিত নয়। আত্মার নিশ্মল প্রকাশ, যখন অবিদ্য! বা মায়া বা অজ্ঞান ব| ভ্রান্তিরূপ আবরণে আচ্ছন্ন হইয়া পড়ে, তখম মানুষ নিজেকে নিরানন্দ বলিয়ী মনে করে। বস্তুতঃ নিরানন্দ হওয়া মানুষের পক্ষে উচিত নয়। কারণ, মানুষের আত্বা সদ! আনন্স্বরূপ! যেমন মেঘরূল আবরণে আচ্ছন্ন হইলে এত বড় প্রকাশশীল ব্যাপী সূর্যাদে অপ্রকাশশীল হইয়া পড়েন বলিয়া বোধ হয়, তদ্রপ প্রকাশশীল, চেতন, সর্ধ্বব্যাগী, আনন্দশ্বরূপ আত্মাও, অজ্ঞান বঠ'মায়ারূপ . জাবরণে আচ্ছন্ন হইয়া পড়িলে, অপ্রকাশশীল জড়ম্বরূপ' ক্ষুত্র ব৷ পরিচ্ছিন্নস্বরূপ এবং হইয়া পড়েন বলিয়া মানুষ মনে করে। বস্ত্রতঃ আতু।, নিয়ানন্দন্বরূপ নহেন। তিনি নিতাজদ্বান রঃ না আননদনবপ অজ্ঞানরূপ আবরণ অপগত হইলে, আত্মা সবস্বরূপে যতক্ষণ অবশ্থিত না হয়েন, ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ, অজ্ঞান বশতঃ আত্মাতে নামের রূপের কল্পনা করিয়া থাকে। বস্ততঃ নিরাকার আত্মার নামও নাই, রূপ থাঝাকারও নাই। তুমি মনে

( ১১৩ )

করিতেছ যে, আমার বিক্রান্ত এই নাম, আমি রাজপুজ, আামার এই উপাধি, আমি গৌর এবং স্কুল, কিন্তু এই সমস্তই মনঃকল্পিত মাত্র। তোমার আত্মা গৌরও নহেন, স্থলও নহেন। উহার নামও নাই, উপাধিও নাই গৌর ত্ব-স্ুলত্বাদি শরীরধর্্মী সকল তীহাতে কল্লিত হয় মাত্র, তাহাতে বস্ততঃ উহারা নাই। সকল জড় ধর্ম, ভাহাতেই থাকে, এইরূপ জ্ঞানই ভ্রমতন্কান

সেই কটুভাষা বালকের আত্ম!ও ছুষ্ট নয়, দরিদ্র নয় এবং কুশও নয়। আত্মাতে দরিদ্রত্ব, দুষ্টত্ব কৃশহ্‌ কল্পিত মাত্র। রাজন, পু্রন্থ এবং কিক্রান্ত এই নামবত্তা কল্পিত মাত্র | অতএব রাজপুন্র বলিয়া তোমার অভিমান

রা ভ্রম মাত্র। তোমার মত শিক্ষিত বালকের পক্ষে এইরূপ বুথ! অভিমান, কর। শোভা পায় না। তোমার দৃশ্যমান এই শরীর, পৃথিবী জল তেজ বায় এবং আকাশ এই পঞ্চভূতের বিকার মাত্র তোমার আত্মা দেহস্বরূপ নয়। তোমার আত্ম। দেহ হইতে পৃথক পদার্থ বাল্য- যৌবন-বাদ্ধীক্যাদি বশতঃ. দেহের তিন তির্নরূপ পরিণাম ঘটিলে আত্মার কোনরূপ পরিগাম ঘটে না। আত্ম! অপরিণামী অবিনাশী | জড়দেহ, ভক্মীকৃত বা মৃত্তিকাময় হইয়! গেলেও চেতন সাত তশ্মীকৃত বা মৃত্তিকীময় হইয়! যায় না। আত্মা যেমন এক, তেমন একই থাকেন। আত্মা যি একরূপ না হয়েন, তাহা ছইলে 'বালাকাবে

(১২৪ )

দুষ্ট কোন একটি পদার্থকে যৌবনকালে স্মরণ করা যাইতে পারে না। কারণ, তোমার বাল্যকালের আত্মা, যৌবন- কালের শরীরের শ্যায় ভিন্নরূপ হইয়া যাওয়ায় একরূপ হওয়ার, একের দৃষ্ট বস্তুকে, অনয হইয়া তিনি কিরূপে স্মরণ করিবেন ? স্মরণ করিতেই পাবেন না। রামের দৃষ্ট বস্ক শ্যাম স্মরণ করিতে পারে না। “ঘ আত্ম। বালাকালে বস্তুটিকে দেখিয়াছিলেন, সে আত্মাটি যৌবনকালে নাই নুতন শরীরাবয়বের ন্যায় নৃতন একটি আত! জন্মিয়াছে। স্বৃতরাং যে নাই, সে পূর্ববদৃষ্ট বস্তুকে দেখিবে কিবূপে ? অথচ একই রাম বালাকালের দুষ্ট বস্ককে যৌবনকালে স্মরণ র্লরিয়া থাকে একই শ্যাম শৈশবে দৃষ্ট একটি বস্তুকে যৌবনে স্মরণ করিয়া থাকে স্ততরাং ইহ। দ্বার৷ এই বুঝিতে হইবে যে, শরীরের অবয়বের বৃদ্ধি অপচয়ের ন্যায় আত্মার বৃদ্ধি' বা অপচয় হয় না। আত্ম। একই পদার্থ সেইজন্যই উহার পূর্ব বস্তুর স্মরণ সম্তবিতে পারে | নতুবা অসম্ভব হইত। হে বৎস, এক্ষণে বুঝিলে যে, আত্ম অবিকারী পদার্থ। অতএব সেই কটুভাষী দুষ্ট বালকের দুষ্টভাষণে তোমার আত্মার কোন ক্ষতিই হয় নাই এবং উহারা" তোমাকে সামান্তরূপে প্রহার করিয়াছে মাত্র, ইহাতে তোমার আত্মার অণুমাত্র ক্ষতি হয় নাই ।* এমন কি, যদি তাহারা তোমাকে অতিশয় প্রহার করিয়৷ তোমার শরীরকে ক্ষতবিক্ষত করিয়! দিত,

(১২৫ ),

তাহা হইলেও তোমার আত্মার বিন্দুমাত্র ক্ষতি হইত না। কারণ, তোমার শরার ক্ষতবিক্ষত 'হইলে আত্ম! ক্ষতবিক্ষত হইতে পারে না। এমন কি, যুদ্ধে তোমার শরীর আস্তরশত্্ দ্বারা ছিন্নভিন্ন *ও দগ্ধ হইয়! বিনষ্ট হইয়া গেলেও আত্মা ছিন্নভিন্ন দগ্ধ হইয়া বিনষ্ট হয়েন না। খাদ্যপেয় বস্তুর অভাবে শরীরের হাস হইলে আত্মার হ্রাস হয় না। সুতরাং দুষ্ট বালকের আঘাতে তোমার শরীর আহত হইয়াছে মাত্র, আত্ম! আহমুর হয় নাই বা কোনরূপ বিকৃত হয় নাই। স্তএব (তোমার দুঃখ প্রকাশ করা বা অভিমান করা বৃথা শ' মানন্দস্বরূপ পরমাত্মা পরমেশ্বরের তত্ব শিক্ষা কার। শারারিক মানসিক শোকদুঃখরাশি বিনষ্ট হইয়া যাইবে ।”

মদালসার এইরূপ পুর্নেবাক্ত উপদেশ শ্রবণ করিয়া তদীয় জোষ্ঠ পুক্র বিক্রান্তের তত্বজ্ঞান জন্মিয়াছিল। তিনি বালকোচিত দুঃখ এবং রাজপুজ্োচিত অভিমান পরিত্যাগ করিয়া বাল্যকালেই বৈরাগযপথ অবলম্বন করিয়াছিলেন অগ্রাজের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করিয় স্তবান্থ শক্রমর্দনও, বাল্াযকালেই বৈরাগ্যব্রত অবলম্বন করিয়াছিলেন রাজ! খতধ্বজ, পত্বী মদা্সসার শিক্ষাদানগুণে তিন পুক্রই সন্যাসী হইল, ইহা দেখিয়া! ভাবিতে লাগিলেন যে, তাহার তিনটি 'পুই লল্ন্যাসী হইল, অতএব তীহার মৃত্যুর পর তাঙ্চার এই রাজ্য কে রক্ষা! করিবে ? রাজার অভাবে রাজ্য

( ১২৬ )

অরাজক বিদ্রোহপূর্ণ হইয়! পড়িলে প্রজাবর্গের কষ্ট কে নিবারণ করিবে ? রাক্জ্যমধ্যে কে শান্তি স্থাপিত করিবে ? এক্ষণে উপায় কি? এক্ষণে একমাত্র কনিষ্ঠ পুভ্র অলর্কই একমাত্র মাশা-ভরসার স্থল। অলর্ককে "সংসারে আবদ্ধ করিয়া রাখিতে পারিলেই রাজের ভাবী মঙ্গল সাধিত হইতে পারে এইরূপ চিন্তা করিতে করিতে রাজা খাতধবন্ত, পত্ভীর নিকটে উপস্থিত হইলেন এবং করুণ- স্বরে এই ব্লিয়৷ প্রার্থনা করিতে লাগিলেন, “হে প্রিয়তমে নদালসে, তোমার শিক্ষাদানপ্রভাবে তিন পুজ্রেরই সংসারে বেরাগ্য জন্মিল। এক্ষণে চতুর্থ পুক্র অলর্কের€ যদি এরূপণ্দশা ঘটে, তাহা হইলে আমার অবদানে কে রাজা পালন করিবে ? রাজার অভা'বে রাজা বিদ্রোহপুর্ণ হইয়। রসাতলে ধাইবে প্রজাগণের ধন-প্রাণ-মান রক্ষা করা কঠিন হইয়া উঠিবে। প্রজাদিগের 'তয়ঙ্কর কষ্ট উপস্থিত হইবে। অতএব তুমি, চতুর্থ পুজটিকে আর এরূপ শিক্ষা দিও না। তাহাঁকে আর সন্যাসী করিও না আমি বৃদ্ধাবস্থায় তাহার হস্তে রাজ্যভার হ্যন্ত করিয়া নিশ্চিন্থমনে কেবল পরমেশ্বরের আরাধনায় রত থাকিতে ইচ্ছা করি। ইছাতে তুমি ব্যাঘাত উৎপাদন করিও,ন1।: আত্মতক শিক্ষা! দেওয়া অতি উত্তম কার্য্য। সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই, কিন্তু সেই শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে অলর্ককে রাজনীতিশাস্্ব শিক্ষ] দিও। তাহা হইলেই এই পুক্রুটি

( ১২৭ )

রাজগ্ুণে বিভূষিত হইয়া প্রজ্জাপালনরূপ রাজধন্্ম রক্ষা করিতে সমর্থ হইবে 1৮ মদালসা রাজার এই কথা শুনিয়া বলিলেন, “মহারাজ, আপনি যাহ! বলিলেন, তাহাই করিব। যাহাতে আর আপনাকে পরে আক্ষেপ করিতে না হয়, তদ্বিষয়ে মনোযোগিনী "হইলাম জানিবেন। আপনার আজ্ঞানুমারে আমি অলর্ককে রাজনীতি শিক্ষাই দিব, কিন্তু পারমার্থিক শিক্ষাপ্রদান একেবারে বাদ দিব না। পারমার্থিকতত্ব শিক্ষা দিলে পরমেশ্বরে ভক্তি বিশ্বাস জন্মিবে। পরমেশ্বরে ভক্তি বিশ্বীসরূপ ভিত্তির উপরে রাজনীতিশিক্ষা বা রাজনীতিচর্চা স্ুপ্রতিষ্টিত হইলে, উক্ত শিক্ষার পরিণাম শোচুনীয় হয় না। পরমেশ্বর সর্ববকার্ষ্েই মনুষ্যের একমাত্র মাশ্রয়। তিনিই একমাত্র শান্তিদাতা যদি কোন কষননী, পুলের হিতকামনা করেন, তাহা হইলে তিনি যেন সর্বাগ্রে পুক্রকে পরমেশ্বরে ভক্তি- মান হইতে শিক্ষা দেন এবং পরমেশ্বরের মহিমা বুঝাইতে চেষ্টা করেন। পরমেশ্বরের প্রতি দৃঢ়া ভক্তি জন্মিলে রাজা প্রজারঞ্নে সমর্থ হয়েন। মহারাজ, আপনার উপদেশ আমার শিরোধার্ধ্য আমি অদ্য হইতে অলর্ককে রাজনীতিশান্ত্র শিক্ষা দিব।” অনন্তর, অলর্ক যৌবন- অবস্থা প্রাপ্ত হইলে মদালসা তীহাকে নিন্মলিখিত রাজ- নীতি উপদেশ সকল প্রদান করিয়াছিলেন হ-_

“হে বৎস অলর্ক, তুমি ঈদৃক্‌ উত্তমরূপে রাজ্যশানন

(১২৮ )

করিবে, যাহাতে রাজ্যের কোন ব্যক্তিই তোমার নিন্দ। না করে এবং তোমার বিপক্ষ না হয়। স্ুবিবেচনা 'এবং স্পরামর্শ পূর্বক রাজ্যশাসন করিলে রাজা সর্ববজনপ্রিয় হয়েন। প্রজার মনে কষ্ট দেওয়াই রাঙ্জার পাপ। যিনি প্রজার চিত্তরঞ্জন করিতে পারেন, তিনিই প্রকৃত রাজা তুমি রাজা হইয়া কখনও প্রজাস্বত্ব লোপ করিও না। যে রাজ্য প্রজা অসন্থুষ্ট হইয়া রাজার নিন্দা করে, তাহাকে পাপরাজ্য কহে!

প্রজা, রাজা বা রাজপুরুষ কর্তৃক ক্রমাগত উত্পীড়িত ইইলেই বিদ্রোহী হইয়া উঠে। বিদ্রোহী হওয়া প্রজার পক্ষে মহাঁপাপ। কারণ, মন্ু বলিয়াছেন, “রাজ? নররূপিণী মাননীয় মহতী দেবতা ঈশ্বরের নিন্দ। করিলে যেমন মহাপাপ হয়, তজ্রপ রাজার নিন্ম! করিলেও মহাপাপ হয়। রাজা বালক হইলেও, এবং যে কোন জাতীয় যে কোন ধন্মাবলন্দী হইলেও, তিনি প্রজাসাধারণের মান্য প্রজ' যাহাতে নিন্দা করিতে ন! পারে, তদ্িষয়ে দৃষ্টি রাখা রাজার একান্ত কর্তব্য। প্রজার ধর্মে রাজার হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। বরং প্রজাগণ যাহাতে নির্বিবদ্ধে স্ব স্ব ধন্ম প্রতিপালন করিতে পারে, তদ্ধিষয্জে রাজার আনুকূল্য করা উচিত। তোমার প্রজাগণ তোমার নিকটে কোন প্রকার অভাবের বা কফির অভিযোগ আনয়ন করিবার পূর্বেবই অভাব কষ্টের ষথাশক্তি প্রতিকার করিও প্রজার;

( ১২৯ )

স্থখন্বচ্ছন্দতাই রাজোর স্বদৃ় মূলভিত্তি। ইহারই উপরে রাজা স্বপ্রতিষ্ঠিত থাকে প্রজার হিতচিন্তায় সদা রত থাকিও। তাহা হইলেই প্রজাগণ তোমার প্রতি খুব সন্তষ্ট থাকিবে? পরস্ীচিন্তাকে কদাপি মনের মধ্যে স্থান দিও না। মিত্র সভাদদগণের চটুবাক্যে কদাপি বিমোহিত হইও না। সন্ধি, বিগ্রহ, যান, আমন, দ্বৈধ এবং আশ্রয় এই ছয়টি বিষয় উত্তমকূপে শিক্ষা করিয়া যখন যেখানে যেরূপ বিধেয়, তখন সেখানে সেইরূপ কাধ্য করিবে। প্রভুশক্তি, উতসাহশক্তি নত্রক্তিসম্পন্ন হইও। প্রভৃশক্তি ব্যাহত গাকিলে রাজপুরুষদিগের দোষে রাঁজকার্ে বিশৃঙ্খল! উপস্থিত হয় না, রাজ্যে শান্তির ব্যাঘাত ঘটে না, এবং রাজপুরুষদিগের যথেচ্ছা- চারিতা লোপ পায়। রাজার মন্ত্রিগণ সুদক্ষ হইলে রাজ। তাহাদের হস্তে রাজ্যভার অর্পণ করিয়৷ কিয়খকালের জন্য নিশ্চিন্তমনে বিদেশ ভ্রমণ মুগয়ায় গমন করিতে পারেন, ব। পররাজ্য আক্রমণে ব্যাপৃত থাকিতে পারেন। রাজার উতসাহশক্তি অব্যাহত থাকিলে রাজ্যে নানা হিতকর কার্ধ্য অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে যুদ্ধে বিজয়লাভাদি সুসিদ্ধ হয়।

হত্তী, অশ্ব, রথ পদাতি এই চারিটি সেনাঙ্গকে নদ! পরিপুষ্ট করিয়া রাখিও। যখন কোন দেশ জয় করিবার 'জন্ যুদ্ধধাত্রা করিবে, তখন মৌল, ভূত্য, সুহাত, শ্রেণী, দ্বিষৎ আটবিক এই ষট*্প্রকার বল সংগ্রহ

১৩০ )

করিও। বংশপরম্পরায় রাজসেবায় নিযুক্ত রাজার চিরভক্ত সৈন্যের নাম মৌলবল। রাজার বৃত্তিভোগী সেন্যের নাম ভৃতাবল। যুদ্ধকালে গ্রাম হইতে সমাহাত নিদ্দিষ্টকাল যাব রাজার প্রয়োজনসিদ্ধির নিমিত্ত স্থায়ী শিল্িপ্রায় সৈন্যের নাম শ্রেণীবল। যুদ্ধকালে রাজার সাহাব্যার্থ সমাগত মিত্ররাজ-সৈন্যের নাম ম্ৃহৃদ্বল। উৎকোচ ভেদনীতি প্রভৃতি উপায় দ্বারা শক্রপক্ষ হইতে স্বপক্ষে আনীত সৈন্যের নাম 'দ্বিষদ্বল। গিরি- কান্তার-বন-সঙ্কটাদি-্থান-পরিজ্ঞানে কুশল, সর্ববত্র গমনা- গমনক্ষম, আরণ্যচর সৈন্যের নাম আটবিকবল। ভৃত্যদিগকে স্নেহাস্পদ বন্ধুগ্ুণের ন্যায় আদর করিও মিত্রদিগকে আত্বীয়-বান্ধবগণের ন্যায় সমাদর করিও মন্্রিগণ এবং অন্তান্য উচ্চপদ্স্থিত রাজকীয় কন্মচারি- বর্গের উপরে রাজকার্যযভার সমর্পণ করিয়া কখনও নিশ্চিন্তমনে ভোগবিলাসে রত হইও না। গোপনে সর্ববদ| তাহাদের কার্যাবলী নিরীক্ষণ করিও নিজের নুথস্বচ্ছন্দতা-বর্ধনের জন্ঠ প্রজার রুধিরসম অর্থ শোষণ করিও না। শরণাগত ব্যক্তিকে যে কোন প্রকারে রক্ষা করিও। মহানিষ্টকারী ছুম্নতি শত্র- গণকে সমূলে উন্মীলিত করিবার জন্য ভেদ, দণ্ড, সাম দান এই চারি প্রকার উপায্ধের মধ্যে ষে কোন একটি- দ্বারা কিম্বা সমগ্র'চারিটি উপায়দ্বার! স্বীয়কার্ধয সাধন

( ১৩১ )

করিবে। কিন্তু সহসা যুদ্ধ বাধাইও না, ধাহার যেন্ূুপ মানমর্ধ্যাদা, তাহাকে সেইরূপ মানমর্যাদ! দিও মাঁনী- ব্যক্তির মানহানি বা মর্যযাদাভঙ্গ করিও না। ভঙ্গ করিলে কালে মহাবিপন্ু হইবে। গুণীর গুণের সমাদর করিও মধ্যে মধ্যে যজজ্র-অনুষ্ঠটান করিয়া বেদবিগু বিদ্বান ব্রাঙ্মণগণকে অভ্যর্থনা করিও এবং তাহাদিগকে উপযুক্ত দক্ষিণাদানে তৃপ্ত করিও কারণ, তীহারা তপ্ত হইয়া নিশ্চিন্তমনে বৈদিক শাস্ত্রচচ্চায় এবং বৈদিক- র্্ানুষ্ঠানে নিযুক্ত থাকিলে বৈদিকধর্্ম রক্ষিত হইবে। উহ্থা লুপ্ত হইবে না। দুাতিক্রীড়া, পানদোষ, দিঝানিড্রা রি ইন্দিয়গণের লি জন্য অত্যধিক ভোগাস্ি, পরনিন্দা, কুসংসর্গ ব্যভিচার প্রভৃতি নিন্দনীয় কার্ধ্য পরিত্যাগ করিও লোভ মোহকে বিশেষরপে ত্যাগ করিও | রাজাবিষয়ক অতি গুপ্ত মন্ত্রণা যেন ষট্কর্ণে প্রবেশ না করে। অর্থাৎ তুমি তোমার প্রধান মন্ত্রী এই দুইজনের চারি কর্ণেই মাত্র যেন উহা প্রবিষ$ঁ হইয়া স্থির থাকে অতি বিশ্বস্ত প্রধান গুপ্তচরদ্বারা নিজের' প্রজাবর্গের পররাজ্োর অবস্থা অবগত হইবে কোন মন্ত্রী বা প্রধান মন্ত্রী বা সৈগ্যাধ্যক্ষ বা কতিপয় প্রজা, তোমার বিরুদ্ধে ভয়ানক ষড়যন্ত্র বা মহাপরাধজনক কোন দুষণীয কার্য্য করিলে তুমি উহা! সবিশেষ অবগত হইয়া তাহাদিগকে উপযুক্ত ্ণ্ড দিবে।

( ১৩২ )

প্রজারা যদি তোমার প্রতি অনুরক্ত থাকে, তাহা হইলে তাঁহারা কখনই রাজদ্রোহী বা বিদ্রোহী হইবে না, ইহা! নিশ্চয়ই জানিও। তাহারা যাহাতে সদা অনুরক্ত থাকে, তদ্বিষয়ে সা সবিশেষ মানোযোগী হইও। সামন্ত- রাজ মিত্ররাজগণের স্বত্ব সন্ধি অক্ষু্ রাখিয়া! তাহাদিগের কার্য্যাবলীর প্রতি দৃষ্টি রাখিবার জন্য তীহা- দিগের রাজধানীতে রাজনীতিস্পপ্ডিত নিজের একটি মন্ত্রীকে নিযুক্ত করিয়া রাখিও। যাহাদিগকে অন্তরের সহিত বিশ্বাস করা উচিত নয় বলিয়! মনে করিবে, তাহার! যেন তোমার এই আন্তরিক অবিশ্বীসের কোন প্রকার বাহ চিহ্ন দেখিয়া কোনরূপে ,তোমার এই অধিশ্বাস-ভাব বুঝিতে না পারে। মিষ্টভাষী হইও। কোকিলের মধুর বাণী অনুকরণ করিও মধুকরের নিকট হইতে পরিশ্রম পূর্বক সারবস্ত্র-সংগ্রহকার্যা শিক্ষা করিও। মগের নিকট হইতে সাবধানতা এবং ক্ষিপ্রকারিতা শিক্ষা করিও কাকের নিকট হইতে গুপ্তমন্ত্রণারক্ষা শিক্ষা করিও। পিপীলিকার নিকট হইতে সঞ্চয়কার্য্য শিক্ষা! করিও | সূর্ধ্যদেব, বর্ষাকালে শতগুণ বারিধারা-বর্ষণের জন্যই যেমন গ্রীক্ষকালে পুক্রিণী, নদী সমুদ্র হইতে জলশোষণ করেন, তত্রপ তুমিও শতগুণ উপকার- বর্ষণের জন্তই . প্রজাগণের নিকট হইতে করশুক্ষ প্রভৃতি অর্থ গ্রহণ করিও। কোন ব্যক্তি প্রিয়ই

( ১৩৩ )

হউক বা অপ্রিয়ই হউক, সে শান্ত্রমতে দগুনীয় হইলেই তাহাকে সমুচিত দণ্ড দিও। পবন যেমন অদুশ্যভাবে সর্বত্র গমন করে, তত্রপ, তুমিও, চ্মবেশ অবলম্বন করিয়া অপরিজ্ঞাতরূপে প্রজাগণের আভ্যান্তরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করিও। শারীরিক ক্লেশকে ক্লেশ বলিয়া গণ্া করিও না) রাজ! ক্লেশ- সহনশক্তি অবলম্বন না করিলে যুদ্ধাদি কার্ষ্য ব্যাপৃত হইতে পারে না। “যুদ্ধে ব্যাপূত হইয়া অসাধারণ শক্তি. প্রদর্শন ন| করিলে বীরপদবাচ্য হইতে পারে না, রাজার বীরপদবাচ্য ওয়া ডচিত। বাল্যকাল হইতে রাজা দ্ধ-কৌশল শিক্ষা কিয়া স্থুনিপুণ যোদ্ধ। হইলে সেম্যাধাক্ষের দোষে যুদ্ধে পরাজয় ঘটে না। হে বৎস, তুমি যুদ্ধ-বিদ্যায় বিশেষ পারদর্শী হইতে চেষ্টা করিও। যুদ্ধে স্থুনিপুণ হইও। প্রজা-প্রতিপালনে প্রজার অভাব পুরণ প্রজান্খসম্বদ্ধনের নিমিত্ত ক্লেশসহন করাই রাজার ধর্দম। রাজা বদি এই ধর্ম প্রতিপালন ন! ক্রিয়া কেবল শরীর-শোভা এবং বসন-ভূঁষণের উজ্জ্বলতা! দেখাইবার জন্যই সিংহাসনে আরূঢ় হয়েন, তাহা হইলে তাদৃশ রাজা কখনই 'প্র্ঞারগ্ক বা প্রজাপ্রিয় হইতে পারেন না। তীহার রাজ্যে রুত্রদণ্ডনীতি প্রবর্তিত হইলেও পূর্ণ্নপে শাস্তি স্থাপিত হয় লা। রুদ্রদণ্ডের

ভয়ে তশুকালে প্রজাগণের মধ কোন কোন, রা ১২

( ১2৪

বাহিরে বিদ্রোহভাব প্রকাশিত না হইলেও অন্তরে বিদ্রোহবহ্ছি প্রধূমিত হইয়া বহুকাল অবস্থিতি করে। স্বিধা পাইলেই প্রজ্বলিত হইয়া উঠে। তখন সেই দাবানলভুল্য বিদ্রোহাগ্রি নির্ববাপিত “করিতে রাজাকে অনেক কষ্ট ভোগ করিতে হয়। সেইজন্য বলিতেছি, হে বৃতস, তুমি সার্থক রাজপদবাচা হইও।

প্রজার চিত্তরঞ্জক”ই 'রাজা, এই পদের প্রকৃত অর্থ স্তরাং প্রজার চিন্তরঞ্জক হইয়াই তুমি তোমার “রাজ।” এই উপাধিটিকে সার্থক করিও যখন দেখিবে যে, যুদ্ধনা করিলে আর কোন উপায়ই নাই, তখনই যুদ্ধ করিবে। নতুবা সর্বদা যুদ্ধের. পক্ষপাতী হইও না, কারণ, যুদ্ধে প্রভূত ব্যয় হয় এবং বহু নরশোণিত ক্ষয় হয়। যুদ্ধে প্রড়ৃত বায় করিয়া রাজকোষ শুন্য করা এবং পৃথিবীতে নররক্তের নদী প্রবাহিত করিয়া পাপের মার বৃদ্ধি করা কোন প্রকারেই উচিত নয়।” শান্তিপক্ষপাতিনী মদালসা, ইত্যাদ্দিরূপে কণিষ্ঠপুক্র অলর্ককে প্রতিদিন নানাবিধ রাজনীতি উপদেশপ্রদান নানা বিষয়ে স্শিক্ষিত করিয়া কয়েক বর্ষের মধ্যে তাহাকে রাজ হইবার উপযুক্ত বাক্তি করিয়। দিলেন। তখন রাজ! খতধবজ বুঝিলেন যে, তাহার পত্রী মদালসা কেবলমাত্র মুক্তিশান্ত্েই সুপগ্ডিতা নহেন, কিন্ত্ত তিনি রাঙ্গনীতিশান্সেও অদাধারণ বিছুষী। তীহাত্রই : শিক্ষা প্রদানের গুণে কনিষ্ঠ পুত্র

(১৩৫)

হাল ধাজপদে অভিষিক্ত হইবার উপযুক্ত হইয়াছে। এইরূপে রাজ! খতধবজ অলর্ককে 'রাজপদে অভিষিক্ত করিবার উপযুক্ত স্থির করির! শুভদিনে গ্টতক্ষাণে তাহাকে যথাবিধির্সংহাসনে বসাইলেন এবং তাহার হস্তে রাজাভার অর্পন করিলেন। আনন্তর তিনি কোলাহল- পুরণ গৃহস্থাশ্রম পরিত্যাগ করিয়া বুদ্ধবয়সে একা গ্রচিত্তে পরমেশ্বরের উপাসন। করিবার জন্য রাজ্জী মদালসার সহিত শান্তিপূর্ণ তপোবনে বাস করিতে উদ্যোগী হইলেন মদালস! তপোবনে গমন করিবার পুর্বেব অলর্ককে একটি প্রশস্ত অঙ্গুরীয়ক দান করিয়া বলিলেন, “বু, যখন তোমার করেশ অহ হইয়া উঠিবে, যখন তুমি শক্রু কর্তক"প্রগীড়িত ইয়া ঘোর মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করিবে এবং যখন কোন কারণবশতঃ তোমার ধৈর্য্য, স্থ্র্যা গাস্তীর্ধ্য বিনষ্ট হইবে, তখন এই প্রশস্ত অঙ্গুরীয়কে যাহা লিখিত আছে, তাহ। পাঠ করিবে।” কনিষ্ঠ পুত্র মলর্ককে এই কথা বলিয়া শান্তিপক্ষপাতিনী মহাপণ্ডিতা মদাঁলসা রাজ! খতধ্বজের সহিত তপোবনে গমন করিলেন। তার পর রাজা অলর্ক, মাতৃদত্ত রাজনীতি-উপদেশ অনুসারে দোর্দ গু প্রতাপের সহিত রাজত্ব করিতে লাগিলেন তাহার প্রশংলা সর্বত্র ব্যাপ্ত হইয়া পড়িল। প্রজাগণ সর্বদা সর্ববজ্র তাহার সচ্চরিত্রের রাজ্যশাদন-শক্তির মহিম!, কীর্তন করিতে লাগিল। লকলেই তীহার রাজ্যকে, রামরাঞ্য বলিয়া

( ১৩১ ) কাত্তন করিতে লাগিল ছুঃখ কাহাকে বলে, রাজ্যের প্রজারা তাহ! জানিত না। রাজা অলর্কের এইরূপ প্রশংসাবাদে তাহার জোষ্ঠ ভ্রাতা স্বাহ বৈরাগ্য-ধন্মন বিস্বৃত হইয়া তাহার প্রতি অতিশয় ঈর্ষান্বিত হইয়া উঠিলেন এবং তীহাকে বিপন্ন "করিয়া তাহার রাজা আত্মসাত করিবার জন্ত তাহার পরম শক্র বারাণসী-রাজের সহিত ষড়যন্ত্র করিতে লাগিলেন। বারাণপী-রাভ, রাজনীতি-নিয়মানুসারে রাজা অলর্কের নিকটে দূত প্রেরণ “করিয়া তাহাকে জানাইলেন যে, রাজকুমার স্থবাু আপনার জ্যেষ্ঠ ভাতা তিনি এক্ষণে রাজ্যাভিলাধী। প্রাচান ভারতীয় 'রাজনীতিশান্ত্র অনুনারে তিনিই * রাজোর অধিকারী। অতএব আপনি তাহার হান্তে আপনার রাজা- ভার সমর্পণ করিবেন। নতুবা আপনার বিরুদ্ধে তিনি যুদ্ব-ঘোষণ! করিবেন। আমি তাহাকে সাহায্য করিব। রাজা অলর্ক, দূতমুখে বারাণসীরাজের কথা শুনিয়া দূতকে বলিলেন,--আমার পিতা মাতা আমাকে উপযুক্ত বিবেচনা করিয়া আমাকে রাজ্য প্রদান করিয়াছেন। অতএব আমি কেবলমাত্র বারাণসীরাজের কথায় ভীত হইয়া আমার জ্যেষ্ঠের হস্তে রাজা; সমর্পণ করিব না। তিনি যেমন যুদ্ধের কথা বলিয়াছেন, আমিও তত্রপ বলিতেছি যে, আমিও বিনা যুদ্ধে আমার রাজ্য কাহাকেও প্রদান করিব না | আমি নিজ দুত পাঠাইয়া কথা

( ১৩৭ )

বারাণসীরাজকে ' জানাইতে অপমান বোধ করি। অতএব আমি তীাহারই দূত দ্বারা ত্রাহাকে এই কথা জানাইলাম বারাণসীরাজের দূত এই কথা গুনিয়। বারাণসীতে ফিরিয়া আমিল এবং খাথালময়ে রাজসভায় উপস্থিত হইয়া রাজা অলর্কের কথা বারাণসীরাজকে জানাইল। বারাণসী- রাজ সেই কথা শুনিয়।৷ অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইলেন। যুদ্ধ আনিবাধ্য হইয়া উঠিল। তুমুল যুদ্ধ আরন্ধ হইল। বারাণসীরাজের অধিক-সংখ্যক ভীষণ সৈন্য যুদ্ধোপ- করণ থাকায় রাজা অলর্ক পেই যুদ্ধে পরাজিত হইয়া সিংহাসনচাত হইলেন। এই বিপদের সময় তীহার মাতৃদত্ত সেই অঙ্গুরীয়কের কুথা মনে পড়িল। 'তিনি সেই অঙ্গুরায়কে লিখিত এই কথাগুলি পাঠ করিতে লাগিলেন

“মুঢ় সংসারাসক্ত মনুষ্যগণের সংসর্গ সর্ববতোভাবে পরিতাজ্য। সাধুসঙ্গ করাই বিধেয়। সাংসারিক কামন| দূর করাই শ্রেয়ঃ। মুক্তিপথে অগ্রমর হওয়াই উচিত। মুক্তিই বিষাদ-রোগের' একমাত্র মহৌষধ ।” রাজ৷ অলর্ক, মাতৃদত্ত অঙ্গুরীয়কে লিখিত এই কথাগুলি পাঠ করিয়া রাজ্যচুতি'জনিত শোক সম্বরণ করিতে বত্বুবান্‌ হইলেন। তিনি বুদ্ধিমান ছিলেন। তিনি তাহার জোষ্ঠ ভ্রাতা স্থৃবান্থর ম্ঘায় বকধার্ট্মিক ছিলেন না। বাহুর বৈরাগ্য জলবুদ্ধ দের তুল্য ক্ষণিক হইয়াছিল। তীহার যদি

(১৩৮ )

দৃ-বৈরাগ্যই জন্মিত, তাহা হইলে তিনি ভ্রাতার নিকট হইতে মাৃপিতৃদত্ত রাষ্জা অবৈধ উপায়ে কাড়িয়া লইতেন ন| এবং পুনরায় অনিত্য সাংসারিক স্ুখভোগের নিমিত্ত লালায়িত হইতেন না। প্রকৃত বৈরাগ্য *জন্মিলে জ্ঞানী- ব্যক্তি পুনরায় ভোগবিলাসপঙ্কে মগ্ন হইতে ইচ্ছা করেন না। জ্ভ্কান না জন্মিলে বৈরাগ্য জন্মে না। অলর্ক বিপদে পড়িয়া কন্টভোগ করিয়াছিলেন তাই তাহার জান জন্মিয়াছিল এবং সেই কারণে তাহার রাজ্যচুতির পর ছুঃখশোকপুর্ণ অনিত্য রাজ্যসম্পদের প্রতি তাহার প্রকৃত (বরাগ্য জন্মিয়াছিল। বিপদে পড়িয়া কষ্ট ভোগ করিলে প্রেরূপ শিক্ষালাভ করা যায়, দেখিয়া শুনিয়া পড়িয়া ঠিক সেরূপ শিক্ষালাভ করিতে পারা যায় না! মাতার স্রপদেশ শ্রবণ করিয়া স্বাহুর ক্ষণিক বেরাগা জন্মিয়াছিল, কিন্তু তত্তজ্ঞান উৎপন্ন হয় নাই স্ত্রতরাং প্রকৃত স্থায়ী বৈরাগ্যও উৎপন্ন হয় নাই। তাহার তত্বঙ্ঞান প্রকৃত বৈরাগ্য জন্মিলে তিনি প্রথমে উপেক্ষিত রাজোর পুনঃপ্রাপ্তিলালসায় বারাণসীরাজের দ্বারে শরণাপন্ন হইতেন না। অলর্কের অঙ্গুরীরয়কে ধাহা লিখিত ছিল, তাহার সারমন্্ন এই থে, রাজ্য আজ আছে কাল নাই, কাল থাকে তো পরশ্ব থাকে না। ঈদৃশ অস্থায়ী রাজ্যের ভোগ-প্রত্যাশায় মত্ত হওয়া উদ্ভানী বীতরাগ ব্যক্তির পক্ষে বিড়ম্বনামাত্র |

( ১৩৯)

সুলভা।

একদ! মহারাজ জনকের রাজর্সভায় স্থলভানান্না এক ্রক্মচারিণী রাজকন্তা উপস্থিত হইয়াছিলেন। মহারাজ জনক তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি কে?” স্থলভা বলিলেন,--“আমি এক রাজকন্যা একটি উচ্চ রাজকুলে জন্মগ্রহণ করিয়াছি। আমার নাম স্বলভা। আমি ব্রহ্মচর্য/-ব্রত-সমাপ্তির পর বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হইয়া" দ্বিতীয় গৃহ্স্থাশ্রমধর্ম্ম প্রাতিপালন করিতে ইচ্ছুক হইয়াছিলাম। কিন্তু আমার উপযুক্ত বিদ্বান, বুদ্ধিমান্‌ এবং অন্যান্য নানাসদৃগুণে বিভুধিত পাত্র পাও গেল না বলিয়া আমি বিবাহ করি নাই। আজীবন বরক্ষচর্ধাব্রত অবলম্বন করিতে বাধ্য হইয়াছি। নির্ববাণ-মুঞ্তিলাভের জন্য একাকিনী মুনিধম্মা প্রতিপালন করিতেছি ।” এই চিরব্রন্গচারিণী' স্থুলভা, তত্বজ্ঞান-শান্ত্রে অসাধারণ বিদুষী ছিলেন। মহারাজ জনক স্বয়ং একজন জীবন্মুক্ত মহা- পুরুষ ছিলেন। মহামুনি ব্যাসের পুজ আজন্ম তত্বজ্ঞানা মহাত্ব। শুকদেব পর্যন্ত জনকের নিকটে শিক্ষালাভ করিয়া নিজেকে কৃতার্থ ধন্য মনে. করিয়াছিলেন। ইহার রাজমভ। সর্বদা যাজ্ঞবন্ক্য প্রভৃতি মহামনাঃ আধ্্য-মহযিগণ কর্তৃক অলঙ্কত থাকিত। সেখানে সাধারণ পল্পবগ্রাহী “ভবঘুরে” লোৰ পাণ্ডিত্য দেখাইতে স্হলী হইত না। কোন শাস্ত্রে অসাধারণ পাণগ্তিত্য না থাকিলে সে সভায়,

( ৯৪ )

কেহ প্রবেশাধিকার পাইত না। ঈদৃশী সভায় ঈদৃশ জ্ঞানী মহারাজের সহিত পুর্বেবাক্তরূপে স্পষ্ট কথায় মনোভাব বান্ত করিয়া আলাপ কর৷ একটি স্ত্রীলোকের পক্ষে বড় সহজ ব্যাপার নয়।

স্থলভা, মহারাজ জনককেও 'মুক্তিতত্ব সম্বন্ধে অনেক অনুল্য উপদেশ দিয়াছিলেন। ধন্য ধন্য আমাদের সেই শিক্ষার আকর হ্বপভ্য প্রাচীন ভারতবষ ! যে ভারত- ববের একটি মহিল! তাদৃশী সভায় ঈদৃশু জীবন্মুক্ত মহাতা। মহারাজ জনককেও জ্ঞান-গরিম। প্রদর্শন করিয়া বিস্মিত করিয়াছিলেন, ঈদৃশ উন্নত ভারত অধুনা গতসব্বন্য দৃতপ্রায় হহলেও ধন্য প্রশংসার্থ। তৎকাণে স্ত্রীলোক, উপযুক্ত পাত্র না পাইলে বিবাহহ করিত না। কিন্তু আজীবন ব্রহ্মচধ্যব্রত অবলম্বন করিয়া সত্যন্বরূপ, জ্ঞান- স্ববপ আনন্দন্বরূপ পরমেশরে বিলীন হওয়াই শ্রেয়- স্বর বলিয়া মনে করিত। যে কোন প্রকার একটা তির সহিত পরিণয়সুত্রে আবদ্ধ হইয়৷ রাত্রিদিন কলহে শরীর ক্ষয় করিত না এবং নিজের মনের অশান্তি নিজে বন্ধিত করিত না, দশগণ্ড সন্তান প্রনব করিয়! ভূভার বন্ধন করিত না, দারিদ্র্যের মাত্র বুদ্ধি করিয়। বিব্রত হইত না, কন্যার বিবাহের ব্যয়-ভাবনায় অস্থির হইত না! এবং কন্যার শ্বশুরাল্য়ের গঞ্জনার কথা শুনিয়া নরক-ন্ত্রণা ভোগ করিত না।. পৌরাণিক যুগের পর বৌদ্ধ-যুগেও,

[.58৯:.7

নরনারীগণ, এই সকল সাংসারিক ক্রেশ বুঝিতে পারিয়। গাহস্থাধর্ম-প্রতিপালনে অনাস্থা প্রীদর্শন করিত এবং দলে দলে সন্ন্যাস গ্রহণ করিত বৌদ্ধযুগে সন্নযাীর সংখা এত বাড়িয়৷ গিল্রাছিল যে, বদ্ধিত সংখ্যা শুনিলে বিস্মিত হইতে হয়। এক একটি আশ্রমে বা বিদ্যালরে বন্ত সহজ জ্ীলোক বাস করিত। এত অধিকপলংখাক স্াীলোকের বাসের জন্য বুহৎ বুহৎ অট্টালিকা নিশ্ধি হইত।1 কাশীর স[রনাথের একটি মহিলা-বিদ্যালয়ে দশ সহত্র বৌদ্ধ-মহিলা বাস করিত ইহাদের অশন, বসন পুস্তক সকল তাতকালিক বৌদ্ধ রাজার এবং কুবের তুলা বণিকৃগণই* প্রধান করিতেন। সন্গালীর সংখ্যা "অতাধিক বৃদ্ধি পাওয়াতে সন্ন্যাসি-সমাজে নানাবিধ দৌষ প্রবেশ করিতে লাগিল এবং ক্রমশঃ বৌদ্ধযুগের শেষ ভাগে বৌদ্ধগণ বুদ্ধদেবের উপদেশ-বাঁক্যের ভিন্ন ভিন্নরূপ অর্থ বুঝিয়া এই ধর্মের নানাবিধ শাখার সুষ্টি করিতে লাগিল বৌদ্ধ-সমাজে এইরূপ বিপ্লব উপস্থিত হইয়া ভারতের অগ্যান্য ধর্্-সমাজের প্রভূত অনিষটনাধন করিতে লাগিল। বৌদ্ধযুগের শেষভাগে এইরূপ ধর্মাবিপ্নীবে ঘখন ভারতবৰ জর্ভরিত হইয়াছিল,* তখন পরমেশ্বরের দদিচ্ছায় শ্রুতি-্মুৃতি-প্রতিপাদিত সনাতন সত্য আর্ধ্য-ধর্মের পুনঃ প্রতিষ্ঠার 'জন্য এবং ব্রাহ্মণ, ক্রয়, বৈশ্ব শুদ্র এই চারিবর্ণের ব্রহ্মচারী, গৃহী, বান প্রস্থ :ও ভিক্ষু বা যতির

(১৪২ )

চারিটি আশ্রমের পুনর্ববিভাগের নিমিন্ত শিবাবতার মহাত্মা শঙ্করাচার্ধ্য জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন সেই ধর্্মাবিপ্র বযুগে চারি বর্ণের চারি আশ্রমের মহা প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি হইয়াছিল বলিয়া ঈশ্বরের সদিচ্ছারূপ "ম্বভাবের নিয়ম অনুসারেই বর্ণ আশ্রম-ধর্ম্ের পুনঃ প্রচলন-যুগ আবার আরদ্ধ হইল। সামাজিক প্রথা-প্রচলন এই নিয়ামেই এইরূপেই আরদ্ধ হয়। নতিবা এইরুপ বুঝা ঠিক নয় যে, ব্রাহ্গণ-পঞ্চিতগণ একদিন হঠাত একটি সভ| করিয়া কয়েকটি সংস্কিত শ্লোক রচনা পূর্বক উচ্চৈঃস্বরে এই প্রচার করিয়া দিলেন যে, কলা হইতে আমাদের বাবস্থা হন্ুলারে দেশের লোক জাতিভেদ আশ্রম্মভেদ যেন আবশ্য ভাবশ্য মানে! গার তার ঠিক পরদিন হইতেই অমনি জাতিভেদ আশ্রমভেদ-প্রথা গ্রচলিত হইতে লাগিল। এইরূপে বর্ণীশ্রম-বিভাগের প্রথা কখনও প্রবর্তিত হয় নাই এবং হইতেও পারে না। অবস্থানু- সারেই ব্যবস্থা প্রচলিত হইয়াছে এবং হইয়া থাকে স্মৃতিযুগ বা সংহিতা-যুগও এইরূপেই আরব্ধ হইয়াছিল। বৈদিক-যুগের শেষভাগে যজ্দের বাপদেশে ( অছিলায় ) উদর-পুরণার্থ অসংখ্য গোহত্যা করী হইত। দেশে কুষ্ট- ব্যাধির মাত্র! দুগ্ধাভাবের ভীষণ চিন্তা! বাড়িতে লাগিল দেশে গোহত্যা প্রথা রহিত করিবার মহা প্রয়ৌজনীয়ত। উপলব্ধ হইতে লাগিল। তখন খষিগণ কর্তৃক শান্ত

(১৪৩ )

প্রণীত হইতে লাগিল এবং পূর্বেবাক্ত সামাজিক নিয়মানু- পারে বৈদ্দিক-যুগের গোহতা-প্রথা ক্লেমশঃ তিরোহিত, হইয়াঠিল।

শবরী।

ভট্টি-কাব্যের ষষ্ট সর্গে লিখিত আছে যে, একদা! দশরথ-পুক্র রাম্বন্দ্র যখন সীতাবিরহে অধীর হইয়া সাতার অস্থেষণার্থ বনমধ্যে ইতস্ততঃ পর্যটন করিতে- ছিলেন, সেই স্ময়ে তিনি তাহার ভ্রাতা লক্খমণ চিরত্রক্মঠারিপী মহাপণ্ডিত! যোগিনীত্রেষ্ঠা "শ্রমণা-নান্দী সিদ্ধ শবরীর আশ্রমে প্রবেশ করিয়াছিলেন। ওহাকে দর্শন করিয়। তাহারা অত্যন্ত প্রীত হইয়াছিলেন। তাহাকে দর্শন করিয়৷ তাহাদের সমস্ত শ্রাস্তি-ক্লাস্তি দুর হইল। তীহাদের এইরূপ বোধ হইল, যেন তাহার! দুই ভ্রাতা দিব্য “জুড়ীগাড়ীতে” 'আরোহণ করিয়া সেই আশ্রমে উপস্থিত হইয়াছেন। পদব্রজে অরণ্য-ভ্রমণের মহাকরেশ মুহূর্তমধ্যে তাহারা ভুলিয়া গেলেন। শবরী স্থবিখ্যাতা৷ পৰিত্র' পুষ্য। তারার স্কায় পৰিভ্রচরিত্রা মঙ্গলময়ী ছিলেন তিনি বন্ধল পরিধান করিত্েন। পুরুষ-সঈন্ন্যাসীর গ্যায় তাহার কটিদেশ ঝুষ্নির্নিত, কটিবন্ধে আবদ্ধ ছিল।. কঠোর যোগাত্যাসে ভাহার দেহ প্ীণ

7286...)

হইয়া গিয়াছিল। তিনি পুরুষ-ব্রক্মসারীর ন্যায় পলাশ- দণ্ড ধারণ করিতেন। স্ৃগচর্্োপরি উপবেশন করিতেন খলতা-কুটিলতাদি দোষে তীহার চিত্ত কখনও বিকৃত হয় নাই। তীহার চিত্ত চরিত্র অতি নির্মল ছিল। তিনি সাধ্বী সরলা ছিলেন। তিনি দেব- পক্ষপাতিনী, আনন্দিত! সর্বদা ধণ্মকন্ম্মে রতা ছিলেন। যে সকল ফল মূল ভক্ষণ করিলে ইন্দ্রিয়ের চিত্তের বিকার জন্মে, তাদৃশ ফলমুল তিনি কখনও ভক্ষণ করিতেন না। তিনি দুগ্ধ সান্বিক ফলমুলমাত্র আহার করিতেন। তিনি অশেষ-শান্ত্রপারদর্শিনী ছিলেন। শরীরামচন্দ্র ঈদৃশী যোগিনা পণ্ডিতা শবরীকে দেখিয়া তাহার নিকটে উপবেশন করিলেন এবং কিয়গ্ক্ষণ পরে তাহাকে নিন্ললিখিত প্রশ্নগুলি জিজ্ঞামা করিতে আরম্ত করিলেন £-- 35 & “আপনি অমাবস্য। তিথিতে পিভৃলোকের তৃপ্তির জন্ত উত্তমোত্তম স্ুত্যাত্ু ফলাদি দ্রব্য দ্বারা পার্ববণশ্রাদ্ধ করিয়া, থাকেন কি? আপনি কি ইন্দ্রাদি দেবগণের শ্রীতির নিমিত্ত অগ্রনিতে ঘ্বৃতাছতি প্রদান করেন? আপনি কি যজ্ঞে ব্রাঙ্গণগণের সহিত মিলিত হইয়া সোমলতাকে নমস্কার করেন ? গ্রাতঃসন্ধ্যা সায়ংসন্ধ্যা-বন্দনের সময় আপনি কি থাবধি আচমন করেন ? অগ্নিহোত্রী ব্রাহ্মণ দিগের সহিত আপনি ফি আধ্যাত্মিক-তত্ব-কথার আলাপ

(১৪৫ )

করেন? তপস্যাচরণে কোন কব্লেশ বোধ করেন কি? যমের ভয় পরিত্যাগ করিয়াছেন কি ?”

শবরী এই সকল প্রশ্ন শুনিয়া উত্তর দিলেন, “হে ভগবন্‌, তপস্তানুষ্ঠান-বিধয়ে আপনি রুপাপুরববক যাহা যাহা জিজ্ঞাসা করিলেন, সেই সকল যথাশক্তি নির্ববাহ করিতেছি সকল বিষয়ে কোন বিঘ্ন উপস্থিত হয় নাই। সকলই কুশল জানিবেন। তপোনুষ্ঠানে ক্লেশ বোধ করি না। যমের তয় পরিত্যাগ করিয়াছি ।” ভ্টিকাব্যের শবরীর বর্ণনা দেখিয়া বোধ হইতেছে যে, পূর্ববকালে পুরুষের ম্যায় ক্্রীলোকও পলাশ-দ্ড ধারণ করিত, মুগ্তনির্মিত কটি বন্ধ ধারণ করিতে পারিত, অমারস্যাদি পুণ্য-তিথিতে পার্বরণ- শ্রাদ্ধ করিতে পারিত, মৃগচন্মে উপবেশন করিতে পারিত, মন্ত্রোচ্চারণ পুর্ববক হোম করিতে পারিত, জ্ঞানী সচ্চরিত্র ্রাহ্মণ-পঞ্চিতগণের সহিত দর্শন-শান্্ব আলোচনা বা আলাপ করিতে পারিত, যোগাভ্যাস করিতে পারিত, যমের ভয় পরিত্যাগ করিয়া মোক্ষপথে যাইবার অধি- কারিণী হইতে পারিত এবং নিজ তপঃপ্রভাবে বা নিজের গুণে পরমেশ্বরের অবতার ক্রীরামচন্দ্রেরও অন্বেষণীয়া, মানত! আদরণীয়। হইতে পাঁরিত। পূর্ববকালে স্ত্রীলোক নিজেই হোম. করিত, পুজা করিত তর্পপাদি ক্রিয়া করিত। ।পুরোহিত মহাশয়ের আগমন-প্রতীক্ষায় থাকিয়া অফালে অপ্রশন্ত ক্ষণে ধর্্মানুষ্ঠীন করিয়া উহা পণ্ড করিত না।

১৩

( ১৪৬ )

কোন কোন পুরোহিত মহাশয় আড়াই দগুমাত্র স্থায়িনী কোন একটি শুভ তিথিতে ছাপ্পান্ন জন যজমানের বাটীতে লক্গণীপুজা সারিয়! থাকেন বলিয়া, পাছে এরূপ একজন পুরোহিত এর্ূপে অসময়ে অবিধি পূর্বক পুজা করিয়া ধন্মুকণ্ম পণ্ড করেন, এই ভয়ে পুর্ববকালের শিক্ষিত৷ ভারতীয় আধ্য-মহিলার যথাসময়ে পঞ্জিক'নিদ্িষ্ট শুভ- ক্ষণে নিজেরাই ধর্ম্নকম্মা অনুষ্ঠান করিতেন। তীহার৷ এই শান্্রবাক্য মানিতেন যে, “অকালে লক্ষ-কোটি হোম কর। অপেক্ষা প্রকৃত কালে শুভমুহূর্তে একটিমাত্র আন্ৃতি প্রদান করাও ভাল।. পুরোহিতকে দক্ষিণা দিতে হইবে, এই ভয়ে তীহারা সর্বদা ,পুরোহিতকে ডাঁকিতেন না, নিজেরাই হোম-পুজাদি ক্রিয়। করিতেন, এইরূপ বিবেচন! কর! ঠিক নয়। কারণ, দরিদ্র বা মধ্যমবিত্ত লোক সকল পুরোহিতকে ন! ডাকিলে এইরূপ বিবেচনা অনেকে করিতে পারিতেন বটে, কিন্তু সম্রাটের প্রাসাদে সম্রাজ্ভীর দক্ষিণ দিবার ভয় হইবে কেন? তাহার কি অর্থের অভাব ছিল ? না, বদান্যতার অভাব ছিল? তিনি নিজেই পুজা-হোমাদি করিতেন। সর্বদা পুরোহিতকে ডাক৷ হইত না। বিবাহ-উপনয়নাদি প্রধান প্রধান ক্রিয়ার সময়, পুরোহিতকে ডাকা হইত রামায়ণের অযোধ্যাকাণ্ডের বিংশতিতম অধ্যায়ের ১৫ প্লোকে দেখিতে পাওয়! যায় যে, সম্রাট দশরথের পত্রী সম্রাজ্ঞী কৌশল্যা পট্টবস্ত্র পরিধান

( ১৪৭ )

করিয়া হৃষ্টচিন্তে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণ পূর্বক হোম করিয়া- 'ছিলেন।

আঁত্রেয়া।

যে সামবেদের স্মধুর গানে আকৃষ্ট হইয়। খধিগণের তপোবনে সিংহ, ব্যাত্, সর্প প্রভৃতি ভীষণ জীব, হরিণ- শশকাদি শান্তম্বভাঙ জন্তুর প্রতি স্বাভাবিক আজন্ম শক্রভাব ত্যাগ করিত এবং এক তপোবনে স্বজাতির ন্যায় পরস্পর গ্রীতিসূত্রে আবদ্ধ সম্মিলিত হইয়! একত্র বাস করিত, সেই সামবেদেরৎ চিরশান্তিকর ্রমধুর গান, পুর্ববকালের ভারত-মহিলাগণও মহাযত্ু পরিশ্রামের সহিত শিক্ষ। করিতেন এবং উহাতে প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য লাভ করিতেন। সামবেদ অধ্যয়নের জন্য টাহাদের ছা'ত্রী- জীবনের কঠোর সহিষু্তা, কঠিন প্রতিজ্ঞা এবং অসাধারণ অধ্যবদায়ের বৃত্তান্ত পাঠ করিলে ইহা বুঝিতে পারা যায় বে, তাহাদের উচ্চশিক্ষার শতাংশের এক অংশও আধুনিক নরনারীগণ অদ্যাপি লাভ করিতে পারেন নাই অধুনা স্কুল-কলেজের ছীত্রগণ যেমন কোন স্থলে পাঠের অস্থুবিধ। হইলে প্টু।ন্মফর্‌ সার্টিফিকেট” লইয়া অন্ত্র পড়িতে যায়, তজ্রপ পূর্ববকালেও কোন খধষির আশ্রমে পাঠের বিদ্ব বা অসুবিধা উপস্থিত হইলে খধষির অনুমতি

(১৪৮ )

লইয়া ছাত্রীরা অন্থত্র পড়িতে যাইতেন। মহাকবি তবভূতি- প্রণীত উত্তরচরিতনামক নাটকের দ্বিতীয় অস্কে দেখিতে পাওয়া যায় ষে, মহব্ি বালীকির ছাত্রী আপ্রেয়ীকে বাসন্তী জিজ্ঞাস! করিতেছেন__“আর্ষো আন্রেযি, কি জন্য আপনি এই দণ্ুডকারণ্যে মহষি অগস্ত্যের আশ্রমে আগমন করিয়া- ছেন? এত পরিশ্রম করিয়া, এতদূর পর্যটন করিয়া অ(পনার এখানে আিবার উদ্দেশ্য কি?” আত্রেয়ী বলিলেন, ৭গুনিয়াছি, এই দগুকারণ্যে আগস্ত্-গ্রমুখ মহধিগণ বাদ করেন। তীহারা সুমধুর উচ্ৈঃস্থরে গীয়মান সামবেদের পারদর্শী আচার্্য। তাহাদের নিকটে সাম অন্থাগ্ বেদ, বেদান্ত উপনিষদাদি শাক সমূহ অধায়ন করিবার জন্য মহষি বাল্ীকির আশ্রম হইতে পর্যটন করিতে করিতে এখানে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছি।” বাসন্তী জিজ্ঞাস] করিলেন, “কেন? যখন অন্যান্য মহামতি মুনিগণ সেই প্রাচীন বেদাচাধ্য মহষি বাল্মীকির নিকটে স্বচ্ছন্দে সকল শাস্ত্র অধ্যয়ন করিয়া মহালন্তোষলাভ করিতেছেন এবং তাহার সেবায় আনন্দ অনুভব করিতেছেন, তখন আপনি তাদৃশ স্থান পরিত্যাগ করিয়া এই স্বৃদুরবস্তী দগুকারণ্য প্রদেশে আপিয়া দীর্ঘকাল নাবশ অধ্যয়নার্থ প্রয়াসিনী হইয়াছ কেন ?”

আত্রেয়ী বতিলেন, “তথায় অধ্যয়নের মহাবিদ্ব উপস্থিত হইয়াছে, তজ্জন্য এখানে আসিতে বাধ্য হইয়াছি।” বামন্তা

(১৪৯ )

জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি প্রকার বিদ্বু ?” আত্রেয়ী বলিলেন-_ “কোন এক ব্যক্তি মহধি বালীকির আশ্রমে দুইটি শিশুকে কোথা হইতে আনিয়া রাখিয়া গিয়াছে তাহার! দুইটি অতি অলবয়স্ক শিশু তাহারা সবেমাত্র মাতার স্তনদুগ্ধ- পানের অভ্যাস পরিত্যাগ করিয়াছে শিশু ঢুইটিকে দেখিলেই কেবলমাত্র খধিদের কেন, জগতের সমস্ত প্রাণীরই হৃদয়ে ন্েহ-তরঙ্গ উচ্ছদলিত হইয়! উঠে। সকলেই তাহাদিগন্কে ভালবাসিতে ইচ্ছা করে ।” বাসন্তী জিজ্ঞাসা করিলেন, তাহাদের নাম দুইটি আপনার মনে আছে কি?" আত্রেয়ী বলিলেন, “যে ব্যক্তি উহাদিগকে আশ্রমে রাখিয়া গিয়াছেন,*তিনি উহাদের কুশ লব এই দুইটি নাম উহাদের অদ্ভুত প্রভাব প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন।” বাসন্তী জিজ্ঞাসা করিলেন, “কিরূপ প্রভাব ?” আত্রেয়ী বলিলেন---উহারা দুই ভাই জন্মকাল হইতেই জুম্তকনামক অস্ট্রবিদ্যায় আশ্চর্য্যরূপে অভ্যন্ত। এই ভন্তকনামক অন্ুটিও একটি অদ্ভুত অন্ত্র। একটি মন্ত্র উচ্চারণ করিয়া এই তন্ত্র প্রয়োগ করিলে উহা বিপক্ষীয় সৈন্তগণের উপরে পতিত হইয়া উহার্দিগকে অচেতন নিস্পন্দ করিয়া ফেলে? তখন অতি সহজেই তাহাদিগকে নিহত করিয়া যুদ্ধে অনায়াসে জয়লাভ করিতে পারা যায় এবং অন্য একটি মন্ত্র পাঠ করিলেই এ.অন্ত্রটি প্রয়োগ- কারীর নিকটে আবার ফিরিয়া আইসে।” বাসন্তী

(১৫০ )

বলিলেন--“ইহা তো, বড়ই আশ্চর্য ব্যাপার! ইহা মহা- আশ্চর্যজনক সংবাদ! আত্রেয়ী বলিলেন,--“মহধি বাল্মীকি এই শিশু দুইটির জম্মকালে নিজেই উহাদের ধাত্রীর কন্ঠ সম্পাদন করিয়াছেন এবং তথ্কাল হইতে উহাদ্িগকে মহাযত্তের সহিত প্রতিপালন করিয়া আসিতেছেন। তিনি উহাদের চুড়াক্ম-সংস্কার সম্পাদন করিয়া তিনটি বেদ বাতিরেকে নানাবিদ্যা শিখাইয়াছেন। তত্পরে একাদশ বর্ম বয়সে উহাদের ক্ষভ্রিয়োচিত বিধি অনু্ারে উপনয়ন- সংস্কার সম্পাদন করিয়া উহাদিগকে খক্‌, য্জুঃ সাম এই তিনটি বেদ অধ্যয়ন করাইয়াছেন। এই শিশু ছুইটির বৃদ্ধি মেধা এতই প্রখর যে, তাহাদের সহিত একসঙ্গে অধায়ন করা আমার পক্ষে নিতান্তই অসম্ভব হইয়া উঠিয়াছে। সেই জন্য আমি মহধি বালীকির আশ্রমে বৃথা অময় নষ্ট না করিয়া এই দূরবর্তী দণ্ডকারণ্যে অধ্যয়নার্থ আসিতে বাধ্য হইয়াছি |” আত্রেয়ীর অধ্যয়নেচ্ছ' এতই প্রবল যে, বালীকির আশ্রমে সেই ছাত্র দুইটির সঙ্গে একত্র অধায়ন কর! অসম্ভব হওয়াতে তিনি, ভীষণ বন্াজন্তুসমাকীর্ণ দুর্গম অরণ্যানী, গিরিপথ, দুষ্পার নদনদী এবং নানাদেশ অতিক্রম করিয়া স্থদুরবর্তী দণ্ডকারণো মহথ্ি অগন্ত্যের নিকটে বেদ-বেদাস্তাদিশাস্ত্র অধ্যয়নকরিবার জন্য একাকিনী"আগমন করিয়াছিলেন

তণুকালে দণ্ডকারণ্যে নিগমান্তবিদ্যাপারদর্শী অগস্ত্য-

( ১৫১ )

প্রমুখ বনুসংখ্যক মহধি বাস করিতেন মহধি অগস্ত্যের অনেক শিষ্য ছিল। তিনি তাহাদিগকে অন্নবন্ত্র প্রদান করিয়া নিজ গৃহ অধ্যয়ন করাইতেন। এখানে সিংহ- বাত্ারি ভীষণ জন্ত্ব স্ল এবং মৃগ-শশকাদি শান্তন্বভাব পশ্ুডগণ মহষির তীহার শিশ্যবর্গের স্থমধুর সাম-গান- শ্রবণে মুগ্ধ হইয়া পড়িত এবং তীহাদের শমদমাদি ভাব অনুকরণ করিয়া পরস্পর বৈরিভাব পরিত্যাগ করিত। এখানে নগরের কোলাহল এবং হিংসা, দ্বেষ প্রভৃতি অপবিত্র ভাব প্রবেশ করিতেই পারিত না। দগুকা বুণ্য এই সকল অপবিত্র ভাব তাড়াইবার দণ্স্বরূপ হইয়া বিরাজ করিত এবং সর্বদা খধিগণের হৃদয়ে শান্তিরস বর্ষণ করিত। এখানে খিগৃণ স্মধুর উচ্চৈঃস্বরে সামগান করিয়া সর্বব- মঙ্ঈলবিধাতা পরমেশরের উপাঁপনা করিতেন। এখানে ্রন্মতত্বশিক্ষারূপ সর্বশ্রেষ্ঠ উচ্চতম শিক্ষা প্রদত্ত হইত। পরমাত্ৃতত্বশিক্ষা হইতে উচ্চশিক্ষা, জগতে আর কি হইতে পারে? কোন শিক্ষাই হইতে পারে না। আত্রেয়ী, প্রভৃতি ভারতীয় প্রাচীন আর্ধ্য-মহিলারা আত্মতত্ব-বিজ্ঞান পরিত্যাগ করিয়া জড়তব-বিজ্ঞান শিখিবার জন্য যত্ববততী হইতেন না। যে বিজ্ঞান আয়ত্ত হইলে সর্বববিজ্ঞান আয়ত্ত হয়, তাদশ বিজ্ঞান-শিক্ষার্থ গুরুতর ক্রেশ হ্বীকার করিতেও কুষ্টিত হইতেন না। একন্থানে অধ্যয়নের অস্থুবিধ! হইলে স্থানান্তরে গিয়াও অধায়ন করিতেন। পথক্লেশকে

(১৫২ )

তুচ্ছ জান করিতেন তীহারা যে বস্তুকে সত্য বলিয়া মনে করিতেন, প্রাণান্তেও তাহা! ত্যাগ করিতেন না'। ইহাই বুঝাইবার নিমিত্ত মহাকবি ভবভূতি তকালের ছাত্রী- জীবনের এই চিত্রটি নিজের উত্তুর-চরিতনাটকে অঙ্কিত করিয়াছেন। অগন্ত্য তীহার পতী প্রাতঃস্মরণীয! পবিভ্রচরিত্রা আদর্শপতিত্রতা বিদ্বুধী লোপামুদ্রা, ছাত্র ছাত্রীদিগকে এই পরমাত্মতন্ত্ব শিক্ষা দিতেন

কামন্দকী।

মহাকবি ভবভূতি-প্রণীত মালতীমাধবনামক নাটকে কামন্দকীর কথা পড়িয়া এই বোধ হয় যে, বৌদ্ধযুগের ভারতীয় আধ্য-মহিলার! মনু, অত্রি, বিষুও, হারীত, যাজ্জ- বন্ধ, উশনাঃ, অঙ্গিরাঃ এবং অন্যান্য মহধিগণ-প্রণীত মূল স্মৃতিশান্ত্র সকল যত্ু সহকারে অধ্যয়ন করিতেন এবং স্মৃতির সকল প্রাচীন মূলগগ্রন্থে তীহারা মহাবিদুষী ছিলেন। তাহারা আধুনিক স্মার্ত পণ্ডিতদিগের ন্যায় রঘুনন্দন- প্রভৃতির সংকলিতত-স্মৃতিগ্রস্থান্র অধ্যয়ন করিয়া স্মার্ত বলিয়া পরিচিত হইতে ইচ্ছা করিতেন না, তাহারা আধুনিক' স্মার্তদিগের ম্যায় স্মৃতির সংগ্রহ-গরম্থ মাত্র পাঠ করিয়া স্মৃত্তিশান্্পাঠ শেষ করিতেন না, কিন্তু

(১৫৩ )

মহত্বিগণ-প্রণীত স্মৃতির প্রাচীন মুলগ্রন্থ সকল যথাবিধি পাঠ করিতেন, অভ্যাস করিয়! স্মৃতিপটে অঙ্কিত করিয়া রাখিতেন এবং প্রমাণ দেখাইবার প্রয়োজন উপস্থিত হইলে ততক্ষণার্ মহধি-বচন উদ্ধৃত করিয়া বলিতে পারিতেন। শ্মুতিশান্ত্রে তাহাদের ঈদৃশ পাণ্ডিত্য দেখিয়া ইহা নিশ্চয়ই বুঝিতে পারা যায় বে, তাহারা স্মৃতিশান্ অধ্যয়নের পুর্বে ব্যাকরণ, অভিধান, সাহিত্য অলঙ্কার- প্রভৃতি শান্সও অক্গ্য উত্তমরূপে অধ্যয়ন করিতেন বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। কারণ, ব্যাকরণ-সাহিত্যাদি শান্তর উত্তমরূপে অধ্যয়ন না করিয়া সর্বপ্রথম কেহ কোন দেশে স্মুর্তিশান্ত্র পড়িতে আরক্তু করে না এবং করা উচিতও নয়। বিবাহকালে “শুভদৃষ্টির” সময় বর বধূর কর্তৃব্যতা সম্বন্ধে কামন্দকী যাহা! উপদেশ করিয়াছেন, সেই উপদেশ- বাক্য তীহার নিজের মনঃকল্লিত নয়, কিন্তু তিনি মহুষি অঙ্গিরার বাক্য প্রমাণস্বরূপে উদ্ধৃত করিয়াই উপদেশ প্রদান করিয়াছেন। পূর্ববকালের বিদ্বান বিদ্ষীরা উপদেশ দিবার সময় পুজ্যপাদ মহুধিগণের কিন্বা প্রাচীন প্রামাণিক শিষট গ্রন্থকারের বচন প্রমাণরূপে উদ্ধৃত করিয়া বলিতেন, কিন্ত আধুনিক পল্লবগ্রাহী গ্রস্থকারের ন্যায় কেবল স্বীয় মন্তব্যে গ্রন্থকলেবর পুর্ণ করিতেন না। কামন্দকী বলিয়াছেন, বিবাহকালে “শুভদৃষ্টির” সময় বর বধু যদি পরস্পরের প্রতি বাকা, মন চক্ষু দ্বারা প্রগাঢ়

( ১৫৪)

অনুরাগ প্রদর্শন করে, তাহা হইলে তাহাদের ভবিষ্যৎ মহানৌভাগ্য সূচিত হইয়া খাকে। মহধি অঙ্গিরাঃ বলিয়াছেন যে, বধূ বাক্য, মন চক্ষু দ্বারা বরের প্রতি অনুরাগ প্রদর্শন করেন, তিনিই ভবিষ্যতে অতিশয় সৌভাগ্যবতী সমুদ্ধিশালিনী হয়েন।

বৌদ্ধঘুগে নরনারীর একত্র অধ্যয়ন |

বৌদ্ধযুগে নরনারীগণ এক বিদ্যালয়ে বাস করিয়া একত্রে বসিয়া এক গুরুর নিকটে শাস্ত্র অধায়ন করিতেন। মালতীমাধবে দেখিতে পাওয়। যায় ঘে, কামন্দকী লবঙ্গিকাকে সম্বোধন করিয়া বলিতেছেন--“ময়ি প্রিয়লখি লবঙ্গিকে, তুমি কি জান না? তোমার কি মনে পড়িতেছে না যে, পাঠাবস্থায় আমর সকলে একত্র মিলিত হইয়া, একত্র বসিয়া ধখন এক গুরুর নিকটে অধ্যয়ন করিতাম, সেই সময়ে নানাদিক্-দেশ হইতে আগত চাত্রগণের সহিত আমাদের সাহচর্য হইত। তাহারা আমাদের সহপাঠী হইত | সেই সময়ে আমাদের সহপাঠি-ছাত্রগণের মধ্যে ভুরিবন্থ দেবরাতনামক ছুইটি ছাত্র আমাদের প্রিয়সখী সৌদামিনীর সমক্ষে পরস্পর এইরূপ প্রতিজ্ঞা করিয়াছিল ষে, ভবিষ্যতে তাহার! ছুই জন একের পুজ্রের সহিত

(১৫৫)

অপরের কন্যার বিবাহ দিবে? তোমার কি ইহ! মনে, পড়িতেছে না ?” কামন্দকীর এইরূপ প্রশ্ন দ্বারা ইহা স্পট বুঝা যাইতেছে যে, বৌদ্ধযুগে ছাত্র ছাত্রীগণ এক আশ্রমে বাস করিয়া একত্র বসিয়া এক গুরুর নিকটে অধ্যয়ন করিত। পুর্ববকালে ভারতের লোকের যেরূপ কঠোর ব্রহ্গচর্যা, প্রকৃত ভ্রাতৃভাব, সত্যবাদিতা, কর্তৃবা- জ্তান ধন্মত্ান ছিল, অধুনা কালধশ্ম-প্রভাবে লোকের নকল গুণ ভ্রমশঃ না থাকায় এরূপ অধায়নরীতি ক্রমশঃ বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে বৌদ্ধযুগে নারীগণ যে কেবলমাত্র ব্যাকরণ, সাহিত্য স্মৃতিশান্ত্র পাঠ করিয়া ছাত্রীজীবনের কাধ্য শেষ করিতেন, তাহা নহে, তাহারা বৈদিক পৌরাণিক যুগের মহিলাগণের ন্যায় মুক্তিতত্ব- শান্্রও যথাবিধি অধ্যয়ন করিতেন মালতীমাধবে দেখিতে পাওয়া যায়, মালতী বলিতেছেন যে, আমি সম্প্রতি কি. উপায়ে মরণ নির্ববাণমোক্ষের পার্থক্য অবগত হইব ? মালতীর এই উক্তি হইতে এই বুঝিতে পারা যায় যে, তিনি মরণ নির্ববাণের পার্থক্য অবগতির নিমিত্ত উত্- কণ্টিতা হইয়াছিলেন। তিনি ইহা বুঝিতে পারিয়াছিলেন, মরণ নির্ববাণমুক্তি এক পদার্থ নয়। মরণ নির্ববাণ- মুক্তি এক পদার্থ হইলে তাহাদের পার্থক্য অবগতির জন্য তাহার চিত্ত ব্যগ্র হইত না এবং উহাদের, পার্থক্য-ানের জন্য ইচ্ছাও তীহার হৃদয়ে উদিত হইত না। মরণ ও,

(১৫৬ )

নির্বাণমুক্তি এক পদার্থ নয় বলিয়াই মালতী স্বতন্ত্ররূপে এই দুই বস্তুকে জানিবার জন্য আগ্রহবতী হইয়াছিলেন।

পিপিপি পপ

সৌদবমিনী।

কামন্দবীর একটি ছাত্রী ছিল, তাহার নাম সৌদামিনী। সৌদামিনী প্রথমে বৌদ্ধধন্মীবলম্থিনী ছিলেন। তাঁর পর কামন্দকীর অধ্যাপনা-প্রভাবে তিনি সনাতন হিন্দুধর্ম অবলম্বন করেন এবং নানাবিধ তন্ত্র অধ্যয়ন করিয়া তাহাতে ঘথেষ্ট পাণ্ডিত্য লাভ করেন। তিনি মন্ত্র জপ, পুক্তা হোমাদ্দি করিতেন এবং কামন্দকী অন্যান্ত গুরুর নিকটে যোগশান্ত্র অধ্যয়ন যোগমাধন! শিক্ষা করিয়া অলৌকিক সিদ্ধিলাভ করিয়াছিলেন। ইদানীং ভিন্ন ভিন্ন ধ্মাবলম্বীদিগের মধ্যে যেমন বিবাদ-বিসংবাদ দেখিতে পাওয়া যায়, বৌদ্ধযুগে হিন্দু বৌদ্ধদিগের মধ্যে সেরূপ বিবাদ-বিসংবাদ ঘটিত না। বৌদ্ধ-মহিলারাও হিন্দুদিগের প্রাচীন মূল স্বৃতি-গ্রন্থাদি অধ্যয়ন করিতেন এবং প্রয়োজন উপস্থিত হইলে হিন্দুদিগের সন্কল গ্রন্থ হইতে প্রমাণ- বাক্য উদ্ধৃত করিয়া নিজ বাক্যের প্রামাণ্য সংস্থাপন করিতেন। | |

( ১৫৭ )

| শুরু]

বৌদ্ধযুগে ভারতীয় বৌদ্ধ-মহিলাগণ শিক্ষা-দীক্ষা লাভ করিয়া নারী-জীবনের চরম উতকর্ষসাধন করিতেন। কপিলবাস্ত নগঠে কোন একটি কোটিপতি ধনবান্‌ বৌদ্ধ বেশ্ের শুর্লানামী একটি রূপবতী গুণবতী কন্ঠা ছিলেন। শুরা যখন বিবাহযোগা বয়ঃ প্রাপ্ত হইলেন, তখন তীহার রূপের গুণের কথা শুনিয়া নানাদিগ্দেশীয় নরপতিগণ তাহার পাণিগ্রহথার্থ অধীর হইয়া পড়িলেন। কারণ, একে গুক্লার অনির্ববচনীয় সৌন্দর্য্য এবং নানাসদৃপ্তণ ছিল, তাহাতে আবার তিনি বিপুলএশররধ্যশালী পিতার একমাত্র উত্তরাধিকারিণী ছিলেন। সুতরাং তাহাকে বিবাহ করিলে কেবলমাত্র যে অনুপমা সুন্দরীর দেবতুর্লভ সৌন্দর্যের উপভোগ হইবে, তাহা নহে, কিন্তু পরে প্রভূত সম্পত্তিও লব্ধ হইবে, এই আশায় অনেকেই তীহাকে বিবাহ করিবার জন্য উন্মত্তপ্রায় হইয়া উঠিলেন। কিন্ত্বু ইত:পূর্বে শুর্লার কর্ণে বৈরাগা নির্ববাণতত্বের কথা প্রবিষ্ট হওয়াতে তিনি অতুলম্থখসস্তোগ-স্পৃহা পরিত্যাগ করিয়! বৌদ্ধশাক্ত-চচ্চায় এবং নির্ববাণমুক্তিলাধনায় জীবন অতি- বাহিত করিতে ইচ্ছুক হইয়াছিলেন। স্তৃতরাং তিনি মতেই বিবাহ করিতে ইচ্ছুক হইলেন না। তিদি' বৌদ্ধশান্র অধ্যয়ন যোগাভ্যাস করিতে আরস্ত করিলেন।

কয়েক বৎসর যাবত বৌদ্ধ-ধর্সের বহত্রস্থ অধায়দ এবং

( ১৫৮

কঠোর যোগাত্যাস করিয়া তিনি প্রভূত জ্ঞান শক্তি লাভ করিয়াছিলেন। তিনি'ন্ত্রীলোক হইয়াও মহামতি জ্ঞানি- পুরুষদিগের অরনামক উচ্চ উপাঁধি লাভ করিয়াছিলেন! যে সকল রাজকুমার তাহাকে বিবাহ করিবেন বলিয়! প্রতিজ্ঞ! করিয়াছিলেন, শুরার গভীরগবেষণাপূর্ণ উপদেশ গুনিয়া তাহাদের মোহনিদ্রাভঙ্গ হইল। নির্ববাণমুক্তি- শাস্ত্রে তাহার অগাধ বুৎপন্তি দেখিয়া হিন্দু ব্রান্মণ-প্চিত- গণও চকিত হইয়া যাইতেন। অধ্যয়ন, অধ্যাপন, সৎ কাষো দান যোগসাধনাদিকার্য্যে সদা রত থাকিয়া শুরু নির্ববাণমুক্তিপথ অবলম্বন করিয়াছিলেন। তিনি বিবাহার্থী* রাজকুমারগণের প্রার্থনা প্রত্যাখ্যংন করিয়: আজীবন কুমারীব্রত ধারণ করিয়াছিলেন। তিনি প্রভৃত সম্পত্তির অধিকারিণী হইয়াছিলেন বলিয়া নানাবিধ সৎ" কারো প্রচুর ব্যয় করিতেন। তিনি বহুসংখ্যক ছাত্রীর বাসোপযোগী একাধিক সুবুহত মঠ নিন্মাণ করাইয়া- ছিলেন। সকল ছাত্রীর খাদ্যবন্ত্রবযয়-নির্ববাহের জন্য এবং অন্যান্য সৎকার্ষের অনুষ্ঠানের নিমিত্ত তিনি তাহার সমস্ত সম্পত্তি দান করিয়াছিলেন

( ১৫৯ )

সোমা

শ্রাবস্তী নগরীতে একটি ব্রাহ্মণ বাম করিতেন। সাহার সোমানান্নী একটি কন্যা ছিল। তগুকালের প্রথানুসারে ্রাঙ্মণ *সোমাকে পঞ্চমবর্ষ বয়সে শিক্ষা দিতে আরম্ভ করিলেন সোমা লিখিতে পড়িতে আরম্ত করিল। সোমার বুদ্ধি স্মৃতিশক্তি অতান্ত প্রথরা দেখিয়া ত্রাঞ্ষণ সময়ে সময়ে মহাবিশ্মিত হইতেন। সোমা ' একবার যাহা শুনিতেন, তাহা আর কখনই ভুলিতেন না। তিনি যেরূপ পাঠ বুঝিতেন, পল্লীর কোন্‌ বালিকাই তদ্রপ বুঝিতে পারিত না। তিনি (োড়শবর্ম বয়সের মধ্যে সহজ সহশ্র-ংখ্যক বৌদ্ধ-গাথা আয়ন্ত করিয়াছিলেন। তাহার ন্যায় মেধাবিনী বালিকা সমগ্র বৌদ্ধসমাজে ততকালে দৃষ্ট হইত না। সোমার ইতিহাস প্র/ালোচন৷ করিয়৷ ইহা বুঝিতে পারা যায় যে, ততকালে আনেক ব্রাহ্মণনরনারীও বৌদ্ধধন্ম গ্রহণ করিতেন। সোমার সম্বন্ধে এইরূপ কখিত আছে যে, তিনি পুর্ববজদ্মে কশ্যপের আঙ্ঞায় উপদেশে সাংসারিক অনিত্য স্ুখতভোগ- স্পৃহা পরিত্যাগ পুর্বক আজীবন “বৌদ্ধধর্ম-চর্চায় কালাতিপাত করিয়াছিলেন। পূর্ববজন্মের এই সংস্কার বশতঃ এই জন্মে ঈদৃক্‌ অল্পবয়সে এতাদৃশ অসাধারণ দ্ঞানলাভ করিতে সমর্থা হইয়াছিলেন।' পুর্বব-জন্মের সংস্কার ব্যতিরেকে ঈদৃশ অল্পবয়সে এতাঁদুশ শক্তি কোন-:

( ১৬৩০৩ )

মতেই লাভ করিতে পারা যায় না। পুর্ববজন্ম না মানিয়া কেবল যদি এই কথা বলা যায় যে, ঈশ্বর কূপ! করিয়া বালিকাকে ঈদৃশ অল্পবয়সেই এতাদৃশ জ্ঞান দিয়াছিলেন বলিয়াই বালিকা তাদৃশী জ্ঞানবর্তী হইতে পারিয়াছিল। এইরূপ সিদ্ধান্ত করিলে ঈশ্বরে পক্ষপাতিতা-দোষ আসিয়া পড়ে। কারণ, ঈশ্বর একজনকে যদি জ্ঞান দেন অন্য-জনকে যদি জ্ঞান না দেন, তাহা হইলে “তাহার সর্নবজীবে দয়া, সর্ববজীবের প্রতি সযতাভাব” ইত্যাদি সমস্ত আস্তিক শান্ত্রেরে কথায় দোষ আাগিয়া পড়ে। স্থতরাং নির্দোষ তর্কের দায়ে পড়িয়া ইহ! অবশ্যই সকলকে স্বীকার করিতে হইবে যে, ঈশ্বর যাহার যেন কমন মতি দেখেন, তাহার তত্রপ জন্ম, তন্রপ শরীর, তন্রপ বুদ্ধি ঙন্রপ এশ্বধ্য।দি-বিধান করিয়া প্রকৃত মহাবিচারকের কাধ্য সম্পাদন করেন। যদি বলা যায় যে, “ঈশ্বর বা পূর্ববজন্ম-সংস্কার মানিবার প্রয়োজন নাই। এত অগ্ল- বয়সে অত অধিক জ্ঞান, এই একমাত্র জন্মেই আপন! আপনি হঠাৎ স্বাভাবিকরূপে কোন কোন বালিকার হৃদয়- মধ্যে উদিত হইয়া থকে তজ্জগ্ত সকল বালিকা এত অল্পবয়সেই জ্ঞানবতী হইয়! থাকে” এইরূপ কথাও বল! যাইতে পারে না। কারণ, তাহা হইলে একটি বালিক! অত অল্পবয়সে কেন ঈদৃশী জ্ঞানবতী হয়? আর অন্য বালিক! বৃদ্ধাবস্থায় উপনীত হইয়াও তাৃশী জ্ঞান-

( ১৬১)

বতী হয় না কেন? স্তবশীলার যেমন হৃদয় আছে, শরীর আছে, অধ্যয়নবিধি আছে এবং সেও যেমন পরিশ্রম করে, সরলারও তাহা তাহা আছে এবং সেও তজ্রপ পরিশ্রম করে।

স্বশীলা যেমন একটি শিক্ষিত ভদ্রবংশীয় ভদ্রলোকের কন্যা, সরলাও তদ্রুপ ম্থতরাং স্থশীলার হৃদয়ে যেমন স্বাভাবিকরূপে আপনা আপনি ভান জন্মে, সরলার হৃদয়ে তদ্ধপ জ্ঞান জন্মে না কেন? সে যেরূপ ফল পায়, সরলা তত্রূপ পায় না কেন? “স্বভাবত;) আপনা আপনি হইয়! থাকে», এইবুপ বলিলে একজনের বেল৷ একরূপ স্বভাব, অন্ত জনের বেলা অন্তরূপ স্বতাব হইতে পারে নাঁ। কারণ, আতর, জন্কু প্রভৃতি ফল উৎপাদন করা গ্রীত্মকালের স্বভাব এবং কপি, কড়াইশু'টি প্রভৃতি উৎপাদন কর! শীতকালের স্বভাব। ভিন্ন ভিন্ন খতুর এই তিন্ন ভিন্ন স্বভাব এক্ষণে যদি এইরূপ বলা হয় ষে, “যে কোন জিনিস আপন! আপনি যে কোন স্থানে যে কোন সময়ে হঠাশ উৎপন্ন হইয়া পড়ে” তাহা হইলে গ্রীক্ষকালে কাশীতে যখন “ল্যাংড়া” আত্ম উৎপন্ন হয়, মেই সময়ে কাশীতে কপি- কড়াইশু'টি উৎপন্ন হয়*ন! কেন ? অতএব মানিতে হষ্টবে যে, ফোন বন্তুই যেখানে সেখানে হঠাৎ আপনা আপনি উৎপন্ন হয় না; কিন্তু নির্দিউ কোন কারণ বশতঃই উৎপঙ্ হইয়া থাকে। পরমেশ্বরই মানুষের

(১৬২)

ংস্কার এবং স্কৃতি ছুদ্ধতিরূপ কারণ অনুসারে কোন ব্যক্তিকে বিদ্বান করেন, কোন ব্যক্তিকে মুর্খ করেন, কোন লোককে ধনী করেন, কোন লোককে দরিদ্র করেন। যাহার প্রতি যেমন স্থবিচার করা উচিত, তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে সুন্মনাতিসূন্মরূপে তাহার প্রতি সেইরূপ স্থবিচার করেন। যাহাকে যাহা দেওয়া উচিত, তাহাকে তাহা! দেন। কার্যা-কারণ-ভাব ব্যতিরেকে কোন বস্তুই কুত্রাপি আপনা আপনি হইতে পারে না। পরমেশ্বর কখনই পক্ষপাতী হইতে পারেন না। তিনি রামের প্রতি পদয় এবং শ্বামের প্রতি নির্দয়, এইরূপ মনে করিলে তাহাকে 'দোষ দেওয়া হয়। , তাহাকে দোষ দেওয়া মহা- পাপ। তিনি মহাবিচারকের মহাবিচারক।

টেপ স্পিকপপপসপ

কুবলয়!।

ভগবান্‌ গৌতম-বুদ্ধদেব সদয় হইয়া মহিলাদিগকেও নির্ববাণমুক্তি-শান্ত্রে পারদর্শিনী করিয়া দ্রিতেন। একদা “গিরিবস্থাসঙ্গম”নামক মেলায় মহাভোজ উপলক্ষে নানা- দ্িগ্দেশ হইতে কৌদ্ধ-নরনারীগণ “নদীলোতের ন্যায় দলে দলে শ্রাবন্তী নগরীতে আসিয়াছিল। তন্মধ্যে কুবলয়া- নামী একটি রূপবতী যুবতী নারীও দক্ষিণাপথ হইতে আসিয়াছিলেন। *তিনি উক্ত নগরীতে আসিয়া কয়েকটি

( ১৬৩ )

লোককে আলাপক্রমে মহাদর্পের সহিত জিজ্ঞাস! করিলেন, «এ নগরীতে আমার রূপের সুগঠিত মোহিনী মূত্তির আকর্ষণ অতিক্রম করিতে পারে, এমন পুরুষ কে আছে ?”” একজন উত্তর দিল, “গোৌতম-বুদ্ধদেব-নামক এক মহাপুরুষ আছেন। তিনি এক্ষণে জেতবন-নামক আশ্রমে বাস করিতেছেন |” কুবলয়া এই কথা শুনিয়া মহাভোজে যোগদান না করিয়া তৎক্ষণাৎ সেই অদ্ভুত পুরুষকে দেখিবার জন্য জেতবন অভিমুখে যাত্র/ করিলেন এবং যথাসময়ে জেতবনস্থ আশ্রমে উপস্থিত হইলেন। তিনি ভগবান্‌ বুদ্ধদেকের সম্মুখে উপস্থিত হইয়া স্বীয় সৌন্দর্য্যের প্রভাব বিস্তার করিতে লাগিলেন। নানাবিধ হাবভাব প্রদর্শন করিয়া মোহিনী আকর্ষণী শক্তির পরিচয় দিতে লাগিলেন। কিন্ত্ত ভগবান্‌ বুদ্ধদেব কুবলয়ার মনোগত অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া তাহার রূপলাবণ্য যৌবনের গর্বব খর্ব করিবার জন্য তাহার প্রতি একবার দৃষ্টিপাত করিলেন। ভগবানের সেই দৃষ্টিপাতের অলৌকিক অদ্ভুত প্রভাবে কুবলয়ার অনুপম বূপ, যৌবন লাবণ্য সহস! বিনষ্ট হইয়! গেল। যুবতী সুন্দরী কুবলয়া দহসা অশীতিবর্ষীয়৷ কগ্কালসা'র। বিকটরূপ| বৃদ্ধার আকৃতি প্রাপ্ত হইলেন। তখন তিনি মহাভীত হইয়া পড়িলেন এবং তৎক্ষণাৎ বুদ্ধদেবের চরণারবিন্দে সাঙ্গ প্রণিপাত পূর্ববক স্বীয় মহাপরাধের জন্য ক্ষম! ভিক্ষা রূরিতে লাগিলেন।

( ১৬৪ )

যখন তাহার হৃদয় ভীষণ অমুতাপে জর্জরিত হইল, তখন তাহার মহাপাপের সমুচিত প্রায়শ্চিত্ত হইতে লাগিল। অতিশয় অনুতাপে খন তাহার পাপ ক্ষালিত হইতে লাগিল এবং তাহার চিত্ত শান্তিপঢখের জন্য উতস্থৃক হইয়া পড়িল, তখন বুদ্ধদেব তাহার তত্রপ অবস্থা বুঝিতে পারিয়া তাহার প্রতি সদয় হইলেন এবং তাহার অপরাধের জন্য তাহাকে ক্ষমা করিলেন। তাহার কৃপায় কুবলয়ার হৃদয়ে বৈরাগাভাব উদিত হইল। * কুবলয়া ধর্দ্পথ অবলম্বন করিলেন। এইরূপ কথিত আছে যে, ভগবান বুদ্ধদেব সদয় হইয়া স্বয়ং তাহার শিক্ষার ভর গ্রহণ করিয়াছিলেন

ভগবানের ঈদৃশী দয়া দেখিয়া তাহার প্রিয়তম শিষ্য আনন্দ কুবলয়ার পূর্রবজন্মের স্বকৃতির বু প্রশংসা করিয়াছিলেন। কারণ, সাধারণ শিষ্যবর্গের শিক্ষাদানাদি কারধ্যভার আনন্দ প্রভৃতি প্রধান প্রধান শিষ্যদিগের উপরেই ন্যস্ত থাকিত। বুদ্ধদেব কেবল প্রধান প্রধান শিষ্যুদিগকেই শিক্ষা দিতেন; কিন্তু কুবলয়ার পুর্ববজন্মের এতই পুণাবল ছিল যে, সে স্বয়ং ভগবান্‌ বুদ্ধের নিকটে শিক্ষা দীক্ষা গ্রহণ করিবার মহাঁসৌভাগ্য লাভ করিতে সমর্থ হইয়াছিল। আনন্দ প্রভৃতি শিষ্গণ একদ! তগবান্কে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, 'ভগবন্, কুবলয়ার পূর্ববজন্মে এমন কি স্থকৃতি ছিল যে, সে তণ্প্রভাকে

( ১৬৫ )

আপনার পাদপঘ্কের নিকটে শিক্ষা পাইতে পারে ভগবান্‌ বলিলেন, “একদা বারাণসী-রাজের পুক্র কাশীম্মন্দর বৈরাগা অবলম্বন করিয়! হিমালয়ের এক নিভৃত নিকুপ্ঠে বসিয়া তপস্তা! করিতেছি লেন। এমন সময়ে একটি পরম সুন্দরী যুবতী মহিলা তথায় দৈধাশ উপস্থিত হইয়। দেখিল যে. একটি রাজস্রীসম্পন্ন যুব! পুরুষ যোগাননে বসিয়া ধ্যান করিতেছেন। তাহাকে “দখিবামাত্র স্থন্দরী যুবতী তাহার" প্রেমাকাঙিক্ষণী হইয়া উন্মত্ত হইয়া পড়িল এবং তাহার ধ্যানভর্গ করিবার জন্য নানাবিধ উপায় অবলম্বন করিতে লাগিল। কিন্তু যখন দেখিল যে, আমান যুব যোগী তাহার অবলম্বিত উপায়ে বিচলিত হইল না, তখন সে অত্যান্ত মর্মাহত হইয়! পড়িল এবং অবশেষে সে স্থান পরিত্যাগ করিয়া তাহার গন্তব্য স্থানে চলিয়। গেল। যাইবার সময় পথে তাহার মনে পূর্বের্বাস্ত ঘটনাটি মুহুমুহ্ুঃ আন্দোলিত হইতে লাগিল এবং অবশেষে তাহার স্বীয় রূপ-যৌবনে অতিশয় ধিক্কার জম্মিল। যখন তাহার মনে ধিক্কার জম্মিল, তখন তাহার মনে বৈরাগ্যভাব উদ্দিত হইল। অবশেষে মে কশ্যপের শিশুর গ্রহণ করিয়। নির্ববাণতত্বের আলোচন্পয় রত হইল যখন তাহার স্ৃত হইল, তখন পূর্ণ-সাধনার অভাবে সে নির্ববাণমুক্তি পাইল না; সুতরাং তাহাকে পুনরায় জম্মিতে হুইল। পূর্বব- জন্মের সেই নারীই এই জন্মের কুর্লয়া। পূর্ববাম্মের

( ১৬৪ )

বৈরাগ্যভাব বৌদ্ধধন্ম-শান্ত্রের আলোচনারূপ স্থৃকৃতির প্রভাবে জন্মে বৌদ্ধ-ধর্্মশান্্ আলোচনায় এবং বৈরাগো তাহার মতি হইয়াছে এবং আমার নিকটে শিক্ষা পাইবার অধিকারিণী হইয়াছে। জন্মেও যদি ইহার যোগসাধনা পুর্ণ না হয়, তাহা হইলে ইহাকে পুনরায় জন্মিতে হইবে। জ্ান-সাধনা পূর্ণ হইলে নিজেই নিজের নৈর্ববাণমুক্তি প্রাপ্ত হইবে

কাশীসুন্দরী।

বৌদ্ধযুগে ব্রঙ্গদত্ত-নামক, বারাণলী-রাজের কাশী-, স্ুন্দরী-নান্নী একটি ধর্মাশীল। কন্য। ছিলেন। মহারাজ ব্রহ্মদত্ত বৌদ্ধধন্ম(বলল্লী ছিলেন। " তিনি মহারাজনন্দিণী কাশীন্থন্দরীকে বালাকালে উত্তমরূপে শিক্ষা প্রদান করিয়াছিলেন। কুমারী কাশীসুন্দরী বাল্যপাঠ্য পুস্তক, সকল সমাপ্ত করিয়া বৌদ্ধ-ধর্সাাস্ত্র পড়িতে আরম্ত করিয়া- ছিলেন। তিনি অল্লবয়সে উক্ত ধর্মের অনেক : গ্রন্থ অধ্যয়ন করিয়াছিলেন তিনি যখন বিবাহযোগ্য বয় প্রাপ্ত হইলেন, তখন নানাদিগৃদেশের রাজকুমারগণ তাহার পাণিঞ্হণার্থ অধীর হইয়া পড়েন। কারণ, কাশী- স্বন্দরী অপূর্ব হুন্দরী ধর্ম্মনীতিশাস্ত্রে মহাশিক্ষিতা ছিজেন। ঈদৃশী রূপ-গুণবতী রাঁজকুমারীকে' বিবাহ

( ১৯৬৭ )

করিবার জন্য কোন্‌ রাজকুমার না ইচ্ছুক হয়েন ? তাহারা তাহাকে বিবাহ করিবার জন্য প্রার্থনা জানাইলে তিনি উহ প্রত্যাখ্যান করিয়৷ চির-কুমারীত্রত ধারণপুর্ববক যোগ- স|ধনা শাস্তালোচনায় জীবন উৎসর্গ করিতে ইচ্ছা! প্রকাশ করিলেন। রাজকুমারগণ প্রত্যাখ্যাত হইয়া স্ব স্ব দেশে ফিরিয়! গেলেন বটে, “কিন্তু তাহাকে বিবাহ করিবার স্বল্প তীহারা ত্যাগ করিলেন না। তাহারা তাহাকে আয়র্ত করিবার জন্য অনুকূল অবসর অস্বেষণ করিতে লাগিলেন। : একদ। ভগবান্‌ কশ্ূপ যখন খধিপত্তননামক স্থানে কিছুদিন বাস করিতে আসিয়াছিলেন, সেই সময রাজনন্দিনী" কাশীস্কন্দরী তীহার নিকটে: বৌদ্ধ শিক্ষা- লাভের জন্য অতিশয় প্রার্থনা করিতে লাগিলেন। ভগবান্‌ কশ্যপ সদয় হইয়া তীঙার প্রার্থনায় সম্মত হইলেন এবং তাহাকে শিক্ষা দিতে আরস্ত করিলেন। রাজকুমারগণ এই সংবাদ অবগত হইয়া কশ্যপের আশ্রমে আগমন, করিলেন এবং রাজকুমারীকেবৈলপূর্ববক তথা হইতে ধরিয়া লইয়া! 'যাইতে চেষ্টা করিলেন। ভঙ্গবান্‌ কশ্বুপ রাজ- কুমারগণের এইরূপ চেষ্টা দেখিয়া কাশীু্দরীকে বলিলেন, কি বিবাহ করিতে যা রং

(১৬৮)

ব্রত অবলম্বন করিয়া আপনার নিকটে জাজীবন ধর্মাশান্ অধ্যয়ন করিব, এইরূপ ইচ্ছুক হইয়াছি।” ভগবান্‌ কশ্যপ বলিলেন, “তাহা হইলে কিন্তু উহ্বারা তোমাকে বলপুর্ববক স্থান হইতে ধরিয়া! লইয়! যাইবে এবং যদি তুমি না যাও, তাহা হইলে উহ্ারা আমার আশ্রমের শান্তিভঙ্গ করিবে ।” কাশীনুন্দরী বলিলেন, “ভগবন্, আপনি নিশ্চিন্ত হউন আপনার এই শান্তিপূর্ণ আশ্রমের অণুমাত্র শান্তিভজগ হইবে না। আপনার আশীর্ববাঁদ-প্রভাবে উহা'রা আমাকে স্পর্শই করিতে পারিবে না। এই দেখুন, আপনার কৃপায় আমি আকাশমার্গে উত্থিত হইলাম” এই বলিয়া মহারাজ- কুমারী কাশীস্ুন্দরী যোগসাধন'-প্রভাবে আকাশে উঠিতে লাগিলেন ; অনেক উচ্চে উঠিয়া নিজের অদ্ভুত অদ্ভুত শক্তির পরিচয় দিতে লাগিলেন

রাজকুমারগণ এইরূপ অভূতপূর্ব অদ্ভুত মহাবিস্ময়- জনক ব্যাপার অবলোকন করিয়া স্তম্তিত হইয়া পড়িলেন এবং তীহাকে মহাযোগিনী অন্ভুত-শক্তিশালিনী সিদ্ধ মহিলা মনে করিয়া তাহার! তীহাকে প্রণাম করিতে লাগিলেন এবং নিঙ্জ নিজ অপরাধ ক্ষমা করিবার জন্য পুনঃপুন: করধোড়ে প্রার্থনা করিতৈ লাগিলেন অনন্তর তাহারা তাহাকে অত্যুচ্চ আকাশমার্গে ধোগাসনে উপবিষ্টী 'ও ধ্যাননিমন্ত্র- দেখিয়া অভিশাপভয়ে আর তাঁহাকে উদ্বেজিত না করিয়া সফলে হতাশ-হাদয়ে বিশ্ব

( ১৬৯ )

বিস্ফারিতনেত্রে স্বস্ব স্থানে প্রস্থান করিলেন। পরে ভগবান্‌ কাশ্যপ কাশীস্বন্দরীকে আহ্বান করিবামাত্র তিনি আকাশ হইতে অবতীর্ণ হইলেন এবং ভগবানের চরণার- বিন্দে প্রণাম করিলেন |, ভগবান্‌ কাশ্যপ তাহাকে জিজ্ঞাস করিলেন, “তুমি কাহার নিকটে যোগসাধনা শিক্ষা করিয়। আকাশে উঠিবার শক্তি লীভ করিয়াছ ? আমি তোমাকে এরূপ শিক্ষা! দান করি নাই। তুমি অল্পিনমান্র আমার নিকটে ধর্্ম-শিক্ষা* করিতেছ।” কাশীনুন্দরী বলিলেন, “আমি আপনার নিকটে শিক্ষার্থে আসিবার পূর্বে মহাত্মা কণকের নিকটে যোগসাধন! শিক্ষা করিয়াছিলাম। সেই শিক্ষার প্রভাবে আকাশে উঠিতে শিখিয়াছিলাম। কিন্তু হে ভগবন্, আপনার নিকট যে তত্বজ্ঞান শিক্ষা করিতে আসিয়াছি, উহা উক্ত যোগসাধনা-শিক্ষ। অপেক্ষা অনেক উচ্চশিক্ষা পূর্ববকালে ক্ষক্রিয়গণ কোন সুন্দরী পাত্রীকে বলপুর্ববক কাড়িয়া লইবার জন্য পরস্পর যুদ্ধ করিতেন। কোন স্বয়ংবর-সভায় বা কোন স্থানে কোন ক্ষত্তিয়-রাজ: কন্ঠা কোন ক্ষত্রিয-রাজকুমারের গলে যখন বিবাহমাল. অর্গণ করিতেন এবং ' যথাবিধি বিবাহের পরে, ধন শশুরালয়ে যাইতেন, সেই সময়ে পথে তাহাকে বু বর্ধক অপহরণ করিবার .জন্থা রাজকুমারগণ - পরস্পর. বৃ করিতেন। হার সৈশ্তবল বেশী থাকিত, ডিনিই বিষাহিতা নারীকে ধরিয়া স্বয়াজো লইয়া বাইন কছ

৯৫

( টা

বা তাহাকে প্রধানা মহিষী করিতেন, কেহ বা অপ্রধানা মহিষী করিতেন কোন কোন এইরূপ. বিবাহিতা! নারী শগুরালয়ে আমিবার সময়ে পথে এইরূপ বিপদে পড়িয়া আত্মহত্যা করিয়৷ নিজের সতীত্ব বজায় রাখিতেন। দিল্লীর সববশেষ হিন্দু সম্রাট পূর্থীরাজের সময় পর্যান্ কষপ্িয় দিগের এতরূপ বীভৎসকাণ্ড মধ্যে মধো দেশের শান্তি- তঙ্গ করিত। পূর্থীরাজের পর হইতেই ইসা দেশ হইতে উতিয়া যায়।”

ক্ষেমা |

একদা ভগবান্‌ বুদ্ধদেব শ্রাবন্তী নগরীতে বাস. করিতেছিলেন। সেই সময়ে প্রসেনজিৎ ব্রহ্গাদত্ত- নামক দুইটি প্রতাপশালী রাজার মধ্যে একটি বিবাদ ঘটিয়াছিল। এই বিবাদউপলক্ষে যখন যুদ্ধ অনিবার্ধ্য হইয়া উঠিল, তখন রাজা প্রসেনজিতের একটি কন্যা রাজা ব্রহ্ষাদত্তের একটি পুজ্র ভূমিষ্ঠ হুইয়াছিল। তখন রাজা প্রসেনজিও রাজা ব্রল্মদত্ডের নিকটে এই প্রস্তাব করিলেন যে, যদি তিনি ভবিষ্যতে নিজের এই পুজ্রের সহিত তাহার এই কন্যার বিবাহ দেন, তাহা হইলে তিনি এই যুদ্ধে ক্ষান্ত হইয়৷ সৌহার্দ্য সংস্থাপন করিতে পারেন রাঙা ব্রহ্মদত্ত এই-প্রস্তাবে সম্মতি দিলেন। এই প্রস্তাব,

( ১৭১ )

অনুসারে যুদ্ধ থামিল। এই সময় হইতে তাহাদের মধ্যে মিত্রতা-চিহ্ুস্বরূপ পরম্পর উপটৌকন আদান-প্রদানাদি কার্য চলিতে লাগিল। রাজ! প্রসেনজিত নিজের কন্যার নাম রার্িলেন) কমা এই কন্ঠা বিপৎকালে জন্মিয়া ক্ষেম অর্থা মঙ্গল বিধান করিয়াছিল বলিয়া তিনি কন্য॥াকে ক্ষেমা এই নাম প্রদান করিয়াছিলেন। ক্ষেমা শৈশবকাল হইতেই অতিশয় সুশীলা ধর্মনানিষ্ঠা ছিলেন এবং লিখনপঠনে অত্যন্ত আসক্ত! ছিলেন। তাহার ম্ছু- স্বভাব, স্ুবুদ্ধি স্থুমেধা দেখিয়া তাহার পিতা তাহাকে বাল্যকালে মতি যত্রের সহিত শিক্ষ। দিতে লাগিলেন! কতিপয় বণর পরে ক্ষেমা যখন বিবাহযোগা বয়ঃগ্রাপ্ত হইলেন, তখন তিনি স্বীয় মনোভাব প্রকাশ করিলেন যে, তিনি জীবনে কখনও বিবাহ করিবেন না। আজীবন কুমারাব্রত অবলম্বন করিয়া বুদ্ধদেবের চরণপঙ্কজে মনঃ সম্মিবেশিত করিবেন বৌদ্ধ-ধর্মমশাস্ত্রচচ্চায় কলাতিপাত করিবেন রাজ৷ প্রসেনজিৎ কন্যার ঈদৃশী প্রতিভা শ্রবণ করিয়া বড়ই ভীত হইলেন। কারণ, তিনি রাজা ব্রন্মদত্তের, পুত্রের সহিত ক্ষেমার বিবাহ দিবেন বলিয়৷ পুর্বে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়াছেন ।* এক্ষণে তিনি যদি ক্ষেমার বিবাহ না দেন, তাহা হইলে তাহাকে রাজা ব্রহ্মদত্তের কোপে পড়িতে হইবে আবার যুদ্ধ বাঁধিবে। যুদ্ধ বাধিলেই অহান্‌ অর্থবায়, মনের অশান্তি, প্রজার, অমঙ্গল কষ্ট

( ১৭২ )

স্বতরাং রাজ! প্রসেনজিত এই সকল ভাবিয়া অতান্ত বাঁকুল হইলেন। ছিনি রাজা ব্রহ্ষমদত্তকে লিখিলেন যে, তিনি যেন তাহার পুজ্রের বিবাহের জন্য অতি শীঘ্র শীঘ্ব আয়োজন করেন।

বরপক্ষ অতিশীঘ্ব আয়োজন করিলেই যেন কেন প্রকারেণ, অন্ততঃ বলপূর্ববক ক্ষেমার নিবাহটা সম্পন্ন হইতে পারে, এই আশায় রাজা প্রসেনজিত ক্ষেমার শীঘ্র বিবাহের আয়োজন করিতে লাগিলেন ক্ষেমা, পিতার এই অভিপ্রায় গোপনে অবগত হইয়া জেতবনে ভগবান্‌, বুদ্ধদেবের নিকটে পলায়ন করিলেন। ভগবান্‌ বুদ্ধদেব ক্ষেমকে উপদেশ-দানের যৌগাপাত্রী বিবেচনা করিয়া স্বয়ং তীহাকে শিক্ষা দিতে আরম্ভ করিলেন। ভগবানের অনির্ববচনায় পরম ন্তুন্দর উপদেশ-রীতির প্রভাবে ক্ষেমা অতি অল্পদিনের মধ্যেই বৌদ্ধধন্মের উচ্চশ্রেণীস্থ বিজ্ঞ ছাত্রীগণের মধ্যে পরিগণনীয়া হইলেন এবং যোগ-সাধনায় অলৌকিক সিদ্ধিলাভ করিলেন। তাহার পিতা এতদিন যাব ভারতের বনু স্থানে অন্বেষণ করিয়া বখন কন্যার কোন সন্ধান পাইলেন না, তখন অগত্যা ছুঃখিত-চিত্তে দিনযাপন করিতে লাগিলেন। পরে তিনিণ সন্ধান পাইলেন ষে, তাহার কন্য! ভগবান্‌ বুদ্ধদেবের নিকটে জেতবনস্থ আশ্রমে শিক্ষালাত করিতেছেন। রাজা প্রমেনজিতৎ তৎক্ষণাৎ ক্ষেমাকে আশ্রম হইতে ধরিয়া আনিবার জন্য নিজের

(5

আত্মীয়গণকে পাঠাইলেন। তাঁহারা জেতবনে উপস্থিত হইয়া ক্ষেমাফে বলপুর্ব্ক গৃহে ধরিয়া লইয়। গেলেন। তখন রাজা প্রসেনজিশ কন্যার শীঘ্ব বিবাহের আয়োজন করিতে লাগিলেন ক্রুমে বিবাহের দিন উপস্থিত হইল গভদিনে শুভক্ষণে পুরোহিত মহাশয় বিবাহ-মন্ত্র উচ্চারণ করিতে আরম্ভ করিলেন। ক্ষেমার পিতা ক্ষেমার হস্ত ধরিয়া যেই বরের হস্তে অর্পণ করিতে উদ্যত হইলেন, এমন' সময়ে “আলিপানাস-চিত্রিত মঙ্গলপীঠে উপবিষ্টা ক্ষেমা গীঠেসমেত ধীরে ধীরে আকাশমার্গে উঠিতে লাগিলেন আকাশে উথ্বিত হইয়া নানাবিধ বিস্ময়কর ব্যাপার প্রদর্শন করিতে লাগিলেন। এই 'অন্ভুতকাণ্ড দেখিয়া বিবাহ-সভাস্থ সকলে অবাক স্ত্তিত হইয়া গেল। অনন্তর সকলের সবিনয় প্রার্থনায় তিনি আকাশ হইতে অবতীর্ণ হইলেন। সকলেই তাহাকে মহাযোগিনী সিদ্ধা মহিলা মনে করিয়! প্রণাম করিতে লাগিল। পুনরায় তাহার বিবাহের কথ! উত্থাপন করিতে কেহ সাহসী হইল না। বিবাহ স্থগিত হইল। ক্ষেমা এক্ষণে পিতার অনুমতি গ্রহণ করিয়া নির্র্বাণমুক্তিপথে অগ্রসর হইবার জন্য উপযুক্ত সাধনায় নিযুক্ত হইলেন। ভগবান্‌ বুদ্ধদেব বলিতেন, “ক্ষেমা যোগশিক্ষা-প্রভাবে আকাশে উত্থান" শক্তির (শিক্ষা অপেক্ষা অধিকতর প্রশংসনীয় শিক্ষা লাভ করিয়াছিল৮। |

( ১৭৪ )

প্রভব। |

শ্রাবন্তী নগরীতে কোন এক ধনবান্‌ বণিকের প্রভবা- নানী একটি যুবতী কন্যা ছিলেন। কণ্যাটির পাণিগ্রহণার্থ নগরার মন্ত্রান্ত লোক সকল এব? অন্যান্য দেশের রাজ- কুমারগণ লালায়িত হইয়৷ পড়েন। কারণ, 'প্রভবা একে রূপনতী, গুণবত্তী যুবতী, তায় আবার বিপুলধনশালী পিতার একমাত্র উত্তরাধিকারিণী। এইরূপ পাত্রী পাইলে, অনেকেই বিবাহ করিতে ইচ্ছুক হয়। 'পাত্রগণ, প্রভবার পিতার নিকটে বিবাহ-প্রস্তাব প্রেরণ করিলেন। কিন্তু গ্রভবা, তাহাদের প্রস্তাব অগ্রাহ্য করিয়া ভগবান্‌ বুদ্ধ- দেবের মিকটে আজীবন নির্ববাণ-মোক্ষশান্ত্র” অধ্যয়নাথ ইচ্ছা প্রকাশ করিলেন এবং পিতার অনুমতি লইয়া ভগবানের নিকটে গমন করিলেন। ভগবানের নিকটে. কয়েক বতসর অধ্যয়ন করিয়া প্রভবা মহাপ্রভাবা হইয়া উঠ্টিলেন। ক্রমে তিনি বৌদ্ধ-জ্ঞানীদিগের অর্হু-নামক উচ্চ পদবী লাভ করিলেন। বৌদ্ধ-গ্রস্থে লিখিত আছে যে. এক জন্মেই কেহ তত্বজ্ঞানশাস্ত্রে উচ্চ শিক্ষা লাভ করিতে পারে নাই। প্রভবা এই জম্মেই যে ঈদৃশী উচ্চ- শিক্ষিতা হইয়াছিলেন, ইহার কারণ এই যে, পূর্ববজন্মে তাহার জ্ঞান বৈরাগ্যভাব প্রবল ছিল, তাই, তিনি সেই সংস্কারবলে এই কম্মে অল্লকালমধ্যে শিক্ষায় উন্নতি লাভ করিতে পারিয়াছিলেন। পূর্ববজন্মে প্রভবা বন্ধুমনামক

( ১৭৫ )

রাজার প্রধানা মহিষী হইয়া প্রভূত শিক্ষা পাইয়াছিলেন, তাই, তিনি জন্মে নির্নবাণ-মুক্তিশান্্ের শিক্ষযিত্রী হইতে পারিয়াছিলেন |

পাশপাশি

সুপ্রিয়!

বৌদ্ধযুগে অনাথপিগুদ-নামক কোন এক ব্যক্তির স্প্রিয়া-নান্না এক* কন্যা ছিলেন। স্মৃপ্রিয়ার বালা-বৃত্তান্থ আবণ করিলে বিস্মিত হইতে হয়। স্প্রিয়ার জন্মের সাত বসর পরে একদিন একটি জ্ঞানী বৌদ্ধ পরির্রাঞ্তক আনাথপিগুদের বাটীতে ভিন্লুঃ করিতে আসিয়াছিলেন। তিনি তথায় আসিয়া বৌদ্ধধন্ম সম্বন্ধে অনেক সারবান্‌ উপদেশ দিয়াছিলেন। সপ্তমবর্ষীয়া বালিকা স্প্রিয়া সকল উপদেশ শুনিয়া সেই বয়সে বৌদ্ধ-সন্ন্যাসিনী হইবার জন্য পিতার অনুমতি প্রার্থনা করিলেন। সংসারে বৈরাগা- ভাব উপস্থিত না হইলে কেহ সন্যাসধর্্ম বা ত্যাগধর্ম অবলম্বন করে না। তাহার পিতা কন্যার এই অভূতপূর্বব আগ্রহ দেখিয়া অত্যন্ত বিশ্মিত হইলেন। সুপ্রিয়া সন্ন্যাসিনী হইয়া জ্ঞানোপার্জজনের জন্য অতিশয় আগ্রহ প্রকাশ করিতে লাগিলেন। তাহার পিতা, তাহার এই সঙ্কল্প ত্যাগ করাইতে যথেষ্ট চেষ্টা করিলেন, কিন্তু কোন- মতেই তিনি নিজ সঙ্ল্প ত্যাগ করিলেন 'না। অগত্যা তিনি

( ১৭৬ )

অনুমতি-প্রদ'নে বাধ্য হইলেন। স্বুপ্রিয়া সপ্তমবর্ষ বয়সে সন্ন্যাসিনী হইলেন গৌতমী তাহাকে বৌদ্ধধর্থ্মে দীক্ষিত করিয়াছিলেন বৈরাগ্যধন্নী অবলম্বন করিয়া তিনি বৌদ্ধশান্ত্র অধ্যয়ন করিতে আর্ত করিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে যোগসাধন শিক্ষা করিতে লাগিলেন। কতিপয় বর্ষ পরে স্িনি অস-নামক উচ্চ পদবী লাভ করিয়াছিলেন স্প্রিরা তত্বজ্ঞানবতী বলিয়া যন্রপ প্রশংসা লাভ করিয়া- ছিলেন, তন্রপ ছুর্ভিক্ষক্রিষ্ট রুগ্ন বিপন্ন দীনগণের ক্লেশ নিবারণ করিতেন বলিয়া তিনি অতি যশম্িনী হইয়াছিলেন তাহার পহিত্র কান্তি সর্ববত্র পরিব্যাণ্ত হইয়াছিল। একদা দেশমধ্যে' মহাছুর্ভিক্ষ হইয়াছিল। দুভ্তিক্ষক্রিষ্ট ক্ষুধার্ত নরনারীগণকে মৃত্যুমুখ হইতে রক্ষা করিবার জন্য তিনি দ্বারে ছারে ভিক্ষা! করিয়াছিলেন এবং অনেক লোককে অন্ন দিয় বাচাইয়াছিলেন

এই ঘটনার তিন মাস পরে যখন ভগবান্‌ বুদ্ধদেব বহুশিষ্য সহ শ্রাবস্তী নগরী হইতে রাজগৃহ-নামক স্থানে আমিতেছিলেন, সেই সময়ে তিনি পথে আসিতে আসিতে এক নিবিড় অরণ্যান্ীর মধ্যে আলিয়া পড়েন। তথায়, কোনরূপ খাদাদ্রব্য .পাইবার কৌন সম্ভাবনা ছিল না। স্বপ্রিয়৷ কোন প্রকারে জানিতে পারিলেন যে, ভগবানের শিশ্যবর্গ খাদ্যাভাবে অরণ্যানীমধ্যে মহাকষ্টে পতিত হইয়াছেন এই'সংবাদ অবগত হইয়া তিনি তশুজণা

( ১৭৭ )

তথায় গমন করিলেন, তীহাদের অবস্থা নিরীক্ষণ করিলেন এবং তত্ক্ষণা নিজের ভিক্ষাপাত্র ধাহির করিয়া নগরাভি- মুখে প্রস্থান করিলেন ॥। নগরে আসিয়া একপাত্র অন্ন ভিক্ষ! করিয়া পুনরায় অরণো গমন করিলেন তথায় গিয়া যোগবলে একপাত্র অন্নে বুদ্ধদেবের সহত্র সহত্র শিষ্তকে পরিতোষের সহিত ভোজন করাইয়া পরিতৃপ্ত করিলেন। তৎপরে তাহার যোগবলে তাহার ভিক্ষাপাত্র অমৃতপ্পসে পুর্ণ হহুপে তিনি দকলকে অমুৃতরস পান করাইলেন। অমৃতরস পান করিয়া সকলে কয়েক- দিন পর্য্যন্ত ক্ষুধা অনুভব করে নাই। অনাথপিগুদের কন্তা স্প্রিয়া ফেগবলে এইরূপ অদ্ভুত শক্তিলাভের *জন্য এবং অতি অল্পবয়সে “ভিক্ষুণী” 'হইয়। জ্ঞানার্জন পরোপ- কারের জন্য বৌদ্ধ-জগতে চিরস্মরণীয়৷ হইয়াছিলেন। একদা ভগবানের প্রধান শিষ্য আনন্দ ভগবান্‌ বুদ্ধদেবকে জিজ্ঞাস! করিয়াছিলেন, “ভগবন্‌, সুপ্রিয়া এত অল্পবয়সে অরহৎ-পদবী লাভ করিল কিরূপে % ভগবান্‌ বুদ্ধদেব বলিলেন, “একদা ভগবান্‌ কাশ্বপ যখন কাশীতে অবস্থিতি করিতেছিলেন সেই সময়ে বারাণসী-নগরীস্থ কোন এক বণিকের একটি পরিচারিকা প্রভুর জন্ক উত্তম সুমিষ্ট পিক লইয়া পথে যাইতেছিল। সেই সময়ে ভগবান্‌ কাশ্প এক গৃহস্থের বাটীতে ভিক্ষা করিতে ফাইতেছিলেন। পরিচারিকা তাহাকে চিনিত। সে তাহাকে দেখিরামাত্র হস্তস্থিত

( ১৭৮ )

পিষ্টক তাহাকে প্রদান করিয়াছিল। ভগবান্‌ কাশ্মপ তাহার প্রতি সন্তুষ্ট হইয়া তাহাকে বৌদ্ধধর্ম দীক্ষিত করিয়াছিলেন এবং অনেক শিক্ষা দিয়াছিলেন। সে তাহার নিকটে দীক্ষিত শিক্ষিত হইয়া উ্জান বৈরাগ্য- বলে নির্বাণ-পথের দিকে অনেকট! অগ্রসর হইয়াছিল পুর্ববন্মের সেই পরিচারিকাই এই জন্মের স্থৃপ্রিয়া। পূর্বজন্মের সংস্কার-প্রভাবে এই জন্মে এড অল্লবয়সে সুপ্রিয়া জ্ঞানবতী বৈরাগ্যবতী হইয়াঞ্ছে।

কুঝ্সাবতী |

বৌদ্ধযুগে উত্পলবতী নগরাতে রুল্ম।বতী-নাম্পী একটি দয়াবতা, ধনবতী জ্ঞ্কানবতা বৌদ্ধ-মহিলা বাস করিতেন নগরীতে অন্নবন্ত্রভাবে কেহ কষ্ট পাইলে বা রোগে, শোকে মহাবিপদে পড়িয়া কেহ যাতনা ভোগ করিলে তিনি সবিশেষ অনুসন্ধানে তাহা অবগত হইয়া ক্ষুধার্ত, শোকার্ত, রুগ্ন মহাবিপন্ন ব্যক্তিকে যথাশক্তি সাহাযা করিতেন। তীহার প্রতিবেশী প্রতিবেশিনীদিগের মধ্যে কেহ বিপদে পতিত হইয়াছে কি না, তাহা অবগত হইবার জন্য তিনি সদ! গোপনে অনুসন্ধান করিতেন এবং সেই বিপদ হইতে তাহাকে উদ্ধার করিতেন। তাহার অসীম দয়ার কথা ,গুনিলে গাত্র রোমাঞ্চিত হইয়া উঠে

( ১৭৯ )

এবং বিম্ময়সাগরে নিমগ্ন হইতে হয়। একদা দেশমধ্যে মহাদুভভিক্ষ, উপস্থিত হইয়াছিল।' খাদ্য-বস্তুর অভাবে নগর উপনগরের তরুলতা, পত্র, পুষ্প, এমন কি, তৃণ প্যান্ত উদ্চিদ-পদীর্থ সকল ক্ষুধার্ত নরনারীগণের উদরসাৎ হইয়া গিয়াছিল। দুভিক্ষক্লিষ্ট নরনারীগণের শীর্ণ স্বুত- দেহসমুহ ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত হওয়াতে এবং ক্রমাগত কষধার্ত প্রাণিগণের আর্তনাদ উত্থিত হওয়ায় নগরটি বিরাট শ্বাশামরূপে প্রতীয়মান হইয়াছিল দয়াবতী রুক্সাবতী একদিন নগরীতে বিচরণ করিতে করিতে দেখিতে পাইলেন যে, একটি ক্ষুধার্ত! কন্কালসার! নারী খাদ্যাভাবে অনগ্ঠোপায় হইয়া তাহার ,সদ্যোজাত শিশুর" সজীবদেহ ভক্ষণ করিতে উদ্যোগ করিতেছে !! রুক্পাবতী এই ভয়ানক অমানুষিক অস্বাভাবিক বীভতসকাণ্ড দেখিয়া স্তম্ভিত হইয়া পড়িলেন। কিন্তু ইহাতে কিংকর্তব্যবিমূঢ় না হইয়া নর-পিশাচীকে বলিলেন, “অয়ি ক্ষুধার্তে নারি, ক্ষান্ত হও! ক্ষান্ত হও ! তখন সেই ক্ষুধার্তা নারী বলিল, “তবে কি খাব? দেশে ক্ষেত্রের তৃণ পধ্যস্ত পদার্থ লোকের উদরসাত্ড হইয়া গিয়াছে তবে এক্ষণে কি খাই ?” কুল্পাবতী বলিলেন, ক্ষান্ত হও। তোমার এই সদ্যোজাত শিশুকে ভক্ষণ করিও না। আমি গৃহ হইতে তোমার জন্য খাদ্য-বস্ত আনিয়া শীগ্রই তোমাকে দিব | তুমি তোমার নিজের ছেলেকে নিজে খাইও না। ক্ষান্ত হও।,

(১৮০ )

বুদ্ধিমতী রুল্সাবতী তাহাকে এইরূপ আশ্বাস দিয়া তাহাকে আপাততঃ এই অস্বাভাবিক ভীষণকাণ্ড হইতে নিবুস্ত করিলেন। সেও কিঞ্চি খাদ্য পাইবে, এই কথা শুনিয়া কথঞ্চিত আশ্বস্ত হইল। কিন্ত পরক্ষণে রুক্সাবতীর, এই এক ভাবনা! উপস্থিত হইল যে, যদি তিনি খাদা আনয়নের জন্য গুহে গমন করেন, তাহা হইলে দেই অবসরে এই ক্ষুধার্তা নারী ক্ষুধাগ্রির জ্বালায় অস্মির হইয়া যদি তাহার শিশুটিকে খাইয়৷ ফেলে, তাহা হইলে শিশুর প্রাণরক্ষা কর! হয় না। তাহার প্রাণরক্ষার্থ তিনি যে উপায় উদ্ভাবন করিলেন, তাহা ব্যর্থ হইয়া যাইবে এবং যদি শিশুটির প্রাণরক্ষার্থ তিনি তাহার মাতার ক্রোড়, হইতে তাহাকে বলপুর্ববক কাড়িয়া লইয়া ত্বরায় গুহে প্রস্থান করেন, তাহা হইলে এঁ ক্ষুধার্তা নারী খাদ্য- বিয়োজন-জনিত শোকে, তাপে ক্ষুধানল-জ্বালায় অস্থির হইয়া মরিয়া যাইবে। স্ত্বতরাং স্থান পরিত্যাগ করিয়া যাওয়াও কোন প্রকারেই সঙ্গত নহে। শিশুকে রক্ষা করিতে গেলে প্রসূতির প্রাণরক্ষা করা হয় না, আর প্রসূতির প্রাণরক্ষার্থ গৃহে খাদ্য আমিতে গেলে সেই অবসরে প্রসূতি শিশুটিকে ভক্ষণ করিয়া ফেলিবে, এইরূপ বিবেচনা করিয়া তিনি «ন যো তস্ট্ৌ” অবস্থায় মহা- সঙ্ধটেই পড়িলেন। কিন্ত এই উভগ্-সঙ্কট হইতে নিষ্কৃতি লাভার্থ তাহাকে বেশীক্ষণ ভাবিতে হয় নাই। তিনি শীত

(১৮১)

কর্তব্য স্থির করিয়া ফেলিলেন দৈব-ছুর্ববপাকে পড়িয়! জননী নিজের সন্তানের রক্ত-মীংস দ্বারা জঠরানল নির্ববাপিত করিলে জগতে স্বাভাবিক নিয়ম উল্লঙ্ঘনের একটা নৃত্তন দৃ্টীন্ত-কল্ঙ্ক থাকিয়। যাইবে, এইরূপ বিবেচন! করিয়া রুক্সাবতী স্থ্যা, ধৈর্য্য গান্তীর্্য সহকারে এক- খানি স্থৃতীক্ষ শাণিত ছুরিকা বস্তের ভিতর হইতে বাহির করিলেন এবং তদ্দারা নিজের মাংসল স্তনদ্ধয় কর্তন করিয়া সম্তানৈর রক্ত-মাঃসলোলুপা ক্ষুধার্তা নারীকে প্রদান করিলেন। নরপিশাচীও ভৈরব-নৃত্যের সহিত হস্ত প্রসারিত করিয়া কর্তিত মাংসল স্তনদ্বয় ভক্ষণ করিতিত লাগিল। "সেই স্থযোগে অদ্ভুত-দানশীলা রুল্লাবতী সেই সদ্যোজাত শিশুটিকে ক্রোড়ে লইয়া! তথা হইতে শীঘ্র প্রস্থান করিলেন। তাহার বক্ষঃস্থল হইতে প্রবাহিত 'রুধিরধারা উত্পলবতী নগরীর রাজমার্গ রঞ্জিত করিয়া ফেলিল। তাহার কীণ্তিগাথ। স্থবর্ণাক্ষরে পালি ভাষায় লিপিবদ্ধ হইল। তাহার জয়গানে সমগ্র দেশ মুখরিত হইল। তাহার এই অদ্ভুত দানশক্তির কথা শুনিয়া তাহার পদধূলি লইবার জন্য নগ্ররীর নরনারীগণ দলে দলে তাহার বাটীতে আসিতে লাগিলি। তাহার বাটা প্রতিদিন জনতা- পূর্ণ হইতে লাগিল দেখিয়া তিনি বড়ই রিরক্ত হইতে লাগিলেন এবং নিজের প্রশংস! নিজে শ্রবণ কর! দস্তজনক মহাপাপ এইরূপ বিবেচন! করিয়া ড্রিনি এই পাপ হইতে

১৬

( ১৮২ )

নিষ্কৃতি-লাভার্থ লোকালয় পরিত্যাগ পুর্ববক বিজন বনে বাস করিতে প্রস্থান করিলেন। তথায় তিনি ফল-মুলমাত্র আহার করিয়৷ নির্ববাণমুক্তিপথে অগ্রসর হইবার জন্য বৌদ্ধশাস্্-চর্চায় মনোনিবেশ ক্রিয়াছিলেন। কতিপয় জ্ঞানপিপাস্ত্র তপস্থিনী নারী তথায় তীহার নিকটে বৌদ্ধ- শাস্ত্র শিক্ষা করিয়া জীবনের চরম উতুকর্ষ সাঁধনকরিয়া- ছিলেন।

মালিনী

বৌদ্ধযুগে ভারতবর্ষের উচ্চ মন্্রান্ত-বংশের মহিলাগণ স্বস্ব উচ্চ অট্রালিকায় অতুল এঁশ্র্্য মহাম্থখ-সম্তভোগ পরিত্যাগ করিয়া নির্ববাণমুক্তিপথে অগ্রসর হইবার জন্য বৈরাগ্যা-ব্রত অবলম্বন করিতেন এবং অধ্যয়ন অধ্যাগ্রনাদি তপস্ঠায় সদ! রত থাকিয়া মঠে বাদ করিতেন। তীহারা দিগন্তব্যাগী যশ£সৌরভে মত্ত হইবার জন্য কোন কার্ধযা- ক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইতেন না। তীহারা যশের প্রত্যাশাই করিতেন না। তীহারা দক্ষিণ-হস্ত দ্বারা ধখন কাহাকে, কিছু দান করিতেন, তখন তাদের বামহস্ত উহা! জানিতেই পারিত না। তীহারা কামনাশূন্য হইয়া লোক- হিতত্রতে দীক্ষিত হইতেন। তাঁহাদের অঙীম অধ্যবসায় সুচিত করিবার জন্তই যেন বোধ হয় যে, “মন্ত্রের সাধন:

( ১৮৩)

কিম্বা শরীর-পাতন,” এই মহাবাক্যটি কবিমুখ হইতে নিঃস্ত হইয়াছিল। “চন্তীগতে চণ্ড মুণ্ডনামক শস্তাস্থরের দুইটি দূতের নিকটে হিমাচলশোভিনী ভগবতী দুর্গার মুখ হইতে * উচ্চার্রিত প্রতিজ্ঞার ম্যায় তাহাদের দুঢু প্রতিজ্ঞা ছিল। তাহারা জগতে যে বস্তুকে সভা বলিয়া বুঝিতেন, সুষ্য পশ্চিমদিকে উদিত হইলেও, তাহা পরিত্যাগ করিতেন না। তাহাদের সৎসাহসের নিকটে ভীমপরাক্রম বীরপুরুষগণকেও পরাজয় স্বীকার করিতে হইত। সংস্কৃত অভিধান-গ্রন্থপ্রণেতারা কেন যে, নারী- সাত্রকে “অবলা” শব্দের পর্য্যায়ে অন্তর্গত করিয়াছেন, তাহার কারণ তীাহারাই বুঝিতেন। কারণ, 'মানসবল, সাহসবল, বুদ্ধিবল, ধন্মবল চরিত্রবলে বলীয়লী ভারতীয় মাধ্য-মহিলাদ্দিগকে “অবলা” শব্দে অভিহিত করা কোন প্রকারেই সঙ্গত বলিয়া! বোধ হয় না। তারত-ললন। দেহবলেও যেরূপ বলীয়সী ছিলেন, তাহ। রাণী দুর্গাৰতী প্রভৃতি ক্ষজিয়! বীর-রমণীর বীরত্ব শ্রুবণে যথেষ্ট অবগত হওয়া যায়। অধুনা ধাহারা কোন কোন মহিলার বক্তৃতা শক্তি দেখিয় বিশ্মিত হয়েন, তাহারা রাজনন্দিনী মালিনীর নিম্নলিখিত বৃত্তান্ত পাঠ করিলেই বুঝিতে পারিবেন বে, প্রাচীন ভারতের কুল-মহিলারা কোন এক শান্দ্রের কেবল অনুবাদ মাত্র পাঠ করিয়া সেই শান্দ্রের অনুবাদ প্রকাশ করিতেন ন! এবং ণবাহব1”” লইবার- প্রত্যাশায় এবং,

(১৮৪ ) “চাদা” আদায়ের চেষ্টায় বক্তৃতা-জাল বিস্তার করিয়া অজ্ঞ ধনিগণকে মতস্তের ন্যায় আকর্ষণ করিতেন না। নিজের এহিক স্থখ-স্বচ্ছন্দতালাভ এবং নিজের অভীফ- পুরণের জন পরের দেশে পর্যাটন কেরিতেন না। তাহার অগ্রে স্বদেশের লোকের পারলৌকিক মঙ্গলসাধনার্থ যত্ুৰতী হইতেন। তাহারা স্বার্থসাধনোদেশে অন্য দেশীয় লোকের অন্ঞ্ত। দর্শনে কাতরতার ভান দেখাইয়া মায়াবিনী ডাকিনীর হ্যায় অশ্রু বিপঙ্জন করিতেন না। মায়াবিনী ডাকিনী (ডাইনী ) যেমন কোন একটি শিশুর মনে বিশ্বান উৎপাদনের নিমিত্ত শিশুর ক্রন্দন শুনিয়া কাতরত| দেখায় এবং তাহার প্রতি সমবেদন! প্রদর্শনের জন্য নিজেও ছলপুর্ণ ক্রন্দন করিতে করিতে অশ্রুপাত করে, প্রাচীন ভারতীয় আধ্য শিক্ষিতমহিলারা তত্রপ করিতেন না। তীহারা ভারতীয় জান কন্ম-শাস্্ে ব্ৃতা দিবার পুর্বে সর্বাগ্রে নেত্রম্বরূপ সংস্কত ব্যাকরণ বথাৰিধি পাঠ করিতেন তৎপরে কতিপয় সংস্কৃত সাহিত্য- গ্রন্থ পাঠ করিতেন। সংস্কৃতে ব্যুৎপন্ন হইয়া আগ্রে মূল- গ্রন্থসকল যথাবিধি পাঠ করিতেন, পশ্চাণ সংগ্রহ-গ্রন্থ আলোচনা করিতেন এবং সমস্ত” গ্রন্থের সরল ব্যাখা প্রচার করিয়া জনসমাজের প্রকৃত কল্যাণ সাধনকরিতেন। তাহাদের পাণ্ডিত্যপূর্ণ ব্যাখ্যান শুনিয়া লোকসকল অনির্ববচনীয় আনন্দ, অনুতব করিত, মুগ্ধ হইত প্রকৃত-

( ১৮৫

রূপে উপকৃত হইত তীহারা যে ধন্দের উপদেশ দিতেন, সেই ধর্মের শাস্বীয় ভাষা আয়ত্ত করিতেন। পালি 'সংস্কৃত ভাষায় পাপ্ডিতালাভ করিয়া পশ্চা বৌদ্ধধর্ম বিষয়ে বতুতা করিতেন যে দেশীয় লোকের নিকটে যে ধন্ঠ প্রচার করিতে হয়, অগ্রে তদ্দেশীয় ভাষা শিক্ষা করাই উচিত। আরবদেশে গিয়া আরবীয় লোকের নিকটে গ্রীক ভাষায় আরবীয় ধর্মশাস্ত্র প্রচার করা অত্যন্ত উপহাস- জনক*। তাহারা অর্থ-সংগ্রহের নিমিত্ত পরদেশ পর্যটন করিতেন না। সতকার্যের জন্য অর্থের প্রয়োজন উপস্থিত হইলে নিজেরাই অর্থ দান করিতেন সংকার্যোর জন্য তাহাদের অর্থের অভাব হইত না অন্যের নিকটে অর্থ- সাহাষালিপ্ন। তীহাদের হৃদয়ে স্থান পাইত না। তীহার! এক একটি লক্ষপতি এবং কোটি-পতির কন্যা ছিলেন। তাহাদের মধ্যে একটি মাত্র মহিলার বৃত্তান্ত এস্থলে বিবৃত হইতেছে £--

ার্দ্বিসহত্র বর্ষ পূর্বে বৌদ্ধযুগে বারাণসী নগরীতে কৃকী-নামক এক রাজা ছিলেন। মহারাজ কৃকী সনাতন বৈদিকধন্মাবলম্বী ছিলেন। তিনি বারাণমীর স্বাধীন হিন্দু রাজা ছিলেন। ণ্তাহার প্রজারঞ্জনমহিমায় বারাণমী- রাজ্য অতিশয় সমৃদ্ধিশালী হইয়া উঠিয়াছিল। বারাণসী- রাজ কৃকীর মালিনীনান্দী এক কন্যা! ছিলেন। মহারাজ কন্তাকে তশ্কালোচিত শিক্ষা প্রদান করিয়াছিলেন

(0১৮৯)

তিনি সভাসদ ব্রাহ্গণ-পপ্ডিতগণের আদেশ উপদেশ অনুসারে বৈদিক ধর্ন্মকীর্য্য এবং প্রজাপালনাদি রাজকার্ধা স্চারুবরূপে নির্বাহ করিতেন। রাজনন্দিনী মালিনী, িনদুধরর্মীবলম্বী পিতার ক্যা হইয়াও, গোপনে বৌদ্ধশান্্ অধায়ন করিতেন এবং বৌদ্ধধর্ম তাহার প্রগাট শ্রদ্ধা ভক্তি ছিল। তিনি বৌদ্ধ-সন্ন্যাসীদিগকে অতিশয় শ্রদ্ধা সন্মান করিতেন তিনি গোপনে বৌদ্ধশান্্র অধ্যয়ন করিয়৷ অসাধারণ বিদ্ধী হইয়াছিলেন।, কিন্তু নিম্নলিখিত ঘটনার পুর্বে ইহা কেহই জানিতে পারে নাই। সকলেই নিত যে, তিনি কেবল বেদাদি হিন্দুশান্ত্রেই যথেষ্ট জভ্কানলাভ 'করিয়াছেন। একদিন কতিপয় বৌসন্নযাসীকে রাজ প্রাসাদে ভোজনার্থ নিমন্ত্রণ করিয়াছিলেন সন্গ্যাসীর মধ্যান্ছে প্রাসাদের সিংহদ্বারে সমাগত হইলে দৌবারিক তাহাকে তীহার্দের আগমনবার্তী নিবেদন করিল। তিনি সন্নাসীদিগকে প্রাসাদ মধো আনয়ন করাইয়া যথাবিধি অভার্থনা করিয়া তাহাদিগকে উত্তমরূপে ভোজন করাইয়!- ছিলেন এবং তীহাদের পুস্তক-বন্ধনের জঙ্য তাহাদিগকে নানাবর্ণ ক্ষৌমবন্ত্রথগুসকল প্রদান করিয়াছিলেন তাহারা মালিনীর আদর, অভ্